৫০ বিলিয়ন ডলার রপ্তানির লক্ষ্য কি ৬ হাজার টাকার শ্রমিকের হাতে সম্ভব?
মালিকপক্ষের ও শ্রমিকপক্ষের প্রস্তাব প্রত্যখ্যান
গার্মেন্টস শ্রমিক অধিকার আন্দোলনের সংবাদ সম্মেলনে নেতৃবৃন্দ বিজেএমই-এর কাছে প্রশ্ন রাখেন, ২০২১ সালের মধ্যে আপনারা ৫০ বিলিয়ন ডলার রপ্তানির শিল্পে রূপান্তর করতে চান বাংলাদেশের গার্মেন্টস খাতকে। কিন্তু এই স্বপ্ন আপনরা পূরণ করবেন যে শ্রমিকদের ওপর নির্ভর করে তাদেরকে বর্তমান বাজার মূল্যে ৬ হাজার ৩৬০ টাকা মজুরি দিয়ে তা পূরণ করা কি সম্ভব? পুষ্টিহীন হত দরিদ্র কর্মীদের কাছ থেকে আর যাই হোক উৎপাদনশীলতা আশা কারা যায় না। আপনারা যে শিল্পকে নিয়ে গর্ব করেন তার সবচেয়ে বড় অংশ ৪৪ লক্ষ শ্রমিককে পেছনে ফেলে কী করে সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়া সম্ভব?
গার্মেন্টস শ্রমিক অধিকার আন্দোলনের বর্তমান সমন্বয়কারী এবং বাংলাদেশ টেক্সটাইল গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি এড. মাহবুবুর রহমান ইসমাইলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন গার্মেন্টস শ্রমিক ঐক্য ফোরামের সভাপতি মোশরেফা মিশু, বাংলাদেশ গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির সভাপ্রধান তাসলিমা আখতার, ওএসকে গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক প্রকাশ দত্ত, গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় নেতা ফখরুদ্দিন কবির আতিক, গার্মেন্টস শ্রমিক মুক্তি আন্দোলনের উপদেষ্টা শামীম ইমাম, বিপ্লবী গার্মেন্টস শ্রমিক সংহতির সভাপতি মীর মোফাজ্জল হোসেন মোশতাক, গার্মেন্ট শ্রমিক সভার সভাপতি শামসুজ জোহা, গার্মেন্টস শ্রমিক আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নেতা বিপ্লব ভট্টাচার্য্যসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ। উপস্থিত নেতৃবৃন্দকে পরিচয় করিয়ে দেন গার্মেন্টস শ্রমিক সংহতির সাধারণ সম্পাদক জুলহাসনাইন বাবু এবং লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন জোটের সমন্বয়কারী।
সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে বক্তারা আরো বলেন, বিজেএমই এর ওয়েবসাইটে বা বিভিন্ন নথিতে দেখা যায় তাদের প্রবৃদ্ধি দিনকে দিন বেড়ে চলছে। আর যখন শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধির প্রশ্ন আসে তখন তারা বলেন মজুরি বৃদ্ধি করলে তাদের প্রতিযোগিতা করার শক্তি কমে যাবে, অনেক কারখানা বন্ধ হয়ে যাবে, শিল্প ধ্বংস হয়ে যাবে? এই বৈপরিত্য কীভাবে সম্ভব? স্বাধীন কমিশন গঠন করে তাদের মুনাফা নির্ধারণ করার দাবি করেন নেতৃবন্দ।
নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, নিম্নতম মজুরি বোর্ডে শ্রমিক প্রতিনিধি বেগম শামছুন্নাহার ভূঁইয়া শ্রমিক লীগের নেত্রী হিসেবে সরকারের ইচ্ছা অনুযায়ী যা কিনা প্রকারান্তে মালিক পক্ষের ইশারায় ১২ হাজার ২০টাকা মোট মজুরি প্রস্তাব করেছেন। বাংলাদেশের ৪৪ লক্ষ গার্মেন্ট শ্রমিকের সাথে এটা পরিষ্কার বিশ্বাসঘাতকতা। নেতৃবৃন্দ আবারো ১৬ হাজার টাকা মজুরির দাবি সামনে নিয়ে আসেন এর নিচে কোনভাবেই শ্রমিকদের মজুরি হতে পারে না এবং শ্রমিকরাও তা মেনে নেবে না। অবিলম্বে শ্রমিকদের প্রাণের দাবি বাস্তবায়নের জন্য মজুরি বোর্ড ও সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে জাতীয় সংসদ নির্বাচন, ক্রসফায়ার বন্ধসহ জনজীবনের সংকট নিরসনে বাসদ (মার্কসবাদী)’র ১০ দফার দাবি মাস
জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন, রাষ্ট্রীয় হেফাজতে বিচারবহির্ভূত হত্যা-গুম-ক্রসফায়ার বন্ধসহ জনজীবনের সংকট নিরসনে ১০ দফা দাবিতে বাসদ (মার্কসবাদী) ঢাকা নগর শাখার উদ্যোগে ৩০ জুন শনিবার বিকাল ৫টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনের সড়কে অনুষ্ঠিত এক সমাবেশে নেতৃবৃন্দ এসব কথা বলেন। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ মানস নন্দী, জহিরুল ইসলাম, ফখরুদ্দিন কবির আতিক।
বাসদ (মার্কসবাদী) কেন্দ্রীয় কার্যপরিচালনা কমিটি ঘোষিত মাসব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসেবে ১০ দফা দাবিতে ২৫ জুন থেকে ২৪ জুলাই সারাদেশে জেলা-উপজেলা-এলাকায় প্রচার-গণসংযোগ, মিছিল, হাটসভা, পথসভা, পদযাত্রা, সমাবেশ অনুষ্ঠিত হচ্ছে এবং ২৫ জুলাই ঢাকায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে এবং জেলায় জেলায় ডিসি অফিসের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি পেশ কর্মসূচি পালিত হবে। সমাবেশ শেষে একটি মিছিল বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
১০ দফা দাবিনামা
১. জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন চাই। নির্বাচনে টাকার খেলা বন্ধ কর, জামানত কমাও, অগণতান্ত্রিক দল নিবন্ধন প্রথা বাতিল কর। সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব ব্যবস্থা চালু কর।
২. রাষ্ট্রীয় হেফাজতে বিচারবহির্ভূত হত্যা-গুম-ক্রসফায়ার বন্ধ কর। মত প্রকাশের অধিকার হরণ করা চলবে না।
৩. দুর্নীতি ও লুটপাট বন্ধ কর। কালো টাকার মালিক-অর্থপাচারকারী-ঋণখেলাপী-ব্যাংক লুটেরাদের গ্রেপ্তার কর, আয়ের সাথে সঙ্গতিবিহীন সম্পদ বাজেয়াপ্ত কর।
৪. নারী ও শিশু নির্যাতন বন্ধে দোষীদের ুদ্রুত বিচার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাও। মাদক, পর্ণোগ্রাফী ও জুয়ার বিস্তার রোধ কর। মাদকাসক্তদের পুনর্বাসন কর।
৫. চালসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে ঞঈই কে সক্রিয় কর, রেশন ব্যবস্থা চালু কর। ওএমএস- এ ১০ টাকা কেজিতে চাল সরবরাহ কর। গ্যাস-বিদ্যুতের বর্ধিত দাম প্রত্যাহার কর। রেলসহ সরকারি গণপরিবহন বিস্তৃত কর। নি¤œ আয়ের মানুষের জন্য সরকারি উদ্যোগে অল্প ভাড়ায় বহুতলবিশিষ্ট আবাসন প্রকল্প বা কলোনী নির্মাণ কর। বাড়ি-গাড়ি ভাড়া নিয়ন্ত্রণ আইন কার্যকর কর।
৬. শ্রমিকদের ন্যূনতম জাতীয় মজুরী ১৬০০০ টাকা নির্ধারণ, অবাধ ট্রেড ইউনিয়ন অধিকার ও কর্মক্ষেত্রে নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত কর।
৭. কৃষি ফসলের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে হাটে হাটে সরকারি ক্রয়কেন্দ্র চাই। খাদ্যশস্যের রাষ্ট্রীয় বাণিজ্য চালু কর। স্বল্পমূল্যে কৃষি উপকরণ সরবরাহ কর। ক্ষেতমজুরদের সারা বছর কাজ ও রেশন চাই।
৮. ‘ঘরে ঘরে চাকুরী’র প্রতিশ্রুতি রক্ষা কর। বেকারদের নাম তালিকাভুক্ত করে কর্মসংস্থান না হওয়া পর্যন্ত তাদেরকে বেকার ভাতা দিতে হবে। রাষ্ট্রীয় শূন্যপদে নিয়োগ দাও। সরকারি চাকুরীতে কোটা কমাও।
৯. শিক্ষা বাণিজ্য ও প্রশ্ন ফাঁস বন্ধ কর। পিইসি ও জেএসসি পরীক্ষা বাতিল কর। চিকিৎসা খাতে ব্যবসা বন্ধ কর। সরকারি স্বাস্থ্যব্যবস্থার অধীনে প্রত্যেক নাগরিকের উপযুক্ত চিকিৎসা প্রাপ্তি নিশ্চিত করতে হবে।
১০. ভারতের কাছ থেকে তিস্তাসহ সব অভিন্ন নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা আদায় কর। রামপালে সুন্দরবন ধ্বংসকারী কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎপ্রকল্প বন্ধ কর। মারত্মক ঝুঁকিপূর্ণ ও ব্যয়বহুল রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎপ্রকল্প চাই না।
ঐতিহাসিক চা শ্রমিক হত্যা দিবস পালিত
দিনব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচীর মাধ্যমে ঐতিহাসিক ২০ মে ৯৭তম ‘চা শ্রমিক দিবস’ উদযাপন করেছে চা শ্রমিক ফেডারেশন। সকাল ৮টায় অস্থায়ী শহীদবেদী নির্মাণ করে মালনীছড়া, লাক্কাতুরা, তারাপুর, আলীবাহার, বড়জান, হিলুয়াছড়াসহ সিলেটের বিভিন্ন বাগানে পুষ্পস্তবক অর্পণ করার মাধ্যমে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা অপর্ণ করা হয় এবং কালো ব্যাজ ধারণ করা হয়। বিকাল ৪টায় মালনীছড়া চা বাগানে র্যালি ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। র্যালিটি মালনীছড়া চা বাগান থেকে শুরু হয়ে রেষ্টক্যাম্প বাজার ঘুরে আবার মালনীছড়া বাগানে গিয়ে শেষ হয়। চা শ্রমিক ফেডারেশন কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি হৃদেশ মুদির সভাপতিত্বে ও মালনীছড়া বাগানের নেতা বচন কালোয়ারের পরিচালনায় আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ শ্রমিক কর্মচারী ফেডারেশন কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি জহিরুল ইসলাম, বাসদ (মার্কসবাদী) সিলেট জেলার আহবায়ক উজ্জ্বল রায়, শ্রমিক কর্মচারী ফেডারেশন সিলেট জেলার সভাপতি সুশান্ত সিনহা, মালনীছড়া বাগানের আহবায়ক সন্তোষ বাড়াইক, লাক্কাতুরা বাগানের আহবায়ক লাংকাট লোহার, সন্তোষ নায়েকসহ তেলীহাটি, আলীবাহার, তারাপুর, বড়জান, লালাখালসহ বিভিন্ন বাগানের নেতৃবৃন্দ।
আলোচনা সভায় নেতৃবৃন্দ বলেন, আজ থেকে ৯৭ বছর আগে ১৯২১ সালের ২০শে মে চাঁদপুরের মেঘনা ঘাটে শত শত চা শ্রমিককে গুলি করে হত্যা করা হয়। ইতিহাসে এই দিনটি ‘মুল্লুকে চল’ আন্দোলন নামে খ্যাত। রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের এই দিনটিকে আমরা শ্রদ্ধার সাথে ‘চা শ্রমিক দিবস’ হিসেবে পালন করছি। ব্রিটিশরা ১৮৩৮ সালে ভারতে চা চাষের পরিকল্পনা করলে বিভিন্ন অনুন্নত ও অভাবগ্রস্ত অঞ্চল থেকে নিঃস্ব-রিক্ত কৃষকদের আজীবন কাজের শর্তে আসামের জঙ্গলে নিয়ে আসে। সহজ সরল এই লোকগুলোকে বলা হয় আসামে নাকি “গাছ হিলায়গা তো পয়সা মিলেগা”।
কিন্তু এখানে আসার পর শুরু হয় বাঘ, ভাল্লুক, সাপসহ হিংস্র জন্তু জানোয়ারের সাথে লড়াই করে কোন রকমে টিকে থাকা। চা শ্রমিকদের রক্তে আর ঘামে আসামের গভীর জঙ্গল হয়ে উঠলো আজকের সুন্দর চা বাগান। অথচ উন্নত জীবন তো দূরে থাক, চা শ্রমিকদের জীবনে নেমে এলো অন্ধকার। সভ্য দুনিয়া থেকে বঞ্চিত হয়ে চা শ্রমিকরা পরিণত হলেন নব্য দাসে।
এই অবস্থা থেকে চা শ্রমিকরা মুক্তি চাইছিলেন, ঠিক তখন ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনে অগ্নিগর্ভ সমগ্র ভারতবর্ষ। শ্রমিকরা ব্রিটিশদের অত্যাচার ও জীবনের দুর্দশা থেকে মুক্তির জন্য গঙ্গাদয়াল দীক্ষিত ও দেওশরনের নেতৃত্বে প্রায় ৩০ হাজার শ্রমিক পায়ে হেটে মুল্লুকের (নিজ ভূমিতে) উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। অবশেষে ২০শে মে চাঁদপুরের মেঘনা ঘাটে পৌছায়। মেঘনা ঘাটে স্টিমারে উঠতে চাইলে ব্রিটিশ সরকার ও মালিকদের লেলিয়ে দেয়া গোর্খা বাহিনী নির্বিচারে গুলি করে অসংখ্য চা শ্রমিকদের হত্যা করে। লাশ যাতে দেখতে না পারে তার জন্য রাতের অন্ধকারে পেট কেটে নদীতে ভাসিয়ে দেওয়া হয়। এই জঘন্য হত্যাকান্ডের প্রতিবাদে গঙ্গাদয়াল দীক্ষিত জেলখানায় অনশন করে মৃত্যুবরণ করেন।
অবশেষে রয়েল কমিশন গঠন করে চা শ্রমিকদের গিরমিট প্রথা বাতিল করা হয় এবং কিছু সুযোগ সুবিধা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে বাগানে ফিরিয়ে আনা হয়। সেই হত্যাকান্ডের সরকারি কোন তদন্ত হয়নি। ঠিক কতজন সেদিন মারা গিয়েছিল তারও হিসাব পাওয়া যায়নি। চা শ্রমিকদের রক্তে তৈরি হলো নতুন ইতিহাস, আমরা সেই সংগ্রামী চা শ্রমিকদের উত্তরসূরি। আমরা ২০০৮ সাল থেকে ২০ মে ‘চা শ্রমিক দিবস’ হিসেবে পালন করে আসছি। মালিকরা আমাদের লড়াইয়ের ইতিহাস থেকে আমাদের বঞ্চিত করতে চায়, শিকড়হীন করতে চায়। তাই আমরা ২০শে মে ‘চা শ্রমিক দিবস’-কে বাগানের প্রতিটি প্রান্তে ছড়িয়ে দিতে চাই, তার চেতনায় দাঁড়িয়ে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে চাই। গত ১০বছর ধরে আমাদের নিরলস প্রচেষ্টায় ‘চা শ্রমিক দিবস’ এর বার্তা চা শ্রমিকদের মধ্যে সঞ্চারিত হয়েছে।
মধ্যম আয়ের দেশে স্বীকৃতি পেতে চলেছে বাংলাদেশ। সেখানে চা-শ্রমিকরা দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করছে। ৫০ টাকা যেখানে চালের কেজি সেখানে ৮৫ টাকা দৈনিক মজুরীতে অর্ধাহারে, অনাহারে জীবন-যাপন করতে বাধ্য হচ্ছে। ওজনে ঠকানো, ঠিকা পাতির জন্যে দ্বিগুণ মজুরি না দেয়া বাগানগুলিতে প্রায় রেওয়াজে পরিণত হয়েছে। শত শত বছর ধরে চা-শ্রমিকরা বসবাস করলেও তিন পুরুষের ভিটায় কোন আইনি অধিকার নেই। বিভিন্নভাবে চলছে চা বাগান উচ্ছেদের প্রক্রিয়া । চা বাগানে শিক্ষার বেহাল অবস্থা আজ সর্বজন বিদিত, অথচ এব্যাপারে রাষ্ট্রীয় কোন উদ্যোগ নেই।
সবার জন্য শিক্ষা স্লোগান তুলে বাধ্যতামূলক প্রাথমিক শিক্ষা কর্মসূচি সমগ্র দেশে পরিচালনা করলেও ১৬৩টি চা বাগানের মধ্যে মাত্র ১০/১৪টিতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আছে। চিকিৎসার অভাবে অল্পতেই শরীরে বাসা বাঁধে নানা জটিল রোগ। চা বাগানের নারী শ্রমিকরা আছেন প্রচন্ড স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে। মাতৃত্বকালীন ছুটি নামে মাত্র কার্যকর, বেশিরভাগ বাগানেই একজনও এমবিবিএস ডাক্তার এবং প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত মিড-ওয়াইফ নেই। স্বাস্থ্যসম্মত স্যানিটেশনের অভাবে কৃমির আক্রমণে রক্তশূন্যতায় ভোগেন প্রায় প্রত্যেক চা শ্রমিক। ৮/১২ হাতের খুপড়িতে স্বামী সন্তান, হাঁস, মুরগী নিয়ে কোন রকমে বসবাস করেন চা শ্রমিকরা।
দুই বছর পর পর দেশের সামগ্রিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে চা শ্রমিকদের জীবন মান উন্নয়নের জন্যে সম্পাদিত চুক্তিপত্র বাস্তবায়ন করার কথা, অথচ গত ১০ বছরে মজুরি বেড়েছে মাত্র ৫৩টাকা! তারপর এই চুক্তির মধ্যেই যে সুযোগ সুবিধাটুকু থাকে তাও বাস্তবায়ন হচ্ছে না। এমনকি বর্তমানে চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার ১৬ মাস অতিক্রান্ত, কিন্তু নতুন চুক্তি সম্পাদনে টালবাহানা চলছে। ইউনিয়নের কাজের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার জন্যে প্রতি বাগানে ইউনিয়ন অফিস ও সুবিধাজনক স্থানে ভ্যালি অফিস নির্মাণ এখন সময়ের দাবি। নিরাপদ পানীয় জল, সুস্থ বিনোদনের ব্যবস্থা, পরিচয়পত্র, নিয়োগপত্র, সার্ভিসবুক, গ্র্যাচুয়িটি, গ্রুপ বীমা ইত্যাদি শ্রম আইনের নির্দেশনা মালিকরা কোথাও কার্যকর করছে না।
মালিকদের সীমাহীন লুটপাটে বন্ধপ্রায় বাগানগুলোতে শ্রমিকদের করুণ অবস্থা এবং চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়া বাগানে শ্রমিকদের পাশে দাঁড়ানোর যেন কেউ নেই। সরকার এ ব্যাপারে সম্পূর্ণ উদাসীন। গত দেড় শতাধিক বছরের অধিক সময়ে শাসকের পরিবর্তন হয়েছে, পরিবর্তন এসেছে রাষ্ট্রীয় পরিচয়ে, কিন্তু চা শ্রমিকের জীবনে কোন পরিবর্তন হয়নি। কারণ পুরাতন শোষকের জায়গায় নতুন শোষক স্থান করে নিয়েছে। চা শ্রমিকের ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করে সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলেছে মালিক শ্রেণী। কোন কালেই অধিকার কেউ কাউকে দেয়নি, চা শ্রমিকদেরও দেবে না। তাই আন্দোলন-সংগ্রাম ও লড়াই করে চা শ্রমিকদের অধিকার আদায় করে নিতে হবে।
সোলার প্ল্যান্ট নির্মাণের নামে ভূমি দখলের প্রতিবাদে বিক্ষোভ
বেক্সিমকো কোম্পানী কর্তৃক সুন্দরগঞ্জ উপজেলার চরখোর্দ্দা ও লাঠশালায় সোলার প্ল্যান্ট নির্মাণের নামে বাস্তুভিটা ও তিন ফসলী জমি ধ্বংস করার প্রতিবাদে ২৫ জুন গাইবান্ধা শহরে এক বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। মিছিল পূর্ব সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাস্তুভিটা ও আবাদি জমি রক্ষা সংগ্রাম কমিটির সদ্য কারামুক্ত উপদেষ্টা বীরেন চন্দ্র শীল, বাসদ (মার্কসবাদী) জেলা আহ্বায়ক আহসানুল হাবিব সাঈদ প্রমুখ। নেতৃবৃন্দ জোরপূর্বক বেআইনীভাবে তিন ফসলী জমিতে সোলার প্ল্যান্ট নির্মাণের তীব্র প্রতিবাদ জানান এবং অবিলম্বে কার্যকর প্রশাসনিক উদ্যোগ দাবি করেন।
গাইবান্ধায় ছাত্র ফ্রন্ট নেতৃবৃন্দের ওপর ছাত্রলীগের হামলা
গত ১১ জুলাই দুপুর ১২টায় গাইবান্ধা সরকারি কলেজে একাদশ শ্রেণির নবীন শিক্ষার্থীদের আগমনে শুভেচ্ছা জানিয়ে মিছিল ও সমাবেশ করে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট কলেজ শাখা। সমাবেশ শেষে ছাত্র ফ্রন্ট নেতৃবৃন্দ ক্যাম্পাসে অবস্থানকালে আওয়ামী ছাত্রলীগ সন্ত্রাসী কায়দায় অতর্কিত হামলা করে। হামলায় গুরুতর আহত হয়ে গাইবান্ধা সরকারি কলেজ ছাত্র ফ্রন্ট সভাপতি মাহবুব আলম মিলন, জেলা অর্থ সম্পাদক মাসুদ আকতার, সংগঠক নাজমুল ইসলাম জয় সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়।
এই হামলার প্রতিবাদে ওইদিন সন্ধ্যায় সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট জেলা শাখা শহরে এক প্রতিবাদ মিছিল বের করে। সেই মিছিলে আবারও ছাত্রলীগ জয়বাংলা স্লোগান দিয়ে আক্রমণ করে। আক্রমণে আহত হয়ে জেলা ছাত্র ফ্রন্ট সাধারণ সম্পাদক পরমানন্দ দাস, সহ-সভাপতি রাহেলা সিদ্দিকা সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়। আহত অন্যান্যরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছে।
উক্ত বর্বরোচিত হামলার নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন জেলা বাসদ (মাকর্সবাদী) আহবায়ক আহসানুল হাবীব সাঈদ, সদস্য সচিব মঞ্জুর আলম মিঠু, সিপিবি জেলা সভাপতি মিহির ঘোষ, সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান, ছাত্র ফ্রন্ট জেলা সভাপতি শামীম আরা মিনা, প্রগতিশীল ছাত্রজোটের জেলা সভাপতি তপন চন্দ্র দেবনাথ, সাধারণ সম্পাদক রবিউল ইসলাম রবি প্রমুখ। নেতৃবৃন্দ সারাদেশে ছাত্র-ছাত্রীদের গণতান্ত্রিক আন্দোলনে ছাত্রলীগ এবং পুলিশের ফ্যাসিবাদী আক্রমণে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। সেইসাথে গাইবান্ধায় হামলাকারী সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় বন্যার্তদের মধ্যে ত্রাণ বিতরণ
মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া উপজেলার পৃত্তিম পাশা ইউনিয়নের গনকিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ঝিলের পাড় গজবাগ এলাকায় বাসদ (মার্কসবাদী) মৌলভীবাজার জেলার পক্ষ থেকে ১২০টি বন্যা কবলিত পরিবারের মধ্যে ৫ কেজি করে চাল বিতরণ করা হয়। ত্রাণ বিতরণের পূর্বে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাসদ (মার্কসবাদী) সিলেট জেলা শাখার আহবায়ক উজ্জ্বল রায়, মনু মডেল কলেজের প্রভাষক নজরুল ইসলাম, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন কুলাউড়া উপজেলা সংসদের সভাপতি ফয়জুল হক, বাসদ (মার্কসবাদী) মৌলভীবাজার জেলার শাখার সংগঠক অনিক চন্দ, কুলাউড়া উপজেলার সংগঠক প্রশান্ত দেব ছানা। উপস্থিত ছিলেন সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের মৌলভীবাজার জেলা শাখার অনিক দে, সৌরভ রায়, যুবরাজ, আবদুল আজিজ এবং রবির বাজার সুকান্ত সংসদের সংগঠক অমিত দেব, রাজিব উদ্দিন।
রংপুরে লালবাগ রেলওয়ে বস্তি উচ্ছেদ বন্ধের দাবিতে আন্দোলন
রংপুর নগরীর লালবাগ রেলওয়ে বস্তির ভূমিহীন পরিবারসমুহকে সরকারী খাস জমিতে পুনর্বাসনের দাবিতে ৮ জুলাই বেলা ১.৩০টায় বস্তিবাসীর পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসকের নিকট স্মারকলিপি পেশ করা হয়েছে। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বাসদ (মার্কসবাদী) জেলা সমন্বয়ক আনোয়ার হোসেন বাবলু, পলাশ কান্তি নাগ,বস্তি রক্ষা সংগ্রাম কমিটির সভাপতি আবু তালেব, সাধারণ সম্পাদক নুর আলম, সদস্য সাজু মিয়া, তানজু বেগম প্রমুখ। স্মারকলিপিতে সরকারী খাস জমিতে বস্তির ভুমিহীন পরিবারসমুহকে পুনর্বাসনের দাবি জানানো হয়।
উল্লেখ্য,স্মারকলিপির সাথে খাস জমিতে পুনর্বাসনের জন্য ৯৫টি পরিবারের নামের তালিকা দেওয়া হয়। এর আগে ২৪ জুন পুনর্বাসন ব্যতীত লালবাগ রেলওয়ে বস্তি উচ্ছেদের নোটিশের প্রতিবাদে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ঘেরাও করে বস্তিবাসী। এছাড়া ২৭ জুন বিভাগীয় ভূ-সম্পত্তি কর্মকর্তা, বাংলাদেশ রেলওয়ে লালমনরিহাট এবং জেলা প্রশাসক, লালমনিরহাট বরাবর স্মারকলিপি পেশ করা হয়।
বিজ্ঞান চর্চা কেন্দ্র’র প্রতিনিধি সভা অনুষ্ঠিত
বিজ্ঞান চর্চা কেন্দ্রের প্রথম কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি সভা গত ২৯ ও ৩০ জুন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ডাকসুর দ্বিতীয় তলায় অনুষ্ঠিত হয়। সভা পরিচালনা করেন কেন্দ্রীয় সংগঠক ইভা মজুমদার। প্রতিনিধি সভায় উপস্থিত ছিলেন ঢাকা, গোপালগঞ্জ, চট্টগ্রাম, বরিশাল, জয়পুরহাটসহ দেশের দশটি জেলার প্রতিনিধিবৃন্দ। প্রতিনিধিরা তাদের অভিজ্ঞতা থেকে দেশের বিভিন্ন জেলায় বিজ্ঞানশিক্ষার বাস্তব পরিস্থিতি ও সেখানে সংগঠনের করণীয় তুলে ধরেন। এছাড়া, প্রাণীর শ্রেণিবিন্যাসকরণ ও পিছনের বিজ্ঞান, গণিত ও পদার্থবিদ্যার ব্যবহারিক শিক্ষা নিয়ে প্রশিক্ষণমূলক ক্লাস নেন বিজ্ঞান চর্চা কেন্দ্রের সংগঠক শুভ সাহা ও অতনু মুখার্জী। সভায় আশু কর্মসূচি হিসেবে মহান বিজ্ঞানী মাদাম কুরীর মৃত্যুবার্ষিকী পালন, বিজ্ঞানী মেঘনাদ সাহার ১২৫তম জন্মবর্ষ পালন এবং ব্যবহারিক বিজ্ঞানশিক্ষায় প্রশিক্ষণ ও কুইজ নিয়ে স্কুল কলেজে কাজ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
সৌদি আরবে অভিবাসী নারী শ্রমিকদের নিরাপত্তা দাও
বাংলাদেশ শ্রমিক কর্মচারী ফেডারেশন ও বাংলাদেশ নারীমুক্তি কেন্দ্র, কেন্দ্রীয় কমিটির উদ্যোগে ২৯ জুন বিকাল ৫টায় প্রেসক্লাবের সামনে অভিবাসী নারী শ্রমিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সীমা দত্তের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন মানস নন্দী, রাজু আহমেদ, তসলিমা আক্তার বিউটি।
সমাবেশে বক্তারা বলেন গত ত্রিশ বছরে সাত লক্ষেরও বেশি নারী শ্রমিক হিসাবে মধ্যপ্রাচ্য পাড়ি দিয়েছে। তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি গেছে সৌদি আরবে। শুরু থেকেই এই সকল নারীরা সেখানে নানা ধরনের নিপীড়নের শিকার হয়েছে। বেতন না পাওয়া, মার ধর করা, আগুনের ছ্যাঁকা দেওয়া, নাকে এরোসল স্প্রে করা এই সব নিত্ত নৈমিত্তিক ঘটনা। সবচেয়ে ভয়াবহ বিষয় সেখানে নারীরা যৌন নির্যাতনেরও শিকার হচ্ছে। নির্যাতিতরা দেশে ফিরে এসেও সামাজিক চাপের শিকার হয়েছে। অনেকে পরিবারে ঠাঁই পায়নি। এই সকল অভিযোগ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের কাছে উপস্থাপন করা হলেও তারা দায়িত্ব এড়িয়ে যাচ্ছে। জানা গেছে দায়সারাভাবে যথাযথভাবে প্রস্তুতি না নিয়ে মানুষের দারিদ্র্যের সুযোগ নিয়ে হাজার হাজার অসহায় নারীকে সরকার বিভিন্ন এজেন্সীর মাধ্যমে মধ্যপ্রাচ্যে পাঠিয়েছে। সেখানে গিয়ে তারা যখন নির্যাতনের শিকার হচ্ছে তখন সরকারের পক্ষ থেকেও বলা হচ্ছে এ সকল বানোয়াট গল্প। ঘটে যাওয়া সকল ঘটনার বিষয়ে সরকারকে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বহিরাগত প্রবেশে নিষেধাজ্ঞার প্রতিবাদ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভোস্ট কাউন্সিলের সভা থেকে গত ৮ জুলাই যে প্রস্তাবনা দেয়া হয়েছে তার কড়া সমালোচনা করে ১০ জুলাই প্রগতিশীল ছাত্র জোটের নেতৃবৃন্দ এক যুক্ত বিবৃতিতে বলেন, প্রভোস্ট কাউন্সিলের প্রস্তাবনা বিশ্ববিদ্যালয়ের চেতনার সাথে অসঙ্গিতপূর্ণ। বিশ্ববিদ্যালয় কারো জমিদারি নয়। বিশ্ববিদ্যালয় সর্বসাধারণের সম্পদ, আশা-আকাক্সক্ষার বাতিঘর। জনসাধারণের টাকায় বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালিত হয়। দেশের জনগণ যেভাবে চাইবেন সেভাবেই বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালিত হবে। দেশের মানুষকে বহিরাগত আখ্যা দেয়া সুবিবেচনা নয়, শিষ্টাচার বহির্ভূত। নিরাপত্তার অজুহাতে বিশ্ববিদ্যালয়ে সর্বসাধারণের চলাফেরা সংকুচিত নয়, বরং বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সন্ত্রাসী তৎপরতা দূর করতে হবে। নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, অগণতান্ত্রিক নীতিমালা তৈরি করে, নিষেধাজ্ঞা জারি করে মানুষের স্বাধীনতার ওপর হস্তক্ষেপ ছাত্রসমাজ সহ্য করবে না।
রবীন্দ্রজয়ন্তী উদযাপন
রংপুর : চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্র রংপুর জেলা শাখা রবীন্দ্রজয়ন্তী উদযাপন করেছে। এ উপলক্ষ্যে গত ৯ মে বুধবার রংপুরের জি. এল. রায় রোডস্থ সংগঠন কার্যালয়ে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। আলোচনাসভা শুরুর আগে কবির প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। সংগঠনের রংপুর জেলা শাখার ইনচার্জ মনোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে ও সদস্য বাবুল হোসেনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন কারমাইকেল কলেজের বাংলা বিভাগের সাবেক অধ্যাপক আতাহার আলী ও বাসদ (মার্কসবাদী) রংপুর জেলা শাখার সদস্য আহসানুল আরেফিন তিতু। আলোচনা শেষে সংগঠনের শিল্পীরা রবীন্দ্রসঙ্গীত, আবৃত্তি ও কবি গানের তালে নৃত্য পরিবেশন করেন।
শেরে বাংলা নগর থানা : কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৫৭ তম জন্মদিবস উপলক্ষে শিশুকিশোর মেলা পাঠাগার, শেরে বাংলা নগর-এর উদ্যোগে ১১ মে বিকাল সাড়ে ৪টায় কবিগুরুর কবিতা-গান-গল্প নিয়ে নানাবিধ আয়োজনের মধ্য দিয়ে তা পালিত হয়। অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন পাঠাগারের আহবায়ক সায়েরা সরকার সুমী। অনুষ্ঠান সমন্বয়ের দায়িত্ব পালন করেছেন পাঠাগারের উপদেষ্টা মর্জিনা খাতুন, স্নেহার্দ্রি রিন্টু, গোলাম রাব্বী, পাঠাগারের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান রিয়াদ, শাহেদ ও বৃষ্টি আক্তারসহ পাঠাগারের ক্ষুদে অনেক বন্ধুরা।
ধানসহ কৃষি ফসলের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করার দাবিতে সমাবেশ ও মিছিল
ধানসহ কৃষি ফসলের লাভজনক মূল্য নিশ্চিত করা এবং হাটে হাটে ক্রয়কেন্দ্র খুলে সরাসরি প্রকৃত কৃষকদের কাছ থেকে সরকার নির্ধারিত দামে ধান কেনার দাবিতে কেন্দ্রঘোষিত দেশব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসেবে বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল(মার্কসবাদী)-এর উদ্যোগে ২৫মে বিকাল ৫টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনের সড়কে সমাবেশ ও পরবর্তীতে মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন দলের কেন্দ্রীয় কার্যপরিচালনা কমিটির সদস্য মানস নন্দী, জহিরুল ইসলাম, ফখরুদ্দিন কবির আতিক, সাইফুজ্জামান সাকন।
সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেন, “এ বছর সরকারিভাবে প্রতি মণ ধান এক হাজার ৪০ টাকা ও চাল এক হাজার ৫২০ টাকা (প্রতিকেজি ধানের দাম ২৬ টাকা ও চালের কেজি ৩৮ টাকা) নির্ধারণ করা হয়েছে। সরকারিভাবে ২ মে থেকে সারাদেশে কৃষকের কাছ থেকে সরাসরি ধান-চাল সংগ্রহ অভিযান শুরুর কথা থাকলেও মন্ত্রণালয় থেকে পরিপত্র ইস্যু না করায় ১৭/১৮ মে-র আগে কোথাও তা শুরু হয়নি। এরপরও জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক অফিসগুলো প্রধানত মিলারদের কাছ থেকে চাল কিনছে, ধান কেনা এখনো শুরু করেনি। ফলে বোরো ধানের বাম্পার ফলন ফলিয়ে লাভজনক মূল্য পাচ্ছে না চাষীরা। স্থানীয় ব্যবসায়ীদের কাছে কম দামে ধান-চাল বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন কৃষক। অধিকাংশ স্থানে কাঁচা ধান বাজারে সাড়ে ৪শ-৫শ টাকা মণ ও শুকনো ধান ৬শ-সাড়ে ৬শ টাকা মণ বিক্রি হচ্ছে।”
নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, “সারাদেশের কৃষকদের ধান বিক্রির জন্য পর্যাপ্ত ক্রয়কেন্দ্র ও সংরক্ষণের জায়গা নেই। বাধ্য হয়ে কৃষকরা কম দামে মধ্যস্বত্ত্বভোগী ফড়িয়া ও চাতাল মালিকের দালালদের কাছে ধান বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছে। প্রতিবারই সরকার সংগ্রহ অভিযান শুরু করতে দেরি করে এবং অল্প ধান কিনে বেশিরভাগ চাল ক্রয় করে। কৃষকরা মহাজনি ঋণ পরিশোধ করার তাগিদে ও সংসার খরচ যোগাড় করতে কম দামে লোকসানে ধান বিক্রি করতে বাধ্য হয়। আমাদের অধিকাংশ কৃষক বর্গা বা প্রান্তিক চাষী। বেশির ভাগ কৃষকই ঋণ নিয়ে চাষাবাদ করেন। ক্ষেতের ধান উঠলে তাদের সে ঋণ শোধ করতে তাগাদা দেয় ঋণ প্রদানকারীরা। পাওনাদারদের চাপে অধিকাংশ সময় কৃষকেরা সরকারের ন্যায্য মূল্যের আশায় বসে না থেকে অনেক কম দামে ধান বিক্রি করে দিতে বাধ্য হয়ে থাকেন। তাছাড়া, সরকারী খাদ্য গুদামে ধান দিতে গেলে ধরতে হয় বিভিন্ন দালাল ও সরকারী দলের নেতাকর্মীদের। এবছর বৃষ্টির কারণে ঠিকমত ধান শুকাতেও পারছেন না কৃষকরা। বিক্রি করার সময় কৃষক দাম পাচ্ছেন না, অথচ ক্রেতাকে বাজার থেকে চাল কিনতে হচ্ছে চড়া দামে। ফলে, বাম্পার ফলনের সুফল না কৃষক না ভোক্তা কেউই পাচ্ছে না। বর্তমান পরিস্থিতিতে লাভবান হয় ব্যবসায়ী, সরকারী দলের নেতা-কর্মী ও আমলারা। সরকারিভাবে হাটে হাটে ক্রয়কেন্দ্র চালু, সঠিক সময়ে তৎপরতার সাথে ধান সংগ্রহ ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষের সমন্বয়ে কমিটির মাধ্যমে কৃষকদের তালিকা প্রণয়ন করে সরাসরি চাষীদের কাছ থেকে ধান কিনতে সরকারকে বাধ্য করতে হলে জোরদার চাষী আান্দোলন গড়ে তুলতে হবে।”
‘পিইসি পরীক্ষা বাতিল ও প্রশ্ন ফাঁস রোধে করণীয়’ শীর্ষক গোলটেবিল
সমাজতান্ত্রিক ফ্রন্ট কেন্দ্রীয় কমিটির উদ্যোগে পিইসি পরীক্ষা বাতিল ও প্রশ্নপত্র ফাঁস রোধে করণীয় বিষয়ে গোলটেবিল বৈঠক গত ৯ জুন ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি ভবনের সাগর-রুনি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়েছে। সংগঠনের সভাপতি নাঈমা খালেদ মনিকার সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক স্নেহাদ্রি চক্রবর্তী রিন্টুর সঞ্চালনায় গোলটেবিল বৈঠকে বক্তব্য রাখেন ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মোশাহিদা সুলতানা ঋতু, ঝিগাতলা হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক ইসহাক সরকার, শিশু ও শিক্ষা রক্ষা আন্দোলনের আহ্বায়ক লেখক রাখাল রাহা, প্রযুক্তিবিদ দিদারুল ভূইয়া, স্বপ্ননগর বিদ্যানিকেতনের সমন্বয়কারী ধ্রুব জ্যোতি হোড়, নারায়ণগঞ্জ বেইলি স্কুলের প্রধান শিক্ষক মঞ্জুরুল হক, ভিকারুন্নেসা নূন স্কুল এন্ড কলেজের অভিভাবক দিলারা চৌধুরী, শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতি পাঠাগারের সভাপতি আলী নাঈম, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতি ও প্রগতিশীল ছাত্র জোটের সমন্বয়ক গোলাম মোস্তফা, বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর সভাপতি ইকবাল কবীর প্রমুখ।
ব্যারিষ্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া বলেন, “স্বাধীনতার পর থেকে অদ্যাবধি এদেশে কোনো গণতান্ত্রিক সরকার ছিল না। স্বৈরাচারী শাসকরা শোষণ-জুলুমকে আড়াল করতে ভবিষ্যত দৃষ্টিহীন প্রজন্ম তৈরি করছে শিক্ষাব্যবস্থার মধ্য দিয়ে। প্রতিবাদ, অন্যায় এর বিরুদ্ধে দাঁড়ানো বন্ধ করতেই প্রশ্নফাঁস করছে।” মোশাহিদা সুলতানা বলেন, “পিইসি পরীক্ষা কোমলমতি শিশুদের শৈশবকে ধ্বংস করছে। ফলে এই পরীক্ষা বাতিলের দাবি যথার্থ। এক্ষেত্রে শিক্ষকদের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। বাজেটে যে বরাদ্দ দেয়া হয় তার অধিকাংশই ব্যয় হয় অবকাঠামো খাতে। প্রাথমিক মাধ্যমিক শিক্ষকদের বেতন খুব কম। তাদের বেতন বাড়ানো প্রয়োজন। অন্যদিকে শিক্ষার নৈতিক ভিত্তি ধ্বংস করা হচ্ছে। শিক্ষা সম্পূর্ণ সার্টিফিকেটমুখী হয়ে পড়েছে।’
অভিভাবক দিলারা চৌধুরী বলেন, ‘একজন মা কতটা অসহায় হলে প্রতিবাদী হয়। স্কুলেতো আজ শিক্ষা দেয়া হয় না, ব্যবসা হচ্ছে। স্কুলে পড়ানো হচ্ছে না বলে বাধ্য হয়ে কোচিং-এ দেই। বারবার সিলেবাস পরিবর্তন করা হচ্ছে। এই সিদ্ধান্তগুলো নেবার আগে তো একবার বাচ্চাদের ভবিষ্যতের কথা ভাবা দরকার। কোচিং, পরীক্ষার চাপ সবসময় – এটা শিশুর জীবন নাকি কারাগার।’
বক্তারা আরো বলেন, পিইসি পরীক্ষা চালুর ফলে প্রাথমিক শিক্ষার বাণিজ্যিকীকরণ নতুন মাত্রা পেয়েছে। প্রাইভেট ও কোচিং ব্যবসা বেড়েছে। সাথে সথে বেড়েছে ‘পাঠ্যবই সহায়ক পুস্তিকার’ নামে গাইড বই এর ব্যবসা। এই পরীক্ষার নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্কের উপর। শিক্ষকরা স্কুলের কোচিং-এ যেতে বাধ্য করছে ছাত্রদের। আবার নিজের কাছে বাসায় গিয়ে পড়তে যেতেও নানা ভাবে চাপ দিচ্ছে। সৃজনশীল প্রশ্ন করার ফলে শিক্ষকরা নানা রকমের প্রশ্ন পরীক্ষায় দেবার সুযোগ পাচ্ছে। ফলে অনেক ক্ষেত্রে অপ্রয়োজনীয় রকমের কঠিন প্রশ্নও স্কুলের পরীক্ষায় দেওয়া হচ্ছে যাতে তার কাছে প্রাইভেটে পড়তে বাধ্য হয়। শুধু শিশুদের নয়, এই পরীক্ষা অভিভাবকদেরও এক অসুস্থ প্রতিযোগিতার মধ্যে ফেলে দিয়েছে। প্রতি বছর পরীক্ষায় হাজার হাজার শিক্ষার্থী ‘এ প্লাস’ পাচ্ছে। কিন্তু প্রাথমিক শিক্ষার মান কমে যাচ্ছে। ছাত্রদের শুধুমাত্র কাঠামোবদ্ধ প্রশ্নের উত্তর করার জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে। কিন্তু গণিত, বিজ্ঞান, বাংলা ও ইংরেজী ভাষার ব্যাকরণের মৌলিক বিষয়গুলোই চর্চার বাইরে থেকে যাচ্ছে। এর প্রভাব ছাত্রদের পরবর্তী শিক্ষা জীবনে পড়ছে। ৫ম শ্রেণির একটা শিশুর পরীক্ষাভীতি তৈরি করে তাকে দিয়ে পড়ানো যায়- একথা সত্য। কিন্তু এই পরীক্ষাভীতি তার পড়াশোনার প্রতি আগ্রহের জায়গাকে ধ্বংস করে দেয়। ফলে তার স্বাভাবিক শেখার প্রক্রিয়া মারাত্মকভাবে ব্যাহত হতে থাকে। তাই বক্তাগণ এর বিরুদ্ধে সর্বাত্মক আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানান।
মাদক নির্মূলের নামে র্যাব-পুলিশকে বিনা বিচারে হত্যার লাইসেন্স দিয়েছে সরকার
“মাদক নির্মূলের নামে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার হাতে বিনা বিচারে হত্যার লাইসেন্স তুলে দিয়ে আওয়ামী লীগ সরকার নির্বাচনের আগে একদিকে সস্তা জনপ্রিয়তা ও বাহবা কুড়াতে চায়, অন্যদিকে সমাজে আতংকের পরিবেশ সৃষ্টি করে সরকারবিরোধী আন্দোলন দমন করতে চায়। অথচ মাদক সাম্রাজ্যের গডফাদারদের ধরা হচ্ছে না, সরকারী দলে ও পুলিশ-প্রশাসনের মধ্যে মাদক বাণিজ্যের পৃষ্ঠপোষক-সুবিধাভোগীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না। সকল বিচারবহির্ভূত হত্যাকা- আইনের শাসন ও মানবাধিকারের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।” চলমান মাদকবিরোধী অভিযানে ক্রসফায়ারের নামে বিনা বিচারে হত্যা বন্ধ এবং মাদক ব্যবসার গডফাদারদের গ্রেপ্তার-বিচারের দাবিতে গণতান্ত্রিক বাম মোর্চার উদ্যোগে ৭ জুন বৃহস্পতিবার বিকেল সোয়া ৪টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনের সড়কে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ সমাবেশে নেতৃবৃন্দ এসব কথা বলেন। গণতান্ত্রিক বাম মোর্চার সমন্বয়ক ও বাসদ (মার্কসবাদী) নেতা শুভ্রাংশু চক্রবর্ত্তীর সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ সাইফুল হক, মোশাররফ হোসেন নান্নু, মোশরেফা মিশু, ফিরোজ আহমেদ, হামিদুল হক প্রমুখ। সমাবেশের পর একটি বিক্ষোভ মিছিল রাজপথ প্রদক্ষিণ করে।
সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেন, “দেশে দীর্ঘদিন ধরে মাদকব্যবসা বিস্তার লাভ করে মাদকদ্রব্য সহজলভ্য পণ্যে পরিণত হয়েছে এবং এক ভয়াবহ জাতীয় সমস্যা হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। যেকোনো বিবেকবান মানুষ মাদকবিরোধী অভিযান ও কঠোর পদক্ষেপকে স্বাগত জানায়। কিন্তু মাদক নির্মূলের নামে বিচারবহির্ভূত হত্যাকা- সমর্থনযোগ্য নয়। কারণ বিচার পাওয়ার অধিকার এমনকি মাদক ব্যবসায়ীদেরও আছে। আদালতে প্রমাণ করা ছাড়া শুধু অভিযোগের ভিত্তিতে বা সন্দেহের বশে খুন করার অবাধ লাইসেন্স দেয়া হলে ভুলক্রমে বা ইচ্ছাকৃতভাবে যেকোন নির্দোষ মানুষ এর শিকার হতে পারেন। অপরাধ দমনের নামে আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাকে খুনী বাহিনীতে পরিণত করা হলে জনগণের নিরাপত্তা বিঘিœত হওয়ার আশংকা থাকে। এর মধ্য দিয়ে সরকার বিরোধীদের অপরাধী আখ্যা দিয়ে নির্বিচারে খুন করার ক্ষেত্র তৈরি করা হচ্ছে। এই সরকার এবং পূর্বের সরকারের নির্দেশে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ক্রসফায়ার-গুম নাম দিয়ে অতীতে এই ধরণের বহু রাজনৈতিক হত্যাকা- চালিয়েছে। আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার হেফাজতে অব্যাহত বিচারবহির্ভূত হত্যা ও গুম মহাজোট সরকারের ফ্যাসিবাদী চরিত্রেরই বহিঃপ্রকাশ।”নেতৃবৃন্দ ক্রসফায়ার-এনকাউন্টারের নামে বেআইনী হত্যাকা-ের নিষ্ঠুরতার বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে সকল শুভবুদ্ধিসম্পন্ন ও গণতন্ত্রমনা মানুেষর প্রতি আহ্বান জানান।
বাসদ (মার্কসবাদী) : কথিত মাদক বিরোধী অভিযানের নামে শতাধিক মানুষের নির্বিচার হত্যাকান্ডের ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও উদ্বেগ জানিয়েছেন বাসদ (মার্কসবাদী) কেন্দ্রীয় কার্যপরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক কমরেড মুবিনুল হায়দার চৌধুরী। সংবাদপত্রে দেওয়া এক বিবৃতিতে তিনি বলেছেন, “মাদক ব্যবসার নিয়ন্ত্রক সরকারের সাথে নানা পর্যায়ে সংশ্লিষ্ট এমপি, জনপ্রতিনিধি, বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের নেতা এবং পুলিশ-র্যাব-সামরিক বাহিনী-সীমান্তরক্ষী বাহিনীর বড় কর্তাসহ প্রধান কুশীলবদের ধরা-ছোঁয়ার বাইরে রেখে মাঠ পর্যায়ের কিছু মানুষকে হত্যার মাধ্যমে মাদকের নির্মূল তো হবেই না, উল্টো র্যাব-পুলিশের বেপরোয়া তৎপরতা বৈধতা পাবে। প্রবল প্রতিবাদ-প্রতিরোধের মাধ্যমে এ জাতীয় কর্মকান্ড ঠেকানো না গেলে ভবিষ্যতে দেশে গণতান্ত্রিক অধিকারের পরিসর আরও সংকুচিত হবে, আরও বেপরোয়া উন্মত্ত দুঃশাসন জনগণের ওপর চেপে বসবে।”
তিনি বলেন, “মাদক ব্যবসার বিস্তৃত নেটওয়ার্কে যারা ব্যবহৃত হয় তারা একদিকে দারিদ্র্য ও বেকারত্বের বলি, অন্যদিকে সমাজের চলতে থাকা নৈতিক অবক্ষয়ের শিকার। তাই আইন বা হত্যা করে মাদক বন্ধ করা যাবে না। সমাজ জুড়ে যে তীব্র বৈষম্য-বেকারত্ব তাকেই চিরতরে ঘোচাতে হবে।”
সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট : সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট কেন্দ্রীয় কমিটির উদ্যোগে সাম্প্রতিক মাদক নির্মূলের নামে রাষ্ট্রীয় হত্যাযজ্ঞ বন্ধের দাবিতে ৩ জুন জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সভায় বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক স্নেহাদ্রি চক্রবর্ত্তী রিন্টু, মাসুদ রেজা ও ইভা মজুমদার। নেতৃবৃন্দ বলেন, বিনা বিচারে মানুষ হত্যা রাষ্ট্রীয় বর্বরতারই একটি নমুনা।