রোকেয়া দিবসের আলোচনা সভায় কমরেড মুবিনুল হায়দার চৌধুরী
“রোকেয়া শুধু নারী জাগরণের পথিকৃৎ ছিলেন তাই নয়, সেই সময়ে বাঙালি মুসলমান সমাজে চিন্তা-চেতনায় তাঁর সমকক্ষ কেউ ছিলেন না। তিনি ছিলেন সবার চেয়ে এগিয়ে। তিনি শুধু নারীশিক্ষা প্রসারের জন্য লড়াই করেননি, সমাজের কুপমুণ্ডক চিন্তা-চেতনার বিরুদ্ধেও তিনি কলম ধরেছেন। অর্থাৎ শুধু নারীদের জন্য কিছু করা নয়, তিনি গোটা সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি ও বিচারধারাই পাল্টে দেয়ার লড়াই করেছেন। তিনি তখনকার পুরুষতান্ত্রিক সমাজকে এও দেখিয়েছেন যে নারীদের ক্রমাগত বিকাশ ছাড়া পুরুষরাও সম্পূর্ণরূপে বিকশিত হতে পারে না। পুরুষ যখন গ্রহ-নক্ষত্রের গতি পরিমাপ করছেন, নারী তখন বালিশের ওয়ারের দৈর্ঘ্য প্রস্থ মাপছেন। নারী-পুরুষের মিলিত এই সমাজেও নারীকে এত পেছনে ফেলে রাখলে পুরুষের চিন্তাও একদিন পিছিয়ে পড়তে বাধ্য। নিজে পর্দাপ্রথার পক্ষে ছিলেন না। কিন্তু স্কুল রক্ষার জন্য পর্দা করেছেন। অর্থাৎ একটি বড় সত্যকে প্রতিষ্ঠার জন্যে ব্যক্তিগত জীবনে অনেক কষ্ট সহ্য করেছেন, অপমান সহ্য করেছেন। কিন্তু এতে ক্ষুব্ধ হয়ে গিয়ে উদ্দেশ্যকে গোলমাল করেননি। এরকম মহৎ দৃষ্টান্ত ভারতবর্ষের নবজাগরণের মহৎ চরিত্র বিদ্যাসাগরের জীবনেও দেখা যায়। রোকেয়া ছিলেন তাঁরই যোগ্য উত্তরসূরী।” রোকেয়া দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় কমরেড মুবিনুল হায়দার চৌধুরী উপরোক্ত কথাগুলো বলেন।
৯ ডিসেম্বর বাংলার নারী জাগরণের পথিকৃৎ বেগম রোকেয়ার ১৩৩তম জন্ম ও ৮১তম মৃত্যু দিবস। এ উপলক্ষে বাংলাদেশ নারী মুক্তিকেন্দ্র ঢাকা নগর শাখা এ দিন সকাল ৮টায় বেগম রোকেয়া হল ঢা.বি.-তে রোকেয়া ভাস্কর্যে পুষ্পমাল্য অর্পণ, বিকেল ৩টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে থেকে টিএসসি পর্যন্ত মিছিল এবং বিকাল ৪টায় টিএসসি সেমিনার কক্ষে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। সংগঠনের ঢাকা নগর শাখার সভাপতি এড. সুলতানা আক্তার রুবির সভাপত্বিতে ও সাধারণ সম্পাদক তাসলিমা নাজনীন সুরভীর পরিচালনায় প্রধান আলোচক হিসেবে আলোচনা করেন বাসদ কনভেনশন প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক কমরেড মুবিনুল হায়দার চৌধুরী। আরো আলোচনা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও নাট্যকার সামিনা লুৎফা নিত্রা, সংগঠনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মর্জিনা খাতুন। অনুষ্ঠানে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করে চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্র।
রোকেয়া দিবসের আরও সংবাদ
কারমাইকেল কলেজ : সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট কারমাইকেল কলেজ শাখার উদ্যোগে ৯ ডিসেম্বর সকাল ১১টায় কলেজ ক্যাম্পাসে মিছিল-আলোচনা সভা ও রচনা প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠিত হয়। সংগঠনের কলেজ কমিটির সভাপতি রেদওয়ানুল ইসলাম বিপুলের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন কলেজ অধ্যক্ষ প্রফেসর শাহ মোহাম্মদ মোকছেদ আলী, বাংলা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান প্রফেসর শাহানা বেগম, অর্থনীতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আব্দুর রাজ্জাক, ইংরেজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক দিলীপ কুমার রায়, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের কেন্দ্রীয় সদস্য ও জেলা সভাপতি আহসানুল আরেফিন তিতু,কলেজ শাখার সাধারণ সম্পাদক আবু রায়হান বকশী,সাংগঠনিক সম্পাদক হোজায়ফা সাকওয়ান জেলিড প্রমুখ। সভাশেষে কলেজ অধ্যক্ষ্য রচনা প্রতিযোগিতার বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার তুলে দেন।