স্পেশাল ইকোনমিক জোনের নামে উচ্ছেদ রুখে দাঁড়িয়েছে চা-শ্রমিকেরা
সারাদেশের উন্নয়নের ঢেউ এবার আছড়ে পড়েছে হবিগঞ্জে। আর ঢেউয়ের তোড়ে বাস্তুভিটা থেকে উচ্ছেদ হতে চলেছে চুনারুঘাটের চান্দপুর চা-বাগানের ২ হাজার শ্রমিক। শুধু এই শ্রমিকরাই নয়, এর সাথে তাদের পরিবারের আরো প্রায় আট হাজার সদস্য উদ্বাস্তু হবে। সরকার সম্প্রতি চান্দপুর ও বেগমখান বাগানের ৫১১ একর জমি ‘স্পেশাল ইকোনমিক জোন’ প্রতিষ্ঠার নামে বেজার কাছে হস্তান্তর করেছে। ভূমি মন্ত্রণালয় এই জমিকে অকৃষি খাস জমি দেখিয়ে বন্দোবস্ত দিয়েছে। বলা হয়েছে এই জমি ব্রিটিশ কোম্পানি ডানকান ব্রাদার্সের কাছে লিজ দেয়া ছিল, তা বাতিল করে ‘স্পেশাল ইকোনমিক জোন’-এর জন্য বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। হবিগঞ্জের জেলা প্রশাসক ইতোমধ্যে বলেছে, চা শ্রমিকরা এতদিন সরকারি খাস জমিতে অবৈধভাবে চাষাবাদ করেছেন। এটি একটি সর্বৈব মিথ্যা ছাড়া আর কিছু নয়।
চা শ্রমিকদের ইতিহাস কম-বেশি আমরা সবাই জানি। ব্রিটিশ আমলে এঁদের পূর্বপুরুষদের জবরদস্তি করে ধরে আনা হয়েছিল, এঁদেরকে পশুর মতো খাটানো হয়েছে, এঁদের শ্রমকে কাজে লাগিয়ে জঙ্গল কেটে সাফ করে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল আজকের এই চা-বাগান। শুধু নয়নাভিরাম সৌন্দর্যই নয়, এই চা আজকে বাংলাদেশের প্রধান অর্থকরী ফসলও বটে। কিন্তু শতাব্দী পার হয়ে গেলেও চা-শ্রমিকদের ভাগ্যের চাকা ঘোরেনি, জীবনে উন্নতির ছোঁয়া লাগেনি। বরং যুগের পর যুগ বংশানুক্রমিকভাবে চা-শ্রমিকের ‘ভাগ্য’কেই বরণ করতে হয়েছে এঁদের। এখনো উদয়াস্ত পরিশ্রম করে মাইনে মেলে মোটে দৈনিক ৭৯ টাকা। অনেক আন্দোলন, জুলুম নির্যাতনের পর দৈনিক ৬ টাকা মজুরি বৃদ্ধির দাবি মানলেও এখন পর্যন্ত তা বাস্তবায়িত হয়নি। এই টাকায় একজন মানুষের তিনবেলা আহারই তো জুটে না। জীবনের অন্যান্য চাওয়া পাওয়া না হয় বাদই গেল। শিক্ষা নেই, চিকিৎসা নেই – মানবিক জীবনের সমস্ত রকম সুবিধা থেকে বঞ্চিত। উপরন্তু এখন তাদের নিজস্ব ভূমি থেকে বিতাড়িত হওয়ার উপক্রম। দেড় শতাব্দী আগে জঙ্গল কেটে যে ভূমিকে বাসযোগ্য, আবাদযোগ্য করেছে এই শ্রমিকরা, তাদের পূর্বপুরুষরা সেই ভূমির মালিকানা কেন তাদের হবে না? এত স্বল্প মাইনেতে জীবন চলে না তাই এই জমিতে সবজি আলু টমেটো ধান ইত্যাদি চাষ করে কোনোমতে অস্তিত্ব টিকিয়ে রেখেছে চা-শ্রমিকরা। কিন্তু এই জমিকে অকৃষি জমি হিসেবে দেখিয়ে ভূমি মন্ত্রণালয় ও বেজা নির্লজ্জ মিথ্যাচার করে দেশের মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে।
সরকারের ‘কৃষিজমি সুরক্ষা ও ভূমি ব্যবহার এবং আনুষঙ্গিক অন্যান্য বিষয়ে বিধান প্রণয়নকল্পে আইন,২০১৫’-এর খসড়ার ৪ ধারায় বলা হয়েছে, “কোনো কৃষিজমি নষ্ট করিয়া আবাসন বাড়িঘর, শিল্প-কারখানা ইটের ভাটা বা অন্য কোনো অকৃষি স্থাপনা কোনোভাবেই নির্মাণ করা যাইবে না … বাংলাদেশের সকল কৃষিজমির ওপর দেশের যেকোনো কৃষক বা কৃষিজীবীর অধিকার থাকিবে এবং খরিদ সূত্রে বা উত্তরাধিকার সূত্রে বা সরকারের নিকট হইতে প্রাপ্ত বন্দোবস্ত সূত্রে তাহা ভোগদখলে রাখিবার অধিকার অক্ষুণ্ণ থাকিবে … দুই বা তিন ফসলি জমি সরকারি-বেসরকারি কোনো প্রতিষ্ঠানের জন্য কোনো অবস্থাতেই অধিগ্রহণ করা যাইবে না;”
খসড়া আইনেও যে সুপারিশ করা হয়েছে তাতেও এই ভূমির ওপর চা-শ্রমিকদের মালিকানা প্রতিষ্ঠিত হওয়ার কথা। অথচ খসড়া আইনের এই প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন না করে উল্টো ভূমি থেকে উচ্ছেদের ষড়যন্ত্র করছে। উন্নয়নের জন্যই নাকি এই উচ্ছেদ! প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক, শ্রমিকদের বাস্তুচ্যুত করে কার উন্নয়ন হবে? যুগের পর যুগ যে শ্রমিকরা খেয়ে না খেয়ে প্রাণ ধারণ করছে, মজুরি বৃদ্ধির মতো ন্যায়সঙ্গত দাবি মানা হচ্ছে না — এ বিষয়ে সরকারের কোনো পদক্ষেপ নেই, চা-শ্রমিকদের সন্তানদের শিক্ষিত করার জন্য স্কুল প্রতিষ্ঠার কোনো উদ্যোগ নেই, চিকিৎসার জন্য হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার কোনো উদ্যোগ নেই — এইসব মৌলিক অধিকার পূরণ না করে ইকোনমিক জোন হলে শ্রমিকদের জীবনের উন্নতি হবে এর এতটুকু নিশ্চয়তা কে দেবে?
সত্য কথাটি হলো, এই এর দ্বারা লাভবান হবে ব্যবসায়ীরা। ইকোনমিক জোনে কর ও শুল্ক মওকুফসহ বিভিন্ন ধরনের সুযোগ সুবিধা দেয়ায় ব্যবসায়ীরা বিনিয়োগ করবে। বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার জন্য এমনকি শ্রম আইন থেকে দায়মুক্তি দেয়ার ঘোষণাও দেয়া হয়েছে।
জমি থেকে উচ্ছেদ করে এখন আবার কর্মসংস্থান হবে বলে দরদ দেখানোর চেষ্টা করছে। এই শ্রমিকদের প্রতি দরদ যদি থাকতোই তাহলে তো এদের পথে বসানোর সর্বনাশা পরিকল্পনা নেয়া হতো না। আর ভাবখানা এমন যে শ্রমিকদের কর্মসংস্থানের জন্যই ইকোনমিক জোন করা হচ্ছে। আসল কথাটি হলো শ্রমিক ছাড়া ইকোনমিক জোন চলবে কী করে? এমনিতেই নামমাত্র মজুরিতে কাজ করে চা-শ্রমিকরা, এখন জমি হারিয়ে উদ্বাস্তু হলে বেঁচে থাকার তাগিদে বাধ্য হয়ে অল্প মজুরিতে ইকোনমিক জোনে কাজ করবে। ফলে সরকার কর্তৃক প্রদেয় সুযোগ-সুবিধা আর উচ্ছেদ হওয়া শ্রমিকদের সস্তা শ্রমকে কাজে লাগিয়ে দেশি-বিদেশি পুঁজিপতিরা অধিক মুনাফা লুটে নিয়ে যাবে। এর মাধ্যমে কার উন্নয়ন হবে শিল্পপতি-পুঁজিপতিদের নাকি জমি হারানো চা-শ্রমিকদের? তাই কর্মসংস্থান নয়, সস্তা শ্রম লুণ্ঠনের দ্বার অবারিত হবে।
আশার কথা চা-শ্রমিকরা সরকারের এই অন্যায় সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবিতে আন্দোলন শুরু করেছেন। গত ১২ ডিসেম্বর জমি অধিগ্রহণের জন্য গেলে চা-শ্রমিকদের প্রতিরোধের মুখে ব্যর্থ হয় প্রশাসন। কর্মবিরতি, অবস্থান, সমাবেশ-স্মারকলিপি পেশের মধ্য দিয়ে এখনো আন্দোলন অব্যাহত আছে।
দাসত্বের শৃঙ্খলে বন্দি পুস্তক বাঁধাই শ্রমিক
মজুরি ২৫০ টাকা করার দাবি শ্রমিক কর্মচারী ফেডারেশনের
বাঁধাই শ্রমিকদের ৮ ঘণ্টা কাজের মজুরি(রোজ) কমপক্ষে ২৫০ টাকা, সবেতন সাপ্তাহিক ছুটি, দুর্ঘটনায় ক্ষতিপূরণের নীতিমালা প্রণয়নের দাবিতে বাংলাদেশ শ্রমিক কর্মচারী ফেডারেশনের উদ্যোগে ধারাবাহিক আন্দোলন চলছে। দীর্ঘদিন ধরেই এই শ্রমিকরা তাদের ন্যায্য দাবি জানিয়ে আসছে। কিন্তু সরকার তাদের দাবির প্রতি কর্ণপাত করছে না। বছরের প্রথম দিনে স্কুল শিক্ষার্থীদের হাতে বই পৌঁছে দেওয়ার কৃতিত্ব জাহির করছে সরকার। কিন্তু এর পশ্চাতে আছে বাঁধাই শ্রমিকদের রক্ত জল করা শ্রম, জীবনের অনেক বঞ্চনার দীর্ঘশ্বাসের গোপন কাহিনী। যে শ্রমিকরা বই বাঁধাই করে, সেই শ্রমিকরাই তা পড়তে পারে না। সারাদিন অন্ধকার ঘুপচিতে কাজ করে । শিক্ষাকে তুলনা করা হয় আলোর সাথে — কিন্তু এই আলো শোষণ আর দারিদ্র্যের দুষ্টচক্র ভেদ করে অন্ধকার ঘুপচিতে পৌঁছায় না কোনোদিন। সকাল ৮টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত পরিশ্রম করতে হয়, কিন্তু মনুষ্যোচিত মজুরিও জোটে না। বর্তমানে বাড়ি ভাড়া, গাড়ি ভাড়া, গ্যাস বিদ্যুতের যেভাবে মূল্য বেড়েছে, চাল ডালসহ নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের আকাশ ছোঁয়া মূল্যবৃদ্ধির সময়ে মাত্র ১৫০-১৭০ টাকা মজুরিতে কীভাবে চলে এই শ্রমিকের সংসার? নারী শ্রমিকরা সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত পায় মাত্র ১০০-১২০ টাকা আর শিশু শ্রমিকরা সকাল ৭টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত কাজ করে পায় তিন বেলা খাবার ও মাস শেষে ১০০০ থেকে ১৫০০ টাকা। নেই কোনো সাপ্তাহিক ছুটি বা জাতীয় দিবসে সরকারি ছুটি। এমনকি গত ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসেও কাজ করতে হয়েছে সব শ্রমিককে। মুনাফার লোভে মালিকরা অমানুষিক পরিশ্রম করাচ্ছে। মুনাফার লোভ মালিকদের কতটা নৃশংস করে তোলে যে সারা জীবন বাঁধাই কারখানায় কাজ করলেও পুরাতন কাটিং মেশিনের ত্রুটিতে শ্রমিকদের হাত কেটে পড়ে গেলে সহযোগিতার মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে, দু’মাস পরে কোনো টাকা না দিয়ে তাড়িয়ে দেয় দুর্ঘটনা কবলিত শ্রমিককে।
এই অন্যায় নির্যাতনের প্রতিকার দরকার। যে মালিকী ব্যবস্থা সভ্যতার কারিগর শ্রমিকদের অমানবিক জীবনযাপনে বাধ্য করছে সেই মালিকী ব্যবস্থার অবসান দরকার। তাই বাংলাদেশ শ্রমিক-কর্মচারী ফেডারেশন বাঁধাই শ্রমিকদের ন্যায্য পাওনা ও মর্যাদার জীবন প্রতিষ্ঠার জন্য লড়াই গড়ে তোলার চেষ্টা করছে। তার অংশ হিসেবে ২৫ ডিসেম্বর বিকাল ৪টায় পুরান ঢাকার বাহাদুর শাহ্ পার্কের সামনে সমাবেশ এবং পরবর্তীতে শ্যামবাজার, সূত্রাপুর, লক্ষ্মীবাজার, বাংলাবাজারে শ্রমিকদের এক মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।
মিছিল শেষে ৬৫, প্যারীদাস রোডস্থ বাংলাদেশ পুস্তক বাঁধাই ব্যবসায়ী সমিতি কার্যালয়ে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। সমাবেশে ফেডারেশনের সূত্রাপুর থানা শাখার সংগঠক রাজীব চক্রবর্তীর সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি কমরেড জহিরুল ইসলাম, ফখ্রুদ্দিন কবির আতিক, ছাত্রনেতা মাসুদ রানা ও বাঁধাই শ্রমিক নেতা জামিল ভূঁইয়া, মানিক হোসেন, শাহিদুল ইসলাম, মনির হোসেন, যাদু মিয়া প্রমুখ।
নেতৃবৃন্দ বলেন, বাঁধাই শ্রমিকদের ৮ ঘণ্টা (রোজ) কাজের মজুরি ২৫০ টাকা, সবেতন সাপ্তাহিক ছুটি, দুর্ঘটনায় ক্ষতিপূরণের নীতিমালার দাবি আন্দোলনের মাধ্যমে আদায় করতে হবে। শ্রমজীবি মানুষের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন ছাড়া এই সমাজে বেঁচে থাকার আর কোনো বিকল্প রাস্তা নেই। সেই দাবিতে সকলকে একসাথে লড়াইয়ে নামতে হবে।
একই দাবিতে ৮ জানুয়ারি ’১৬ বিকাল ৪টায় বাহাদুর শাহ্ পার্কের সামনে থেকে মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সমাবেশে রাজীব চক্রবর্তীর সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক কমরেড উজ্জ্বল রায়, ফখ্রুদ্দিন কবির আতিক, ছাত্রনেতা মাসুদ রানা ও শ্রমিক প্রতিনিধি জামিল ভূঁইয়া, মানিক হোসেন প্রমুখ। বক্তারা বলেন, “গত ২০১৫ সালেও মজুরি বাড়েনি। ২০১৪ সালে বেড়েছিল ১০ টাকা প্রতি রোজে। কিন্তু গত দুই বছরে বাজারে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম, বাড়ি ভাড়া, গাড়ি ভাড়া বেড়েছে অনেকগুণ।”
সাম্প্রতিক শিক্ষক আন্দোলন প্রসঙ্গে
সর্বোচ্চ সামাজিক মর্যাদা ও বেতন কাঠামো নিশ্চিত কর
সৈয়দ মুজতবা আলীর ‘পাদটীকা’ গল্পের পন্ডিত মশাইয়ের কথা মনে আছে? পন্ডিত মশাই তার ছাত্রদের প্রশ্ন করেছিলেন — ‘আমি, ব্রাহ্মণী, বৃদ্ধা মাতা, তিন কন্যা, বিধবা পিসি, দাসী মিলে আমরা আটজন। আমাদের সকলের জীবন ধারণের জন্য আমি মাসে পাই পঁচিশ টাকা। আর লাটসাহেবের তিন ঠ্যাঙ্গা কুত্তাটার পিছনে মাসে পচাত্তর টাকা খরচ হয়। এখন বল তো দেখি, এই ব্রাহ্মণ পরিবার লাট সাহেবের কুকুরের ক’টা ঠ্যাঙ্গের সমান?’ পন্ডিত মশাইয়ের এই আর্তনাদমিশ্রিত প্রশ্নের জবাব ছাত্ররা দিতে পারেনি। বৃটিশযুগে শিক্ষকসমাজের দৈন্যদশার চিত্র এমনই শ্লেষাত্মক ভাষায় তুলে ধরেছিলেন সৈয়দ মুজতবা আলী। এর মাধ্যমে বোঝা যায় বৃটিশদের শিক্ষা সম্পর্কিত দৃষ্টিভঙ্গি কি ছিল।
সময় পেরিয়ে গেছে। কিন্তু শিক্ষকদের দৈনদশার এই চিত্র কি পাল্টেছে? আমাদের প্রাথমিক শিক্ষার ভিত যারা গড়ে দেন সেই প্রাথমিক শিক্ষকদের মর্যাদা আজও তৃতীয় শ্রেণীর অন্তর্গত। শুধু তাই নয়, তাঁদের বেতন শুরু হয় চার হাজার ৭০০ টাকা এবং সব মিলিয়ে মাসে তাঁরা পান আট হাজার টাকা। একজন সরকারি গাড়িচালকের বেতনও ১০ হাজার টাকার বেশি। সম্প্রতি সংবাদপত্রের জন্য অষ্টম ওয়েজ বোর্ডের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে, সেখানে একজন পিয়নের বেতনও এর দ্বিগুণ। (তথ্যসূত্র : প্রথম আলো) এবছর নতুন করে যে অষ্টম বেতন কাঠামো ঘোষণা করা হয়েছে তাতে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বেতন সচিবদের তুলনায় কয়েক ধাপ নিচে নামিয়ে দেয়া হয়েছে। সিলেকশন গ্রেড বাতিল করা হয়েছে। সরকারি কলেজে অধ্যাপক পদে কর্মরত শিক্ষকদের বেতন বৈষম্য তৈরি করা হয়েছে, সিলেকশন গ্রেড ও টাইম স্কেল বাদ দেয়া হয়েছে।
এই যখন অবস্থা, তখন বৈষম্যপূর্ণ অষ্টম বেতন কাঠামো বাতিলের দাবিতে গত কয়েক মাস ধরে শিক্ষকরা লাগাতার আন্দোলন করে আসছেন। সরকার দাবি তো মানেইনি বরং আন্দোলনকারী শিক্ষকদের নিয়ে নানা সময় মন্ত্রী এমনকি খোদ প্রধানমন্ত্রীও কটাক্ষ করেছেন। অর্থমন্ত্রী বলেছেন, ‘জ্ঞানের অভাবে শিক্ষকরা আন্দোলনে নেমেছেন’। শিক্ষকদের তীব্র প্রতিক্রিয়ায় অর্থমন্ত্রী দুঃখ প্রকাশ করলেও কিছুদিন পরেই প্রধানমন্ত্রী অত্যন্ত কঠোর ভাষায় শিক্ষকদের শাসিয়েছেন। বলেছেন, ‘আমি মনে হয় একটু বেশি দিয়ে ফেলেছি। কমিয়ে দেয়া বোধ হয় ভালো ছিল।’ দেশের সর্বোচ্চ পদে আসীন হয়ে শিক্ষকদের বিষয়ে এ কেমন আচরণ! দেশের কোটি কোটি মানুষের শ্রমে-ঘামে পরিপুষ্ট হয় রাষ্ট্রের যে কোষাগার, তার টাকা জনগণের স্বার্থে ব্যয়িত, শিক্ষা-শিক্ষকদের জন্য ব্যয়িত হবে তাই তো ছিল স্বাভাবিক। কিন্তু মনে হবে প্রধানমন্ত্রী যেন ব্যক্তিগতভাবে শিক্ষকদের অর্থ দিচ্ছেন! শিক্ষকসমাজকে এভাবে অপমানিত করে তাঁর এই বক্তব্য কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।
শিক্ষকরা হচ্ছেন মানুষ গড়ার কারিগর। জীবনের ঊষালগ্নে তাঁদের হাত ধরেই জ্ঞানচর্চা শুরু হয়। ক্রমে আমরা আমাদের সমাজ, প্রকৃতিকে চিনতে শিখি। উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এসে সেই জ্ঞান আরও পরিপূর্ণতা পায়, অধিকতর দক্ষ মানুষ হিসেবে আমরা গড়ে উঠি। এভাবে মানুষ গড়ার পথে হেঁটে আমাদের দেশে বিখ্যাত হয়েছেন প্রাতঃস্মরণীয় বিদ্যাসাগর, রোকেয়া, রমেশচন্দ্র মজুমদার, আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়, জগদীশচন্দ্র বসু, সত্যেন্দ্রনাথ বসু, ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ, গোবিন্দচন্দ্র দেব, আখলাকুর রহমান, আনোয়ার পাশা, মোফাজ্জ্বল হায়দার চৌধুরী, ড. শামসুজ্জোহা প্রমুখ শিক্ষকবৃন্দ। জ্ঞানের সাধনায় ও বিতরণে তাঁরা নিজেদের জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। তাদের কর্মকা- এই জাতির মনন গড়ে তুলতে অতুলনীয় ভূমিকা পালন করেছিল, পথকে আলোকিত করেছিল। কিন্তু পরাধীন দেশে আমাদের এই মহান শিক্ষকেরা প্রাপ্য সম্মান পাননি। স্বৈরাচারী রাষ্ট্রে তাঁরা সেটা পাবার আশাও করেন নি। একারণেই সেদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকসমাজ শাসকের রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বায়ত্তশাসনের দাবিতে রাস্তায় নেমেছিলেন। মুক্তি সংগ্রামে ছাত্রদের উজ্জীবিত ও উৎসাহিত করেছিলেন। নিজেরাও শরিক হয়েছিলেন এই মহত্তর সংগ্রামে। কিন্তু স্বাধীনতার পর শিক্ষকদের সেই আকাক্সক্ষা কতটুকু পূরণ হয়েছে?
স্বাধীন দেশেও শিক্ষকসমাজ অবহেলিত। প্রাথমিক থেকে উচ্চশিক্ষা সবক্ষেত্রেই এই অবহেলার চিত্রটি খুঁজে পাওয়া যায়। এবার শিক্ষকদের কয়েক ধাপ পদ অবনতির মাধ্যমে এই পরিস্থিতিকে আরও দুঃসহ করা হলো। একজন শিক্ষক যখন আর্থিকভাবে নিরাপত্তাহীনতায় ভোগেন তখন তাঁর পক্ষে নির্বিঘ্নে পাঠদান করা দুঃসাধ্য। বস্তুত আমাদের দেশে শিক্ষকদের বেতন পৃথিবীর মধ্যে নিম্নতম কয়েকটি দেশের সারিতে। এখানে সর্বোচ্চ স্থানে অধিষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন প্রভাষক-প্রফেসর বেতন পান (বর্তমান) ১১.০০০ থেকে ২৯,০০০ টাকা আর নতুন স্কেলে ২২,০০০ থেকে ৫৬,০০০ টাকা। অন্যদিকে পার্শ¦বর্তী দেশ ভারতে একজন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক পান ৭২,২০৯ থেকে ১,৬৮,৭৪৫ টাকা; নেপালে ২৮,১৯২ থেকে ৬৫,১৮৪; পাকিস্তানে ৬৫,১৮৪ থেকে ২,০৩,৭০০; শ্রীলঙ্কায় ১,০৫,৬৮০ থেকে ১,৮৬,৩৪৫; মালায়েশিয়ায় ২,৫৩,১৫৮ থেকে ৩,৬০,৩০৫; জাপানে ২,৪২,৭২৯ থেকে ৪,৫১,৮৮৮; যুক্তরাষ্ট্রে ৩,৭৩,৯১২ থেকে ৬,০১,৭৩০; কানাডা ৪,২৪,১৮৫ থেকে ৬,৫১,১৮৮; যুক্তরাজ্যে ৩,৩২,১৯৪ থেকে ৬,৮১,৯০৬ টাকা। কথায় কথায় যারা আমেরিকা-ইউরোপের উদাহরণ আনেন তারা এখন শিক্ষকদের বেতনের ক্ষেত্রে কি বলবেন? শিক্ষক সমাজের এই বেহাল অবস্থার কারণে পুরো শিক্ষাব্যবস্থা যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, শিক্ষকদেরও ঠেলে দেয়া হচ্ছে ‘যেভাবেই হোক টাকা রোজগারের’ রাস্তায়। ফলে ক্ষুণ্ণ হচ্ছে পেশাগত নৈতিকতাও। তাই আমরা মনে করি শিক্ষার স্বার্থেই বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের সর্বোচ্চ ও স্বতন্ত্র বেতন স্কেলের দাবিটি অত্যন্ত ন্যায্য।
সাথে সাথে একটি কথাও বলতে চাই, শুধু গ্রেড বৃদ্ধি কিংবা আমলাদের সমকক্ষ হলেই বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের মর্যাদা বাড়বে কি? শিক্ষকসমাজের কারও বক্তব্য শুনে আমাদের মনে হয়েছে, আমলাদের প্রতিহিংসার কারণেই শিক্ষকরা বঞ্চিত হচ্ছেন, সম্মান পাচ্ছেন না। বাস্তবে ব্যাপারটা আদৌ সে রকম কি? আমলারা রাষ্ট্রীয় প্রশাসনের অংশ এবং রাষ্ট্রের পরিচালক সরকারের আজ্ঞাবহ। রাষ্ট্রের দৃষ্টিভঙ্গিই আমলাদের কর্মকান্ডে প্রতিফলিত হয় মাত্র। যে নীতি ও পদ্ধতি রাষ্ট্র গ্রহণ করে, আমলারা তা-ই কার্যকর করেন।
এ প্রসঙ্গে আমরা আরেকটি বিষয় সংশ্লিষ্ট সকলকে ভেবে দেখতে বলব — শিক্ষকদের মর্যাদা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মর্যাদা কিংবা বৃহৎ অর্থে শিক্ষা সম্পর্কিত সরকারের দৃষ্টিভঙ্গি থেকে বিচ্ছিন্ন কোনো বিষয় নয়। যেমন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মর্যাদা বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদা তথা স্বায়ত্তশাসনের সাথে যুক্ত। স্বাধীনতার পর ৭৩-এর অধ্যাদেশ-এর মাধ্যমে চারটি বিশ্ববিদ্যালয়কে স্বায়ত্তশাসন দেয়া হলেও নানা দুর্বলতাও রেখে দেয়া হয়েছিল। সেগুলোকে কাজে লাগিয়ে সকল সরকারই বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে নিজেদের দলীয় সম্পত্তি বানানোর অপচেষ্টা চালিয়েছে। হস্তগত করেছে স্বায়ত্তশাসনের চেতনা এবং ভূলুণ্ঠিত করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদা। পরবর্তীতে প্রতিষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ক্ষেত্রে স্বায়ত্তশাসনের সুযোগটুকুও রাখা হয়নি। এইক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষকের ভূমিকাও কম দায়ী নয়। তারা এতদিনের লড়াইয়ের মাধ্যমে অর্জিত সম্মান-স্বাধীনতাকে প্রশাসনিক-আর্থিক স্বার্থ-সুবিধার বিনিময়ে শাসকশ্রেণীর কাছে বিকিয়ে দিয়েছেন। তাই প্রধানমন্ত্রী বলতে পারেন, ‘যারা আন্দোলন করছেন, তারা সরকারের কাছে কি সুযোগ-সুবিধা নিয়েছেন তাও দেখতে হবে।’ প্রধানমন্ত্রীর এমন দম্ভোক্তির পরও শিক্ষকদের নীরবতা তাদের অসহায়ত্বকে ফুটিয়ে তোলে।
একইসাথে আরেকটি বিষয় উল্লেখযোগ্য, আন্দোলনের একপর্যায়ে পে-কমিশনের চেয়ারম্যান ফরাসউদ্দিন বলেছিলেন যে, ‘বিশ্ববিদ্যালয়গুলো আর্থিকভাবে স্বয়ংসম্পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত শিক্ষকদের স্বতন্ত্র বেতন স্কেল করা যাবে না।’ এই মন্তব্য খুবই তাৎপর্যপূর্ণ ও ইঙ্গিতবহ। বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থিকভাবে স্বয়ংসম্পূর্ণ হওয়ার মানে কি আমরা সবাই জানি, রাষ্ট্র আর বরাদ্দ দেবে না, শিক্ষার্থীদের থেকে ব্যয়ের পুরো অর্থ আদায় করা হবে।
তাই একথা সহজেই বলা যায় শিক্ষকদের বেতন-ভাতার বিষয়টি রাষ্ট্রের শিক্ষা বাজেট এবং শিক্ষা সম্পর্কিত দৃষ্টিভঙ্গির সাথে যুক্ত। শিক্ষকদের স্বতন্ত্র পে স্কেল না দেওয়া এবং শিক্ষার বাণিজ্যিকীকরণ একই নীতির-ই ফলাফল। এই পরিস্থিতিতে আমরা মনে করি, উচ্চশিক্ষার সম্পূর্ণ আর্থিক দায়িত্ব রাষ্ট্রকে গ্রহণ করতে হবে। একইসাথে শিক্ষকসমাজের সর্বোচ্চ বেতন-কাঠামো ও সামাজিক মর্যাদাও সরকারকে নিশ্চিত করতে হবে। আজ সকল মানুষের শিক্ষার অধিকারকে সমুন্নত রাখতে হলে ছাত্র-শিক্ষকসহ সকলকে এই দাবিতে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। নাহলে গল্পের পন্ডিতমশাইয়ের মতো অবস্থা দেশের শিক্ষাব্যবস্থার চিরন্তন বাস্তবতা হিসেবে রয়ে যাবে।
সুন্দরবন ধ্বংসকারী রামপাল বিদ্যুৎপ্রকল্প বাতিলের দাবি
পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের সামনে বিক্ষোভ
যে পরিবেশ মন্ত্রণালয় পর পর ছয় বার রামপাল প্রকল্প অনুমোদন দেয়নি, সরকারের চাপের মুখে সেই পরিবেশ মন্ত্রণালয় রামপাল কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রকে পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর নয় বলে ছাড়পত্র দিয়েছে। পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের এই অনৈতিক অবস্থান পরিবর্তনের প্রতিবাদে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছে গণতান্ত্রিক বাম মোর্চা।
সুন্দরবনের পাশে রামপাল কয়লাভিত্তিক তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র বাতিল এবং পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের ছাড়পত্র বাতিলের দাবিতে গণতান্ত্রিক বাম মোর্চা পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের সামনে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। ১৩ জানুয়ারি দুপুর সাড়ে বারোটার দিকে সচিবালয়ের ৫ নম্বর গেটের কাছে এ বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় মোর্চার বর্তমান সমন্বয়ক অধ্যাপক আবদুস সাত্তারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (মার্কসবাদী)’র নেতা শুভ্রাংশু চক্রবর্তী, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু, গণসংহতি আন্দোলনের আবুল হাসান রুবেল, সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের আহ্বায়ক কমরেড হামিদুল হক, ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগের নজরুল ইসলাম।
এর আগে সাড়ে ১১টার দিকে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সেখান থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে পুরানা পল্টন হয়ে পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের উদ্দেশ্যে এগিয়ে যায় গণতান্ত্রিক বাম মোর্চার নেতাকর্মীরা। তাদের মিছিল সচিবালয়ের ৫ নম্বর গেট সংলগ্ন রাস্তায় পৌঁছালে সেখানে তাদের বাধা দেয় পুলিশ।
আঞ্চলিক কার্যালয় ঘেরাও
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সংকট নিরসন কর
সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট রংপুর বিভাগের উদ্যোগে ১৩ জানুয়ারি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আঞ্চলিক কার্যালয় ঘেরাও কর্মসূচি পালন করা হয়। সকাল সাড়ে ১১টায় রংপুর প্রেসক্লাব থেকে মিছিল শুরু হয়ে আঞ্চলিক কার্যালয় অভিমুখে যাত্রা করে। আঞ্চলিক কার্যালয় ঘেরাওকালে পরিচালকের কাছে ৬ দফা দাবি সম্মলিত স্মারকলিপি পেশ করা হয়। মিছিল পূর্ব সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট গাইবান্ধা জেলা সভাপতি নিলুফার ইয়াসমিন শিল্পী। পরিচালনা করেন রংপুর জেলা সাধারণ সম্পাদক রোকনুজ্জামান রোকন। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন কারমাইকেল কলেজ সভাপতি আবু রায়হান বকশি, গাইবান্ধা কলেজ সভাপতি পরমানন্দ দাস, দিনাজপুর কলেজ সভাপতি গোবিন্দ রায়, কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজ সভাপতি স্বপন রায়, ঠাকুরগাঁ সরকারি কলেজ সভাপতি জাকির হোসেন। নেতৃবৃন্দ বলেন, উচ্চ শিক্ষায় চরম দায়িত্বহীনতার শিকার জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। কলেজগুলোর পড়ানোর সমস্ত আয়োজন না করে এবং নতুন কোনো আয়োজনের ব্যবস্থা না করে হঠাৎ করেই ‘অনার্স রেগুলেশন ২০১০’ চালু হয় এবং সিলেবাসের কলেবর দ্বিগুণ করা হয়। এই সৃজনশীল ব্যবস্থায় ২১০ দিন ক্লাসের বাধ্যবাধকতা থাকলেও কারমাইকেলের মত ঐতিহ্যবাহী বড় কলেজে গত ৩-৪ সেশনে বিভিন্ন বিভাগে গড়ে ৪০/৪৫ দিনের বেশি ক্লাস হয়নি। এ থেকে বোঝা যায় অন্য কলেজগুলোর অবস্থা কত করুণ! আমরা দীর্ঘদিন ধরে দাবি করে আসছি সেশনজট নিরসন করতে পর্যাপ্ত শিক্ষক, ক্লাসরুম, স্বতন্ত্র পরীক্ষা হলসহ প্রয়োজনীয় আয়োজন সম্পন্ন করতে কিন্তু জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের এসবের তোয়াক্কা না করে ক্রাশ প্রোগ্রাম চালু করেছে। ফলে কলেজগুলোর পাঠদান প্রক্রিয়া স্থবির হয়ে পড়েছে এবং এটি এখন শুধু পরীক্ষা গ্রহণের প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে।
নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়কে সংকটমুক্ত করে একটা প্রকৃত মানসম্পন্ন উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পরিণত করতে প্রয়োজন স্বতন্ত্র পরীক্ষাহল ও ক্লাসরুম নির্মাণ, পর্যাপ্ত শিক্ষক নিয়োগসহ প্রয়োজনীয় আয়োজন সম্পন্ন করে ২১০ দিন ক্লাস নিশ্চিত করা, ৪ বছরের সমন্বিত কারিকুলাম নির্ধারণ। মার্স্টাস ভর্তির নতুন নিয়ম বাতিল করে পুরাতন নিয়ম বহাল রেখে শিক্ষা জীবন রক্ষা করা, আবাসন সংকট নিরসনে নতুন হল নির্মাণ, লাইব্রেরি সেমিনারে পর্যাপ্ত বই, পরিবহন সংকট নিরসনে নতুন বাস ক্রয় ও নতুন রুটে বাস চালু করা। ক্যাম্পাসগুলোতে স্থায়ী ব্যাংক শাখা চালু ও প্রয়োজনীয় ঔষধ, সার্বক্ষণিক ডাক্তারসহ স্বাস্থ্যকেন্দ্র চালু, যে সমস্ত কলেজে প্রিভিয়াস নেই সেখানে অবিলম্বে (প্রিভিয়াস কোর্স) চালুসহ অনার্স ১ম বর্ষের রুটিনে প্রত্যেক পরীক্ষার মাঝে সময় বাড়িয়ে নতুন রুটিন দিতে হবে।
নোয়াখালি : পর্যাপ্ত ক্লাস নেয়া, স্বতন্ত্র পরীক্ষার হল চালু, পরীক্ষার প্রস্তুতির পর্যাপ্ত সময়ের দাবীতে ছাত্র ফ্রন্ট নোয়াখালী সরকারি কলেজ শাখার উদ্যোগে ১১ জানুয়ারি সকাল ১১টায় নোয়াখালী কলেজ ক্যাম্পাসে মিছিল-সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে ছাত্র ফ্রন্ট নোয়াখালী সরকারি কলেজ শাখার কাউন্সিল প্রস্তুতি কমিটির আহবায়ক ফখরুল ইসলাম ফরহাদের সভাপতিত্বে এবং সদস্য দিপন মজুমদারের পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন ছাত্র ফ্রন্ট জেলা কমিটির সদস্য কাজী জহির উদ্দিন এবং কলেজ শাখার সদস্য জহিরুল হক ফয়সল ও প্রশান্ত মজুমদার। বক্তারা বলেন, প্রায় ১৪০০০ শিক্ষার্থীর বিদ্যাপীঠ নোয়াখালী সরকারি কলেজ পরীক্ষা ও আনুষ্ঠানিক বন্ধের কারণে বছরে ২৭৭ দিন ক্লাস বন্ধ থাকে। ফলে সর্বোচ্চ ৮৮ দিন ক্লাস হওয়ার সুযোগ থাকলেও শিক্ষক, ক্লাসরুম ও আয়োজনের সংকটে তাও হয় না। অন্যদিকে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র স্বার্থ বিরোধী ‘রেগুলেশন এ্যাক্ট ২০১০’ এবং শিক্ষা বিনাশী ‘ক্রাশ প্রোগ্রাম’ চালু করেছে। ফলে শিক্ষায় জটিলতা ও শিক্ষা জীবনের অনিশ্চয়তা বাড়ছে।
বক্তারা অভিযোগ করেন, শিক্ষার বাণিজ্যিকিরণের অংশ হিসাবে সরকারি কলেজে আবাসন, শিক্ষক, ক্লাসরুম, নতুন বই, পরিবহন, বিশুদ্ধ পানি ও টয়লেট সংকটের সমাধান করা হচ্ছে না। নামে-বেনামে ফি আদায় ও ফি বৃদ্ধি করছে। তারা শিক্ষার অধিকার আদায়ে ও শিক্ষক সংকটের সমাধানে ছাত্র সমাজকে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তোলার আহবান জানান।
বর্ধিত ভূমি উন্নয়ন কর প্রত্যাহারের দাবিতে রংপুরে মানববন্ধন-সমাবেশ ও স্মারকলিপি পেশ
বর্ধিত ভূমি উন্নয়ন কর প্রত্যাহারের দাবিতে লাগাতার আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে সমাজতান্ত্রিক ক্ষেতমজুর ও কৃষক ফ্রন্ট। এরই ধারাবাহিকতায় ২০ জানুয়ারি সকাল ১১টায় সংগঠনের রংপুর জেলা শাখার উদ্যোগে নগরীতে মানববন্ধন-সমাবেশ এবং জেলা প্রশাসকের নিকট স্মারকলিপি পেশ করা হয়। রংপুর প্রেসক্লাব চত্বরে সংগঠনের জেলা আহবায়ক আনোয়ার হোসেন বাবলু সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন পলাশ কান্তি নাগ, কৃষক প্রতিনিধি আব্দুস সাত্তার প্রামানিক, সামসুল আলম, মোহাম্মদ ইসলাম, আহসানুল আরেফিন তিতু প্রমুখ।
নেতৃবৃন্দ বলেন, সাধারণ মানুষকে প্রতিনিয়ত সাব রেজিস্ট্রি-ভূমি-সেটেলমেন্ট অফিসের অনিয়ম-হয়রানীর মুখোমুখী হতে হয়। এর পাশাপাশি বর্তমানে নতুন মাত্রা হিসেবে যুক্ত হয়েছে বর্ধিত ভূমি উন্নয়ন কর। চলতি বাংলা সন ১৪২২ হতে সরকারি নির্দেশের কথা বলে ভূমি অফিসের কর্মকর্তা, কর্মচারীগণ রংপুর সিটি কর্পোরেশন এলাকার শতক প্রতি বার্ষিক ভূমি উন্নয়ন কর বাণিজ্যিক-২৫০ টাকা, শিল্প-১৫০ টাকা, কৃষি-আবাসিক ও অন্যান্য কাজে ব্যবহৃত-৫০ টাকা হারে আদায় শুরু করেছে। বিগতসময়ে শতক প্রতি বার্ষিক ভূমি উন্নয়ন কর আবাসিক ও অন্যান্য কাজে ব্যবহৃত ছিল ৭ টাকা। এছাড়াও সিটি কর্পোরেশন বহির্ভূত এলাকায় শতক প্রতি বার্ষিক ভূমি উন্নয়ন কর বাণিজ্যিক-৪০ টাকা, শিল্প-৩০ টাকা, কৃষি-আবাসিক ও অন্যান্য কাজে ব্যবহৃত-১০ টাকা হারে আদায় করছে। রংপুর কৃষি প্রধান অঞ্চল। সিটি কর্পোরেশন এলাকায় প্রায় ৯০ ভাগ কৃষি জমি। এখানকার মানুষের জীবন-জীবিকা প্রধানত কৃষির সাথে সম্পর্কিত। প্রতিনিয়ত উৎপাদন ব্যয় বাড়ছে, কিন্তু কৃষক ফসলের ন্যায্য দাম পাচ্ছে না। ক্ষেতমজুর-দিনমজুরদের সারা বছরের কাজের নিশ্চয়তা নেই। রংপুর সিটি কর্পোরেশন এলাকায় গরিব মানুষদের জন্য টিআর-কাবিখা, কর্মসৃজনসহ সকল প্রকার সরকারি সহায়তা বন্ধ করা হয়েছে। এমনি পরিস্থিতিতে বর্ধিত ভূমি উন্নয়ন কর এই মানুষদের জীবনে গোদের উপর বিষ-ফোঁড়া’র শামিল।
নেতৃবৃন্দ বর্ধিত ভূমি উন্নয়ন কর প্রত্যাহার, কৃষি জমির ক্ষেত্রে ইউনিয়ন, পৌরসভা বা সিটির ব্যবধান রহিতকরণ, ২৫ বিঘা পর্যন্ত কৃষি জমির উন্নয়ন কর মওকুফের সরকারি ঘোষণা বাস্তবায়ন, সিটি কর্পোরেশন এলাকায় পর্যাপ্ত টিআর-কাবিখা, কর্মসৃজন প্রকল্প চালুর জন্য সরকারের নিকট জোর দাবি জানান। সমাবেশের পর জেলা প্রশাসকের নিকট স্মারকলিপি পেশ করা হয়।
এ দাবিতে গত ১৮ জানুয়ারি সন্ধ্যায় রংপুর নগরীর গোলাগঞ্জ ও মরিচটারী বাজারে ক্ষেতমজুর ও কৃষক ফ্রন্টের উদ্যোগে পৃথক দুটি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। একই দাবিতে গত ১৬ ও ১৭ জানুয়ারি নগরীর আমাশু কুকরুল, রঘু বাজার, খলিশাকুরীতে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। বর্ধিত ভূমি উন্নয়ন কর প্রত্যাহার ও ধানের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করার দাবিতে ক্ষেতমজুর ও কৃষক ফ্রন্টের উদ্যোগে ২০ ডিসেম্বর বেলা ১২টায় জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি পেশ করা হয়।
ভোটারবিহীন নির্বাচনের দুই বছর পূর্তিতে বাম মোর্চা
ভোটাধিকারসহ গণতান্ত্রিক অধিকার সংকুচিত করে স্বৈরতান্ত্রিক নিপীড়নমূলক শাসন জোরদার করা হয়েছে
৫ জানুয়ারি ২০১৪-এর ভোটারবিহীন নির্বাচনের দুই বছর পূর্তি এবং সদ্যসমাপ্ত পৌরসভা নির্বাচনের প্রেক্ষিতে দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে গণতান্ত্রিক বাম মোর্চার বক্তব্য তুলে ধরতে এক সংবাদ সম্মেলন ৪ জানুয়ারি সকাল সাড়ে ১১টায় ২৩/২ তোপখানা রোডস্থ কমরেড নির্মল সেন মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন গণতান্ত্রিক বাম মোর্চার কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারী অধ্যাপক আবদুস সাত্তার। উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় পরিচালনা পরিষদ সদস্য সাইফুল হক, আবদুস সালাম, মোশরেফা মিশু, হামিদুল হক, ফখ্রুদ্দিন কবির আতিক প্রমুখ।
সংবাদ সম্মেলনে নেতৃবৃন্দ বলেন, ৫ জানুয়ারি ’১৪ সালের ভোটারবিহীন নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত মহাজোট সরকারের দুই বছরে গণতান্ত্রিক অধিকারকে ক্রমাগত সংকুচিত করে দেশে এক স্বৈরতান্ত্রিক নিপীড়নমূলক শাসন কায়েম করা হয়েছে। ৫ জানুয়ারির নির্বাচন এবং গতবছর ঢাকা ও চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের ধারাবাহিকতায় সদ্যসমাপ্ত পৌরসভা নির্বাচনে প্রশাসনিক কারসাজি, বলপ্রয়োগ ও জালিয়াতির মাধ্যমে জনগণের ভোটাধিকারকে আরেকবার পদদলিত করা হয়েছে।
নেতৃবৃন্দ বলেন, দেশে দীর্ঘস্থায়ী ফ্যাসিবাদী শাসনের বিপদ ক্রমে প্রবল হয়ে উঠছে। মহাজোট সরকার জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়েছে। স্বাধীনভাবে মত প্রকাশ ও সভা-সমাবেশের গণতান্ত্রিক অধিকারকেও নানাভাবে হরণ করে চলেছে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে বিচারবহির্ভূত হত্যকান্ড-গুম-নির্যাতন রেওয়াজে পরিণত হয়েছে। বিচারব্যবস্থাসহ সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানসমূহ, গণমাধ্যমসহ সোশ্যাল মিডিয়াকে নানাভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে।
তারা বলেন, মহাজোট সরকার উন্নয়নের কথা বলে গণতন্ত্রকে বনবাসে পাঠিয়েছে। অথচ সীমাহীন দুর্নীতি, দুর্বৃত্তায়ন, ব্যাংক লুট, অর্থ পাচার, দলীয়করণ, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি অতীতের বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের মত বর্তমান সরকারেরও বৈশিষ্ট্যে পরিণত হয়েছে। উন্নয়নের নামে মহাজোট সরকার বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবনের পাশে রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের মতো পরিবেশবিধ্বংসী প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে ভারতের সাথে যৌথভাবে। রাশিয়ার ঋণ ও প্রযুক্তিতে বিপুল ব্যয়ে রূপপুরে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করা হচ্ছে যা ঘনবসতিপূর্ণ বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। ‘বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল’ স্থাপন করতে হবিগঞ্জে চা-বাগানে বংশপরম্পরায় বসবাসরত হতদরিদ্র চা-শ্রমিকদের তাদের কৃষিজমি থেকে উচ্ছেদ করা হচ্ছে।
নেতৃবৃন্দ বলেন, এই অগণতান্ত্রিক ও গণবিরোধী শাসনের সুযোগে বাংলাদেশে জঙ্গিবাদী-মৌলবাদী তৎপরতার জমিন বিস্তৃত হচ্ছে। অতীতের বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের মতো বর্তমান মহাজোট সরকারের কাছেও দেশ-জনগণের গণতান্ত্রিক কোনো ভবিষ্যত নেই। এই অবস্থায় ভোটাধিকারসহ জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষা করা, জাতীয় সম্পদ রক্ষাসহ জনজীবনের সংকট নিরসনের দাবিতে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকারের ফ্যাসিবাদী দুঃশাসনের বিরুদ্ধে গণসংগ্রামে সংগঠিত হতে গণতন্ত্রমনা জনসাধারণের প্রতি আমরা আহ্বান জানাচ্ছি।
বর্ষবরণে যৌননিপীড়নসহ নারী-শিশু নির্যাতনকারীদের গ্রেফতার ও বিচার, নারী নির্যাতন বন্ধসহ ৫ দফা দাবিতে দেশব্যাপী নারীমুক্তি কেন্দ্রের বিক্ষোভ
বর্ষবরণে যৌন নিপীড়নসহ নারী-শিশু নির্যাতনকারীদের গ্রেফতার ও বিচার; অপসংস্কৃতি-অশ্লীলতা, মাদক-জুয়া, পর্নোপত্রিকা, ব্লু-ফিল্ম, ইন্টারনেটে পর্নো ওয়েবসাইট বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের দাবিসহ ৫ দফা দাবিতে বাংলাদেশ নারীমুক্তি কেন্দ্রীয় কমিটির উদ্যোগে ৯ জানুয়ারি দেশব্যাপী বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। তারই অংশ হিসেবে ঢাকায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে দুপুর ১২টায় মানবন্ধন ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন নারীমুক্তি কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি সীমা দত্ত, সাধারণ সম্পাদক মর্জিনা খাতুন ও অর্থ সম্পাদক তাছলিমা আক্তার বিউটি।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, বাংলাদেশ নারীমুক্তি কেন্দ্র ২০১৪ সাল থেকে নারী নির্যাতন প্রতিরোধের লক্ষ্যে জেলায় জেলায় স্বাক্ষরসংগ্রহ ও প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি প্রদান, অশ্লীল পোষ্টারে কালি লেপন, পথসভা-হাটসভা, বিক্ষোভ সমাবেশ, ডিসি অফিস-পুলিশ সুপারের কার্যালয় ঘেরাও, নারী সমাবেশ, মতবিনিময় সভা ইত্যাদি কর্মসূচি পালন করেছে। তারই ধারাবাহিকতায় আগামী ৪ ফেব্রুয়ারি ৫ দফা দাবিসহ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ঘেরাও কর্মসূচি পালিত হবে। দাবিগুলো হল — বর্ষবরণে যৌন নিপীড়নসহ সারা দেশে নারী-শিশু নির্যাতনকারীদের অবিলম্বে গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান; সর্বত্র নারীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও কর্মক্ষেত্রসহ সকল ক্ষেত্রে যৌন হয়রানি বন্ধ করতে হবে। হাইকোর্ট প্রণীত যৌন নিপীড়ন বিরোধী নীতিমালা কার্যকর করতে হবে। অপসংস্কৃতি-অশ্লীলতা বন্ধ করতে হবে। পর্নো পত্রিকা, ব্লু-ফিল্ম, ইন্টারনেটে পর্নো ওয়েবসাইট বন্ধ করতে হবে। নাটক-সিনেমা-বিজ্ঞাপনে নারী দেহের অশ্লীল উপস্থাপনা বন্ধ করতে হবে। মাদক ও জুয়া বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। মৌলবাদ-সাম্প্রদায়িকতা, ফতোয়াবাজি এবং ধর্মীয় কূপম-ূকতা-কুসংস্কার বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। সমাজের সর্বক্ষেত্রে নারী-পুরুষের সমঅধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। ইউনিফরম সিভিল কোড চালু করতে হবে। সিডও সনদের পূর্ণ স্বীকৃতি ও বাস্তবায়ন করতে হবে। নারীশিক্ষাকে বিস্তৃত ও পূর্ণাঙ্গ করতে হবে। নারীর স্বাবলম্বীতার জন্য নারী শিক্ষাকে অর্থবহ করে তুলতে হবে। গ্রামীণ ও পিছিয়ে পড়া নারী শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষাক্ষেত্রে প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করতে হবে। সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্রীদের জন্য খেলাধুলা ও আত্মরক্ষামূলক শরীরচর্চা আবশ্যিক করতে হবে। নারীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পর্যাপ্ত হোস্টেল নির্মাণ করতে হবে।
রংপুর : ৯ জানুয়ারি সকাল সাড়ে ১১টায় নারীমুক্তি কেন্দ্র রংপুর জেলা শাখার উদ্যোগে বিক্ষোভ মিছিল-সমাবেশ ও পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালিত হয়। স্থানীয় প্রেসক্লাব চত্বর থেকে বিক্ষোভ মিছিল নগরীর প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সামনে সমবেত হয়। সেখানে ঘণ্টাব্যাপী অবস্থান কর্মসূচি চলাকালে সমাবেশে বক্তৃতা করেন নারীমুক্তি কেন্দ্র রংপুর জেলা সংগঠক নন্দিনী দাস, রীনা আক্তার প্রমুখ। এছাড়াও সংহতি জানিয়ে বক্তৃতা করেন বাসদ (মার্কসবাদী) রংপুর জেলা সমন্বয়ক আনোয়ার হোসেন বাবলু, পলাশ কান্তি নাগ, আহসানুল আরেফিন তিতু।
গাইবান্ধা : নারীমুক্তি কেন্দ্র গাইবান্ধা জেলা শাখার উদ্যোগে ৯ জানুয়ারী দুপুর ১২টায় মানবন্ধন এবং পরে জেলা পুলিশ সুপার বরাবর স্মারকলিপি পেশ করা হয়। অধ্যাপক রোকেয়া খাতুনের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন নাগরিক পরিষদ গাইবান্ধা জেলার আহবায়ক এড. সিরাজুল ইসলাম বাবু, নিলুফার ইয়াসমিন শিল্পী, পারুল বেগম, শামীম আরা মিনা।
কিশোরগঞ্জে শীতবস্ত্র বিতরণ
বাসদ (মার্কসবাদী) কিশোরগঞ্জ জেলার হোসেনপুর উপজেলা শাখার উদ্যোগে ১ জানুয়ারি ’১৬ গোবিন্দপুর ইউনিয়নে দরিদ্র মানুষদের মধ্যে শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়। দলের উদ্যোগে এলাকার মানুষের কাছ থেকে গণচাঁদা সংগ্রহ করেই এই শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়।
এতে উপস্থিত ছিলেন দলের ময়মনসিংহ জেলা শাখার সমন্বয়ক শেখর রায়, কিশোরগঞ্জ জেলা শাখার সংগঠক আলাল মিয়া, গোবিন্দপুর ইউনিয়নের সংগঠক জমির ব্যাপারী, সোহরাব মিয়া, জেলা ছাত্র ফ্রন্ট নেতা ফাহমিদ আহমেদ প্রমুখ।
শিক্ষকদের স্বতন্ত্র পে-স্কেলের আন্দোলনে ছাত্র ফ্রন্টের সংহতি
পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের স্বতন্ত্র পে-স্কেল ও গ্রেড বৈষম্য নিরসনের দাবিতে চলমান আন্দোলনে সংহতি জানিয়ে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট কেন্দ্রীয় কমিটির উদ্যোগে ১২ জানুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে মিছিল ও সমাবেশ করা হয়। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন ছাত্রনেতা মলয় সরকার, রাশেদ শাহরিয়ার, মাসুদ রানা ও ইভা মজুমদার। বক্তারা বলেন, শিক্ষক সমাজ হচ্ছেন জাতি গড়ার কারিগর। উচ্চ শিক্ষার প্রয়োজনেই শিক্ষকদের সর্বোচ্চ বেতনকাঠামো হওয়া উচিত। কিন্তু সরকার যে নতুন বেতনকাঠামো ঘোষণা করেছে তাতে শিক্ষকদের মানের অবনমন ঘটানো হয়েছে। শিক্ষকরা পে-স্কেল ঘোষণার পর দীর্ঘ সময় ধরে তাদের সম্পূর্ণ যৌক্তিক দাবিতে আন্দোলন করলেও প্রধানমন্ত্রীসহ সরকারের মন্ত্রী-এমপিরা পর্যন্ত শিক্ষকদের আন্দোলন নিয়ে অসম্মানজনক ও আপত্তিকর বক্তব্য দিচ্ছেন। বক্তারা অবিলম্বে শিক্ষকদের দাবি মেনে নেওয়ার আহ্বান জানান। একইসাথে শিক্ষকদেরও বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপর বাণিজিকীকরণসহ নানামুখী আক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের আহ্বান জানান।
রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র বাতিলের দাবি
ফ্রান্সে বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলন কেন্দ্রের সামনে বিক্ষোভ
সুন্দরবনের পাশে রামপালে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্প বাতিলের দাবিতে ফ্রান্সের প্যারিসে অনুষ্ঠিত বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলন কেন্দ্রের সামনে বাসদ (মার্কসবাদী) সমর্থক ফোরাম ফ্রান্স শাখা ও সিপিবি ফ্রান্স শাখার উদ্যোগে ১ জানুয়ারি মানববন্ধন এবং সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
বেতন বৃদ্ধির দাবিতে প্রাইভেট গাড়ি চালক ইউনিয়নের সমাবেশ
গত ১১ ডিসেম্বর সকাল ১১টায় প্রাইভেট গাড়ি চালক ইউনিয়নের উদ্যোগে ড্রাইভারদের সর্বনিম্ন বেতন ১৬ হাজার টাকা, ৮ ঘণ্টার বেশি কাজে ওভারটাইম, নিয়োগপত্র, সাপ্তাহিক ছুটি, বেতন-বোনাস, বাৎসরিক বেতন বৃদ্ধি, পুলিশি হয়রানী বন্ধ, দুর্ঘটনা কবলিত ড্রাইভারদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করার দাবিতে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
চা বাগানে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় নির্মাণ, বিশেষ কোটা চালু এবং শ্রমিকদের ভূমির অধিকার নিশ্চিত করতে হবে
‘চা-বাগান শিক্ষা অধিকার বাস্তবায়ন পরিষদ’ এর উদ্যোগে প্রতি বাগানে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় নির্মাণ, উচ্চ শিক্ষা ও চাকুরির ক্ষেত্রে ‘বিশেষ কোটা’ পদ্ধতি চালু এবং চা শ্রমিকদের ভূমির অধিকার নিশ্চিত করাসহ ৫ দফা দাবিতে ২ জানুয়ারি বিকাল ৪টায় সিলেট নজরুল একাডেমিতে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সংগঠক অধীর বাউরীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত মত বিনিময় সভায় বক্তব্য রাখেন গণতন্ত্রী পার্টি কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ব্যারিস্টার আরশ আলী, সুশাসনের জন্যে নাগরিক (সুজন) সিলেট জেলার আহ্বায়ক ফারুক মাহমুদ চৌধুরী, বাসদ (মার্কসবাদী) নেতা এড. হুমায়ুন রশীদ সোয়েব, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের সহকারি অধ্যাপক সরকার সোহেল রানা, বাংলাদেশ চা শ্রমিক ফেডারেশন কেন্দ্রীয় কমিটির আহ্বায়ক হৃদেশ মুদি, সংগঠক সঞ্জয় কান্ত দাস, হাবিবনগর চা বাগানের প্রসেনজিৎ ছত্রী, গুলনী চা বাগানের মনিরাম কুর্মী, ধামাই চা বাগানের বিপ্লব নায়েক, বুড়জান চা বাগানের সজল গোয়ালা, ছড়াগাং চা বাগানের প্রিয়াংকা কর প্রমুখ। সভায় উপস্থিত ছিলেন এম.সি কলেজের গণিত বিভাগের সহকারী অধ্যাপক জায়েদা খানম শিনি এবং ‘কী নোট পেপার’ পাঠ করেন মালনীছড়া চা বাগানের স্মৃতি রাণী মুদি।
হবিগঞ্জে চা শ্রমিকদের উচ্ছেদ করার প্রতিবাদে বিক্ষোভ
‘স্পেশাল ইকনোমিক জোন’-এর নামে হবিগঞ্জের চান্দপুরের চা শ্রমিকদের ভূমি থেকে উচ্ছেদ করার প্রতিবাদে বাংলাদেশ চা শ্রমিক ফেডারেশন সিলেট জেলা শাখা ১৩ ডিসেম্বর বিকাল ৪টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে মানববন্ধন করে। চা শ্রমিক ফেডারেশন সিলেট জেলার সংগঠক লাংকাট লোহারের সভাপতিত্বে এবং অজিত রায়ের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত মানববন্ধন চলাকালীন সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাসদ (মার্কসবাদী) নেতা এড. হুমায়ুন রশীদ সোয়েব, সুশান্ত সিনহা প্রমুখ।
সিলেটে স্মৃতিসৌধের দাবিতে সাইকেল যাত্রা
স্বাধীনতার ৪৪ বছর পরও সিলেটে নেই কোনো স্মৃতিসৌধ। তাই শিশু কিশোর মেলা গত ২৬ মার্চ থেকে সিলেটে স্মৃতিসৌধ নির্মাণের দাবিতে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছে। সিলেটের বর্তমান কারাগারটি অতিদ্রুত স্থানান্তরিত হওয়ার কথা। ঐ স্থানে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিসৌধ ও শিশুদের বিকাশ উপযোগী পার্ক নির্মাণের দাবিতে ইতোমধ্যে প্রায় তিনশ স্কুল ছাত্রের উপস্থিতিতে স্মৃতিসৌধের মডেল নির্মাণ প্রতিযোগিতা, প্রায় দশ হাজার স্বাক্ষর সংগ্রহ করে জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি পেশ করাসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেছে। তার ধারাবাহিকতায় ১৬ ডিসেম্বর সকাল ১১টায় সিলেট রেজিস্ট্রি মাঠ হতে সাইকেল র্যালি অনুষ্ঠিত হল। সাইকেল র্যালি উদ্বোধন করেন সিলেটের সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী অনিমেষ বিজয় চৌধুরী রাজু। উপস্থিত ছিলেন প্রবীণ রাজনীতিবিদ ব্যারিস্টার আরশ আলী, শিশু কিশোর মেলার উপদেষ্টা এড. হুমায়ূন রশীদ সোয়েব, ডা. ফাতেমা ইয়াছমিন ইমা প্রমুখ। বর্ণাঢ্য র্যালিটি রেজিস্ট্রি মাঠ হতে শুরু হয়ে বন্দর, চৌহাট্টা, আম্বরখানা, কাজীটুলা, জেলরোড হয়ে পুনরায় রেজিস্ট্রি মাঠে এসে মিলিত হয়। সাইকেল যাত্রার আগে সকাল ৯টায় এক সুসজ্জিত মিছিল নিয়ে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বিজয় দিবস উপলক্ষে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়।
ধারাবাহিক আন্দোলনের বিজয়
মদন মোহন কলেজকে সরকারিকরণের প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অবিলম্বে কার্যকর কর
মদন মোহন কলেজকে সরকারিকরণের দাবিতে ২০০৭ সাল থেকে আন্দোলন পরিচালনা করে আসছে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট। শুরুতে শত শত ছাত্রদের মতামতের ভিত্তিতে সরকারিকরেণ দাবি উত্থাপন করা হয়। এই আন্দোলন পরিচালনা করতে গিয়ে বিভিন্ন সময় নানা মহলের বিরোধিতাই শুধু নয়, সংগঠনের নেতাকর্মীরা শারিরিকভাবেও আক্রান্ত হন। কিন্তু ছাত্র-শিক্ষক-কর্মচারীসহ সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষের সহযোগিতার ফলে এই আন্দোলন গতিশীল হতে থাকে। সর্বশেষ গত ১৪ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী বরাবর জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে স্মারকলিপি পেশ করা হয় এবং ১০ জানুয়ারি অধ্যক্ষ বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। দীর্ঘ ৯ বছরের আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় ২২ জানুয়ারি কলেজের হীরক জয়ন্তীর অনুষ্ঠানে এসে প্রধানমন্ত্রী মদন মোহন কলেজকে সরকারিকরণের ঘোষণা দেন।
মদন মোহন কলেজকে সরকারিকরণের প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অবিলম্বে বাস্তবায়ন করার দাবিতে ২২ জানুয়ারি বিকাল ৩টায় নগরীতে মিছিল-সমাবেশ করে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট সিলেট নগর শাখা। মিছিলটি সিলেটের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে শুরু হয়ে সিটি পয়েন্টে গিয়ে সমাবেশে মিলিত হয়। রেজাউর রহমান রানার সভাপত্বিতে এবং সঞ্জয় কান্ত দাসের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন মদন মোহন কলেজ শাখার আহ্বায়ক লিপন আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক রুবেল মিয়া, মিজানুর রহমান।
বক্তারা বলেন, প্রধানমন্ত্রীর এই ঘোষণা অবিলম্বে কার্যকর করে মদন মোহন কলেজকে একটি সজীব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পরিণত করতে হবে। এর সাথে সাথে সরকারিভাবে ছাত্র বেতন নির্ধারণ, শিক্ষকদের পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণসহ আনুসঙ্গিক আয়োজন নিশ্চিত করতে হবে। সমাবেশে নেতৃবৃন্দ সরকারিকরণের দাবি কার্যকর না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন অব্যাহত রাখার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
রেলের ভাড়া বৃদ্ধির প্রতিবাদ
রেল মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি রেলের ভাড়া বৃদ্ধির যে সুপারিশ করেছে তার প্রতিবাদে বাসদ (মার্কসবাদী) সিলেট জেলা ১৬ জানুয়ারি বিকাল ৪টায় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে। মিছিলটি সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে শুরু হয়ে সিটি পয়েন্টে গিয়ে সমাবেশে মিলিত হয়। বাসদ (মার্কসবাদী) সিলেট জেলার সদস্য এড. হুমায়ুন রশীদ সোয়েবের সভাপতিত্বে এবং অনীক ধরের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন মোখলেছুর রহমান, এড. উজ্জ্বল রায়, সঞ্জয় কান্ত দাস প্রমুখ।
নদীর পানির ন্যায্য হিস্যার দাবিতে তিস্তা রোডমার্চ
ভারতের কাছ থেকে তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যা আদায়ের দাবিতে আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি ’১৬ সোমবার রংপুর-জলঢাকা তিস্তা রোডমার্চ করবে বাসদ (মার্কসবাদী)।