Friday, April 26, 2024
Homeসংবাদ ও প্রেস বিজ্ঞপ্তিপার্টি সংবাদবাসদ (মার্কসবাদী) দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ে স্মারকলিপি দিয়েছে

বাসদ (মার্কসবাদী) দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ে স্মারকলিপি দিয়েছে

বন্যার্তদের জন্যে পর্যাপ্ত ত্রাণ সরবরাহ, ঘর-বাড়ী মেরামতের জন্যে পর্যাপ্ত আর্থিক সহযোগিতা, ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের ধানের বীজ সরবরাহ ও কৃষিঋণ ও এনজিও ঋণ মওকুফের দাবি

memo-2

বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (মার্কসবাদী)’র উদ্যোগে বন্যার্ত মানুষদের দ্রুত ত্রাণ সরবরাহ, ঘর-বাড়ী মেরামতের জন্যে পর্যাপ্ত আর্থিক সহযোগিতা, ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের পুনরায় ধান রোপনের জন্য প্রয়োজনীয় ধানের বীজ সরবরাহ ও কৃষিঋণ ও এনজিও ঋণ মওকুফের দাবিতে ২৭ আগস্ট দুপুর ১২ টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশ শেষে ৩ সদস্যের প্রতিনিধি টিম দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ে গিয়ে স্মারকলিপি প্রদান করে। সমাবেশে সভাপতিত্ব করে বাসদ (মার্কসবাদী)’র কেন্দ্রীয় বর্ধিত ফোরামের সদস্য কমরেড আ ক ম জহিরুল ইসলাম। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের ঢাকা নগর কমিটির সদস্য কমরেড সীমা দত্ত এবং মলয় সরকার।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, দেশের ৪০ জেলার প্রায় ৭৫ লক্ষ মানুষ বন্যায় সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত। সারা দেশের বন্যার্ত মানুষরা যখন সবকিছু হারিয়ে সহায়-সম্বলহীন অবস্থায় মানবেতর জীবন যাপন করছে সরকারের তরফ থেকে তখন পর্যাপ্ত ত্রাণ সরবরাহ করা হচ্ছে না। সারা দেশের বন্যার্ত অসহায় কৃষকরা আবার ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য পুঃনরায় ধান রোপনের জন্য পর্যাপ্ত ধান বীজ ও অর্থ সহযোগীতা চাচ্ছে তা সরকারে তরফ থেকে সরবরাহ করা হচ্ছে না। দুর্গত মানুষদের আশ্রয়ের জন্য পর্যাপ্ত আশ্রয় কেন্দ্র ও জরুরী ঔষধ এবং বিশুদ্ধ পানির যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়নি। এলজিইডি-এর হিসাবে পল্লী অবকাঠামোর প্রাথমিক ক্ষতি ধরা হয়েছে ৬ হাজার কোটি টাকা। দুর্যোগ অধিদপ্তর জানিয়েছে ২৭ জেলায় ৬ লক্ষ ১৮ হাজার হেক্টর ফসলী জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে সাড়ে ৩ লাখ হেক্টর আমনের জমি প্লাবিত হয়েছে। সংবাদ মাধ্যমের খবর অনুযায়ী সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী বন্যার্তরা ত্রাণ সামগ্রী পাচ্ছে না। দেখা যাচ্ছে যখন ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা অর্থ ও বীজের অভাবে শস্য রোপন করতে পারছে না তখন এনজিও ঋণ মওকুফের জন্য এনজিও কর্মীর তাদের তাগাদা দিচ্ছে । ফলে এই অসহায় কৃষকদের দুর্ভোগ লাঘবে কৃষিঋণ ও এনজিও ঋণ মওকুফ করা অত্যন্ত জরুরী। মৎস্য চাষীদের জলাশয়ের মাছ ভেসে যাওয়ায় তারা আজ দিশেহারা। গবাদী পশুর খামারীরা বন্যার কারণে অত্যন্ত কম দামে তাদের গবাদী পশু বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছে। ৪ হাজারেরও বেশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আজ বন্ধ। বন্ধ প্রতিষ্ঠান কবে চালু হবে তার কোন নির্দিষ্ট সময়সীমা নেই। ফলে শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবনও আজ হুমকির মুখে। এমতবস্থায় সরকারী কোষাগার থেকে পর্যাপ্ত অর্থ বরাদ্দ করে আরো ব্যাপক মাত্রায় ত্রাণ তৎপরতা চালু করা দরকার। কিন্তু সরকার যা করছে তা বন্যার্তদের প্রয়োজনের তুলনায় খুবই অপ্রতুল। আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান ইউনেসকো, আবহাওয়াবিদ ও গবেষকরা অনেক আগে থেকে দেশে যে ভয়ানক বন্যা হবে যা অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে যাবে তার সতর্কবাণী করেছিলল। সেই ভবিষ্যৎবাণী বর্তমান সরকার কানে নেইনি। সরকার বন্যার দুর্ভোগ মোকাবেলার জন্য যদি আগাম ব্যবস্থা করতো তাহলে মানুষদের আজ এ চরম অবস্থার মুখোমুখি হতে হতো না। মানুষ যখন ত্রাণের জন্য হাহাকার করছে তারই মধ্যে পত্রিকার পাতায় এবং সংবাদ মাধ্যমে খবর হচ্ছে ত্রাণ নিয়ে লুটপাট যা দেশের মানুষকে স্তম্ভিত করেছে।

সমাবেশে নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে বন্যার্ত মানুষের দুর্ভোগ লাঘবে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহন করে জরুরী ভিত্তিতে ত্রাণ তৎপরতা বাড়ানো ও কৃষিঋণ, এনজিও ঋণ মওকুফ করার জন্য সরকারের কাছে জোর দাবি জানান এবং জনসাধারণকে ত্রাণ নিয়ে লুটপাট-দূর্নীতির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান।

একই দাবিতে সারাদেশের জেলাগুলোতে বাসদ (মার্কসবাদী)’র উদ্যোগে জেলা প্রশাসকের মধ্যমে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।

RELATED ARTICLES

আরও

Recent Comments