মার্কস আবিষ্কার করেছিলেন মানব ইতিহাসের বিকাশের সূত্র
(১৯৮৩ সালের ১৭ মার্চ কার্ল মার্কসের সমাধিস্থলে দাঁড়িয়ে ফ্রেডরিক এঙ্গেলস যে বক্তব্য দেন, কার্ল মার্কসের ১৩৪তম মৃত্যুবার্ষিকীতে তাঁর সুমহান সংগ্রামী জীবনের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে আমরা বক্তব্যটি প্রকাশ করলাম)
১৪ মার্চ, বেলা পৌনে তিনটায় পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ চিন্তানায়ক চিন্তা থেকে বিরত হয়েছেন। মাত্র মিনিট দুয়েকের জন্য তাঁকে একা রেখে যাওয়া হয়েছিল। আমরা ফিরে এসে দেখলাম যে তিনি তাঁর আরামকেদারায় শান্তিতে ঘুমিয়ে পড়েছেন, কিন্তু ঘুমিয়েছেন চিরকালের জন্য।
এই মানুষটির মৃত্যুতে ইউরোপ ও আমেরিকার সংগ্রামী প্রলেতারিয়েত এবং ইতিহাস-বিজ্ঞান উভয়েরই অপূরণীয় ক্ষতি হল। এই মহান প্রাণের তিরোভাবে যে শূণ্যতার সৃষ্টি হল তা অচিরেই অনুভূত হবে ।
ডারউইন যেমন জৈব প্রকৃতির বিকাশের নিয়ম আবিষ্কার করেছিলেন তেমনি মার্কস আবিষ্কার করেছেন মানুষের ইতিহাসের বিকাশের নিয়ম, মতাদর্শের অতি নিচে এতদিন লুকিয়ে রাখা এই সহজ সত্য যে, রাজনীতি, বিজ্ঞান, কলা, ধর্ম ইত্যাদি চর্চা করতে পারার আগে মানুষের প্রথম চাই খাদ্য, পানীয়, আশ্রয়, পরিচ্ছদ, সুতরাং প্রাণধারণের আশু বাস্তব উপকরণের উৎপাদন এবং সেই হেতু কোন নির্দিষ্ট জাতির বা নির্দিষ্ট যুগের অর্থনৈতিক বিকাশের মাত্রাই হল সেই ভিত্তি যার ওপর গড়ে ওঠে সংশ্লিষ্ট জাতিটির রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান, আইনের ধ্যান-ধারণা, শিল্পকলা, এমনকি তাদের ধর্মীয় ভাবধারা পর্যন্ত এবং সেই দিক থেকেই এগুলির ব্যাখ্যা করতে হবে, এতদিন যা করা হয়েছে সেভাবে উল্টো দিক থেকে নয়।
কিন্তু শুধু এই নয়। বর্তমান পুঁজিবাদী উৎপাদন-পদ্ধতির এবং এই পদ্ধতি যে বুর্জোয়া-সমাজ সৃষ্টি করেছে তার গতির বিশেষ নিয়মটিও মার্কস আবিষ্কার করেন। যে সমস্যার সমাধান খুঁজতে গিয়ে এতদিন পর্যন্ত সব বুর্জোয়া অর্থনীতিবিদ ও সমাজতন্ত্রী সমালোচক উভয়েরই অনুসন্ধান অন্ধকারে হাতড়ে বেড়াচ্ছিল, তার ওপর সহসা আলোকপাত হল উদ্বৃত্ত মূল্য আবিষ্কারের ফলে।
একজনের জীবদ্দশার পক্ষে এরকম দুটো আবিষ্কারই যথেষ্ট। এমনকি এরকম একটা আবিষ্কার করতে পারার সৌভাগ্য যাঁর হয়েছে তিনিও ধন্য। কিন্তু মার্কসের চর্চার প্রতিটি ক্ষেত্রে এবং তিনি চর্চা করেছিলেন বহু বিষয় নিয়ে এবং কোনোটাই ওপর ওপর নয়, তার প্রতিটি ক্ষেত্রেই, এমনকি গণিতশাস্ত্রেও তিনি স্বাধীন আবিষ্কার করে গেছেন।
এই হল বিজ্ঞানী মানুষটির রূপরেখা। কিন্তু এটি তাঁর ব্যক্তিত্বের অর্ধেকও নয়। মার্কসের কাছে বিজ্ঞান ছিল এক ঐতিহাসিকভাবে গতিষ্ণু বিপ্লবী শক্তি। কোন একটা তাত্ত্বিক বিজ্ঞানের যে আবিষ্কার কার্যক্ষেত্রে প্রয়োগের কল্পনা করাও হয়তো তখন পর্যন্ত অসম্ভব, তেমন আবিষ্কারকে মার্কস যত আনন্দেই স্বাগত জানান না কেন, তিনি সম্পূর্ণ অন্য ধরনের আনন্দ পেতেন যখন কোনো আবিষ্কার শিল্পে এবং সাধারণভাবে ঐতিহাসিক বিকাশে একটা আশু বৈপ্লবিক পরিবর্তন সূচিত করছে। উদাহরণস্বরূপ, বিদ্যুৎশক্তির ক্ষেত্রে যেসব আবিষ্কার হয়েছে তার বিকাশ এবং সম্প্রতি মার্সেল দেপ্রের আবিষ্কারগুলি তিনি খুব মন দিয়ে লক্ষ করতেন।
কারণ মার্কস সবার আগে ছিলেন বিপ্লববাদী। তাঁর জীবনের আসল ব্রত ছিল পুঁজিবাদী সমাজ এবং এই সমাজ যেসব রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান সৃষ্টি করেছে তার উচ্ছেদে কোনো না কোনো উপায়ে অংশ নেওয়া, আধুনিক প্রলেতারিয়েতের মুক্তিসাধনের কাজে অংশ নেওয়া, একে তিনিই প্রথম তার নিজের অবস্থা ও প্রয়োজন সম্বন্ধে, তার মুক্তির শর্তাবলী সম্বন্ধে সচেতন করে তুলেছিলেন। তাঁর ধাতটাই ছিল সংগ্রামের। এবং যে আবেগ, যে অধ্যবসায় ও যতখানি সাফল্যের সঙ্গে তিনি সংগ্রাম করতেন তার তুলনা মেলা ভার। প্রথম Rheinische Zeitung (1842), c¨vwi‡mi Vorwarts (1844), Deutsche Brusseler Zeitung (1847), Neue Rheinische Zeitung (1848-’49), New York Tribune (1852-’61) পত্রিকা এবং এছাড়া একরাশ সংগ্রামী পুস্তিকা, প্যারিস, ব্রাসেলস্ এবং লন্ডনের সংগঠনে তাঁর কাজ এবং শেষে, সর্বোপরি মহান শ্রমজীবী মানুষের আন্তর্জাতিক সমিতি গঠন এটা এমন এক কীর্তি যে আর কোনো কিছু না করলেও শুধু এইটুকুর জন্যই এর প্রতিষ্ঠাতা খুবই গর্ববোধ করতে পারতেন।
এবং তাই, তাঁর কালের লোকেদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি আক্রোশ ও কুৎসার পাত্র হয়েছেন মার্কস। স্বেচ্ছাতন্ত্রী এবং প্রজাতন্ত্রী- দু’ধরনের সরকারই নিজ নিজ এলাকা থেকে তাঁকে নির্বাসিত করেছে। রক্ষণশীল বা উগ্র-গণতান্ত্রিক সব বুর্জোয়ারাই পাল্লা দিয়ে তাঁর দুর্নাম রটনা করেছে। এ সবকিছুই তিনি ঠিক মাকড়শার ঝুলের মতোই ঝেঁটিয়ে সরিয়ে দিয়েছেন, উপেক্ষা করেছেন এবং যখন একান্ত প্রয়োজনবশে বাধ্য হয়েছেন একমাত্র তখনই এর জবাব দিয়েছেন। আর আজ সাইবেরিয়ার খনি থেকে কালিফোর্নিয়া পর্যন্ত, ইউরোপ ও আমেরিকার সব অংশে লক্ষ লক্ষ বিপ্লবী সহকর্মীদের প্রীতির মধ্যে, শ্রদ্ধার মধ্যে, শোকের মধ্যে তাঁর মৃত্যু। আমি সাহস করে বলতে পারি যে মার্কসের বহু বিরোধী থাকতে পারে, কিন্তু ব্যক্তিগত শত্রু তাঁর মেলা ভার।
যুগে যুগে অক্ষয় হয়ে থাকবে তাঁর নাম, অক্ষয় থাকবে তাঁর কাজ।
কমরেড স্ট্যালিনের মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধার্ঘ
বিশ্ব কমিউনিস্ট আন্দোলনের অন্যতম মহান অথরিটি কমরেড স্ট্যালিনের ৬৪তম মৃত্যুবার্ষিকীতে বাসদ(মার্কসবাদী) কেন্দ্রীয় কার্যপরিচালনা কমিটির উদ্যোগে গত ৫ মার্চ বিকাল ৫টায় কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। পার্টির সাধারণ সম্পাদক কমরেড মুবিনুল হায়দার চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মানস নন্দী ও ফখরুদ্দিন কবির আতিক। সভার শুরুতে নেতৃবৃন্দ কমরেড স্ট্যালিনের প্রতিকৃতিতে পুস্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানান।
সভায় কমরেড মুবিনুল হায়দার চৌধুরী বলেন, ‘কমরেড স্ট্যালিন পার্টি, বিপ্লব ও শ্রমিক শ্রেণীর প্রতি একাত্মতায় নিবেদিত জীবন সংগ্রামে অসাধারণ এক কমিউনিস্ট চরিত্র। বিপ্লবপূর্ব সময়ে পার্টি ও বিপ্লবী শ্রমিক আন্দোলন গড়ে তোলার ক্ষেত্রে, দুনিয়ায় প্রথম শ্রমিক বিপ্লব সংঘটনে বিপ্লবের নেতা লেনিনের সহযোগীরূপে দৃঢ় সাহসী ভূমিকা পালনে ও সমাজতান্ত্রিক সমাজ বিনির্মাণে অবিস্মরণীয় অবদান রেখে গেছেন। ফ্যাসিবাদ বিরোধী যুদ্ধে তিনি শুধু শ্রমিক শ্রেণীরই নয় গোটা দুনিয়ার জনগণের একক নেতা হিসেবে ভূমিকা পালন করে হয়ে উঠেছিলেন মানব সভ্যতা রক্ষার কাণ্ডারী। তিনি ছিলেন দেশে দেশে উপনিবেশিক বিরোধী মুক্তি সংগ্রামে জনগণের ভরসাস্থল ও প্রেরণাদাতা।’ তিনি বলেন, ‘আজ যখন পুঁজিবাদী-সাম্রাজ্যবাদী শিবিরের অপপ্রচারে ও শোধনবাদের ভ্রান্তবিচারে স্ট্যালিনের মহান চরিত্রের উপর কালিমা লেপনের জোয়ার চলছে, তখন এর সমুচিত জবাব দিয়ে সমাজতন্ত্রের গৌরবময় অধ্যায় তুলে ধরা কমিউনিস্টদের অন্যতম দায়িত্ব। এর মধ্য দিয়েই হবে এ মহান অথরিটির শিক্ষার যথার্থ অনুসরণ।’
তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যা কি এদেশের জনগণ পাবে না?
‘ভারত কর্তৃক একতরফা পানি প্রত্যাহার ও বাংলাদেশের কৃষির উপর প্রভাব শীর্ষক’ মতবিনিময় সভা বাসদ (মার্কসবাদী) এবং ‘তিস্তা ও কৃষি বাঁচাও আন্দোলন’ নীলফামারী জেলার উদ্যোগে ২৬ ফেব্রুয়ারি সকাল ১১ টায় টাউন ক্লাব হল রুমে অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন তিস্তা ও কৃষি বাঁচাও আন্দোলনের সংগঠক অধ্যাপক তরিকুল ইসলাম। আলোচনা করেন বাসদ (মার্কসবাদী) কেন্দ্রীয় কার্য পরিচালনা কমিটির সদস্য কমরেড শুভ্রাংশু চক্রবর্ত্তী, পানি বিশেষজ্ঞ ম. এনামুল হক, রিভারাইন পিপলের চেয়ারম্যান শেখ রোকন, বাংলাদেশ শ্রমিক কর্মচারী ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি জহিরুল ইসলাম, উদীচী জেলা সভাপতি মনসুর ফকির, যমুনা টিভির জেলা প্রতিনিধি আতিয়ার রহমান, বাসদ (মার্কসবাদী) রংপুর জেলার সদস্য আহসানুল আরেফিন তিতু প্রমুখ।
আলোচকবৃন্দ বলেন, সকল আন্তর্জাতিক আইন ও রীতি-নীতি লংঘন করে ভারত কর্তৃক উজানে একতরফা পানি প্রত্যাহার করে বাংলাদেশের চতুর্থ বৃহত্তম নদী তিস্তাকে শুকিয়ে মারছে। তিস্তার পানি না পাওয়ায় প্রতিবছর ফসলহানীর কারণে সর্বশান্ত হচ্ছে কৃষক। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা সরকারি সহায়তা না পেয়ে মহাজনী ও এনজিও ঋণের দারস্থ হয়। এই ঋণ পরিশোধ করতে গিয়ে মধ্যচাষী জমিজমা বিক্রি করে গরীব ক্ষেতমজুর, দিনমজুরে পরিণত হয়। তিস্তার গজলডোবা বাঁধ একদিকে শুল্ক মৌসুমে শুকিয়ে মারে আবার বর্ষা মৌসুমে ডুবিয়ে মারে,ফসলী জমি বালু চরে পরিণত হয়। নদী ভাঙ্গনে সর্বশান্ত হয় মানুষ।
আলোচকবৃন্দ আরো বলেন, আমাদের শাসকগোষ্ঠীর নতজানু পররাষ্ট্রনীতির কারণে স্বাধীনতার ৪৪ বছরেও তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যা আদায় হয়নি বরং সকল সরকারই ক্ষমতায় টিকে থাকার স্বার্থে দেশের স্বার্থ বিকিয়ে সাম্রাজ্যবাদী ভারতের স্বার্থে একের পর এক গণবিরোধী চুক্তি করেছে। শুধু তিস্তা নয় দু’দেশের অভিন্ন ৫৪টি নদীর ৫১ টি নদীতে আন্তর্জাতিক নদী আইন অম্যান্য করে ভারত বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য উজানে অসংখ্য বাঁধ, ব্যারেজ দিয়ে এবং ভিন্নখাতে একতরফাভাবে পানি প্রত্যাহার করছে। ভারতের এই পানি আগ্রাসনের কারনে মরুকরণের ঝুঁকিতে গোটা বাংলাদেশ। ভারতের পানি আগ্রাসন ও সরকারের নতজানু নীতির বিরুদ্ধে সর্বস্তরের জনগণকে তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যা আদায় ও ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের ক্ষতিপুরণের দাবিতে নেতৃবৃন্দ ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তোলার আহবান জানান।
ভারত কর্তৃক আন্তঃনদী সংযোগ প্রকল্পের প্রতিবাদে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত
বাসদ (মার্কসবাদী) কুড়িগ্রাম জেলা শাখার উদ্যোগে জেলা পরিষদ মিলনায়তনে ভারত কর্তৃক আন্তঃনদী সংযোগ প্রকল্পের নামে বাংলাদেশকে মরুভূমি করার চক্রান্তের প্রতিবাদে গত ২৭ ফেব্রুয়ারি মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। কুড়িগ্রাম জেলা শাখার সংগঠক মহির উদ্দিন আহমেদ মহিরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখেন পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যপরিচালনা কমিটির সদস্য কমরেড শুভ্রাংশু চক্রবর্ত্তী, জল ও পরিবেশ ইন্সটিটিউটের সাবেক চেয়ারম্যান ম.ইনামুল হক, রিভারাইন পিপল’র মহাসচিব শেখ রোকন, বাংলাদেশ শ্রমিক কর্মচারী ফেডারেশন’র কেন্দ্রীয় সভাপতি জহিরুল ইসলাম, কুড়িগ্রাম প্রেসক্লাবের সভাপতি মমিনুল ইসলাম মঞ্জু, দৈনিক প্রথম আলো কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি শফি খান, সলিডারিটি কুড়িগ্রাম’র নির্বাহী পরিচালক হারুন অর রশিদ লাল, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন’র সাবেক সভাপতি কামরুল আহসান খান, শিক্ষক আখতারুজ্জামান আখতার, ইসমাইল হোসেন, বাসদ (মার্কসবাদী) রাজারহাট উপজেলার সংগঠক জিয়াউর রহমান। মতবিনিময় সভা পরিচালনা করেন স্বপন কুমার রায়।
গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে সারাদেশে বিক্ষোভ
ঢাকা
গ্যাসের দাম বৃদ্ধির ঘোষণার প্রতিবাদে বাসদ (মাকর্সবাদী) ঢাকা মহানগর শাখার উদ্যোগে ২৪ ফেব্রুয়ারি বিকাল সাড়ে ৪টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। দলের মহানগর সংগঠক ফখরুদ্দিন কবির আতিকের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সাইফুজ্জামান সাকন, বেলাল চৌধুরী, সীমা দত্ত প্রমুখ।
ফেনী
গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে বাসদ (মার্কসবাদী) ফেনী জেলা শাখার উদ্যোগে ২৮ ফেব্রুয়ারি বিকাল ৪ টায় ফেনী শহীদ মিনার চত্বরে এক মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাসদ (মার্কসবাদী) ফেনী জেলার সমন্বয়ক জসীম উদ্দিন, সদস্য বাদল চক্রবর্ত্তী, সমাবেশ পরিচালনা করেন মাসুদ রেজা। সমাবেশ শেষে একটি প্রতিবাদ মিছিল শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
চট্টগ্রাম
গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি, চট্টগ্রাম ওয়াসা কর্তৃক পানির মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে ২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ বিকাল ৪টায় বটতলী পুরাতন রেল স্টেশনে বাসদ(মার্কসবাদী) চট্টগ্রাম জেলার উদ্যোগে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। বাসদ (মার্কসবাদী) চট্টগ্রাম জেলার সদস্য সচিব কমরেড অপু দাশ গুপ্তের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন শফিউদ্দীন কবির আবিদ, রফিকুল হাসান, জান্নাতুল ফেরদাউস পপি ও সত্যজিৎ বিশ্বাস। সমাবেশ শেষে একটি মিছিল নগরীর গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে আন্দরকিল্লা মোড়ে এসে শেষ হয়।
বাংলাদেশ নারীমুক্তি কেন্দ্রের উদ্যোগে আন্তর্জাতিক নারী দিবস পালন
১০৭তম আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ নারী মুক্তি কেন্দ্র কেন্দ্রীয় কমিটির উদ্যোগে ৮ মার্চ জাতীয় প্রেসক্লাব থেকে একটি র্যালী শুরু হয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মিলন চত্বরে এসে সমাবেশে মিলিত হয়। এসময় উপস্থিত ছিলেন নারীমুক্তি কেন্দ্রের সভাপতি সীমা দত্ত, সাধারণ সম্পাদক মর্জিনা খাতুন, সহ-সভাপতি সুলতানা আক্তার রুবি, সাংগঠনিক সম্পাদক মনিদীপা ভট্টাচার্য। সোভিয়েত সমাজতন্ত্রের শতবর্ষে পদাপর্ণ উপলক্ষে মনীষীদের কোটেশন সম্বলিত আলোকচিত্র প্রদর্শনীরও আয়োজন করা হয়।
‘কেমন পাঠ্যপুস্তক চাই’ শীর্ষক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত
বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থা ও শিক্ষার মান আজ হুমকির মুখে। এ বছরের প্রথম দিনই সরকার পাঠ্যপুস্তক উৎসব করেছে। কিন্তু সেই পাঠ্যপুস্তকে নজিরবিহীন ভুল, সাম্প্রদায়িকীকরণ, লৈঙ্গিক বৈষম্য ও দলীয় প্রচারণার নির্লজ্জ বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে। ক্ষমতাসীন ধনিক শ্রেণীর এই রাষ্ট্রব্যবস্থা টিকিয়ে রাখার স্বার্থেই সরকার সুপরিকল্পিত ভাবে মানুষের মানবিক চেতনা বিকাশের পথ রুদ্ধ করছে। পুঁজিবাদী শোষণ বলবৎ রাখার জন্যই পাঠ্যপুস্তকে বিষয়বস্তুর পরিবর্তন সহ শিক্ষাক্ষেত্রে নানামুখী আক্রমণ চলতেই থাকবে। বুদ্ধিজীবী মহলসহ শুভবুদ্ধিসম্পন্ন সকল নাগরিককে এই আক্রমণ ঠেকাবার লক্ষ্যে সচেতন ভূমিকা রাখতে হবে।
পাঠ্যপুস্তকে নজিরবিহীন ভুল, সাম্প্রদায়িকীকরণ, লৈঙ্গিক বৈষম্যের প্রেক্ষিতে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট চট্টগ্রাম নগর শাখার উদ্যোগে ৪ মার্চ সকাল ১১ টায় নগরীর স্টুডিও থিয়েটারে ‘কেমন পাঠ্যপুস্তক চাই’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় বক্তাদের এমন মতামত উঠে এসেছে। মত বিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন নগর শাখার সভাপতি তাজ নাহার রিপন। সভায় নগরের বিশিষ্ট লেখক, গবেষক, শিক্ষক, প্রকৌশলী ও চিকিৎসকবৃন্দ আলোচ্য বিষয়ে তাঁদের মতামত তুলে ধরেন।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ড: শিপ্রা দস্তিদার, মুক্তিযুদ্ধ গবেষক ডঃ মাহফুজুর রহমান, নগর পরিকল্পনাবিদ প্রকৌশলী সুভাষ বড়ুয়া, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আমির হোসেন, চট্টগ্রাম ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটির সহযোগী অধ্যাপক নাঈম আবদুল্লাহ, ফতেয়াবাদ বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের প্রভাষক শিলাব্রত দাশ, শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ডাঃ সুশান্ত বড়ুয়া, নোয়াপাড়া বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের সাবেক শিক্ষিকা বিজয়লক্ষী দেবী, প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাষক ফারিয়া হোসেন, মোহসেন আউলিয়া কলেজের প্রভাষক জোলায়খা আখতার, সাংস্কৃতিক সংগঠক ও অভিভাবক শাহীন মঞ্জুর এবং সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি সত্যজিৎ বিশ্বাস মতবিনিময় সভায় আলোচনা করেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সুন্দরবন মেলা ও নবীন বরণ অনুষ্ঠিত
সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার উদ্যোগে গত ২৬ ফেব্রুয়ারি ক্যাম্পাসের স্বোপার্জিত স্বাধীনতা চত্বরে সুন্দরবন মেলা ও নবীন বরণ অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে সুন্দরবন রক্ষার আন্দোলনের নানা তথ্য উপাত্ত, ফটোগ্রাফি ও চিত্রকর্মের মাধ্যমে তুলে ধরা হয় এবং সুন্দরবন রক্ষার আন্দোলনের প্রত্যয় ব্যক্ত করা হয়। সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি ইভা মজুমদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সুন্দরবন মেলা ও নবীন বরণ অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন ইমেরিটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, বাসদ (মার্কসবাদী)’র কার্যপরিচালনা কমিটির সদস্য সাইফুজ্জামান সাকন ও সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি নাঈমা খালেদ মনিকা। আলোচনাসভা শেষে নবীন ছাত্রদের অংশগ্রহণে গান, কবিতা ও নাটক ‘সময়ের দাবি’ পরিবেশিত হয়।
ছাত্র ফ্রন্টের নবীন বরণ ও সম্মেলন
সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট গাইবান্ধা সরকারি কলেজ শাখার ১৩তম সম্মেলন ও নবীন বরণ ১৩ ফেব্রুয়ারি কলেজ ক্যাম্পাসে অনুষ্ঠিত হয়েছে। কলেজ শাখার সভাপতি পরমানন্দ দাসের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক মাহবুব আলম মিলনের সঞ্চালনায় সম্মেলন ও নবীব বরণ অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি ছাত্রনেতা সত্যজিৎ বিশ্বাস, জেলা শাখার সভাপতি শামীম আরা মিনা, সদস্য জুয়েল মিয়া এবং নবীন শিক্ষার্থী অর্থনীতি বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্র আবু সায়েম শান্ত প্রমুখ। আলোচনা শেষে নবনির্বাচিত কমিটিকে পরিচয় করিয়ে দেয়া হয়। এতে মাহবুব আলম মিলনকে সভাপতি এবং জুয়েল মিয়াকে সাধারণ সম্পাদক করে ১৫ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি ঘোষণা করা হয়।
আশুলিয়ায় শ্রমিক নির্যাতন বন্ধ ও ন্যূনতম মোট মজুরী ১৬ হাজার টাকার দাবিতে নারায়ণগঞ্জে শ্রমিক সমাবেশ
আশুলিয়ায় শ্রমিক নির্যাতন বন্ধ ও ন্যূনতম মোট মজুরী ১৬ হাজার টাকা করার দাবিতে ৮ ফেব্রুয়ারি দুপুর ১২টায় গার্মেন্টস শ্রমিক অধিকার আন্দোলনের উদ্যোগে নারায়ণগঞ্জ শহরের বিসিক এর সামনে বিক্ষোভ মিছিল ও শ্রমিক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। গার্মেন্টস শ্রমিক অধিকার আন্দোলনের সমন্বয়ক জহিরুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত শ্রমিক সমাবেশে বক্তব্য রাখেন শ্রমিক নেতা মাহবুবুর রহমান ইসমাইল, শহিদুল ইসলাম সবুজ ও তৌহিদুল ইসলাম।
প্রসঙ্গ : বাল্য বিবাহ নিরোধ আইন
নারীদের অবরুদ্ধ জীবনের দিকেই ঠেলে দিল ‘নারীর ক্ষমতায়নের’ সরকার!
আজ থেকে প্রায় একশত বছর আগে বিদ্যাসাগর নারীর প্রগতির পথকে সুগম করার জন্য পিছিয়ে পরা সমাজের জড়তা ভঙ্গে বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন পাশ করিয়েছিলেন। তখন সমাজের কর্তাব্যক্তিরা বাল্যবিবাহ বন্ধে আইন মেনে নিতে পারেনি কিন্তু যারা এদেশ শাসন শোষণ করতে এসেছিল সেই ইংরেজ সরকার ‘বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন-১৯২৯‘ প্রণয়ন করেছিল। আর আজ নারী যখন নিজে তার পথের বাধা অতিক্রম করছে প্রবল প্রত্যয়ে, যখন সমাজের বেশিরভাগ মানুষ বাল্যবিবাহের কুফল তুলে ধরে এই অভিশাপ থেকে নিজেদের সন্তানদেরর রক্ষা করতে চাইছে তখন সরকার নারী প্রগতির কথা বলে তাকে আরও পিছিয়ে রাখার জন্য কূপমন্ডূক চিন্তা সমাজে প্রতিষ্ঠা করছে। সরকার একদিকে উন্নয়ন, ডিজিটালাইজেশনের শ্লোগান দিচ্ছে, আর অন্যদিকে নারীদের পশ্চাৎপদ সামাজিক অবস্থানকে পরিবর্তনের উদ্যোগ না নিয়ে আরো পশ্চাতে ঠেলে দিচ্ছে। যে দেশে আইন অনুযায়ী ১৮ বছরের নিচে সকল মানব সন্তানকে শিশু বিবেচনা করা হয়, সে দেশে ১৮ বছরের নিচে বিয়ের বিধান রাখা মানেই শিশু বিবাহকে বৈধতা দেয়া। নারীর স্বাস্থ্য, শিক্ষা, অর্থনৈতিক নিরাপত্তা সমস্ত কিছুকে হুমকির মধ্যে রেখে সরকার সংসদে দাঁড়িয়ে জনগণের মতকে তোয়াক্কা না করে শুধু নারী বিরোধী নয় জনবিরোধী বিশেষ বিধান রেখে বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন পাশ করেছে। এদেশের সকল নারী সমাজ ও গণতন্ত্রমনা সকল মানুষ এই বিধানকে প্রত্যাখান করেছে।
নারী পুরুষ উভয়ের জন্য বিশেষ বিধান ‘অপ্রাপ্তবয়স্কদের বিয়ে‘ প্রযোজ্য করে ‘বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন ২০১৭’ শীর্ষক বিলটি সংসদে পাশ হয়েছে। অবিলম্বে এই বিধান বাতিলের দাবি জানিয়ে ২৪ ফেব্রুয়ারি বিকাল ৪.৩০টায় প্রেসক্লাবের সামনে বাংলাদেশ নারীমুক্তি কেন্দ্র কেন্দ্রীয় কমিটির উদ্যোগে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি সীমা দত্তের সভাপতিত্বে ও দপ্তর সম্পাদক তাসলিমা নাজনীন’র পরিচালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন ঢাকা নগর শাখার সভাপতি ও কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি এড. সুলতানা আক্তার রুবি, সাংগঠনিক সম্পাদক মনিদীপা ভট্টাচার্য। সমাবেশে বক্তরা সমস্ত বিবেকবান ও শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষকে এই আইন বাতিলের দাবিতে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান। তাঁরা বলেন, এটি কেবল নারীর অধিকার রক্ষার প্রশ্ন নয়, মানুষের গণতান্ত্রিক চেতনাকে রক্ষার প্রশ্নও বটে।