Friday, April 19, 2024
Homeসংবাদ ও প্রেস বিজ্ঞপ্তিপার্টি সংবাদব্যাংক ও আর্থিক খাতে লুটপাট, স্বেচ্ছাচার, পারিবারিকীকরণ ও অর্থপাচার রুখে দাঁড়ান

ব্যাংক ও আর্থিক খাতে লুটপাট, স্বেচ্ছাচার, পারিবারিকীকরণ ও অর্থপাচার রুখে দাঁড়ান

গণতান্ত্রিক বাম মোর্চা আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে নেতৃবৃন্দ

লুন্ঠন ও অব্যবস্থাপনার দায় নিয়ে অর্থমন্ত্রীর পদত্যাগ করতে হবে

31398297_976175429214270_7904619899329183744_o

ব্যাংক ও আর্থিক খাতে লুটপাট, স্বেচ্ছাচারিতা ও অর্থপাচার বন্ধের দাবিতে গণতান্ত্রিক বাম মোর্চার বক্তব্য এবং কর্মসূচি তুলে ধরার লক্ষ্যে এক সংবাদ সম্মেলন  ২৬ এপ্রিল বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১১টায় তোপখানাস্থ কমরেড নির্মল সেন মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন গণতান্ত্রিক বাম মোর্চার সমন্বয়ক ও বাসদ (মার্কসবাদী) কেন্দ্রীয় নেতা শুভ্রাংশু চক্রবর্ত্তী। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দেন মোর্চার কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগের সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য অধ্যাপক আবদুস সাত্তার, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু, গণসংহতি আন্দোলনের ফিরোজ আহমেদ, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের রণজিত কুমার প্রমুখ। সংবাদ সম্মেলন থেকে ব্যাংক খাতে লুন্ঠনের প্রতিবাদে ধারাবাহিক কর্মসূচির অংশ হিসেবে আগামী ২৯ এপ্রিল দেশব্যাপী বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। ঢাকায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনের সড়কে ওইদিন বিকাল সাড়ে ৪টায় কেন্দ্রীয় কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হবে।

সংবাদ সম্মেলনে নেতৃবৃন্দ বলেন, “বর্তমান সরকারের শাসনামলে দেশের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ খাত ও প্রতিষ্ঠানের মত ব্যাংক ও আর্থিক খাতে চরম অনিয়ম, লুটপাট, দুর্নীতি, অর্থপাচার এক ভয়াবহ পর্যায়ে উপনীত হয়েছে। জাতীয় নির্বাচন যত এগিয়ে আসছে এই খাতে লুটপাট, দুর্নীতি ও অর্থপাচার তত বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিনিয়োগের নামে ঋণ নিয়ে হাজার হাজার কোটি আত্মসাৎ হচ্ছে বা বিদেশে পাচার করা হচ্ছে। সরকার যেভাবে দলীয় বিবেচনায় বিভিন্ন সরকারি ব্যাংকের চেয়ারম্যানসহ পরিচালনা বোর্ডের সদস্য নিয়োগ দিয়েছে তা ব্যাংকগুলোকে ক্রমে নিঃস্ব ও দেউলিয়া করে তুলেছে। সরকারি সোনালি-জনতা-ফারমারস-বেসিক ব্যাংকে হরিলুটকারী অপরাধীদের গ্রেপ্তার-বিচার ও শাস্তি প্রদান না করে, লুট করা টাকা উদ্ধার না করে আবার রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা এসব ব্যাংকে ঢালা হচ্ছে।”

তাঁরা আরো বলেন, “বেসরকারি ব্যাংকসমূহের পরিচালনায় সাম্প্রতিক যে পরিবর্তন তা এসব ব্যাংকগুলোকে কার্যত পারিবারিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে পর্যবসিত করেছে। আগে এক পরিবারের দুইজন ৪ বছরের বেশি পরিচালনা পরিষদে থাকতে পারতেন না। এখন একই পরিবারের ৪ জন টানা নয় বছর পরিচালনা পরিষদে থাকতে পারবেন। সম্প্রতি বেসরকারি ব্যাংক মালিকদের চাপে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে নগদ জমা সংরক্ষণ (সিআরআর) ১% কমানো হয়েছে এবং নজিরবিহীনভাবে সরকারি প্রতিষ্ঠানের তহবিলের ৫০% অর্থ বেসরকারি ব্যাংকে রাখার বিধান করা হয়েছে। সরকারের এসব তৎপরতা ব্যাংকিং খাতে লুটপাট ও স্বেচ্ছাচারিতাকে আরো উৎসাহিত করবে। এর ফলে সাধারণ আমানতকারীদের আমানত আরো ঝুঁকির মধ্যে পড়বে। বেসরকারি ব্যাংক মালিকদের স্বার্থে এসব সিদ্ধান্তের সাথে যে সরকারের শীর্ষপর্যায়ের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে, তার প্রমাণ হল প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে ব্যাংক মালিকদের বিরাট অংকের অনুদান প্রদান এবং প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক গণভবনে তাদের আপ্যায়ন।”

শেষে তাঁরা বলেন, “ডেসটিনি-যুবক পর্যায় পার হয়ে হলমার্ক, বিসমিল্লা গ্রুপ প্রভৃতি কেলেঙ্কারিতে যে নতুন পর্যায়ের লুণ্ঠনের সূচনা, বাংলাদেশ ব্যাংকের টাকা পাচার পার হয়ে ফার্মার্স ব্যাংক ও ইসলামী ব্যাংক পর্বের মধ্য দিয়ে তারই চূড়ান্ত বিকাশ দেখা যাচ্ছে। তদারকি প্রতিষ্ঠান হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাঙ্কের ভূমিকা ও অস্তিত্ব নিয়েই এখন প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। অনির্বাচিত ও জবাবদিহিতাহীন সরকারের সাথে এই লুণ্ঠন ও স্বেচ্ছাচারিতার একটি প্রত্যক্ষ সম্পর্ক রয়েছে। এই লুটপাট, দুর্নীতি, অর্থপাচার ও স্বেচ্ছাচারিতা প্রতিরোধ করতে না পারলে তা সমগ্র দেশ ও জাতীয় অর্থনীতির জন্য আগামীতে আরো ভয়াবহ বিপর্যয় ডেকে নিয়ে আসতে পারে।”

RELATED ARTICLES

আরও

Recent Comments