Tuesday, April 23, 2024
Homeসাম্যবাদসাম্যবাদ - আগষ্ট ২০১৭বামপন্থীদের যুক্ত আন্দোলনের ঘোষণা

বামপন্থীদের যুক্ত আন্দোলনের ঘোষণা

IMG_0952 copy
গণতন্ত্র ও গণতান্ত্রিক অধিকার আদায়, দুর্নীতি-লুটপাট-দখলদারিত্ব বন্ধ, জনজীবনের সংকট সমাধান ও মহাজোট-জোটের বাইরে বাম-গণতান্ত্রিক বিকল্প গড়ে তুলতে প্রস্তাব ও আশু দাবিসমূহ তুলে ধরে যুগপৎ আন্দোলনের ঘোষণা দিয়েছে গণতান্ত্রিক বাম মোর্চা, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) ও বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ। ১ আগস্ট ঢাকার কমরেড মণি সিংহ সড়কস্থ মৈত্রী মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে বামপন্থীদের আশু দাবিসমূহ ঘোষণা করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বাসদ (মার্কসবাদী)-এর কেন্দ্রীয় নেতা শুভ্রাংশু চক্রবর্তী, সিপিবি’র সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, বাসদ-এর সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু, ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক মোশাররফ হোসেন নান্নু, গণসংহতি আন্দোলনের ভারপ্রাপ্ত সমন্বয়কারী আবুল হাসান রুবেল, সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের আহ্বায়ক হামিদুল হক প্রমুখ।

সংবাদ সম্মেলনের লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, মহাজোট সরকারের দুর্নীতি আর দুঃশাসনে মানুষ আজ দিশেহারা। সংবিধানস্বীকৃত গণতান্ত্রিক অধিকারসমূহ এখনও রুদ্ধ, ভোটাধিকারও কেড়ে নেয়া হয়েছে। নিপীড়ন, হয়রানিমূলক মামলা, অপহরণ, গুম-খুন, বিচারবহির্ভূত হত্যাকান্ডের মাধ্যমে আইনের শাসনের ছিটেফোটাও রাখা হচ্ছে না। বিরোধী দল ও মতকে দমন করা হচ্ছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার তকমা আর উন্নয়নের কথা বলে বস্তুত সরকার তাদের যাবতীয় অপকর্মকে জায়েজ করার চেষ্টা করছে। বাতিল করার সমস্ত সুযোগ থাকা সত্ত্বেও সরকার সংবিধানের ২য়, ৮ম সংশোধনী, প্রধানমন্ত্রীকেন্দ্রিক অগণতান্ত্রিক ক্ষমতা কাঠামোর ভিত্তি সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদসহ সকল অগণতান্ত্রিক, সাম্প্রদায়িক ও ক্ষুদ্র জাতিসত্ত্বাবিরোধী ধারা ও সংশোধনীসমূহ বহাল রেখেছে। সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানসমূহকে অকার্যকর করে রাখা হয়েছে। এসবের মধ্য দিয়ে রাষ্ট্রের ফ্যাসিবাদী প্রবণতা ও চরিত্র বিপজ্জনকভাবে প্রসারিত করা হচ্ছে। সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, গোটা নির্বাচনী ব্যবস্থা কার্যত ভেঙে পড়েছে। নির্বাচন পুরোপুরি টাকার খেলায় পর্যবসিত হয়েছে। দুর্নীতিবাজ, লুটেরা গোষ্ঠীর কালো টাকা, সন্ত্রাস, পেশীশক্তি, সাম্প্রদায়িকতা, আঞ্চলিকতা, আমলাতান্ত্রিক খবরদারির কারণে বিদ্যমান ব্যবস্থায় সৎ, সংগ্রামী, নিবেদিতপ্রাণ রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের নির্বাচনে অংশগ্রহণ ও জয়লাভ প্রায় অসম্ভব করে তোলা হয়েছে। ভোটের সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব ব্যবস্থা প্রবর্তনসহ নির্বাচন ব্যবস্থার আমূল সংস্কার এবং নির্বাচনের অবাধ গণতান্ত্রিক পরিবেশ ছাড়া সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের কোনো অবকাশ নেই।

সংবাদ সম্মেলনে গণতান্ত্রিক অধিকার নিশ্চিতকরণ, দলীয়করণ-দুর্নীতি-লুটপাট ও দখলদারিত্ব রোধ, সাম্প্রদায়িক জঙ্গীগোষ্ঠীর অপতৎপরতা বন্ধ, শ্রেণি-পেশাসহ জনজীবনের জরুরি দাবিসমূহ, জাতীয় সম্পদের মালিকানা সংরক্ষণ ও ব্যবহার নিশ্চিত ও জাতীয় স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব ও জাতীয় নিরাপত্তা নিশ্চিত করাসহ ৫টি শিরোনামে আশু দাবি ঘোষণা করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, লুটেরা পুঁজিপতি শ্রেণির নিষ্ঠুর শোষণমূলক ব্যবস্থা, বিদ্যমান স্বৈরতান্ত্রিক ফ্যাসিবাদী শাসনের অবসান এবং অন্ন-বস্ত্র-শিক্ষা-স্বাস্থ্য-বাসস্থানসহ জনগণের গণতান্ত্রিক ও মানবিক অধিকার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বাম-গণতান্ত্রিক শক্তির নেতৃত্বে সকল গণতান্ত্রিক-অসাম্প্রদায়িক ও সাম্রাজ্যবাদবিরোধী দেশপ্রেমিক রাজনৈতিক দল, গোষ্ঠী, ব্যক্তিবর্গসহ দেশবাসীকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলন জোরদার করতে হবে। এই পথে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি কেন্দ্রিক লুটেরা ধনিক শ্রেণির দ্বি-দলীয় অপরাজনীতির বাইরে জনগণের নিজস্ব বিকল্প রাজনৈতিক শক্তি-সমাবেশ গড়ে তুলতে হবে।

সাম্যবাদ আগষ্ট ২০১৭

RELATED ARTICLES

আরও

Recent Comments