Sunday, October 6, 2024
Homeছাত্র ফ্রন্টসমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার ১০ম সম্মেলন অনুষ্ঠিত

সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার ১০ম সম্মেলন অনুষ্ঠিত

ইভা মজুমদার সভাপতি ও সালমান সিদ্দিকী সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত

IMG_4253

সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার ১০ম সম্মেলন  ৩ ডিসেম্বর ’১৫ সকাল সাড়ে ১১টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহাসিক বটতলায় অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী ইভা মজুমদার সভাপতি এবং বিশ্বধর্ম ও সংস্কৃতি বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী সালমান সিদ্দিকী সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন। মোট ১১ সদস্যের বিশ্ববিদ্যালয় কমিটি গঠিত হয়েছে। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন – সহ-সভাপতি: সুস্মিতা রায় সুপ্তি, সাংগঠনিক সম্পাদক প্রগতি বর্মণ তমা, দপ্তর সম্পাদক ভজন বিশ্বাস, অর্থ সম্পাদক গোবিন্দ চন্দ্র দাস, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক সাদিকুল ইসলাম, পাঠাগার সম্পাদক পীযূষ রায়, স্কুল সম্পাদক নিখিল চন্দ্র নাথ, সহ-সম্পাদক- খোকন মোহন্ত এবং সদস্য আমেনা নিতু।

সম্মেলনে বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. সামিনা লুৎফা, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (মার্কসবাদী) কেন্দ্রীয় কার্যপরিচালনা কমিটির সদস্য কমরেড ফখরুদ্দিন কবির আতিক এবং সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট, কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি সাইফুজ্জামান সাকন। সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সদ্যবিদায়ী সভাপতি রাশেদ শাহরিয়ার।

IMG_4204আলোচনায় বক্তাদের মধ্যে ড. সামিনা লুৎফা বলেন, ‘সামগ্রিকভাবে দেশের পরিস্থিতি যে জায়গায় গেছে তাতে ব্যক্তিগতভাবে কেউ আজ নিরাপদ থাকতে পারছে না। শুধু নিজেদের কথা ভেবে পাশের মানুষটিকেও রক্ষা করা যাচ্ছে না। চরম অসহিঞ্চুতার যে পরিবেশ তৈরি হয়েছে তাতে মতভিন্নতা হলে খুন পর্যন্ত করা হচ্ছে। এ অবস্থায় মানুষের মতো বাঁচতে হলে ঐক্যবদ্ধ হওয়া ছাড়া আমাদের সামনে কোনো বিকল্প পথ নেই।’

তিনি আরও বলেন, ‘তিন ধারায় বিভাজিত আমাদের দেশের শিক্ষাব্যবস্থা তিন ধরনের মানুষ তৈরি করছে। একইসাথে শিক্ষার বাণিজ্যিকীকরণ শুরু হয়েছে একদম শিক্ষাব্যবস্থার শুরু থেকে। সরকার প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষার ক্ষেত্রে দায়িত্ব নিচ্ছে না। পিইসি পরীক্ষা চালু করে শিশুদের ঠেলে দেয়া হয়েছে চরম প্রতিযোগিতা-প্রতিদ্বন্দ্বিতার মধ্যে। এই অবস্থায় উচ্চশিক্ষার কি হাল তা আজ সবার সামনেই স্পষ্ট হয়ে উঠছে। এই শিক্ষা ব্যবস্থা মানবিক মানুষের জন্ম দিতে পারছে না। আগামী ২০ বছর পর সমস্যা আরও গভীরতর হবে, ঘনীভূত হবে। তাই নিজেকে, পাশের প্রিয় মানুষটিকে বাঁচাতে হলে আজ শিক্ষাব্যবস্থা পাল্টানোর এই সংগ্রামে সকলকে শামিল হতে হবে। এটা আমাদের নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষার জন্যই প্রয়োজন।’

কমরেড ফখরুদ্দিন কবির আতিক বলেন, ‘পত্রিকায় খবর আসছে দেশে প্রায় এক লক্ষ কোটি টাকা অলস পড়ে আছে। এই বিশাল পরিমাণ টাকা লুটপাট করে মালিক হয়েছে দেশের ধনিকশ্রেণী। আমরা দেখছি একদিকে এমন বিপুল পরিমাণ টাকা অল্প কিছু মানুষের হাতে সঞ্চিত, অন্যদিকে কোটি কোটি অসহায়, নিরন্ন, বুভুক্ষু মানুষ। এই সামাজিক বৈষম্যের বিরুদ্ধে ছাত্রদের রুখে দাঁড়াতে হবে। বৈষম্যের এই পরিস্থিতি টিকিয়ে রাখার জন্য সরকার প্রতিক্রিয়ার শক্তিকে টিকিয়ে রাখছে, শক্তিশালী করছে। ফলে একের পর টার্গেট কিলিং হচ্ছে অথচ সরকার নির্বিকার। দেশে অনিরাপত্তার পরিবেশ যারা তৈরি করছে, তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ না করলেও, প্রতিবাদকারীদের উপর যত নিয়ন্ত্রণ এবং অত্যাচার। এরই অংশ হিসেবে ফেসবুক বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এই অগণতান্ত্রিক পরিবেশ দেশে বিরাজমান বলেই প্রতিক্রিয়াশীল শক্তি দিনদিন শক্তিশালী হচ্ছে।’

সাইফুজ্জামান সাকন বলেন, ‘একদিকে সারাদেশে অনিরাপদ পরিবেশ অন্যদিকে শিক্ষাঙ্গণে সন্ত্রাস-দখলদারিত্ব। যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অন্যায়-অবিচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ-প্রতিরোধের কারণে সারাদেশের মানুষের কাছে আশা-আকাক্সক্ষার প্রতীকে পরিণত হয়েছিল, আজ সেখানে সরকারের দলীয় ও দুর্বৃত্তায়িত রাজনীতি শিক্ষার্থীদের একুশ শতকের দাসে পরিণত করছে। ফলে শিক্ষার বাণিজ্যিকীকরণ-বেসরকারিকরণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের কণ্ঠ তেমন উচ্চকিত হচ্ছে না। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে এখন ১ লক্ষ ৩৭ হাজার টাকা দিয়ে অনার্স পড়তে হচ্ছে, হলে ছাত্রত্ব নবায়ন ফি’র নামে ৩৬০০ টাকা অযৌক্তিক ফি ধার্য করা হচ্ছে, একের পর এক বিভাগে খোলা হচ্ছে বাণিজ্যিক নাইটকোর্স। অনেক শিক্ষকও এই প্রক্রিয়ার সাথে নিজেদের যুক্ত করেছেন। এই অবস্থায় ছাত্র-শিক্ষক সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে শিক্ষার বাণিজ্যিকীকরণ-বেসরকারিকরণ এবং সন্ত্রাস-দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে হবে।’
আলোচনা সভা শেষে একটি সুসজ্জিত র‌্যালি ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে।

IMG_4239

RELATED ARTICLES

আরও

Recent Comments