বাংলাদেশ নারীমুক্তি কেন্দ্রে কেন্দ্রীয় সভাপতি সীমা দত্ত ও সাধারণ সম্পাদক মর্জিনা খাতুন এক যুক্ত বিবৃতিতে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী এবং ঐ কলেজের নাট্য সংগঠন ’ভিক্টোরিয়া কলেজ থিয়েটারের’ সদস্য সোহাগী জাহান তনুর ধর্ষণকারী ও হত্যাকারীদের অবিলম্বে গ্রেফতার-বিচার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন।
বিবৃতি আরো বলেন, গত ২০ মার্চ রাত সাড়ে সাতটায় টিউশন শেষে বাসা ফেরার পথে সোহাগী জাহান তনুকে নরপশুরা ধর্ষণের পর নৃশংসভাবে হত্যা করে। তার লাশ ময়নামতি সেনানিবাসের অলিপুর এলাকায় একটি কালভার্টের কাছে উদ্ধার করা হয়েছে। বাবা যখন মেয়ের এই লাশের সন্ধান পান তখন কি সরকারের কর্তা ব্যক্তিরা ভাবেন, সাধারণ মানুষ কি নিরাপত্তাহীনতায় দিন কাটাচ্ছেন ? বিচারহীনতার সংস্কৃতি মানুষকে দুর্বিষহ জীবনের দিকে ঠেলে দিচ্ছে । যে মেয়ে টিউশনি করে নিজের পড়ালেখার খরচ চালায় সে মেয়ের এই কি পরিণতি হবে?
সারাদেশে যে ভয়াবহ নারী নির্যাতন, ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনা ঘটছে তার তথ্য দেখলেই যে কোন বিবেকবান মানুষ শিউরে উঠবে। কোন্ দেশে আমরা বাস করছি যেদেশে বছরে ৪ হাজার ৪৩৬ জন নারী ধর্ষণসহ বিভিন্নভাবে নির্যাতনের শিকার হয়। কিন্তু রাষ্ট্র এই ধর্ষণকারী-নির্যাতনকারীদেরকে বিচারের আওতায় আনেনি। বরং বর্ষবরণে নারী লাঞ্ছনার ঘটনার বিচার নিয়ে প্রহসন চলছে। রাষ্ট্রের মন্ত্রীরা তাদের বক্তব্যের মাধ্যমে লাঞ্ছনাকারীদের মদদ দিয়েছে, পৃষ্ঠপোষকতা দান করছে। ফলে এই দায়িত্বহীন বক্তব্য শহর থেকে গ্রাম পর্যন্ত দুবৃত্ত্কারীদেরকেই অপরাধ সংঘটনে উৎসাহী করেছে। বিচারহীনতার এই সংস্কৃতি নারীসমাজ সহ সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা কেড়ে নিয়েছে। তাই তনু হত্যাকারিদের অবিলম্বে গ্রেফতার-বিচার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। আর এর মধ্যদিয়ে দেশে যে বিচারহীনতার সংস্কৃতি চলছে সেই সংস্কৃতির অবসান ঘটবে। তাই উচ্চকন্ঠে আওয়াজ তুলুন- “তনু হত্যার সাথে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই, জনগনের জান-মালের নিরাপত্তা চাই।” তনুর মতো আর কোন মেয়ের জীবনে যেন এই পরিণতি না আসে তার জন্য আমাদের প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহবান করেছেন।