সম্মিলিত আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান নিয়ে অনুষ্ঠিত হল
শিক্ষা কনভেনশন
শিক্ষার বাণিজ্যিকিকরণ-বেসরকারিকরণ-সংকোচন নীতির বিরুদ্ধে সর্বাত্মক ও সম্মিলিত শিক্ষা আন্দোলন গড়ে তোলার প্রত্যয় ঘোষণা করে অনুষ্ঠিত হল শিক্ষা কনভেনশন। ২৩ সেপ্টেম্বর দিনব্যাপী এ কনভেনশন অনুষ্ঠিত হল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি অডিটোরিয়ামে।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ৫টি বিষয়ে বাণিজ্যিক নাইট কোর্স বন্ধ, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্ধিত বেতন-ফি প্রত্যাহার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিভি ও ফিল্ম স্টাডিজ বিভাগে ১ লক্ষ ৩৭ হাজার টাকা কোর্স ফি এবং রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে বাণিজ্যিক নাইট কোর্স বন্ধ, বাকৃবিতে বর্ধিত ফি প্রত্যাহার ও ছাত্র হত্যার বিচার, শাবিপ্রবি-তে ভর্তি ফরমের বর্ধিত মূল্য প্রত্যাহার ও যৌন নির্যাতনের বিচার – এরকম নানা দাবিতে আন্দোলনমুখর ছিল দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। এছাড়া জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা ফল বিপর্যয়, সেশনজট ও বর্ধিত ফি আরোপের প্রতিবাদে রাস্তায় নেমেছিল। এ আন্দোলনসমূহে পুলিশি হামলা ও প্রশাসনিক দমন-পীড়নের ন্যাক্কারজনক নজির যেমন আছে; অন্যদিকে আছে শিক্ষার্থী-শিক্ষকদের লড়াকু ও সাহসী ভূমিকা। এ সময়ের সবচেয়ে আলোচিত বিষয় ছিল একের পর এক প্রশ্নপত্রফাঁসের ঘটনা। এ রকম একটি পরিস্থিতিতেই ছাত্র ফ্রন্ট শিক্ষা কনভেনশনের ডাক দেয়।
শিক্ষা কনভেনশন উপলক্ষে ছাত্র ফ্রন্টের পক্ষ থেকে বর্তমান শিক্ষা সংকটের চিত্র তুলে ধরে একটি ছোট পুস্তিকা প্রকাশ করা হয়। জুন মাস থেকে শিক্ষার্থীদের কাছে বইটি নিয়ে যাওয়া হয়। শিক্ষাবিদ-অভিভাবক-পেশাজীবীদের সাথে পুস্তিকা নিয়ে মতবিনিময় আয়োজন করা হয়। কলেজে কলেজে ছাত্রদের সাথেও মতবিনিময় করা হয়। এর সাথে সাথে শিক্ষা কনভেনশনে অংশগ্রহণেচ্ছুকদের রেজিস্ট্রেশন করানো হয়। শিক্ষা কনভেনশনের পূর্ব নির্ধারিত তারিখ ছিল ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৪। যুদ্ধাপরাধী দেলোওয়ার হোসেন সাঈদীর রায়ে ঘাতক ও সাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক শক্তি জামাত লোক দেখানো প্রতিবাদ কর্মসূচি ঘোষণা করে। এর সাথে ছিল প্রাকৃতিক প্রতিকূলতা, নিম্নচাপের কারণে কয়েকদিন ধরে বৃষ্টি। এসব প্রতিকূলকতা উপেক্ষা করেই শেষ পর্যন্ত শিক্ষা কনভেনশন সফলভাবে সমাপ্ত হল।
শিক্ষা কনভেনশনের প্রথম অধিবেশনে ‘শিক্ষার সর্বজনীন অধিকার ও শিক্ষার বাণিজ্যিকীকরণ-বেসরকারিকরণ’ শীর্ষক ধারণা পত্রটি উপস্থাপন করেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক রাশেদ শাহরিয়ার। এ অধিবেশনে আলোচনা করেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক আবুল কাশেম ফজলুল হক, সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সামিনা লুৎফা নিত্রা, বাসদ নেতা ফখরুদ্দিন কবির আতিক, কুড়িগ্রামের রৌমারীর স্কুল শিক্ষক আবদুর রাজ্জাক এবং গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনীতি ও প্রশাসন বিভাগের প্রভাষক আসিফ চৌধুরী। প্রথম অধিবেশন শেষে শিক্ষার দর্শন নিয়ে বিভিন্ন মনীষীর কোটেশন ও দাবি সম্বলিত প্ল্যাকার্ড, ফেস্টুন ও সংগঠন পতাকা নিয়ে একটি মিছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রদক্ষিণ করে।
শিক্ষা কনভেনশনের দ্বিতীয় অধিবেশন শুরু হয় বিকাল সাড়ে তিনটায়। শুরুতে বক্তব্য রাখেন বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে আগত ছাত্র প্রতিনিধিরা। পার্বত্য অঞ্চলের শিক্ষাচিত্র নিয়ে বক্তব্য রাখেন কলিন চাকমা, বাকৃবি’র আন্দোলনের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেন আশরাফ মিলটন, কারমাইকেল কলেজের আবু রায়হান বকসি তুলে ধরেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সংকটের নানা চিত্র, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সুস্মিতা রায় সুপ্তি, প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র প্রতিনিধি অরূপ দাস শ্যাম, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলে রাব্বী নিজ নিজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরিস্থিতি তুলে ধরেন। দ্বিতীয় অধিবেশনের ধারণা পত্র ‘শিক্ষার দর্শন ও রাষ্ট্রের দায়িত্ব’ উপস্থাপন করেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য নাঈমা খালেদ মনিকা।
এ অধিবেশনে আলোচনা করেন বাসদ কনভেনশন প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক কমরেড মুবিনুল হায়দার চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক তানজিম উদ্দিন খান, বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মোহাম্মদ আজম, জয়পুরহাট মহিলা ডিগ্রি কলেজের প্রভাষক কৃষ্ণ কমল এবং প্রগতিশীল ছাত্র জোটের সমন্বয়ক ও বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি হাসান তারেক। শিক্ষা কনভেনশনের ঘোষণা পাঠ করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক স্নেহাদ্রি চক্রবর্ত্তী রিন্টু। শিক্ষা কনভেনশনের সমাপনী অধিবেশন সভাপতি সাইফুজ্জামান সাকনের বক্তব্যের মাধ্যমে শেষ হয়। তিনি ছাত্র-শিক্ষক-শিক্ষাবিদ-অভিভাবকসহ সকলের প্রতি এই আন্দোলনে শামিল হবার আহবান জানান।
সারাদেশে মতবিনিময় সভা
শিক্ষার বানিজ্যিকীকরণ-বেসরকারিকরণ-সংকোচন নীতির বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তোলার আহবান জানিয়ে গত ২৩ সেপ্টেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি অডিটোরিয়ামে ‘শিক্ষা কনভেনশন’ আয়োজন করেছে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট। এর পূর্বে মাসব্যাপী সারাদেশে শিক্ষাবিদ-শিক্ষক-অভিভাবক-বুদ্ধিজীবী ও শিক্ষানুরাগী মানুষকে যুক্ত করে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সিলেট : ছাত্র ফ্রন্ট সিলেট নগর শাখার উদ্যোগে ২৯ আগস্ট বিকাল ৪টায় সিলেট সিটি কর্পোরেশন সম্মেলন কক্ষে এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। ছাত্র ফ্রন্ট সিলেট নগর কমিটির সভাপতি রেজাউর রহমান রানার সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক রুবাইয়াৎ আহমেদের পরিচালনায় আনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখেন জাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক লোকমান আহমেদ, গণতন্ত্রী পার্টি সিলেট জেলার সাধারণ সম্পাদক আরিফ মিয়া, সুজন সিলেট জেলার সভাপতি ফারুক মাহমুদ চৌধুরী, সিলেটের বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব অম্বরীষ দত্ত, বাসদ সিলেট জেলা আহ্বায়ক উজ্জ্বল রায়, মালনীছড়া চা বাগানের প্রধান শিক্ষক হৃদেশ মুদি, কলেজ শিক্ষক রয়েল আদিত্য, ছাত্র ফ্রন্ট কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক সত্যজিৎ বিশ্বাস, সদস্য নাঈমা খালেদ মনিকা, অভিভাবক আশীষ রায় প্রমুখ। মতবিনিময় সভায় এ ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন জাসদ সিলেট জেলার সাধারণ সম্পাদক কে.এম. কিবরিয়া, বিজ্ঞান চর্চা কেন্দ্রের কেন্দ্রিয় উপদেষ্টা ডা. ফাতেমা ইয়াছমিন, এড. হুমায়ুন রশীদ সোয়েব।
মহান শিক্ষা দিবসের ৫২তম বার্ষিকী উপলক্ষে ছাত্র ফ্রন্ট সিলেট নগর শাখার উদ্যোগে ১৭ সেপ্টেম্বর সিলেট জেলা পরিষদ মিলনায়তনে বিকাল ৩টায় আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন ছাত্র ফ্রন্ট সিলেট নগর শাখার সভাপতি রেজাউর রহমান রানা এবং পরিচালনা করেন সাধারণ সম্পাদক রুবাইয়াৎ আহমেদ। আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন প্রবীণ রাজনীতিবিদ গণতন্ত্রী পার্টি সিলেট জেলা শাখার সভাপতি ব্যারিস্টার আরশ আলী, বাসদ নেতা এড. হুমায়ুন রশীদ সোয়েব, ছাত্র ফ্রন্ট কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য নাঈমা খালেদ মনিকা, সংগঠনের নগর শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক সঞ্জয় কান্ত দাস, শাবিপ্রবি শাখার আহ্বায়ক অনীক ধর প্রমুখ।
চট্টগ্রাম : ছাত্র ফ্রন্ট চট্টগ্রাম নগর শাখার আয়োজনে মতবিনিময় সভা ৮ সেপ্টেম্বর স্টুডিও থিয়েটারে অনুষ্ঠিত হয়। সংগঠনের নগর শাখার সভাপতি তাজ নাহার রিপনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক আরিফ মঈনুদ্দীনের পরিচালনায় মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট মুক্তিযুদ্ধ গবেষক ডা. মাহফুজুর রহমান, লেখিকা প্রাক্তন অধ্যক্ষ আনোয়ারা আলম, প্রকৌশলী সুভাষ বড়ুয়া, কলামিস্ট সাখাওয়াত হোসেন মজনু, চমেক-এর প্যাথলজি বিভাগের সভাপতি ডা. জিল্লুর রহমান, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনষ্টিটিউটের অধ্যাপক আমির উদ্দীন, রেলওয়ে সিটি কর্পোরেশন স্কুলের প্রধান শিক্ষক উত্তম কুমার আচার্য, বাসদ নেতা অপু দাশ গুপ্ত, ডা. সুশান্ত বড়ুয়া, সিটি কর্পোরেশনের কাউন্সিলর জান্নাতুল ফেরদাউস পপি, সাংবাদিক দ্বৈপায়ন রনি, অভিভাবক শাহিন মঞ্জুর, নাইম উদ্দীন, ছাত্র ফ্রন্টের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সত্যজিৎ বিশ্বাস, চুয়েটের শিক্ষক রিগ্যান মজুমদার, এড. বিশুময় দেব প্রমুখ।
কোতোয়ালী থানা শাখার উদ্যোগে নগরীর ছাত্র-শিক্ষক-বুদ্ধিজীবিদের উপস্থিতিতে এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। ছাত্র ফ্রন্ট কোতোয়ালী থানা শাখার আহ্বায়ক মাহফুজা খাতুন মলির সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব মো. জাহেদের পরিচালনায় এ মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখেন প্রগতিশীল ডক্টরস ফোরামের আহ্বায়ক ডা. সুশান্ত বড়ুয়া, শাহ্ আউলিয়া কলেজের অধ্যাপিকা জুলেখা আক্তার, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট চট্টগ্রাম নগর শাখার সভাপতি তাজ নাহার রিপন ও নগরীর বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারী স্কুল ও কলেজের শিক্ষার্থীবৃন্দ।
বাঁশখালী : ছাত্র ফ্রন্ট বাঁশখালী উপজেলা শাখার উদ্যোগে ছাত্র-শিক্ষক অভিভাবক মতবিনিময় সভা ১৭ সেপ্টেম্বর বাঁশখালী উপজেলা সদরে বালিকা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন ছাত্র ফ্রন্ট চট্টগ্রাম নগর শাখার সাধারণ সম্পাদক আরিফ মাঈন উদ্দীন, বাঁশখালীর বাসদ সমন্বয়ক শিক্ষক অমৃত কারণ, বাঁশখালী উপজেলার আহ্বায়ক রিংকু দে, পৌরসভা আহ্বায়ক বাবু দত্ত। শিক্ষকদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির দপ্তর সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, শিক্ষক বাবলা দাশ, সিনিয়র শিক্ষক রতন কান্তি দে, শিক্ষক নেজাম উদ্দীন, শিক্ষক শিবানন্দ দে, শিক্ষক সত্যজিৎ বড়–য়া, অভিভাবক অমরজিৎ বড়–য়া, স্কাউট লিডার মো. রফিক, শিব্বির আহমদ, মো. সৈয়দ, রনধীর বড়–য়া, বাবলা দাশ, ছোটন দাশ, বিষু বিশ্বাস, রুপন বড়–য়া, পলাশ দাশ, ছাত্র ফ্রন্ট সদস্য বাঁশখালী ডিগ্রী কলেজের ছাত্রনেতা বাপ্পা দে, দীপ্ত ভট্টাচার্য্য, সাগর শীল, পবিত্র, জবা দে, আলাওল ডিগ্রী কলেজের ছাত্র নেতা রায়হান ওমর, জসীম উদ্দিন, কায়ছার হামিদ প্রমুখ।
রংপুর : ছাত্র ফ্রন্ট রংপুর জেলা শাখার উদ্যোগে ‘শিক্ষার বাণিজ্যিকীকরণ-বেসরকারিকরণ ও সংকোচনের ফলাফল এবং আমাদের করণীয়’ শীর্ষক মতবিনিময় সভা ১৭ সেপ্টেম্বর সকাল ১১টায় রাজা রামমোহন রায় ক্লাব মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়। জেলা সভাপতি আহসানুল আরেফিন তিতুর সভাপতিত্বে এবং সহ-সভাপতি রোকনুজ্জামান রোকনের পরিচালনায় মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখেন কারমাইকেল কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ শিক্ষাবিদ ড. রেজাউল হক, অধ্যাপক রিয়াজুল ইসলাম বসুনীয়া, সিপিবি’র রংপুর জেলা সভাপতি শাহাদাৎ হোসেন, বাসদ রংপুর জেলা সমন্বয়ক আনোয়ার হোসেন বাবলু, রংপুর প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ওয়াদুদ আলী, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক কলামিস্ট ড. তুহিন ওয়াদুদ, রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক রেজওয়ানুর রহমান, বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক বনমালী পাল, মুক্তিযোদ্ধা মোজাফফর হোসেন চাঁদ, সমাজ পরিবর্তন ও উন্নয়ন ফোরাম বিভাগীয় কমিটির সভাপতি সাংবাদিক এসএম পিয়াল, ডা. ইয়াসমিন আক্তার, বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের সমন্বয়কারী আরিফুল হক, সমাজকর্মী অলোক নাথ, ছাত্র ইউনিয়ন রংপুর জেলা সংসদের সভাপতি মাহমুদ হোসেন জুয়েল, ছাত্র ফেডারেশন কারমাইকেল কলেজ শাখার সাধারণ স¤পাদক রবিউল ইসলাম রনি, ছাত্র ফ্রন্ট কারমাইকেল কলেজ শাখার সভাপতি আবু রায়হান বকসী, ছাত্র ফ্রন্ট রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহবায়ক মনোয়ার হোসেন প্রমুখ।
গাইবান্ধা : ছাত্র ফ্রন্ট দাড়িয়াপুর অঞ্চল শাখার উদ্যোগে সুরেন্দ্রনাথ বর্মন মিলনায়তনে ‘শিক্ষার বেসরকারিকরণ-বাণিজ্যিকীকরণ ও সংকোচন নীতি প্রতিরোধ’ শীর্ষক মতবিনিময় সভা ১৮ আগষ্ট বিকেল ৫টায় অনুষ্ঠিত হয়। ছাত্র ফ্রন্ট দাড়িয়াপুর অঞ্চল সংগঠক শামছুন্নাহার দুলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখেন শিক্ষাবিদ কিরণময় চন্দ্র বর্মন, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব পরিতোষ কুমার বটু, বাসদ সদর উপজেলা শাখার সদস্য সচিব কাজী আবু রাহেন শফিউল্লাহ, ছাত্র ফ্রন্ট জেলা সভাপতি নিলুফার ইয়াসমিন শিল্পী, সাধারণ সম্পাদক বজলুর রহমান, মাহবুব আলম মিলন।
হবিগঞ্জ : ছাত্র ফ্রন্ট হবিগঞ্জ জেলা শাখার উদ্যোগে ৬ সেপ্টেম্বর বিকাল ৪টায় স্থানীয় আর.ডি.হলে এক মত বিনিময় সভার আয়োজন করা হয়। ছাত্র ফ্রন্ট জেলা সংগঠক শফিকুল ইসলামের সঞ্চালনায় মত বিনিময় সভায় আলোচনা করেন বৃন্দাবন সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. ইক্রামুল ওয়াদুদ, বাসদ কেন্দ্রীয় কনভেনশন প্রস্তুুতি কমিটির সদস্য মানস নন্দী, সরকারি মহিলা কলেজের সাবেক উপাধ্যক্ষ অধ্যাপক আব্দুজ জাহের চৌধুরী, বিশিষ্ট কবি ও প্রাবন্ধিক এম.এ. রব, হবিগঞ্জ জেলা আইনজীবি সমিতির সাবেক সহ-সভাপতি এড. মুরলী ধর দাস, জাসদ হবিগঞ্জ জেলার সভাপতি মো. খায়রুল মনসুর চৌধুরী, শচীন্দ্র কলেজের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের প্রধান দেবল চৌধুরী, বর্ণমালা খেলাঘর আসর হবিগঞ্জ জেলার সাধারণ সম্পাদক দিপুল কুমার রায়, সাবেক শিক্ষক কাওসার খসরু, ছাত্র ফ্রন্ট সিলেট নগর কমিটির সভাপতি রেজাউর রহমান রানা প্রমুখ।
রাঙ্গামাটি : সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট রাঙ্গামাটি জেলা শাখার উদ্যোগে ১৯ সেপ্টেম্বর সকালে আশিকা হল রুমে এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত। জয় কুমার চাকমার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বক্তব্য রাখেন, প্রকৃতি রঞ্জন চাকমা, সুনীল কান্তি দে, ডা. রূপম দেওয়ান, শফিউদ্দিন কবির আবিদ, এড. জুয়েল দেওয়ান, তনয় দেওয়ান, নির্মল বড়ুয়া, হেফাজতুল বারী সবুজ, মুক্তা ভট্টাচার্য, সুশীল প্রসাদ চাকমা, এম. জিসান বখতিয়ার প্রমুখ।
সভায় বক্তাগণ বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে কেউ উচ্চশিক্ষার বিপক্ষে নয়। তবে পার্বত্য চট্টগ্রামের বিশেষ পরিস্থিতি বিবেচনায় এখানে যা কিছু উদ্যোগ নেয়া হোক না কেন তা পার্বত্যবাসীর সাথে আলাপ-আলোচনা করে নিতে হবে। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনে সকলের মতামত নিতে হবে। কাউকে বসতভূমি থেকে উৎখাত করে এ প্রতিষ্ঠান নির্মাণ করা যাবে না। এক্ষেত্রে পাহাড়ি-বাঙ্গালি সকলে মিলেই তা প্রতিহত করতে হবে।
গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির গণবিরোধী পরিকল্পনা বাতিল কর
– বিক্ষোভ সমাবেশে বাসদ নেতৃবৃন্দ
গ্যাসের মূল্য দ্বিগুণেরও বেশি বাড়ানোর সরকারি পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে সংখ্যাগরিষ্ঠ মধ্যবিত্ত-নিম্নমধ্যবিত্ত-সীমিত আয়ের আবাসিক গ্রাহকদের জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধির ফলে তাদের আর্থিক দুর্দশা আরো প্রকট হবে। আবাসিক গ্রাহকদের ক্ষেত্রে গ্যাসের এই বিপুল মূল্যবৃদ্ধি অযৌক্তিক ও গণবিরোধী। গ্যাস ও ডিজেল-কেরোসিনের মূল্যবৃদ্ধির সরকারি পরিকল্পনা বাতিলের দাবিতে ১৫ অক্টোবর বিকাল সাড়ে ৪টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে বাসদ নেতৃবৃন্দ এ কথা বলেন। বাসদ কেন্দ্রীয় কনভেনশন প্রস্তুতি কমিটির সদস্য শুভ্রাংশু চক্রবর্ত্তীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন মানস নন্দী, উজ্জ্বল রায়, জহিরুল ইসলাম, ফখ্রুদ্দিন কবির আতিক প্রমুখ। সমাবেশের পর বিক্ষোভ মিছিল পল্টন-গুলিস্তান এলাকা প্রদক্ষিণ করে। সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেন, মূল্যবৃদ্ধির চাপে ইতোমধ্যে অধিকাংশ মানুষ সংসারের খরচ যোগাড় করতে হিমশিম খাচ্ছে, তার ওপর গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির এই ঘোষণায় তারা আতংকিত ও বিক্ষুব্ধ। সিলিন্ডার গ্যাসের দাম বেশি এই অজুহাতে সরকার পাইপলাইনে গ্যাস ব্যবহারকারীদের বিল বাড়াতে চায়, অথচ জনকল্যাণকামী সরকার হলে তাদের দায়িত্ব ছিল সিলিন্ডার গ্যাসের দাম কমানোর ব্যবস্থা নেয়া। বিদেশি কোম্পানির মাধ্যমে উত্তোলনের কারণে তাদের কাছ থেকে বেশি দামে গ্যাস কিনতে হচ্ছে, অথচ রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান পেট্রোবাংলা-বাপেক্স অনেক কম দামে গ্যাস সরবরাহ করছে। ফলে গ্যাসের উৎপাদন ব্যয় বৃদ্ধির জন্য প্রধানত দায়ী বিদেশি কোম্পানিগুলোর হাতে গ্যাসখাত তুলে দেয়ার সরকারি নীতি। এরপরও গ্যাস খাতে লোকসান হচ্ছে না, সরকার তার রাজস্ব বৃদ্ধির জন্যই গ্যাসের দাম বাড়ানোর তাগিদ দিচ্ছে। একইভাবে, ডিজেল-কেরোসিনের দাম বাড়লে গাড়িভাড়া বাড়বে, পরিবহন খরচ বাড়ায় দ্রব্যমূল্যও বেড়ে যাবে।
নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, মহাজোট সরকার একদিকে ‘উন্নয়নের জোয়ার’ এর কৃতিত্ব দাবি করছে, অন্যদিকে জনগণকে স্বল্পমূল্যে সেবা দেয়ার দায়িত্ব অস্বীকার করে বাণিজ্যিক দৃষ্টিভঙ্গিতে গ্যাস-জ্বালানি তেল-বিদ্যুৎ-পানি সবকিছুর দাম বাড়িয়ে সাধারণ মানুষের জীবন দুর্বিসহ করে তুলছে। সরকারের এইসব গণবিরোধী পদক্ষেপ প্রতিহত করতে গণআন্দোলনে শামিল হতে তারা দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানান।
সিলেট : গ্যাস ও ডিজেল-কেরোসিনের মূল্যবৃদ্ধির সরকারি পরিকল্পনা বাতিলের দাবিতে ১৮ অক্টোবর বিকাল সাড়ে ৪টায় বাসদ সিলেট জেলা শাখার উদ্যোগে এক বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। জিন্দাবাজার রাজা ম্যানশনস্থ দলীয় কার্যালয় থেকে মিছিল শুরু হয়ে নগরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে শিশু পার্কের সম্মুখে সমাবেশে মিলিত হয়।
বীজ-সার-কীটনাশকে ভর্তুকি, ন্যায্যমূল্য নিশ্চিতসহ ৮ দফা দাবিতে
আলুচাষী সংগ্রাম পরিষদ ও কৃষক ফ্রন্টের স্মারকলিপি
কেন্দ্রীয় কর্মসূচীর অংশ হিসাবে আলুচাষী সংগ্রাম পরিষদ এবং সমাজতান্ত্রিক ক্ষেতমজুর ও কৃষক ফ্রন্ট-এর উদ্যোগে ১৬ অক্টোবর সকাল ১১টায় রংপুরে মিছিল-সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। মিছিলের পূর্বে প্রেসক্লাবের সামনে অনুষ্ঠিত সমাবেশে আলুচাষী সংগ্রাম পরিষদের আহবায়ক বাসদ নেতা আনোয়ার হোসেন বাবলুর সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন বাসদের পলাশ কান্তি নাগ, আহসানুল আরেফিন তিতু, আলুচাষী মোহাম্মদ আলী, তসলিম উদ্দিন, নুর ইসলাম প্রমুখ। সমাবেশ শেষে মিছিল শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে এবং মিছিল শেষে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে কৃষিমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি প্রেরণ করা হয়।
নেতৃবৃন্দ বলেন, উচ্চ মূল্য বীজ-সার-ডিজেল-বিদ্যুৎ-কীটনাশক ক্রয় করে ফসল উৎপাদন এবং উৎপাদিত ফসলের ন্যায্যমূল্য না পাওয়া কৃষকদের জন্য যেন নিয়তি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রতি বছরই বাজার থেকে উচ্চমূল্যে কেনা বীজ আলু নির্ভেজাল কিনা তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। কীটনাশক-সারেরও একই অবস্থা। বেশিরভাগ কৃষকের মূলধন না থাকায় এবং সহজ শর্তে ব্যাংক ঋণ না পাওয়ায় মহাজনী সুদে অথবা ব্যবসায়ীদের কাছে আগাম আলু বিক্রির টাকা নিয়ে উৎপাদন খরচ জোগাড় করতে হয়। এতসব প্রতিকূলতা মোকাবেলা করে যে চাষীরা আলু উৎপাদান করে, তারা প্রতিবছরই আলুর ন্যায্যমূল্য পায় না। গত বছর দেশের বিভিন্ন এলাকায় শত শত বস্তা আলু রাস্তায় ফেলে চাষীরা ন্যায্যমূল্য না পাওয়ায় প্রতিবাদ করেছে। চাষীরা উৎপাদন খরচ তুলতে পারে না, অথচ চাষী ঘর থেকে যখন আলু ব্যবসায়ী মহাজনের ঘরে জমা হয় তখন আলুর মূল্য ৮/৯ গুণ বৃদ্ধি পায়। ফলে যে আলু ২ টাকা কেজি দরে চাষী বিক্রি করে, সে আলু মহাজনের ঘর থেকে ঘুরে বাজারে বিক্রি হয় ২০/২৫ টাকা দরে। শুধু ন্যায্যমূল্য না পাওয়াই নয়, আলু সংরক্ষণের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা না থাকাও এক বিরাট সমস্যা। সারাদেশে আলু সংরক্ষণের জন্য সরকারি উদ্যোগে একটিও কোল্ডস্টোরেজ নির্মিত হয়নি। বেসরকারি মালিকানাধীন কোল্ডস্টোরেজে বস্তা প্রতি ভাড়া কত হবে এবং সংরক্ষণ কি পদ্ধতিতে হবে, তার কোন সরকারি নীতিমালা নেই। ফলে মালিকেরা ইচ্ছা মাফিক ভাড়া নির্ধারণ ও পদ্ধতি ঠিক করে। নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে বিএডিসির মাধ্যমে মানসম্মত বীজ সরবরাহ, বীজ-সার-কীটনাশকের-বেসরকারি বাণিজ্য ও বিপণন বন্ধ, বস্তা প্রতি কোল্ডস্টোরেজ ভাড়া ১শ’ টাকা নির্ধারণসহ ৮ দফা দাবি বাস্তবায়ন করে আলুচাষীদের রক্ষার দাবি জানান।
একই দিনে বগুড়া ও জয়পুরহাটেও অনুরূপ কর্মসূচি পালিত হয়।
পুনর্বাসন ছাড়া বস্তি উচ্ছেদ বন্ধের দাবিতে রংপুরে আন্দোলন
রংপুর নগরীর লালবাগ চুড়িপট্টি বস্তি উচ্ছেদের চক্রান্ত প্রতিহত করা ও পুনর্বাসন ছাড়া বস্তি উচ্ছেদ বন্ধ করার দাবিতে বাসদ রংপুর জেলা শাখার উদ্যোগে ১ অক্টোবর বেলা ১২টায় স্থানীয় প্রেসক্লাব চত্ত্বরে মানববন্ধন-সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। পার্টির জেলা সমন্বয়ক আনোয়ার হোসেন বাবলুর সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন পলাশ কান্তি নাগ, আহসানুল আরেফিন তিতু প্রমুখ। নেতৃবৃন্দ বলেন, সরকারি হাজার হাজার একর খাসজমি লুটেরারা দখল করে রেখেছে। শাসকগোষ্ঠী তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নিতে পারছে না। কিন্তু যে শ্রমজীবী বস্তিবাসী উদয়াস্ত পরিশ্রম করে সমাজকে টিকিয়ে রেখেছে তাদের উচ্ছেদের ব্যাপারে শাসকগোষ্ঠী সিদ্ধহস্ত। নেতৃবৃন্দ বলেন, হাইকোর্টের স্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে পুনবার্সন ছাড়া কোনো বস্তি উচ্ছেদ করা যাবে না। স্থানীয় প্রভাবশালী ও লুটেরাদের স্বার্থে হত-দরিদ্র অসহায় বস্তিবাসীদের উচ্ছেদ করা চলবে না।
উচ্ছেদের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে ১৩ অক্টোবর বিকেলে বস্তিবাসী লালবাগে রেলপথ ও রাজপথ অবরোধ করে সমাবেশ করে। লালবাগ চুড়িপট্টি রেলবস্তি রক্ষা সংগ্রাম কমিটির সাধারণ সম্পাদক আবুল কালামের সভাপতিত্বে অবরোধ চলাকালে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাসদ নেতা পলাশ কান্তি নাগ, ছাত্র ফ্রন্ট কারমাইকেল কলেজ শাখার সভাপতি আবু রায়হান বকসী, বস্তি রক্ষা সংগ্রাম কমিটির আবু তালেব, মিজানুর রহমান, সাইফুল ইসলাম, আফরোজা বেগম প্রমুখ। বক্তারা বলেন আমরা জীবন দিয়ে হলেও আমাদের ভিটেমাটি রক্ষায় বস্তি উচ্ছেদের চক্রান্ত প্রতিহত করবো। উল্লেখ্য, স্বাধীনতার পর থেকে এখানে এই বস্তিবাসীরা বসবাস করছে। রেল কর্তৃপক্ষ ১৪ অক্টোবর বস্তি উচ্ছেদ করবে এই মর্মে তাদের প্রশাসনিক সিদ্ধান্তের কথা জানার পর বস্তিবাসীরা বিক্ষোভে ফেটে পড়ে।
উচ্ছেদ প্রতিরোধে ১৪ অক্টোবর মঙ্গলবার সকাল ৭টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত অবস্থান ও সমাবেশ করেছে বস্তিবাসী। বাসদ ও ছাত্র ফ্রন্ট নেতা-কর্মীরা তাদের সাথে ছিলেন। পরদিন ১৫ অক্টোবর বুধবার সকাল ১১টায় সংহতি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। লালবাগ চুড়িপট্টি রেলবস্তি রক্ষা সংগ্রাম কমিটির উদ্যোগে সংহতি সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন সংগ্রাম কমিটির সভাপতি আবু তালেব। সংহতি সমাবেশে বক্তৃতা করেন সিপিবি’র জেলা সভাপতি শাহাদাত হোসেন, বাসদ জেলা সমন্বয়ক আনোয়ার হোসেন বাবলু, পলাশ কান্তি নাগ, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. তুহিন ওয়াদুদ, ছাত্র ফ্রন্ট কারমাইকেল কলেজ শাখার সভাপতি আবু রায়হান বকসি, ছাত্র ইউনিয়ন কারমাইকেল কলেজ শাখার সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ রায়, ছাত্র ফ্রন্ট বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ সম্পাদক বাবুল হোসেন, রিক্রা শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি আব্দুল ছাত্তার, বস্তি রক্ষা সংগ্রাম কমিটির সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আযাদ, স্কুল শিক্ষিকা বিনতে রুবাইয়া পিয়া প্রমুখ।
নেতৃবৃন্দ বলেন, বস্তিবাসীদের যৌক্তিক আন্দোলনে রংপুরের বাম-প্রগতিশীল রাজনৈতিক দল, দেশপ্রেমিক জনগণ সকলেই পাশে আছে। যে কোনো মূল্যে পুনর্বাসন ছাড়া বস্তি উচ্ছেদের চক্রান্ত প্রতিহত করা হবে। তারা আরো বলেন, বস্তিবাসীরা এলাকার বাসা-বাড়িতে-মেসে কাজ করে, রিকসা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করে। তারা কেউ নদী ভাঙ্গনের কবলে পড়ে, কেউ পেটের দায়ে শহরমুখী হয়েছে। নেতৃবৃন্দ উচ্চ আদালতের রায় অনুযায়ী ভূমিহীনদেরকে খাসজমি বরাদ্দ করে পুনর্বাসন করার দাবি জানান।
বন্যাদুর্গত এলাকায় ত্রাণ ও পুনর্বাসনের দাবিতে বিক্ষোভ
বর্ষা মৌসুমের শেষে আকস্মিক বন্যা এবং নদীভাঙনের কারণে তিস্তা নদীর অববাহিকার অঞ্চলের অনেক পরিবার সর্বশান্ত হয়ে গেছে। অনেক বাড়ি-ঘর নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ফসলের জমি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এ অঞ্চলের ক্ষেতমজুর-দিনমজুরদের এমনিতেই সারাবছর কাজ থাকে না। তার উপর এবারের বন্যা ও নদীভাঙনে এই ক্ষেতমজুর-দিনমজুররা একেবারেই কর্মহীন হয়ে পড়েছে। হাতে কাজ নেই, ঘরে খাবার নেই। বন্যায় আমন ধানের বীজতলা সহ অন্যান্য ফসল নষ্ট হয়ে গেছে। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত চাষীদের বিনামুল্যে বীজ-সার সরবরাহ, পর্যাপ্ত ত্রাণ বিতরণ, মেডিকেল টিম গঠন করে চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দ্রুত পুননির্মাণ, বন্যাদুর্গত মানুষদের কাজের জন্য কর্মসৃজন কর্মসূচি চালুসহ বিভিন্ন দাবিতে কর্মসূচি পালন করেছে বাসদ।
গাইবান্ধা : বন্যাদুর্গত এলাকায় সরকারি উদ্যোগে পর্যাপ্ত ত্রাণ বিতরণ, মেডিকেল টিম গঠন করে চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করা, ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের চারাবীজসহ সকল কৃষি উপকরণ বিনামূল্যে সরবরাহ ও নদীভাঙন কবলিত মানুষদের খাস জমিতে পুনর্বাসন, ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পুনঃনির্মাণ করা এবং শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে বই সরবরাহ করার দবিতে বাসদ গাইবান্ধা জেলা শাখার উদ্যোগে ৭ সেপ্টেম্বর দুপুর ১২টায় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন জেলা আহবায়ক আহসানুল হাবীব সাঈদ, আমিনুল ইসলাম ।
বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত চাষীদের বিনামুল্যে বীজ-সার সরবরাহ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দ্রুত পুননির্মাণ, বন্যাদুর্গত মানুষদের কাজের জন্য কর্মসৃজন কর্মসূচি চালুসহ ৯ দফা দাবীতে বাসদ গাইবান্ধা জেলা শাখার উদ্যোগে ১৮ সেপ্টেম্বর পদযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে গাইবান্ধার রুপার বাজার থেকে পদযাত্রাটি শুরু হয়ে তালতলা, কাউন্সিলের বাজার হয়ে গিদারীতে গিয়ে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। পদযাত্রায় বিভিন্ন পথসভায় বক্তব্য রাখেন বাসদ জেলা আহবায়ক আহসানুল হাবীব সাঈদ, মনজুর আলম মিঠু, কাজী আবু রাহেন শফিউল্যা, গোলাম সাদেক লেবু, নিলুফার ইয়াসমীন শিল্পী, জুয়েল মিয়া, শাহিন মিয়া প্রমুখ।
রংপুর : বন্যা দুর্গত এলাকায় পর্যাপ্ত ত্রাণ, আমন ধানের চারাসহ সকল কৃষি উপকরণ ও ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষার্থীদের ক্ষতিপূরণের দাবিতে ৭ সেপ্টেম্বর সকাল ১১টায় বাসদ রংপুর জেলা শাখার উদ্যোগে স্থানীয় প্রেসক্লাব চত্ত্বরে মানববন্ধন ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। বাসদ জেলা সমন্বয়ক আনোয়ার হোসেন বাবলুর সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন বাসদ নেতা পলাশ কান্তি নাগ, আহসানুল আরেফিন তিতু, রোকনুজ্জামান রোকন প্রমুখ। সমাবেশ থেকে নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে সরকারের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় ত্রাণ সামগ্রিসহ প্রয়োজনীয় সকল ব্যবস্থা নেয়ার আহবান জানান।
বন্যা ও নদীভাঙন সমস্যার স্থায়ী সমাধান এবং ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনের দাবিতে ১৬ সেপ্টেম্বর সকাল ১১টায় বাসদ গংগাচড়া উপজেলা শাখার উদ্যোগে জিরো পয়েন্টে মানববন্ধন ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। উপজেলা সংগঠক কমরেড মতিয়ার রহমানের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাসদ জেলা সমন্বয়ক আনোয়ার হোসেন বাবলু, পলাশ কান্তি নাগ, উপজেলা সংগঠক ডা. মনজুদার রহমান, ক্ষিতিশ চন্দ্র রায় প্রমুখ। সমাবেশের পর মিছিল সহ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট স্মারকলিপি পেশ করা হয়।
ডাকাতিয়া নদী রক্ষা ও নিবন্ধনের দাবিতে ফরিদগঞ্জে মৎস্যজীবীদের বিক্ষোভ
প্রকৃত মৎস্যজীবীদের নিবন্ধন, ডাকাতিয়া নদীর কচুরিপানা পরিষ্কার করে মাছ-পানি ও পরিবেশ রক্ষায় স্থায়ী প্রকল্প গ্রহণের দাবিতে ৩ সেপ্টেম্বর দুপুরে মানববন্ধন ও মিছিল সমাবেশ করেছে ফরিদগঞ্জ মৎস্যজীবী সংগ্রাম পরিষদ। মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন বাসদ কনভেনশন প্রস্তুতি কমিটি ফরিদগঞ্জ উপজেলার সদস্য সচিব জি এম বাদশা, মৎস্যজীবী সংগ্রাম পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মোশারফ হোসেন নান্নু, মৎস্যজীবী অনিল দাস, শীতল দাস, সুখ রঞ্জন ও বাংলাদেশ শ্রমিক কর্মচারী ফেডারেশনের ফারুক আহাম্মদ পাটওয়ারী প্রমুখ।
ফরিদগঞ্জ উপজেলা পরিষদ কমপ্লেক্স গেইটে মানববন্ধন চলাকালে বক্তারা বলেন, সিআইপি’র অভ্যন্তরে ফরিদগঞ্জে প্রবাহমান ডাকাতিয়া নদীর পানি পঁচে প্রতি বছর মাছ মরে ভেসে উঠছে। প্রচণ্ড দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে নদীর দু’পাড়ে। হুমকির মুখে পড়ছে পরিবেশ, জীববৈচিত্র্য ও জনজীবন। নদীতে জমাট বাঁধা কচুরীপানা পঁচে এ অবস্থার সৃষ্টি হচ্ছে। এতে নদীকে কেন্দ্র করে জীবন-জীবিকা নির্বাহকারী জেলে-মৎস্যজীবীরা রয়েছে খুবই বিপাকে। নেতৃবৃন্দ বলেন, বছরে কয়েক দফা জমাট বাঁধা কচুরীপানা পঁচে মাছের মড়ক লেগে ডাকাতিয়া মাছশূন্য হয়ে পড়ে। ডাকাতিয়া নদীর কচুরীপানা পরিস্কার রাখা জেলে, মৎস্যজীবি ও দুই তীরের জনগণের সাধ্যের অতীত। এর জন্য প্রয়োজন যথাযথ সরকারি উদ্যোগ। তাই ডাকাতিয়া নদীকে কচুরীপানা মুক্ত রাখতে টি আর, কাবিখা-কাবিটার মতো স্থায়ী প্রকল্প গ্রহণ করা একান্ত প্রয়োজন।
তারা আরও বলেন, চাঁদপুর সেচ প্রকল্পের বাঁধের ফলে ডাকাতিয়া নদীতে প্রাকৃতিক জোয়ার-ভাটা বন্ধ হলেও ডাকাতিয়া একটি উন্মুক্ত জলমহাল। উন্মুক্ত জলমহাল ইজারা দেওয়ার বিধান না থাকায় মহল বিশেষ ডাকাতিয়া নদীর প্রকৃতি পরিবর্তন করে বদ্ধ জলাশয় দেখিয়ে ইজারা নেওয়ার হীন চেষ্টায় লিপ্ত। এই চক্রান্ত বাস্তবায়িত হলে জীবিকা হারাবে হাজার হাজার জেলে মৎস্যজীবী, নদী ব্যবহারের অধিকার হারাবে দুই তীরের লক্ষ মানুষ। মৎস্যজীবীরা অভিযোগ করে বলেন, বিভিন্ন স্থানে প্রকৃত মৎস্যজীবীদের পরিবর্তে অমৎস্যজীবি ও সুবিধাবাদীদের নিবন্ধন দেয়ার হীন কাজ করছে। তাই, তারা প্রকৃত মৎস্যজীবীদের তালিকা প্রণয়ন ও নিবন্ধন করার জন্য জোর দাবি জানান।
নৌকা ভাড়া কমানোর দাবিতে রৌমারীতে আন্দোলন
কুড়িগ্রামের রৌমারীতে অতিরিক্ত নৌকা ভাড়া কমানোর দাবিতে রৌমারী ‘যাত্রী অধিকার রক্ষা কমিটি’-র পক্ষ থেকে গত ১৯ আগস্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে স্মারকলিপি পেশ করা হয়। স্মারকলিপি গ্রহণ করার পর উপজেলা নির্বাহী অফিসার দাবীসমূহ মেনে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। এসময় অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন যাত্রী অধিকার রক্ষা কমিটির সংগঠক রৌমারী ডিগ্রী কলেজের সহকারী অধ্যাপক জনাব আ. আউয়াল, বাসদ নেতা মহিউদ্দিন মহির, রৌমারী মহিলা কলেজের প্রভাষক জনাব আকতারুজ্জামান, রৌমারী ডিগ্রী কলেজের প্রভাষক মো. মোস্তাফিজুর রহমান প্রমুখ।
স্মারকলিপিতে বলা হয়, রৌমারী উপজেলা কুড়িগ্রাম জেলা সদর থেকে নদী বিচ্ছিন্ন অঞ্চল। স্যালো ইঞ্জিন চালিত নৌকাই হচ্ছে অত্র অঞ্চলের মানুষের জেলা সদরে যাতায়াতের একমাত্র বাহন। আমরা জানি যে নদী পথ স্বল্প ব্যয়ে যাতায়াতের মাধ্যম। কিন্তু কুড়িগ্রাম জেলায় আমরা এর ভিন্নচিত্র দেখতে পাই। কুড়িগ্রাম জেলার রৌমারী ও রাজিবপুর উপজেলার নদীপথের যাতায়াতের ভাড়ার ক্ষেত্রে কোন নিয়ম-নীতি অনুসরণ করা হচ্ছে না এবং যাত্রী প্রতি নৌকাভাড়া কত টাকা নেয়া হবে টোলচার্টে তার কোনো উল্লেখ নাই। অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় হচ্ছে সাম্প্রতিক সময়ে ডিজেলের মূল্য বৃদ্ধি না পাওয়া সত্ত্বেও আকস্মিকভাবে যাত্রী-ভাড়া বৃদ্ধি করা হয়েছে। উল্লেখ্য সরকারী সিদ্ধান্ত মোতাবেক স্থলপথে প্রতি কিলোমিটারে মাথাপিছু ভাড়া ১.৫০ (দেড়) টাকা। আমাদের জানা মতে ফুলুয়ার চর ঘাট হতে চিলমারী এবং কুড়িগ্রামের দুরত্ব যথাক্রমে ৮ (আট) এবং ৩০ (ত্রিশ) কিলোমিটার। সে হিসেবে ভাড়া সর্বোচ্চ চিলমারীর ক্ষেত্রে যাত্রীপ্রতি ১২ টাকা এবং কুড়িগ্রামের ক্ষেত্রে ৪৫ টাকা নির্ধারিত হওয়ার কথা। তাই আমরা মনে করি এতদিন ধরে চিলমারীর ভাড়া ৫০ টাকা এবং কুড়িগ্রামের ভাড়া ৭০ টাকা যে নেয়া হত সেটাই উক্ত নীতিমালা অনুসারে অস্বাভাবিক ভাড়া হিসেবে পরিগণিত হয়। সেখানে জনগণের মতামতের তোয়াক্কা না করেই ৫০ টাকার স্থলে ৭০ টাকা এবং ৭০ টাকার স্থলে ৮০ টাকা ভাড়া নির্ধারণ নিঃসন্দেহে নিয়ম বহির্ভূত এবং স্বেচ্ছাচারিতারই বহিঃপ্রকাশ। এর প্রতিবাদে যাত্রী অধিকার রক্ষা কমিটির পক্ষ থেকে গত ১৬ জুলাই তারিখে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মহোদয়ের মাধ্যমে জেলা প্রশাসক মহোদয়কে লিখিতভাবে অবগত করা সত্ত্বেও ঘাট ইজারাদার বিষয়টি কর্ণপাত না করে, জনমতকে উপেক্ষা করে, গায়ের জোরে অদ্যবধি নিয়মবহির্ভূতভাবে বর্ধিত ভাড়া আদায় করেই চলছে।
স্মারকলিপিতে অবিলম্বে নিয়মবহির্ভূত বর্ধিত নৌকা ভাড়া প্রত্যাহার, যাত্রী হয়রানী বন্ধ করা, শিক্ষার্থী এবং প্রতিবন্ধীদের ভাড়া অর্ধেক করা, নৌকা ঘাটে-নৌকায় গণশৌচাগার ও ঘাটে যাত্রী ছাউনী নির্মাণ এবং ঝুঁকিপূর্ণভাবে অতিরিক্ত যাত্রী বহন বন্ধ করার দাবি জানানো হয়। আন্দোলনের মুখে প্রশাসনের পক্ষ থেকে নৌকাভাড়া যাত্রীপ্রতি ১০ টাকা কমানো হয়েছে।
মাদ্রাসা ছাত্রী সুমাইয়ার হত্যাকারীদের গ্রেফতার ও বিচারের দাবিতে আন্দোলন
লালবাগের হালিমা সাদিয়া মহিলা মাদ্রাসার ছাত্রী ১১ বছর বয়সী সুমাইয়া আক্তার হত্যার বিচার, কর্তৃপক্ষসহ হত্যার সাথে জড়িতদের গ্রেফতার, সঠিক পোস্টমর্টেম ও তদন্ত রিপোর্ট প্রণয়নের দাবিতে এলিফ্যান্ট রোড এলাকাবাসীকে সঙ্গে নিয়ে ধারাবাহিক আন্দোলন করে যাচ্ছে বাংলাদেশ নারীমুক্তি কেন্দ্র। এরই অংশ হিসাবে ১৬ সেপ্টেম্বর সকালে এলিফ্যান্ট রোডে মেডিকেল স্টাফ কোয়ার্টারের সামনে শত শত এলাকাবাসীর উপস্থিতিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। তারপর এলাকাবাসী এলিফ্যান্ট রোড হতে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে জাতীয় প্রেসকাবে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশে মিলিত হয়। এরপর ধারাবাহিকভাবে ২৪ সেপ্টেম্বর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভ ও পুলিশ প্রশাসনকে স্মারকলিপি প্রদান, ২৬ সেপ্টেম্বর প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভ ইত্যাদি নানা কর্মসূচি পালিত হয়েছে। এলাকাবাসী এ আন্দোলন এগিয়ে নেয়ার দৃঢ় সংকল্প ব্যক্ত করেছেন।
প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে জাতীয় কমিটির প্রতিক্রিয়া
তেল-গ্যাস খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির আহ্বায়ক প্রকৌশলী শেখ মুহাম্মদ শহীদুলাহ এবং সদস্য সচিব অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ ১৫ সেপ্টেম্বর এক যুক্ত বিবৃতিতে বলেছেন, ‘এ এক নির্মম পরিহাসের বিষয় যে, বাংলাদেশের সরকার একদিকে বাংলাদেশে বাঘের একমাত্র আবাসস্থল সুন্দরবনের ধ্বংস নিশ্চিত করার মত দূরত্বে একাধিক কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র করছে ও অনুমতি দিচ্ছে; অন্যদিকে বাঘ আর সুন্দরবন বাঁচানোর গুরুত্বের কথা বলে আন্তর্জাতিক বাঘ সম্মেলন উদ্বোধন করছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।’ তাঁরা বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী ঠিকই বলেছেন, “বাঘ বাঁচায় সুন্দরবন-সুন্দরবন বাঁচায় বাংলাদেশ”। কিন্তু তিনি একথাটি উহ্য রাখছেন যে, বাংলাদেশকে বাঁচায় যে সুন্দরবন তাকেই এই সরকার দেশি-বিদেশি লুণ্ঠনকারী মুনাফাখোর ও দখলদারদের হাতে ছেড়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করছেন।’ তাঁরা আরও বলেন, ‘সুন্দরবনধ্বংসী তৎপরতার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক মহলেরও সোচ্চার হওয়া উচিত। কেননা সুন্দরবন শুধু বাংলাদেশের নয় বিশ্বেরও অমূল্য সম্পদ, যা পৃথিবীতে একটিই আছে। এটি ধ্বংস হলে আর একটি সুন্দরবন তৈরীর ক্ষমতা মানুষের নেই।’
প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক বিয়ের বয়স কমানোর নির্দেশনার প্রতিবাদ
‘বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন ২০১৪’ এর খসড়ায় বিয়ের বয়স কমানোর নির্দেশনা বাতিল ও ঘরে বাইরে নারীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবিতে ১৮ অক্টোবর সকাল ১১টায় বাংলাদেশ নারীমুক্তি কেন্দ্র ঢাকা নগর শাখার উদ্যোগে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সংগঠনের ঢাকা নগর শাখার সভাপতি এড. সুলতানা আক্তার রুবির সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ নারীমুক্তি কেন্দ্র’র কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি সীমা দত্ত, ঢাকা নগর শাখার সাধারণ সম্পাদক তাসলিমা নাজনিন সুরভী, সদস্য নাঈমা খালেদ মনিকা ও ফাহিমা কানিজ লাভা।
সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেন, আধুনিক প্রযুক্তির যুগে সমাজ যখন সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে তখন আমাদের সরকার দেশের জনগণকে মধ্য যুগে নিয়ে যাবার চেষ্টা করছে। সম্প্রতি সরকার বাল্যবিবাহের বয়স কমানোর বিষয়ে যে নির্দেশনা দিয়েছে তা এর একটি নমুনা। ১৯২৯ সালে ব্রিটিশ সরকার বাল্যবিবাহ নিরোধ আইনে মেয়েদের বিবাহের বয়স ১৮ করেছিল। বর্তমানে বিশেষজ্ঞরা বলছেন এই বয়স আরো বাড়িয়ে ২৫ করা যায় কিনা। সেখানে সরকার প্রধানের বিয়ের বয়স ১৬ করার নির্দেশনা গণতান্ত্রিক মুক্তমনা সকল মানুষকে হতবাক করেছে। মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী, স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী ও সরকার দলীয় জোটের নেত্রীরা মরিয়া হয়ে সরকারের এই নির্দেশনা বাস্তবায়নের জন্য অযৌক্তিক ও হাস্যকর তথ্য উপস্থাপন করছেন।
নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, ২০১৩ সালে এই সরকার যে শিশু আইন করেছে সেখানে শিশুর বয়স নির্ধারণ করা হয়েছে ১৮, আন্তর্জাতিক শিশু অধিকার সনদে শিশুর বয়স বলা হয়েছে ১৮ যা বাংলাদেশ সরকার অনুমোদন করেছে। কিন্তু তারপরও কেন এই বয়স নিয়ে তালবাহানা! গত ১৩ সেপ্টেম্বর ’১৪ দৈনিক প্রথম আলোসহ বিভিন্ন পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ হয় বাংলাদেশে বাল্যবিবাহের হার সারা বিশ্বে তৃতীয় ও দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলির মধ্যে প্রথম। গার্ল সামিট থেকে ফিরে এসে এই ধরনের প্রতিবেদন সরকারকে বিব্রত করেছে। তার হাত থকে রক্ষা পেতে সরকার দেশের নারীদের আরো পিছিয়ে নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বাংলাদেশে কেন বাল্যবিবাহ বাড়ছে তা নিয়ে ইতিমধ্যে বিভিন্ন সভা সেমিনার, গবেষণা হয়েছে। তাতে যে তথ্য বেরিয়েছে তা হল দারিদ্র্য, নিরাপত্তাহীনতা, ধর্মীয় কূপম-ূকতা, অশ্লীলতা, পর্নোগ্রাফীর বিস্তার ইত্যাদি বিভিন্ন সামাজিক ব্যাধি। বাল্যবিবাহ কমাতে হলে সরকারের উচিত হবে এই সকল সমস্যা সমাধানের জন্য যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ করা। বাল্যবিবাহ কিংবা ১৮ বছরের মধ্যে বিবাহের কারণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় মেয়েরা। কারণ তাকে গর্ভধারণ করতে হয়। ফলে মা ও শিশু মৃত্যুর হার বাড়ে, মা জরায়ু ক্যান্সারে ভোগে, রক্তশূন্যতা, পুষ্টিহীনতা বাড়ে, মা ও শিশু মানসিক ও শারীরিক প্রতিবন্ধী হতে পারে। এ তো গেল শারীরিক বিষয়। ১৮ বছরের আগে কোনো মানুষ মানসিকভাবে কোনো ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকে না। তাহলে তাদের কেন এমন একটি বিপজ্জনক পরিবেশে ঠেলে দেওয়া? সরকার প্রকৃতপক্ষে গণতন্ত্রের কথা বলে ধর্মীয় কূপম-ূকতা, কুসংস্কার, পশ্চাৎপদতাকে বৃদ্ধি করছে। সরকার মৌলবাদী চিন্তার কাছে কি আত্মসর্মপন করছে? আর তা যদি হয়, সরকারের এই পদক্ষেপ দেশের গণতান্ত্রিক বিধি-বিধান ও সংস্কৃতিকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে এই নির্দেশনা বাতিল করে বাল্যবিবাহের হার কমানোর যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ ও ঘরে বাইরে নারীর নিরাপত্তা বিধান করার জন্য আহ্বান জানান।
বাংলাদেশ নারীমুক্তি কেন্দ্রের সভাপতি সীমা দত্ত ও সাধারণ সম্পাদক মর্জিনা খাতুন ১৮ সেপ্টেম্বর এক বিবৃতিতে প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক ‘বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন ২০১৪’-এর খসড়ায় বিবাহের বয়স কমানোর যে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে তা প্রত্যাখ্যান করেছেন।
রংপুর : বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন ২০১৪-এর খসড়ায় বিয়ের বয়স কমানোর নির্দেশনা প্রসঙ্গে বাংলাদেশ নারীমুক্তি কেন্দ্র রংপুর জেলা শাখা ২ অক্টোবর সকাল ১১টায় জেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার মাধ্যমে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রীর নিকট স্মারকলিপি পেশ করেছে।
সিলেট : নারী- শিশুর ওপর সকল ধরনের নির্যাতন এবং বাল্যবিবাহ রোধের নামে বিবাহের বয়স কমানোর প্রতিবাদে নারীমুক্তি কেন্দ্র সিলেট জেলা শাখার উদ্যোগে ১৭ অক্টোবর বিকাল ৪টায় সিলেট সিটি পয়েন্টে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশের পূর্বে বিক্ষোভ মিছিল সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে শুরু হয়ে শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে কোর্ট পয়েন্টে সমাবেশে মিলিত হয়। নারীমুক্তি কেন্দ্র সিলেট জেলার সংগঠক তামান্না আহমেদের সভাপতিত্বে এবং ইশরাত রাহী রিসতার পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাসদ নেতা এড. হুমায়ুন রশীদ সোয়েব, রুবাইয়াৎ আহমেদ, লক্ষী পাল প্রমুখ।
ভাষাসৈনিক আব্দুল মতিনের মরদেশে শ্রদ্ধা নিবেদন
বাসদ কনভেনশন প্রস্তুতি কমিটির পক্ষ থেকে গত ৯ অক্টোবর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ভাষাসৈনিক আব্দুল মতিনের মরদেহে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন কনভেনশন প্রস্তুতি কমিটির সদস্য কমরেড শুভ্রাংশু চক্রবর্ত্তী, ফখরুদ্দিন কবির আতিক, সীমা দত্ত, কল্যাণ দত্ত প্রমুখ নেতৃবৃন্দ। এছাড়া বিভিন্ন গণসংগঠনের পক্ষ থেকেও ভাষাসৈনিক আব্দুল মতিনের মরদেহে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।
এড. রোকেয়া বেগমের স্মরণসভা
বাসদ ময়মনসিংহ জেলা শাখার প্রয়াত সদস্য এড. রোকেয়া বেগমের দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকীতে এক স্মরণসভা জেলা বাসদ কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়। জেলা সমন্বয়ক শেখর রায়ের সভাপতিত্বে ও নারীমুক্তি কেন্দ্রের জেলা আহ্বায়ক সেঁজুতি চৌধুরীর পরিচালনায় অনুষ্ঠিত এ স্মরণসভায় আলোচনা করেন সিপিবির জেলা সাধারণ সম্পাদক এমদাদুল হক মিল্লাত, অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক শেখ জলিল, কৃষিবিদ সামছুল হোসেন, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের জেলা সভাপতি মাহমুদ আরা আক্তার হেলেন, প্রাক্তন বামপন্থী নেতা কাজী সালাউদ্দিন, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির জেলা আহ্বায়ক আজহারুল ইসলাম আজাদ, গণসংহতি আন্দোলনের সংগঠক আব্দুল কালাম আল আজাদ, ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টের যুগ্ম আহ্বায়ক তোফাজ্জল হোসেন, নারীমুক্তি কেন্দ্রের কেন্দ্রীয় সংগঠক নাঈমা খালেদ মনিকা, ছাত্র ফ্রন্ট ময়মনসিংহ জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক অজিত দাস, বাকৃবি সভাপতি আশরাফ মিল্টন, আনন্দমোহন কলেজ শাখার সভাপতি মিশু দত্ত। আলোচকগণ আজীবন বিপ্লবী সংগ্রামের সক্রিয় কর্মী ও পৃষ্ঠপোষক এড. রোকেয়া বেগমের কর্মময় জীবন নিয়ে আলোচনা করেন।
বীরকন্যা প্রীতিলতার ৮২তম আত্মাহুতি দিবস স্মরণ
বাসদ, নারীমুক্তি কেন্দ্র, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট, শিশু কিশোর মেলা, চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্র প্রভৃতি সংগঠনের উদ্যোগে নানা আয়োজনে চট্টগ্রামে বীরকন্যা প্রীতিলতার ৮২তম আত্মাহুতি দিবস পালিত হয়।
রংপুর : বীরকন্যা প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার এর ৮২তম আত্মাহুতি দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ নারীমুক্তি কেন্দ্র ও ছাত্র ফ্রন্ট রংপুর জেলা শাখার যৌথ উদ্যোগে ২৬ সেপ্টেম্বর বিকেল ৫টায় নগরীর লালবাগ কেডিসি রোডস্থ বীরকন্যা প্রীতিলতা পাঠাগারে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। নারীমুক্তি কেন্দ্রের জেলা সংগঠক ইয়াসমিন হকের সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য রাখেন বাসদ জেলা সমন্বয়ক আনোয়ার হোসেন বাবলু, পলাশ কান্তি নাগ, নাজমুন নাহার লিপি, রোকুনজ্জামান রোকন, আবু রায়হান বকসি, মনোয়ার হোসেন প্রমুখ।
সিলেট : বাংলাদেশ নারীমুক্তি কেন্দ্র সিলেট জেলা শাখার উদ্যোগে আলোচনা সভা ২৪ সেপ্টেম্বর বিকাল ৫টায় রাজা ম্যানশস্থ সংগঠনের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়। সংগঠনের জেলা আহ্বায়ক ফাতেমা ইয়াছমিন ইমার সভাপতিত্বে এবং তামান্না আহমদের পরিচালনায় আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন বাসদ নেতা এড. হুমায়ূন রশীদ সোয়েব, ইসরাত রাহী রিশতা, রুবাইয়াৎ আহমদ প্রমুখ।