মোদির বাংলাদেশ সফর : ২২ দফা চুক্তি ও জাতীয় স্বার্থ শীর্ষক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত
প্রতিবেশীর সাথে সম্পর্ক হতে হবে পারস্পরিক সম্প্রীতি, সমমর্যাদা, শ্রদ্ধা, ন্যায্যতা সার্বভৌমত্বের যথাযথ স্বীকৃতি ও জনগণের মধ্যে গণতান্ত্রিক সম্পর্ক কাঠামোর ভিত্তিতে — মতবিনিময় সভায় গণতান্ত্রিক বাম মোর্চা

গণতান্ত্রিক বাম মোর্চা ২ জুলাই ২০১৫ নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরঃ ২২ দফা চুক্তি ও জাতীয় স্বার্থ শীর্ষক এক মতবিনিময় সভার আয়োজন করে। সকাল ১১টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে অনুষ্ঠিত সভায় সভাপতিত্ব করেন বাম মোর্চার সমন্বয়ক ও গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু। সভা পরিচালনা করেন মোর্চার কেন্দ্রীয় নেতা ও বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক।
মতবিনিময় সভায় আলোচনা করে বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবী ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, তেল গ্যাস খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির আহ্বায়ক প্রকৌশলী শেখ মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ, অধ্যাপক আকমল হোসেন, সাংবাদিক আবু সাঈদ খান, প্রকৌশলী বিডি রহমতউল্লাহ, প্রকৌশলী ম. ইনামুল হক, মুবিনুল হায়দার চৌধুরী, মোশাররফ হোসেন নান্নু, হামিদুল হক, এড. আব্দুস সালাম, মহিনউদ্দিন চৌধুরী লিটন প্রমুখ।

ইতিমধ্যে আপনারা জেনেছেন যে প্রচলিত সকল বিধিবিধান লংঘন করে বিনা টেন্ডারে ও বিনা প্রতিযোগিতায় জ্বালানি সংক্রান্ত বিশেষ আইনের আওতায় ‘দায়মুক্তি’র সুযোগ নিয়ে ভারতের রিলায়েন্স ও আদানি গ্র“পের সাথে যথাক্রমে ৩ হাজার ও ১৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের চুক্তি স্বাক্ষর করা হয়েছে। কেন, কি প্রয়োজনে, কোন চাপে, কি বাধ্যবাধকতায় শতভাগ জাতীয় স্বার্থ পরিপন্থী এই চুক্তি করা হয়েছে তার বিস্তারিত জানার অধিকার দেশবাসীর রয়েছে। ভারতের জালিয়াত কোম্পানী এনটিপিসির কর্তৃত্বাধীন রামপালে সুন্দরবন বিনাশী কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্পও অব্যাহত রাখা হয়েছে। দেশবাসীর মতামত উপেক্ষা করে নিছক ভারতকে খুশী রাখতেই সরকার ইউনেসকোসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উদ্বেগকে আমলে না নিয়ে প্রাণ, প্রকৃতি ও জীববৈচিত্র্য ধ্বংসকারী এই প্রকল্পের কাজ এগিয়ে নিচ্ছে। ভারতের সাথে বাণিজ্যিক ভারসাম্যে বাংলাদেশের যে বিশাল ঘাটতি তা নিরসনে এবারও আশ্বাসের বাইরে বস্তুগত কিছু পাওয়া যায়নি।
আমরা এমন এক বৈশ্বিক বাস্তবতায় বাস করছি যেমন উন্নয়ন, অগ্রগতি ও শান্তির জন্য প্রতিবেশী দেশ, সরকার ও জনগণের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা, সম্প্রীতি ও বোঝাপড়া অত্যন্ত আবশ্যক। তবে তা হতে হবে সমমর্যাদা, শ্রদ্ধা ও সার্বভৌমত্বের যথাযথ স্বীকৃতি এবং সর্বোপরি বিভিন্ন দেশ ও জনগণের মধ্যে গণতান্ত্রিক সম্পর্ক কাঠামোর ভিত্তিতে। এই দৃষ্টিভঙ্গি ও অবস্থান থেকেই আমরা ক্ষমতা, ন্যায্যতা ও আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যকার দ্বি-পাক্ষিক সকল সমস্যার সমাধানের নীতি গ্রহণ করা প্রয়োজন বলে মনি করি। দুঃখজন হলেও সত্য যে দ্বি-পাক্ষিক সমস্যা সমাধানে ভারত কখনই এই নীতি অবস্থান গ্রহণ করেনি।