বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (মার্কসবাদী) এর সাধারণ সম্পাদক কমরেড মুবিনুল হায়দার চৌধুরী এক বিবৃতিতে ২৬ ফেব্রুয়ারি আনুমানিক রাত ৯টায় মুক্তমনা ব্লগের প্রতিষ্ঠাতা, বিশিষ্ট বিজ্ঞান লেখক অভিজিৎ রায়ের হত্যার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি-তে এত এত পুলিশ, নিরাপত্তা বাহিনী, বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার উপস্থিতিতেই এ ধরণের হত্যাকান্ড ঘটানোর পরও ঘাতকদের নির্বিঘ্নে পালিয়ে যাবার ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ জানান এবং অবিলম্বে দোষীদের গ্রেফতার ও সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি করেন। এই ঘটনায় অভিজিৎ রায়ের স্ত্রী এবং বিজ্ঞান লেখক রাফিদা আহমেদ বন্যাও গুরুতরভাবে আহত হয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘যেকোন প্রতিবাদী-যুক্তিবাদী-প্রগতিশীল মানুষ একটি স্বৈরাচারী-কূপমন্ডূক সমাজব্যবস্থার জন্য হুমকিস্বরূপ। রাষ্ট্রও বারে বারে এ ধরনের মানুষের বিরুদ্ধে খড়গহস্ত হয়। দমন-পীড়ন চালায়। বাংলাদেশে গত ৪৩ বছর ধরে মুক্তবুদ্ধি-প্রগতিশীলতার চর্চার বিরুদ্ধে রাষ্ট্র এবং সরকার অবস্থান নিয়েছে। রাষ্ট্র পরিণত হয়েছে স্বৈরাচারে, ফলে এখানে গণতন্ত্র, গণতান্ত্রিক রীতিনীতির প্রতিফলন ঘটেনি। একটি গণতান্ত্রিক দেশে স্বাচ্ছন্দ্যে নিজের মত প্রকাশের ন্যূনতম অধিকারটুকুও এখানে আর অবশিষ্ট নেই। গায়ের জোরে ক্ষমতায় টিকে থাকা কিংবা জবরদস্তির মধ্যে কখনই মুক্তবুদ্ধির চর্চা হতে পারে না। বছরের পর বছর ধরে নিকৃষ্ট দলবাজির মাধ্যমে যারা এমন অগণতান্ত্রিক পরিবেশ তৈরি করে রেখেছে তারাই এই হত্যাকান্ডের প্রেক্ষাপট তৈরি করেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘একটি অগণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থার মধ্যেই মৌলবাদ-জঙ্গিবাদ বিকাশের সুযোগ পায়। একই ঘটনা বাংলাদেশে ঘটেছে। নানাভাবে এখানে উগ্র গোষ্ঠীর তৎপরতা বৃদ্ধি পেয়েছে। এইসব মৌলবাদী শক্তি গত ৪৩ বছরে শাসকগোষ্ঠীর প্রশ্রয়-আশ্রয়ে অর্থনৈতিক-সামাজিক-রাজনৈতিকভাবে পরিপুষ্ট হয়েছে। ক্ষমতাসীন দুই দল ক্ষমতায় যাবার সিঁড়ি হিসেবে এদেরকে ব্যবহার করেছে। এদের দ্বারা সংগঠিত অনেক হত্যাকান্ডের বিচার আজও হয়নি। গত ২০০৪ সালে প্রথাবিরোধী লেখক, গবেষক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. হুমায়ূন আজাদের উপর বর্বর আক্রমণ হয়েছে। বারবার মুক্তবুদ্ধি ও প্রগতিশীল ব্যক্তিবর্গই এই আক্রমণের শিকার হয়েছেন। অভিজিৎ রায়কেও অনেক আগে থেকেই উগ্রবাদী-জঙ্গি গোষ্ঠীদের তরফ থেকে হত্যার হুমকি দেয়া হয়েছিল, যা বিভিন্ন সময়ে প্রচার মাধ্যমে এসেছিল। কিন্তু এসবের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। এরই ফলাফলে এমন একটি মর্মান্তিক ঘটনা ঘটলো।’
কমরেড মুবিনুল হায়দার চৌধুরী এই দুঃসময় মোকাবেলা করতে সকল প্রগতিশীল, গণতান্ত্রিক, শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষদের ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানান। একটি সেক্যুলার-গণতান্ত্রিক-বিজ্ঞা