Saturday, November 23, 2024
Homeসংবাদ ও প্রেস বিজ্ঞপ্তিপার্টি ও সংগঠন সংবাদঅক্টোবর বিপ্লব শতবর্ষ উদযাপনের উদ্বোধনী সমাবেশ ৬ অক্টোবর

অক্টোবর বিপ্লব শতবর্ষ উদযাপনের উদ্বোধনী সমাবেশ ৬ অক্টোবর

22154453_1793735820656131_4838270746205018570_n

অক্টোবর বিপ্লবের শতবর্ষ উদযাপন উপলক্ষে অক্টোবর বিপ্লব শতবর্ষ উদযাপন জাতীয় কমিটির এক সংবাদ সম্মেলন ৪ অক্টোবর ২০১৭ সকালে পুরানা পল্টনস্থ মুক্তি ভবনে অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, “১৯১৭ সালের অক্টোবর বিপ্লব সভ্যতার ইতিহাসে এক অসামান্য ঘটনা। অক্টোবর বিপ্লবের অনেকগুলো তাৎপর্যের মধ্যে রয়েছে এর আন্তর্জাতিকতা, সম্পদের পুঁজিবাদী মালিকানার জায়গাতে সামাজিক মালিকানা প্রতিষ্ঠা এবং মুনাফার লোলুপ পৃথিবীতে আত্মকেন্দ্রিকতাকে হটিয়ে মনুষ্যত্বের সহমর্মিতার ও সহযোগিতার জগৎ প্রতিষ্ঠা এবং বৈজ্ঞানিকতা। এই বিপ্লব দেখিয়েছে যে, মালিকানা যদি ব্যক্তিগত থাকে তাহলে সকল উদ্ভাবন ও উন্নয়ন চলে যায় কতিপয় ব্যক্তির হাতে, যারা জ্ঞান ও বিজ্ঞানকে ব্যবহার করে শোষণ ও লুণ্ঠনের কাজে, মুনাফার নির্লজ্জ স্বার্থে। পুঁজির মালিকেরা মানুষ ও প্রকৃতি উভয়ের সঙ্গে শত্রুতা করে। তারা যুদ্ধ বাধায়, মারণাস্ত্রের উন্নয়নে বিজ্ঞানী ও বৈজ্ঞানিক জ্ঞানকে ব্যবহার করে দাসানুদাস হিসেবে, ব্যবসা করে অস্ত্রের ও মাদকের। পুঁজিবাদের কঠিন কুঠারাঘাতে প্রকৃতি আজ বিপন্ন হয়ে পড়েছে। প্রকৃতিকে বিরূপ করার জন্য দায়ী পুঁজিবাদী বিশ্বের বিলাস ও ভোগবাদিতা, এর ভুক্তভোগী বিশ্বের গরীব মানুষ। প্রাচুর্যের ভেতর দারিদ্র্য পুঁজিবাদেরই অনিবার্য ফসল। পুঁজিবাদীরা বর্তমানকেই সবকিছু মনে করে, ইতিহাস-ঐতিহ্যকে মূল্য দেয় না, ধারণা করে ভবিষ্যৎ হবে তাদের বর্তমান আধিপত্যেরই রঙ্গীন সম্প্রসারণ। পুঁজিবাদীদের হাতে পৃথিবী আজ আক্ষরিক অর্থেই বিপদগ্রস্ত। ১৯১৭ সালের সমাজতান্ত্রিক বিপ্লব চেয়েছিল পুঁজিবাদের ক্রমবর্ধমান দুঃসহ দৌরাত্ম্যকে প্রতিহত করে একটি মানবিক বিশ্ব গড়ে তুলতে।”

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন অক্টোবর বিপ্লব উদযাপন জাতীয় কমিটির আহ্বায়ক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী। সঞ্চালনা করেন উদযাপন কমিটির সমন্বয়কারী হায়দার আকবর খান রনো। উপস্থিত ছিলেন সিপিবি’র সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, বাসদ (মার্কসবাদী) এর কেন্দ্রীয় নেতা শুভ্রাংশু চক্রবর্ত্তী, জাতীয় গণফ্রন্ট এর আহ্বায়ক টিপু বিশ্বাস, বিপ্লবী ওয়াকার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকী, ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগের কেন্দ্রীয় নেতা আব্দুস সাত্তার, বাসদ এর কেন্দ্রীয় নেতা বজলুর রশীদ ফিরোজ, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের আহ্বায়ক হামিদুল হক, গণমুক্তি ইউনিয়নের আহ্বায়ক নাসিরুদ্দিন নাসু, গরীবমুক্তি আন্দোলনের শামসুজ্জামান মিলন, বাসদের মহিনউদ্দিন লিটন প্রমুখ।

সংবাদ সম্মেলনে আরো বলা হয়, “সোভিয়েত সমাজতান্ত্রিক ব্যবস্থা আজ আর নেই। ৭০ বছর স্থায়ী হবার পর তার যে পতন ঘটেছে, তা সমাজতন্ত্রের পতন নয়, ধাপে ধাপে সমাজতন্ত্রের চিন্তা থেকে সরে আসার ফল। ছিল বাইরে থেকে পুঁজিবাদীদের উৎপাত, অবরোধ ও আক্রমণ। সোভিয়েতের পতনের ফলে সারা পৃথিবীর মানুষকে আজ চরম মূল্য দিতে হচ্ছে। মানুষের ক্ষোভ ও দুর্দশা জানিয়ে দিচ্ছে সভ্যতা কোন বর্বরতায় গিয়ে পৌঁছেছে!। এ ব্যবস্থা চললে পৃথিবীর ধ্বংসই ঠেকিয়ে রাখা অসম্ভব হবে। বলা হচ্ছে নৈতিকতার অধঃপতন ঘটেছে। কিন্তু আসল সত্য হলো এই যে, পুঁজিবাদ তার নিজস্ব নৈতিকতাকেই সর্বত্র ছড়িয়ে দিয়েছে। এই নৈতিকতা মনুষ্যত্বের মর্যাদা দেয় না; মুনাফা চেনে, ভোগলালসায় অস্থির থাকে, মানবিক বিবেচনাগুলোকে পদদলিত করে। এটি বোঝার জন্য একটি উদাহরণই যথেষ্ট। সম্প্রতি মায়ানমারে যখন গণহত্যা চলছে, প্রাণভয়ে রোহিঙ্গারা পালিয়ে আসছে বাংলাদেশে, সেই সময় সমাজতন্ত্রবিচ্যুত চীন দাড়িয়েছে পীড়নকারী মিয়ানমার সরকারের পক্ষে। রাশিয়ার আচরনও একই রকম। যে ভারত আমাদের মুক্তিযুদ্ধের সময় এক কোটি মানুষকে আশ্রয় দিয়েছে, সেও দাঁড়িয়েছে মিয়ানমারের পক্ষে। কারণ একই- পুঁজিবাদী স্বার্থ। সমাজতন্ত্রের অনিবার্যতা ও প্রাসঙ্গিকতা এভাবে বার বার সামনে আসছে। ফলে অক্টোবর বিপ্লবের শতবর্ষ উদযাপন কোন আনুষ্ঠানিকতা নয়, বরং এমন একটি উদ্দীপনা সৃষ্টি করা যা সমাজতন্ত্রের পক্ষে দাঁড়ানো মানুষদেরকে ঐক্যবদ্ধ হতে উদ্বুদ্ধ করবে এবং সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলনকে বেগবান করবে।”
সংবাদ সম্মেলন থেকে আগামী ৬ অক্টোবর বিকেল ৩ টায়, শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে অনুষ্ঠেয় উদ্বোধনী সমাবেশ সফল করার জন্য সর্বস্তরের মানুষের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।

RELATED ARTICLES

আরও

Recent Comments