• Home
  • About Us
  • Services
  • Blog
  • Contact Us
  • FAQ
  • Portfolio
  • Gallery
Thursday, January 21, 2021
Socialist Party of Bangladesh (Marxist)
  • প্রচ্ছদ
  • পার্টি সংবাদ
  • প্রেস রিলিজ
  • সাম্যবাদ
  • অনুশীলন
  • ঐকতান
  • পুস্তিকা
    • পার্টির পুস্তিকা
    • অন্যান্য গ্রুরত্বপূর্ণ পুস্তিকা
  • যোগাযোগ
No Result
View All Result
  • প্রচ্ছদ
  • পার্টি সংবাদ
  • প্রেস রিলিজ
  • সাম্যবাদ
  • অনুশীলন
  • ঐকতান
  • পুস্তিকা
    • পার্টির পুস্তিকা
    • অন্যান্য গ্রুরত্বপূর্ণ পুস্তিকা
  • যোগাযোগ
No Result
View All Result
Socialist Party of Bangladesh (Marxist)
No Result
View All Result

ধর্ষণ : কেন বাড়ছে? প্রতিকারের পথ কী?

October 13, 2020
0 0
Publish Time 12:54 pm
ধর্ষণ : কেন বাড়ছে? প্রতিকারের পথ কী?
0
SHARES
0
VIEWS
Share on FacebookShare on Twitter

কয়েকদিনের ব্যবধানে পরপর কয়েকটি নারীনির্যাতনের ঘটনায় কেঁপে উঠেছে গোটা দেশ। বিয়ের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় সাভারে স্কুলছাত্রীকে খোলা রাস্তায় ছুরি মেরে খুন, খাগড়াছড়িতে সেটেলার বাঙ্গালী যুবকদের আদিবাসী তরুণীকে গণধর্ষণ ও সিলেটের এমসি কলেজের ছাত্রাবাসে স্বামীর সামনে স্ত্রীকে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের সংঘবদ্ধ ধর্ষণ। এরপরই নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে ঘরে ঢুকে বিবাহিতা মহিলাকে বিবস্ত্র করে বর্বরোচিত যৌন নির্যাতন করেছে যুবলীগের সাথে যুক্ত কিছু বখাটে যুবক। সেই কুৎসিত ঘটনার ভিডিও ধারণ করে নিজেদের ‘কৃতিত্ব’ প্রচারের জন্য তা ছড়িয়ে দিয়েছে অভিযুক্তরা। এর মাঝে কেটে গেছে ৩২ দিন। আক্রমণকারীরা সরকারী দলের আশ্রয়ে থাকায় আক্রান্ত মহিলা বিচার চাইতে সাহস করেননি, এলাকাছাড়া হয়েছেন। প্রতিবেশী ও গ্রামবাসীরা ভয়ে মুখ খোলেনি, বুক ফুলিয়ে ঘুরে বেড়িয়েছে নির্যাতনকারীরা। নির্যাতনের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার হবার পরে মানুষ বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠলে পুলিশ ও প্রশাসনের টনক নড়েছে। বিশেষ করে এই ঘটনার পর মানুষের সহ্যের সীমা ছাড়িয়ে গেছে। সারাদেশে নারীরা ও ছাত্র-যুবকরা প্রতিবাদ-বিক্ষোভে নেমে এসেছেন রাজপথে। ধর্ষক ও তাদের মদদদাতাদের বিরুদ্ধে, নারীর নিরাপত্তা ও মর্যাদার দাবিতে, সর্বোপরি আওয়ামী লীগ সরকার-প্রশাসনের নিস্ক্রিয়তা ও প্রশ্রয়দানের বিরুদ্ধে সূচিত হয়েছে অভূতপূর্ব এক আন্দোলন।

বিচারের দাবি উঠেছে বারবার। এসকল ঘটনায় সাধারণ চিত্র হলো-ঘটনা যারা ঘটায়, তারা সরকারি দল ও তাদের সংগঠনের সাথে যুক্ত কিংবা প্রভাবশালী। আর যারা ঘটনার শিকার হন, তারা মধ্যবিত্ত, নিম্নবিত্ত-মধ্যবিত্ত পরিবারের সাধারণ মানুষ। এদেশে প্রভাবশালীদের বিচার হয় না, সাধারণ মানুষ বিচার পায় না। বিচারহীনতার এক দীর্ঘ সংস্কৃতির কারণে মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ও ক্ষোভ ক্রমেই বাড়ছে।

এটা ঠিক যে বিচার হওয়া দরকার। সেজন্য কঠোর আইন প্রণয়ন ও তার বাস্তবায়ন দরকার। কিন্তু এও সত্য যে-শুধু আইন প্রয়োগই এই ঘটনাগুলো ঘটা বন্ধ করতে পারবে না। দিনের পর দিন এই ঘটনাগুলো নিষ্ঠুরতা ও নৃশংসতার দিক থেকে আগের ঘটনাগুলোকে ছাড়িয়ে যাচ্ছে। পরিস্থিতি যেদিকে যাচ্ছে তাতে আশংকা হয়-এটা আরও ব্যাপ্তি নিয়ে ছড়াবে, আরও নির্মম ও তীব্র হবে। মেয়েরা ধর্ষিত-লাঞ্ছিত হতে থাকবে, ঘরে ঘরে নিপীড়ন বাড়বে। ধর্ষণ রোধের স্থায়ী ব্যবস্থা না হওয়া পর্যন্ত এই পরিণতি ঠেকানো যাবে না।

স্থায়ী সমাধানের পথ কী? এই প্রশ্নের সাথে জড়িয়ে আছে আরও অনেকগুলো প্রশ্ন। কেন এমন ঘটনা ঘটছে? কারা ঘটাচ্ছে? কারা এদেরকে সহযোগিতা করছে? এদের শক্তি কোথায়? এরা কি জন্ম থেকেই এমন বিকৃত মানসিকতা নিয়ে জন্ম নিয়েছিল? এরা কি কয়েকজন খারাপ ছেলে?

এদের জন্ম দিয়েছে এই সমাজ, এই রাষ্ট্র। এটা সেই রাষ্ট্র যেখানে লক্ষ লক্ষ লোক দিনের পর দিন উপবাসে থাকে। দেশে ৪ কোটি বেকার। এই বেকার যুবকরা নৌকা নিয়ে উন্মত্ত সাগর পাড়ি দেয় কাজের সন্ধানে। মাঝসমুদ্রে নৌকা ডুবে মারা যায়, ঘরের ছেলেদের সারি বাঁধা কবর খুঁজে পাওয়া যায় থাইল্যান্ডের জঙ্গলে। কলমের এক খোঁচায় পাটকলের হাজার হাজার শ্রমিক রাস্তায় বসে যায়, তারা জানে না কোথায় যাবে, এমনকি ন্যায্য বকেয়া পর্যন্ত তারা পায় না। দিবারাত্রি অমানুষিক খেটে বেঁচে থাকার মজুরি জোগাড় করতে পারছে না গার্মেন্টস শ্রমিকরা, মরছে ফ্যাক্টরির মধ্যে আটক অবস্থায় আগুনে পুড়ে কিংবা বাতিল হয়ে যাওয়া ভবনের তলায় চাপা পড়ে। দুর্ঘটনা নিশ্চিত জেনেও তাদের কাজে যেতে হয়, কারণ কাজ না করলে না খেয়ে মরতে হবে। হাহাকার চারিদিকে মহামারির মতো ছড়িয়ে পড়েছে। টঙ্গীর গার্মেন্টস শ্রমিক থেকে গাইবান্ধার গ্রামের কৃষক-কে নেই এই কাতারে? দাম না পেয়ে সবজি রাস্তায় ফেলে দিচ্ছে কৃষক, দুধ ড্রেনে ফেলে দিচ্ছে খামারি। দুধের শিশুকে বিক্রি করে কাঁদতে কাঁদতে বাড়ি ফিরছে দরিদ্র মা। শহরের রাস্তায়, রেল স্টেশনে, ফুটপাতে হাজার হাজার পরিবার। শিশু জন্ম নিচ্ছে ও বেড়ে উঠছে রাস্তায়। এরা জানে না মায়ের স্নেহ কী, বাবার আদর কী। ভালবেসে এদেরকে কেউ কাছে টানেনি, আদর করে মান ভাঙায়নি। অভিমান করার কোনো অধিকারই সমাজ তাদের দেয়নি। তারা মায়ের কাছে খেলনার বায়না করে কাঁদে না, ভাত চেয়ে কাঁদে।

এটা বাংলাদেশের একটা চিত্র। একদিকে এই অভুক্ত, অর্ধভুক্ত, গৃহহীন, বস্ত্রহীন বাংলাদেশ; আর একদিকে বিরাট জৌলুসের বাংলাদেশ। যেখানে কোটিপতির সংখ্যা বৃদ্ধির হারে সে গোটা পৃথিবীতে প্রথম। পাঁচতারা হোটেলে দেশি-বিদেশি ব্যবসায়ীদের সম্মিলনে হাজার হাজার কোটি টাকার কন্ট্রাক্ট হয়, না খেয়ে খাটা শ্রমিকের বেতন বাড়ে না। কন্ট্রাক্ট সাইন শেষে ডিনার করে মালিকরা বাড়ি যান, ডিনারের প্রতি প্লেটের মূল্য শ্রমিকের মাসের বেতনকে ছাড়িয়ে যায়। শহরে অনেক শিশুই এই বিশাল হোটেলগুলোর উচ্ছিষ্ট খায়।

’৭১ সালে শোষণ-বৈষম্যের বিরুদ্ধে সমাজতন্ত্রের স্বপ্ন নিয়ে জন্ম নিয়েছিল এই দেশ। স্বাধীনতা-পরবর্তীকালে পুঁজিপতিশ্রেণি রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়। প্রথমে রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে রাষ্ট্রের টাকায় কলকারখানাগুলোকে দাঁড় করিয়ে, তারপর বেসরকারিকরণ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে একে একে তুলে দেওয়া হয় ব্যক্তিমালিকানায়। গোটা ’৮০-র দশকে উদারনৈতিক অর্থনীতির জয়গান গেয়ে ও ব্যাংকসহ রাষ্ট্র্রীয় সম্পদের ব্যাপক লুটপাট করে গড়ে ওঠে একটি পুঁজিপতি-শিল্পপতি শ্রেণি। সময় গিয়েছে, ধনবৈষম্য ব্যাপকভাবে বেড়েছে। যে-ই ক্ষমতায় এসেছে, রাষ্ট্রীয় সম্পদ দেদার লুটপাটের মাধ্যমে ব্যবসায়ীরা শক্তিশালী হয়েছে। তাদের সম্পদ বেড়ে আকাশ ছুঁয়েছে। হাজার হাজার কোটি টাকার মালিক বিগ হাউজদের জন্ম হয়েছে। তারাই আজ সবকিছুর নিয়ন্তা। ৫ বছর পরপর ক্ষমতায় আসা রাজনীতিবিদরা ম্যানেজার মাত্র। ভোটের আগে গরিব মানুষের কষ্ট নিয়ে দেশবরেণ্য নেতারা বক্তব্য রাখেন, অশ্রু বিসর্জন করেন। দেশের পার্লামেন্টের ৬১ শতাংশ ব্যবসায়ী। দেশ পরিচালিত হয় বিগ বিজনেস হাউজের ইশারায়।

এই গোষ্ঠীর কাছে মুনাফা ভিন্ন অন্য কোনো ভাষা নেই, মূল্যবোধ বলে কোনো শব্দ তাদের অভিধানে নেই। মুনাফার জন্য তারা করতে পারে না এমন কোনো কাজ নেই। দুই হাতে তারা জনগণের টাকা লুট করছে। এদের রাজত্বে নারী লাঞ্ছনা, শিশু নির্যাতন, প্রতিবাদীদের হত্যা নিত্যদিনের ঘটনা। ন্যায়নীতিসম্পন্ন, মূল্যবোধসম্পন্ন মানুষ এখানে অবাঞ্ছিত, অসহায়। পরপর কয়েকটি ধর্ষণের ঘটনায় সারাদেশ যখন ঘৃণায়, ক্ষোভে, ব্যথায় মুহ্যমান তখন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর মন্তব্য-ধর্ষণ সকল দেশেই ঘটে। এর আগে পয়লা বৈশাখে টিএসসিতে নারী লাঞ্ছনার ঘটনায় পুলিশ কমিশনার মন্তব্য করেছিলেন, এগুলো কতগুলো দুষ্ট ছেলের কাজ। দেশের বিখ্যাত ধর্মীয় নেতা মন্তব্য করেন-নারীরা তেঁতুলের মতো, দেখলে জিভে জল আসে।

এই তো রাষ্ট্রনেতা, প্রশাসনের কর্তাদের চরিত্র, ধর্মীয় গুরুর মন্তব্য। সংসদে নারীদের নিয়ে স্থুল হাস্যরস হয়, সাংসদরা আমোদে মাতেন, একে অপরের দিকে তাকিয়ে চোখ টেপেন। তাহলে কোথায় নিরাপদ মেয়েরা? কোথায় মর্যাদা আছে? কোথাও নেই। কোনো জায়গাকে নিষ্কলুষ, সুন্দর, নির্মল রাখা যাবে না। রাখলে সেখান থেকেই এই ব্যবস্থার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ উঠবে। তাই এই লুট, এই শোষণ জারি রাখতে হলে মূল্যবোধ, মানবিকতা ও সমস্ত সুকুমার বৃত্তিকে পিষে মারতে হবে। তারই আয়োজন চলছে রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে, তারই ফলাফল এই ছাত্রলীগ, এই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, এই পুলিশ প্রধান, এই ধর্মীয় নেতা।

এইভাবে ৪৯ বছর ধরে তারা দেশ পরিচালনা করছেন। এটাই তাদের শাসনপ্রক্রিয়া। তারা জানেন-মানুষকে পশুর স্তরে না নামালে তাকে দিয়ে পশুর কাজ করানো যাবে না। সেই পশু সৃষ্টির সমগ্র আয়োজন তাই তারা করেন। এর উপর দাঁড়িয়ে চলে লুট, সম্পদ বৃদ্ধি, ব্যবসা। তাই, সারাদেশে মাদকের বিস্তার, পর্নোগ্রাফির প্রসার। আমেরিকায় ৬০-৭০ দশকে ভিয়েতনাম যুদ্ধ ও অস্ত্রপ্রতিযোগিতা বিরোধী আন্দোলন থেকে যুবসমাজকে সরাতে সিআইএ-র পরিকল্পনায় ড্রাগস ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। ফিলিস্তিনিদের টিকে থাকার আন্দোলন দমাতে ইসরাইলী সরকারের একটি কৌশল হলো-ইসরাইলী যুবকদের টার্গেট করে অসংখ্য পর্নো টিভি চ্যানেলের অবিরত সম্প্রচার। যাতে তাদের লড়াকু ও আত্মমর্যাদাসম্পন্ন মন নষ্ট হয়ে গিয়ে তারা পরিণত হয় ইন্দ্রিয়পরায়ণ, ভোগলিপ্সু ও বিকৃত রুচির পশুতে।

এদেশে কিশোর-তরুণদের জীবনের সুস্থ বিকাশের পথ বন্ধ করে রেখেছে পুঁজিবাদ। শিশুদের জন্য খেলাধুলার আয়োজন নেই, সাংস্কৃতিক চর্চার ব্যবস্থা নেই। বড় মানুষদের জীবন তাদের কাছে তুলে ধরা হয় না। মিডিয়ায় অবিরাম চলছে ভোগবাদী জীবনের প্রচার। ছোটবেলা থেকে কানের কাছে জপা হয় – ‘চাচা আপন পরান বাঁচা’। জীবনের উদ্দেশ্য তাদের শেখানো হয়-‘খাও, দাও, ফূর্তি করো।’ পড়াশোনার লক্ষ্য হলো ক্যারিয়ার গোছানো, চাকরি জোটানো যাতে বাড়ি-গাড়ি করা যায়। দেশে সেরকম নেতৃত্ব, ব্যক্তিত্ব নেই যাকে অনুসরণ করে যুবকরা বড় হবে। তারা দেখছে-পরিবার, শিক্ষক, নেতা, বুদ্ধিজীবী সবাই নিজের নিজের আখের গোছানোর প্রতিযোগিতায় আছে। মানুষের প্রতি দায়িত্ববোধ লুপ্ত, সামাজিক কর্মকা-ে কেউ উৎসাহ দেয় না। অন্যদিকে হাতে হাতে মোবাইলে, ইন্টারনেটে পর্নোগ্রাফির অশ্লীল বিকৃত আনন্দের সুযোগ। হাত বাড়ালেই পাওয়া যায় মাদক, নেশার অন্ধকার জগতে ডুব দিলে সবকিছু ভুলে থাকা যায়, পাওয়া যায় কৃত্রিম আনন্দ। নারীজাতির প্রতি সম্মান কিশোর-তরুণদের কেউ শেখায় না, মেয়েদের শরীরসর্বস্ব ভোগ্যবস্তু হিসেবে দেখতেই তারা ছোটবেলা থেকে অভ্যস্ত হয়ে ওঠে। মেয়েরাও অনেকে এই ভোগবাদী সংস্কৃতির আক্রমণের বাইরে নয়। পুরুষতান্ত্রিক সমাজ তাদের ভাবতে শেখায়-শারীরিক সৌন্দর্য্যই তার প্রধান সম্পদ। রূপচর্চা, শাড়ি-গয়না ও বিয়েই যেন তার জীবনের লক্ষ্য। জ্ঞানে-বুদ্ধিতে-মূল্যবোধে বড় হওয়ার কথা তাদের কেউ বলে না। ছোটবেলা থেকে ছেলে-মেয়েদের স্বাভাবিক মেলা-মেশা, বন্ধুত্বের পরিবেশ আমাদের এই রক্ষণশীল মুসলিম সমাজের অনেকাংশে নেই। এখানে বিরাট প্রভাব নিয়ে আছেন ওয়াজজীবী ধর্মীয় মাওলানারা, যারা নারীকে মনে করেন ‘তেঁতুলে’র, মতো, যাদের দেখলেই ‘জিভে জল আসে’। সুস্থ বিনোদনের অন্য সব রাস্তা বন্ধ থাকায় কিশোর বয়স থেকেই ছেলে-মেয়েদের আনন্দের একমাত্র উপায় হয়ে দাঁড়াচ্ছে গোপনে অকালপরিণত প্রেম ও যৌনতার চর্চা। স্বার্থপরতার এই সমাজে তা নিয়েও চলছে কাড়াকাড়ি, প্রতারণা, দখলের মানসিকতা। প্রেম ও যৌনতা মানুষের জীবনের স্বাভাবিক অংশ। কিন্তু, মানুষকে ভালোবাসার মন ও দায়িত্ববোধ-মূল্যবোধ গড়ে না উঠলে কীভাবে তরুণ-তরুণীদের মধ্যে সুন্দর নিঃস্বার্থ ভালোবাসা সম্ভব? সংকীর্ণ মন নিয়ে প্রেমের নামে যা হবে তা হলো আত্মকেন্দ্রিক মোহ, সম্পত্তিজাত অধিকারবোধ। এজন্যই বেশিরভাগ প্রেম টেকে না, বিয়ে করলেও বেশিরভাগ সম্পর্ক আনন্দময় থাকে না।

এভাবে সুন্দর মন ও সুস্থ-সামাজিক জীবনের বিকাশের পথ রুদ্ধ। অন্যদিকে, পাড়ায় পাড়ায় আছে সরকারি দলের বড়ভাইয়েরা-দাপট নিয়ে চলতে চাইলে তাদের সাথে যোগ দাও। অস্ত্র, অর্থ, ক্ষমতা, হিরোইজম সব পাওয়া যাবে। সরকারি দলের সাথে থাকলে সাত খুন মাফ, পুলিশ-প্রশাসন-মুরুব্বিরা কেউ কিছু বলবে না। ক্ষমতার প্রতিয়োগিতায় লিপ্ত এসব ‘রাজনৈতিক’ নেতারা কিশোর-তরুণদের ব্যবহার করে বানান কিশোর গ্যাং, অপরাধী চক্র। তাদের ব্যবহার করেন নিজেদের প্রভাব বিস্তারে চাঁদাবাজি-মাস্তানিতে, বিনিময়ে দুর্নীতি-লুটপাটের মাধ্যমে অর্জিত নিজের সম্পদের ছিটেফোঁটা ভাগ তাদের দেন। এই পরিস্থিতিকে নতুন মাত্রায় তুলেছে গত এক যুগ ধরে ক্ষমতাসীন (নির্বাচনের মাধ্যমে নয়, ভোটডাকাতি করে) আওয়ামী লীগ সরকার। তাদের ফ্যাসিবাদী শাসনে ও তাদের নেতা-কর্মীদের দাপটে সহজে কেউ মুখ খোলে না, প্রতিবাদ করার সাহস পায় না। নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে বিবাহিতা মহিলাকে বিবস্ত্র করে নির্যাতনের নৃশংস ঘটনায় গ্রামবাসী ও পরিবারের নীরবতা এর উদাহরণ। এই ক্ষমতার আশ্রয়ে দুর্নীতি-লুটপাট-দখলদারিত্ব-নিপীড়নের পাশাপাশি প্রতিদিন ঘটে চলেছে অসংখ্য নারী নির্যাতন-ধর্ষণ-যৌন প্রতারণার ঘটনা। এর একাংশ মাত্র প্রকাশ্যে আসে, তাতেই আঁতকে ওঠে মানুষ। যেমন-সিলেট এমসি কলেজ হোস্টেলে স্বামীকে জিম্মি করে নববিবাহিতা ধর্ষণের ঘটনা। রাষ্ট্রক্ষমতা থেকে শুরু করে সমাজের সর্বস্তরে যখন জবরদস্তি ও অন্যায় চলতে থাকে, তখন সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয় দুর্বলতর জনগোষ্ঠী-নারী, শিশু, বৃদ্ধ, জাতিগত ও ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা।

এই পরিস্থিতির স্থায়ী সমাধানের জন্য, নারীর সত্যিকারের মর্যাদা প্রতিষ্ঠার জন্য এই শোষণমূলক সমাজকে উচ্ছেদ করা ছাড়া আর কোনো বিকল্প নেই। মানব ইতিহাসে এই ঘটনা ঘটেছিল সোভিয়েত ইউনিয়ন, চীনসহ বিভিন্ন সমাজতান্ত্রিক দেশগুলোতে এবং মানবসভ্যতা সেদিন প্রত্যক্ষ করেছিল এর রূপ কেমন হতে পারে। নারীধর্ষণ, সামাজিক অপরাধের হার শূন্যের কাছাকাছি নেমে এসেছিল। দেহ বিক্রি করে যারা পেট চালাতো, সেই নারীদের পুনর্বাসন করা হয়েছেল, ভেঙে দেওয়া হয়েছিল নারীব্যবসায়ী চক্র। নারীরা শিক্ষায়, কর্মক্ষেত্রে, জ্ঞান-বিজ্ঞান চর্চায়, খেলাধুলায় এমনকি দেশরক্ষায় কতটা অগ্রসর ও পুরুষের সমকক্ষ হয়ে উঠেছিল – তার উদাহরণ মহাকাশে প্রথম প্রেরিত মানুষ ছিলেন একজন সোভিয়েত নারী ভ্যালেন্তিনা তেরেসকোভা। চীনে হাজার বছরের সামন্ততান্ত্রিক নিগড়ে নিষ্পেষিত নারীসমাজকে মুক্তি এনে দিয়েছিল বিপ্লব, সমাজতান্ত্রিক বিনির্মাণ।

কোন মানুষই পশু হয়ে জন্মায় না। এই বৈষম্যের সমাজ তাকে পশুতে রূপান্তরিত করে, তার টিকে থাকার স্বার্থেই করে। ফলে এই বেদনা, এই কষ্ট, এই ক্ষোভের জলোচ্ছাসকে সমাজ ভাঙার জন্য কূল ছাপিয়ে আছড়ে পড়তে হবে। নতুন সমাজতান্ত্রিক সমাজ সৃষ্টির দিকে অগ্রসর হতে হবে। নাহলে বারবার একই চিত্র আমাদের অশ্রুভেজা চোখেই প্রত্যক্ষ করতে হবে।

সাম্যবাদ অক্টোবর ২০২০

Previous Post

করোনায় বিপর্যস্ত জনগণের জীবন-জীবিকা ও গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষায় চাই আন্দোলন

Next Post

ধর্ষণ ও বিচারহীনতার বিরুদ্ধে লংমার্চে হামলা সরকারের নৈতিক পরাজয়কেই প্রমাণ করল।--কমরেড মুবিনুল হায়দার চৌধুরী

Next Post
ধর্ষণ ও বিচারহীনতার বিরুদ্ধে লংমার্চে হামলা সরকারের নৈতিক পরাজয়কেই প্রমাণ করল।–কমরেড মুবিনুল হায়দার চৌধুরী

ধর্ষণ ও বিচারহীনতার বিরুদ্ধে লংমার্চে হামলা সরকারের নৈতিক পরাজয়কেই প্রমাণ করল।--কমরেড মুবিনুল হায়দার চৌধুরী

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

eighteen + eight =

সাম্যবাদ পিডিএফ ভার্সন

  • সাম্যবাদ অক্টোবর ২০২০
  • সাম্যবাদ এপ্রিল ২০২০
  • সাম্যবাদ সেপ্টেম্বর ২০১৯
  • সাম্যবাদ আগষ্ট ২০১৯
  • সাম্যবাদ জুলাই ২০১৯
  • সাম্যবাদ এপ্রিল ২০১৯
  • সাম্যবাদ জানুয়ারি ২০১৯

  

সাম্যবাদ আর্কাইভ

সাম্যবাদ পুরোনো সংখ্যা

সম্প্রতি প্রকাশিত

  • ভারতের সংগ্রামী কৃষক আন্দোলনের প্রতি সংহতি জ্ঞাপন
  • লাগামহীন গ্যাস-বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির বিধান রেখে আইন পাশের প্রতিবাদ
  • শোষণমুক্তির চেতনায় সমাজতন্ত্রের ঝাণ্ডা উর্ধ্বে তুলে ধরুন; মৌলিক অধিকার, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও জীবন-জীবিকার দাবিতে ঐক্যবদ্ধ হোন
  • ম্রো জনগোষ্ঠীর অস্তিত্ব হুমকির মুখে ফেলার এ গণবিরোধী তৎপরতা রুখে দাঁড়ান
  • কুমিল্লার মুরাদনগরে হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়ি-ঘরে অগ্নিসংযোগ ও হামলার ঘটনায় বাসদ(মার্কসবাদী)-র নিন্দা

আর্কাইভ

ফেসবুকে বাসদ (মার্কসবাদী)

Follow @spb_marxist

যোগাযোগ  : 

২২/১ তোপখানা রোড (৬ষ্ঠ তলা), ঢাকা – ১০০০ ।
ফোন :  ৯৫৭৬৩৭৩
ই-মেইল :
https://spbm.org/

© 2019 Devloped by Sourav Bhuiyan. E-mail : sourav.anawar@gmail.com, Mobile : +8801670702270

No Result
View All Result
  • প্রচ্ছদ
  • পার্টি সংবাদ
  • প্রেস রিলিজ
  • সাম্যবাদ
  • অনুশীলন
  • ঐকতান
  • পুস্তিকা
    • পার্টির পুস্তিকা
    • অন্যান্য গ্রুরত্বপূর্ণ পুস্তিকা
  • যোগাযোগ

© 2019 Devloped by Sourav Bhuiyan. E-mail : sourav.anawar@gmail.com, Mobile : +8801670702270

Login to your account below

Forgotten Password?

Fill the forms bellow to register

All fields are required. Log In

Retrieve your password

Please enter your username or email address to reset your password.

Log In