Thursday, April 25, 2024
Homeছাত্র ফ্রন্টপিইসি পরীক্ষা বাতিলের দাবিতে স্বাক্ষর সংগ্রহ কর্মসূচীর উদ্বোধন

পিইসি পরীক্ষা বাতিলের দাবিতে স্বাক্ষর সংগ্রহ কর্মসূচীর উদ্বোধন

DSCF3936

সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট কেন্দ্রীয় কমিটির উদ্যোগে ২ ফেব্রুয়ারি বেলা ১১ টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি চত্বরে পিইসি পরীক্ষা বাতিলের দাবিতে স্বাক্ষর সংগ্রহ কর্মসূচীর উদ্বোধন অনুষ্ঠিত হয়। সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি নাঈমা খালেদ মনিকার সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক স্নেহার্দ্রী চক্রবর্ত্তী রিন্টুর পরিচালনায় স্বাক্ষর সংগ্রহ কর্মসূচীর উদ্ধোধন করেন বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবী, গবেষক, প্রাবন্ধিক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের সংখ্যাতিরিক্ত অধ্যাপক আবুল কাশেম ফজলুল হক। বক্তব্য রাখেন বাসদ (মার্কসবাদী) কেন্দ্রীয় কার্য পরিচালনা কমিিিটর সদস্য ফখরুদ্দিন কবির আতিক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একাউন্টিং এন্ড ইনফরমেশন সিস্টেম এর সহযোগী অধ্যাপক মোশাহিদা সুলতানা, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ডা: জয়দীপ ভট্টাচার্য।

DSCF3981বক্তরা বলেন, শিক্ষার মূলভিত্তি হচ্ছে প্রাথমিক শিক্ষা। সারা বিশ্বে শিশুদের শিক্ষাকে সবচেয়ে গুরুত্ব দেয়া হয়,গবেষণা হয় শিক্ষা পদ্ধত্বি নিয়ে। আর আমাদের দেশে শিশুদেরকে গিনিপিগ বানিয়ে বছর বছর শিক্ষা পদ্ধতির পরিবর্তন করা হয়। বিগত দশ বছরে বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থা পরিবর্তন হয়েছে অনেক। কখন সৃজনশীল, কখন ৭টি সৃজনশীল, প্রশ্নপত্র ও পরীক্ষা পদ্ধতির পরিবর্তন। ২০০৯ সাল থেকে বর্তমান সরকার প্রাথমিক সমাপনী শিক্ষা (পিইসি) পরীক্ষা চালু করে। ইতোমধ্যেই এই পরীক্ষার প্রয়োজনীয়তা নিয়ে অভিভাবক এবং দেশের শিক্ষিত মহলে নানা প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আমরা মনে করি, এই পরীক্ষা শিশুদের মানসিক বিকাশে সহায়তার বদলে শিক্ষাব্যবসার পথকেই ত্বরাণিত করছে।

বক্তরা আরো বলেন, স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশের প্রত্যেকটি সরকার শিক্ষাকে বেসরকারি খাতে ছেড়ে দেবার পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়েছে, শিক্ষাকে করেছে ব্যয়বহুল। ‘পড়াশুনা করতে টাকা লাগবে’- এই ধারণা সুপ্রতিষ্ঠিত হয়েছে। পিইসি-জেএসসি পরীক্ষা চালু করে সেই শিক্ষাব্যবসা শুরু হয়েছে একদম স্কুল পর্যায় থেকে। স্কুলে চালু করা হয়েছে বাধ্যতামূলক কোচিং। অব্যাহত পরীক্ষার চাপ সামাল দিতে শিশুরা গাইড বই ও প্রাইভেট টিউশনির দিকে আরো বেশি ঝুঁকে পড়েছে। প্রতিবেদনে এসেছে, বাজারে এখন ৩৫ ধরনের গাইড বই পাওয়া যায়। প্রতি বছর প্রায় ৩৫ লক্ষ শিক্ষার্থী পি এস সি তে অংশগ্রহণ করে। দাম যদি ৫০০ টাকা হয় ১টি করে গাইড বই কিনলেও বছরে ১৭৫ কোটি টাকা বাণিজ্য হয়। প্রতিটি শিক্ষার্থী কোচিং করতে বাধ্য হয়েছে। মাসে ৫০০ টাকা করে হলেও ১০ মাসে প্রতিটি শিক্ষার্থী ৫০০০ টাকা খরচ করেছে। তাহলে কোচিং খাতে ব্যবসা হচ্ছে প্রায় ১৭৫০ কোটি টাকা। ‘এডুকেশন ওয়াচের’ একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘পরীক্ষাগুলোকে ঘিরে চলছে প্রাইভেট ও কোচিং ব্যবসার মহোৎসব।’ ঢাকা চট্টগ্রামসহ প্রায় ২ লক্ষ কোচিং সেন্টার আছে। এই কোচিং সেন্টারের আয় বছরে ৫০ হাজার কোটি টাকা। আমাদের সমাজে একজন মানুষের অন্যের প্রতি দায়িত্বশীল-অনুভূতিবোধ সম্পন্ন হওয়া সর্বোপরি জ্ঞানে-বিজ্ঞানে বিকশিত হয়ে গড়ে উঠার সব আয়োজনগুলোই অবরুদ্ধ। আমাদের শিশুরাও এই পরিস্থিতির শিকার। উন্নত নীতি-নৈতিকতা আজ ব্যক্তিস্বার্থ-অসুস্থ প্রতিযোগিতার যাঁতাকলে পিষ্ঠ। পিইসি এই শিশুদের গড়ে উঠার পিছনে আরেকটি বাধা। তাই আসুন, শিশুর মানসিক বিকাশে এবং জনগণের হয়রানি থেকে বাঁচতে পিইসি পরীক্ষা বাতিলের দাবিতে ঐক্যবদ্ধ হই।

কর্মসূচী: আগামী ২২ এপ্রিল ২০১৮ দেশব্যাপী জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে এবং ঢাকায় কেন্দ্রীয়ভাবে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে সংগৃহীত স্বাক্ষরসহ স্মারকলিপি পেশ।

 

RELATED ARTICLES

আরও

Recent Comments