Saturday, April 20, 2024
Homeসংবাদ ও প্রেস বিজ্ঞপ্তিপার্টি সংবাদগৃহকর্মীদের শ্রমিক হিসেবে স্বীকৃতি ও ন্যূনতম মজুরী ঘোষনার দাবিতে স্মারকলিপি প্রদান

গৃহকর্মীদের শ্রমিক হিসেবে স্বীকৃতি ও ন্যূনতম মজুরী ঘোষনার দাবিতে স্মারকলিপি প্রদান

20190502_131056(1)

গৃহকর্মীদের শ্রমিক হিসেবে স্বীকৃতি , সরকারীভাবে ন্যূনতম মজুরী ঘোষনা, কাজে যোগদানের আগে নিয়োগ পত্র দেয়ার দাবীসহ ৯ দফা দাবীতে গৃহকর্মী অধিকার রক্ষা কমিটি, চট্টগ্রাম জেলার পক্ষ থেকে  ২মে,২০১৯ জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। এর পূর্বে সকাল ১১ টায় চট্টগ্রাম শহীদ মিনারে কমিটির সভাপতি আসমা আক্তারের সভাপতিত্বে এবং সহসম্পাদক ওপিয়া আক্তারের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সহসভাপতি বেবী বেগম, সহসভাপতি রিনা বেগম, সাধারণ সম্পাদক আঞ্জুয়ারা বেগম, সাংগঠনিক সম্পাদক ফিরোজা বেগম, আজেনা বেগম, শিরিনা বেগম প্রমুখ ।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, বেঁচে থাকার প্রয়োজনে বাসা বাড়ীতে গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করে প্রায় ৫০ লাখ নারী, কিশোরী, শিশু । কিন্তু এরা সকলে অপ্রাতিষ্ঠানিক শ্রমিক। সমাজ থেকে দাসব্যবস্থার উচ্ছেদ হলেও গৃহকর্মীদের দাস হিসাবে দেখার মানসিকতা এখনো দূর হয়নি। গৃহস্থালী কাজের কোনো আর্থিক মূল্য না থাকায় গৃহকর্মীরা অত্যন্ত দক্ষতার সাথে কাজ করলেও তার কোনো মূল্য বা স্বীকৃতি নেই। বাসা-বাড়ি, মেস, হোটেল, অফিস-আদালতে কিংবা বিভিন্ন কারখানা বা প্রতিষ্ঠানে তার রান্না, তরকারি কাটা, মসলাবাটা, ঘর মোছা, কাপড় ধোয়া, প্রসূতিমায়ের নানা কাজ করা, বাসার আসবাবপত্র পরিষ্কার করা ইত্যাদি নানান কষ্টসাধ্য কাজ করে। কিন্তু সরকারিভাবে কোনো নীতিমালা বা আইন না থাকার কারণে শ্রমিক হিসাবে এখনো তাদের মর্যাদা প্রতিষ্ঠিত হয়নি। ন্যায্য মজুরিতো অনেক পরের কথা।নেই বাঁচার মতো মজুরী, সাপ্তাহিক ছুটি । তাছাড়া বাড়ির ছেলে সদস্যদের দ্বারা নানা ভাবে যৌননিপীড়নের ঘটনার খবরও আমরা জানি। ধর্ষণ, খুন, শারীরিকভাবে নানা নির্মম নির্যাতন, চুরির মিথ্যা অপবাদ ইত্যাদি তো আছেই। বাংলাদেশে নিয়োজিত গৃহকর্মীদের প্রায় ৮৫ ভাগ শ্রমিক নির্যাতনের শিকার হন। কিন্তু সেগুলোর কোনো বিচার হয়না। অথচ আমরা জানি, দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে অসহায় নারীরা বাবা-মা’র ভরণ-পোষণ, সন্তানের পেটের ভাত, পড়া লেখার খরচ, চিকিৎসার খরচ, মাতাল স্বামীর ভরণ-পোষণের জন্য ঢাকা, চট্টগ্রাম সহ দেশের বড় বড় শহর গুলিতে আসছে মানুষের বাসা বাড়িতে কাজ করতে। শহরের সবচেয়ে কম টাকা খরচ হয়Ñএমন জায়গায় তারা থাকে। সেখানে মাথা গোঁজার যে জায়গাটুকু তারা মাথার ঘাম পায়ে ফেলা টাকা দিয়ে ভাড়া নেয়, তাতে নেই বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা, স্বাস্থ্যসম্মত পয়ঃনিষ্কাশনের ব্যবস্থা। আগুন লাগলে তাতে পুড়ে মরতে হবে, এমন ঘিঞ্জি পরিবেশে তারা থাকে। মদ-গাজা সহ বিভিন্ন নেশা দ্রব্য সহজেই পাওয়া যায় যা তাদের স্বামী সন্তানদের বিপথ গামী করছে।

বক্তারা আরো বলেন, আইএলও’র কর্তৃক ১৯৯৬ সালে গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ২০০০ সাল থেকে যেসব অধিকার কার্যকর করার কথা বলা হয়েছে তাহল: ক) গৃহকর্মে নিযুক্ত শ্রমিকদের পছন্দ মতো কোনো সংগঠন, প্রতিষ্ঠান বা কোনো সংস্থায় যোগদান এবং এই ধরনের সংস্থার কর্মকান্ডে স্বেচ্ছায় অংশগ্রহণের অধিকার; খ) চাকুরি বা পেশার বৈষম্য থেকে রক্ষার অধিকার; গ) কর্মক্ষেত্রে পেশাগত স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তার অধিকার; ঘ) পারিশ্রমিক পাবার অধিকার; ঙ) সংবিধিবদ্ধ সামাজিক নিরাপত্তা রক্ষার অধিকার; চ) প্রশিক্ষণ গ্রহণের অধিকার; ছ) কর্মে বা চাকুরিতে প্রবেশের নিম্নতম বয়স সীমা; জ) মাতৃত্ব রক্ষার অধিকার। কিন্তু বাংলাদেশে গৃহকর্মীরা আইএলও স্বীকৃত সব অধিকার থেকেই বঞ্চিত। এ পরিস্থিতে আমরা মানুষের মতো মর্যাদা নিয়ে বাঁচতে চাই। উত্থাপিত ৯ দফা দাবি আদায়ে গৃহকর্মীরা আজ ঐক্যবদ্ধ হয়েছি, ভবিষ্যতে এ দাবিতে জোরদার আন্দোলন গড়ে তোলা হবে ।

সমাবেশ শেষে শহীদ মিনার থেকে একটি মিছিল নিউমার্কেট,কোতোয়ালী প্রদক্ষিন করে কোর্ট বিল্ডিংস্থ জেলাপ্রশাসকের মাধ্যমে স্মারকলিপি প্রদানের পর সমাবেশে কাজ শেষ হয়।

 

RELATED ARTICLES

আরও

Recent Comments