Saturday, November 23, 2024
Homeসাম্যবাদসাম্যবাদ - আগষ্ট ২০১৯আন্দোলন ও সংবাদ — সাম্যবাদ আগষ্ট ২০১৯

আন্দোলন ও সংবাদ — সাম্যবাদ আগষ্ট ২০১৯

ডেঙ্গু রোগীদের বিনামূল্যে চিকিৎসা এবং ডেঙ্গু চিকুনগুনিয়ার চিকিৎসা নিয়ে ব্যবসা করার প্রতিবাদে ঢাকা নগর ভবনের সামনে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালিত

  • অবিলম্বে ঢাকা নগরকে দুর্গত এলাকা ঘোষণা কর।

  • সরকারি হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীদের জন্য বিনামূল্যে পর্যাপ্ত চিকিৎসার ব্যবস্থা কর।

  • বেসরকারী হাসপাতালে চিকিৎসা বাণিজ্য বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নাও।

  • অকার্যকর মশা নিরোধক ওষুধ বাতিল করে নতুন ওষুধ ক্রয় কর।

  • প্রতিটি উপজেলা হাসপাতালে ডেঙ্গু রুগী সনাক্ত করার ব্যবস্থা কর।

জনগণের অর্থ দিয়েই গড়ে উঠেছে বাসদ (মার্কসবাদী)’র ত্রাণ তহবিল

গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম, রংপুর, ময়মনসিংহ, বগুড়া, চট্টগ্রাম, দিনাজপুর, চাঁদপুর, ঢাকা, সিলেট, গাজীপুরসহ সারা দেশে সমস্ত শ্রেণীপেশার মানুষের কাছে বাসদ (মার্কসবাদী)’র কর্মীরা বানভাসি মানুষের জন্য গণচাঁদা সংগ্রহ করেন। উত্তরাঞ্চলে তহবিল সংগ্রহের সময় ধানসহ অন্যান্য কৃষিফসল জনগণ তহবিলে দেয়। মানুষের প্রতি দরদ ও দায় থেকে জনগণের এ অংশগ্রহণ প্রমাণ করে সবাই আত্মকেন্দ্রিকতায় নিমজ্জিত হয়নি। পার্টির গণসংগঠনসমূহ বিভিন্ন এলাকা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অর্থ সংগ্রহ করে।

বানভাসিদের অর্থেই তহবিল

গ্রামে যাদের সারা বছর কাজ থাকে না তাদের অনেকেই ঢাকায় ভাসমান শ্রমিক হিসেবে কাজ করে। এরা কেউ হকার, রিক্সা শ্রমিক, চা বা পান দোকানদার, ফেরীওয়ালা, গার্মেন্টস শ্রমিক, গৃহপরিচারিকা, ট্যাক্সিচালক, ড্রাইভারসহ নানা পেশায় নিয়োজিত। অনেকেই সংসার চালাতে ঢাকায় থাকেন। গণচাঁদা সংগ্রহ করতে গিয়ে আব্দুল রউফ নামের একজন গামছা বিক্রেতা এগিয়ে এসে সহযোগিতা করেন। তারপর বলেন, “আমার এলাকা, আমার ঘর পানির নীচে।” একজন ফল বিক্রেতা বলেন, “আমরা বুঝি বানের জলে বলদ ডুবলে, ক্ষেত ডুবলে দেশের কী ক্ষতি! কিন্তু বড় বড় মন্ত্রী মিনিস্টাররা বোঝে না।” ঢাকাসহ বিভিন্ন জায়গায় বাসদ (মার্কসবাদী)’র ত্রাণ তহবিলে সহযোগিতা করেছে অকুণ্ঠ সহযোগিতা করেছে বানভাসি এ ভাসমান শ্রমিক।

ত্রাণ বিতরণ তৎপরতা

গাইবান্ধার বাদিয়াখালির চিনিয়াকান্দি ও সরকারতারি, সুন্দরগঞ্জে চরখোদ্দা, কামারজানিতে বিভিন্ন পাড়ায়, বাসদ (মার্কসবাদী)’র উদ্যোগে ত্রাণ বিতরণ করা হয়। বোয়ালি ইউনিয়নে, খেয়াঘাট বাজারে ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষার্থীদের মধ্যে ত্রাণ বিতরণ করা হয়। পার্টির গণসংগঠনের উদ্যোগে সদরে গাইবান্ধা সরকারি কলেজের আশ্রয় নেয়া বানভাসিদের মধ্যে খাবার বিতরণ করা হয়। এছাড়া সদরের কলেজপাড়া, মাঝিপাড়া, গিদরী ইউনিয়নের বিভিন্ন পাড়ায় ত্রাণ বতিরণ করা হয়। বাদিয়াখালি এলাকায় ছাত্রদের মধ্যে শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়। বগুড়ার ধুনটে ভান্ডারবাড়ি ইউনিয়নে বাসদ (মার্কসবাদী)’র উদ্যোগে চাল,ডাল ও আলু বিতরণ করা হয়। কুড়িগ্রাম জেলার রৌমারির পর্ত্তিমারি ইউনিয়নে বাসদ (মার্কসবাদী)’র উদ্যোগে ত্রাণ বিতরণ করা হয়। পার্টির রংপুর জেলা শাখার উদ্যোগে কুড়িগ্রামের ধরলাপাড়ের বানভাসিদের মাঝে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করা হয়। ময়মনসিংহ জেলা পার্টির উদ্যোগে অষ্টধার গ্রামে বন্যাদুর্গত মানুষকে সহযোগিতা করা হয়। বানভাসি মানুষ প্রাকৃতিক বিপর্যয় সাহসের সাথে মোকাবেলা করে। ত্রাণ কার্যক্রমের মাধ্যমে তাদের জীবন সংগ্রামের অংশীদার হচ্ছে সমস্ত নেতা-কর্মীবৃন্দ। পার্টি ও গণ সংগঠনের ত্রাণ তৎপরতা এখনও অব্যাহত আছে। যদিও বন্যা কবলিত অঞ্চলে সরকারি অপ্রতুল বরাদ্দ ও বিশৃঙ্খল ব্যবস্থাপনা, দুর্নীতি মানুষ অসহায়। এই বানভাসি মানুষের দাবি পুনর্বাসন, বন্যা ও নদী ভাঙনের স্থায়ী সমাধান। পর্যাপ্ত ত্রাণ ও ফসলের ক্ষতি পুষিয়ে নেয়ার জন্য সরকারের প্রত্যক্ষ ভর্তুকি। গাইবান্ধা জেলায় ২১ জুলাই দুপুর ১২ টায় এ দাবিতে বাসদ (মার্কসবাদী)’র উদ্যোগে শহরে সমাবেশ ও মিছিল করে। ৩ আগস্ট বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের বিনামূল্যে বীজ, সার, কীটনাশক সরবরাহ এবং ক্ষতিগ্রস্থ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, রাস্তা, ব্রীজ, বাঁধ মেরামতের দাবিতে পার্টি বগুড়া জেলা শাখা বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে।

কমরেড মোজাহেদুল ইসলাম রানু লাল সালাম

গাইবান্ধা জেলার সদর উপজেলার ঘাগোয়া ইউনিয়নের পার্টির আহবায়ক, সমাজতান্ত্রিক ক্ষেতমজুর ও কৃষক ফ্রন্ট সদর উপজেলার সাংগঠনিক সম্পাদক কমরেড মোজাহেদুল ইসলাম রানু হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় জাতীয় হৃদরোগ ইন্সটিটিউটে গত ৫ জুলাই শুক্রবার রাত ৮ টায় ৫১ বছর বয়সে শেষ নিঃশ্বাষ ত্যাগ করেন। তিনি ছিলেন গ্রামীণ নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের একজন কৃষক। পৈত্রিক সামান্য জমিজমা দিয়ে সংসার পরিচালনা করতেন। স্ত্রী, দুই ছেলে ও এক মেয়ে নিয়ে ছিল তাঁর পরিবার। তাঁর নিজের তেমন লেখাপড়া ছিল না। প্রায় ২৫ বছর আগে কৃষক ফ্রন্ট এর উদ্যোগে গ্রামীণ জীবনের নানা দাবি নিয়ে ইউনিয়নে ইউনিয়নে গড়ে ওঠা আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে তিনি দলের সাথে যুক্ত হন। দীর্ঘদিন ধরে পরম নিষ্ঠা ও সততার সাথে তিনি দলের বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করেছেন। বাইসাইকেলে চড়ে বিভিন্ন এলাকায় কমরেডদের সাথে যোগাযোগ করেছেন এবং জেলা শহরের সকল কর্মসৃচীতে অংশগ্রহণ করেছেন। যখন তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত তখন বাইসাইকেল ছেড়ে পায়ে হেঁটে এসব যোগাযোগ করেছেন। পারিবারিক কাজ কিংবা সংকট কখনো দলের কাজের ক্ষেত্রে অজুহাত হয়নি। পরিবারকে তিনি দলের সাথে যুক্ত করেছিলেন। তাঁর বড় ছেলে কৃষক ফ্রন্ট এর ইউনিয়নের সংগঠক, ছোট ছেলে ছাত্র ফ্রন্ট জেলা কমিটির সহ-সভাপতি, স্ত্রী নারী মুক্তি কেন্দ্রের কর্মী। মৃত্যুর আগে পর্যন্ত জনগণের সংকট সমস্যায় তাদের মধ্যে পড়ে থেকে নিজেকে সকলের কাছে পরম আপনজন হিসাবে গড়ে তুলেছিলেন, প্রিয় কমরেড রানু ভাই হয়ে উঠেছিলেন।

তিনি নিজের ব্যক্তিগত ও পারিবারিক সকল সিদ্ধান্ত দলের সাথে পরামর্শ করে নিতেন। যেখানে যেতেন তাঁর সাথে একটা কাপড়ের ব্যাগ থাকতো। সেই ব্যাগে পার্টির প্রকাশনা, চাঁদার রশিদ, সাম্যবাদ রাখতেন। বন্ধু-বান্ধব ও জনগণের সাথে নানা আলোচনার ফাঁকে এসব দিতেন। তত্ত¡কথা কম জানলেও নিজের মত করে কৃষক জীবনের সীমাহীন দুর্দশা, গরীব মানুষের সংকট, কষ্ট, তার কারণ এসব নিয়ে কথা বলতেন। এভাবে অনেককে তিনি দলের সাথে যুক্ত করেছেন। কৃষকের গান গায় যে অন্ধ বাউল সন্তোষ কুমার বর্মণ, সে তাঁর মাধ্যমেই দলে সাথে যুক্ত।

আমাদের দল মার্কসবাদ-লেনিনবাদ-শিবদাস ঘোষের চিন্তাধারার ভিত্তিতে এদেশের মাটিতে উচ্চ হৃদয়বৃত্তিসম্পন্ন বিপ্লবী চরিত্র গড়ে তুলতে চায়। কমরেড রানু সেই সংগ্রাম আমৃত্যু করেছেন। কমরেডরা সবসময় তাঁর স্নেহ-ভালবাসার স্পর্শ পেয়েছেন। তিনি প্রতিদিনিই কমরেডদের খোঁজ-খবর রাখতেন। অসুস্থতার খবরে ছুটে যেতেন। তাঁর সময়জ্ঞান নিয়ে কমরেডরা সমালোচনা করতো, এসব সমালোচনা তিনি হাসিমুখে গ্রহণ করেছেনÑ তা দূর করার সংগ্রাম করেছেন। এমন নিষ্ঠাবান, নিবেদিতপ্রাণ সংগঠকের শূন্যতা অনেকদিন পূরণ হওয়ার নয়। কমরেড রানু আমাদের সকলের অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবেন। বেঁচে থাকবেন আমাদের শোষণ মুক্তির লড়াইয়ে।

কমরেড মোজাহেদুল ইসলাম রানু লাল সালাম।

যাদের শ্রমে শহর পরিষ্কার হয়, তারাই সমাজে অস্পৃশ্য!!

স্বাধীন বাংলাদেশে সবচেয়ে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী হরিজন সম্প্রদায়ের লোকজন। এরা সবচেয়ে অস্বাস্থ্যকর ও ঝুঁকিপূর্ণ কাজের সাথে যুক্ত, শহরের সমস্ত রাস্তা-ঘাট, অফিস-আদালত, ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কার করে কিন্তু আজও তারা বেঁচে থাকার ন্যূনতম অধিকার থেকে বঞ্চিত। এভাবে এদের সারাজীবন কাজ করে যখন শেষ বয়সে আর শরীরে শক্তি থাকে না তখন খুবই দুর্দশায় কাটে বৃদ্ধাদের জীবন। অস্বাস্থ্যকর ঝুঁকিপূর্ণ পরিবেশে কাজ করে অনেকে অল্প বয়সে মারা যায়। তখন তার বিধবা স্ত্রী সন্তানদের নিয়ে অত্যন্ত বিপদে পড়ে যায়। এই বয়স্ক এবং বিধবাদের জন্য বেঁচে থাকার ন্যূনতম আয়োজন করা দরকার রাষ্ট্রের। এজন্য তাদের দাবি মাসিক ন্যূনতম ৫০০০/- ভাতা, যেটা পেলে তারা বেঁচে থাকার মৌলিক প্রয়োজন মেটাতে পারে। আগে হরিজনরা পড়াশুনায় ছিল পিছিয়ে। বর্তমানে হরিজন শিক্ষার্থীদের মাঝে অনেক মেধাবী শিক্ষার্থী আছে, শুধু আর্থিক সংকটের কারণে তারা পড়াশুনা চালিয়ে যেতে পারে না। এদের উপবৃত্তির ব্যবস্থা করলে হরিজনদের মধ্যে শিক্ষার বিস্তার হয়, শিক্ষার্থীরা পড়াশুনা নিয়মিত করতে পারে। এতে অজ্ঞতা ও কুসংস্কার থেকে সমাজ মুক্ত হবে।

‘হরিজন অধিকার আদায় সংগঠন’ রংপুর জেলা ২ জুলাই ২০১৯ জেলা প্রশাসক ও সমাজসেবা অফিসারের কার্যালয়ে স্মরাকলিপি প্রদান করে। স্মারকলিপি প্রদানের পূর্বে সংগঠনের আহবায়ক সুরেশ বাসফোর সভাপতিত্বে আয়োজিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সদস্য শাকিল, সুজন, উন্ধা প্রমুখ। সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন বাসদ (মার্কসবাদী) রংপুর জেলার সদস্য আহসানুল আরেফিন তিতু।

রাজনৈতিক শিক্ষাশিবির

মার্কসবাদ-লেনিনবাদ-শিবদাস ঘোষের চিন্তার ভিত্তিতে বিপ্লবী কর্মী গড়ে তোলার প্রত্যয়ে, শিবদাস ঘোষের ‘বিপ্লবী কর্মীদের আচরণবিধি’ বইটিকে ভিত্তি করে ঢাকা, গাজীপুর জেলায়; যশোর, খুলনা ও সাতক্ষীরা একত্রে যশোর জেলায়; ফেনী ও চাঁদপুর একত্রে ফেনী জেলায়; সিলেট, মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জ একত্রে সিলেটে; চট্টগ্রাম, রাঙামাটি ও খাগড়াছড়ি একত্রে চট্টগ্রামে; ময়মনসিংহ ও কিশোরগঞ্জ একত্রে ময়মনসিংহে পার্টির রাজনৈতিক শিক্ষাশিবির অনুষ্ঠিত হয়।

‘শিশু কিশোর মেলা’ নোয়াখালী জেলা শাখার উদ্যোগে একাদশ শ্রেণীর নবীনবরণ

একদিকে শিক্ষা বাণিজ্যে তীব্রতর হচ্ছে, অন্যদিকে সমাজজুড়ে মানবিক মানুষ হয়ে উঠার আয়োজন ক্রমাগত সংকুচিত হচ্ছে। এ ধরনের আয়োজনের শুন্যতায় মাদক, জুয়া, পর্নোগ্রাফির ছোবলে আক্রান্ত আমাদের তরুণ যুব সমাজ। এর বিপরীতে একটা পাল্টা সংস্কৃতি নির্মাণের লক্ষ্যে কাজ করে ‘শিশু কিশোর মেলা’। ‘শিশু কিশোর মেলা’র উদ্যোগে গত ৩০ জুলাই, মঙ্গলবার সকাল ১০.৩০ টায় শিশু কিশোর মেলা নোয়াখালী জেলা শাখার উদ্যোগে জেলা শিল্পকলা একাডেমীতে একাদশ শ্রেণীর নবীনবরণ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।

গৃহকর্মীদের শ্রমিক হিসেবে স্বীকৃতি, সরকারীভাবে ন্যূনতম মজুরী ঘোষণা, কাজে যোগদানের আগে নিয়োগ পত্র দেয়ার দাবীসহ ৯ দফা দাবীতে গৃহকর্মী অধিকার রক্ষা কমিটি, চট্টগ্রাম জেলার পক্ষ থেকে ২মে সকাল ১১ টায় চট্টগ্রাম শহীদ মিনারে কমিটির সভাপতি আসমা আক্তারের সভাপতিত্বে এবং সহসম্পাদক ওপিয়া আক্তারের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সমাবেশ শেষে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করে।

ডুমুরিয়ায় লড়ছে কৃষকরা

পচিশে জুন সম্মিলিত কৃষক সমাজের কর্মসূচি

খুলনা জেলার কৃষি প্রধান এলাকা ডুমুরিয়া উপজেলার কৃষকরা সরকার নির্ধারিত দামে(১০৪০টাকা) উপজেলাতে ধান বিক্রি করতে যেয়ে পদে পদে হয়রানির শিকার হচ্ছে। প্রথম দফায় সরকার নির্ধারিত ৬৯১টন ধান কেনায় অনিয়ম, দুর্নীতি ও হয়রানি ছিল চোখে পড়ার মত। ইউএনও এর সাক্ষর করা কৃষি কার্ড দেখিয়েও ধান বিক্রি করতে পারেনি বেশির ভাগ কৃষক। ধানের নিম্নমান (ভিজা, ধুলা, চিটার আধিক্য ইত্যাদি) দেখিয়ে খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা ইলিয়াস হোসাইন দূর দুরান্ত থেকে আসা কৃষকদের ধানসহ ফিরিয়ে দিলেও টাকার বিনিময়ে ফড়িয়া ব্যাবসায়ীদের কাছ থেকে ট্রাক বোঝাই ধান কিনতে দেখা গেছে। বস্তার সংকট দেখিয়ে কৃষকদের ফিরিয়ে দিলেও ছুটির দিনে, অফিস টাইম শেষে ট্রাকের পর ট্রাক ধান খাদ্যগুদামে প্রবেশ করার কথা শোনা যায়।

এখানেই শেষ না, যে অল্প সংখ্যক কৃষকের কাছ থেকে ধান সংগ্রহ করা হচ্ছে তাদের কাছ থেকেও লেবার খরচ বাবদ কৃষক প্রতি (একজন কৃষকের কাছ থেকে ৮ মন ১০ কেজি ধান নেওয়া হচ্ছে) নেয়া হচ্ছে ৫৫০ থেকে ৬০০ টাকা। ধানে একটু চিটা থাকলে সেটা বেড়ে একহাজার বারোশো টাকাও হয়ে যাচ্ছে। কৃষক না হয়েও মেম্বার, চেয়ারম্যান বা দলীয় নেতার মাধ্যমে কার্ড করিয়ে অনেক অকৃষক এসময়ে ধান বিক্রি করার সুযোগ পেলেও প্রকৃত কৃষকরা হচ্ছে বঞ্চিত। ফলে ঐ ধরনের কার্ড ১০০০/১৫০০ টাকায় কিনে নিয়ে অনেক ফড়িয়া, ব্যাবসায়ী ও এলাকার মাতব্বররা ধান বিক্রি করছে।

এ পরিস্থিতিতে প্রকৃত কৃষকের কাছ থেকে ধান কেনার জন্য ‘সম্মিলিত কৃষক সমাজ’ এর পক্ষ থেকে গত পচিশে জুন অভিযোগসহ উপাজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে সংকট নিরসনে তিন দফা দাবি সম্মিলিত স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। নির্বাহী কর্মকর্তা এ দাবির প্রতি একাত্ত¡তা পোষন করে কার্যকরী উদ্যেগ নিবেন বলে আশ্বস্ত করেন এবং দ্বিতীয় দফায় ইউনিয়নে ক্রয়কেন্দ্র খুলে ধান কিনবেন বলে কৃষকনেতাদের জানান। ধান কেনায় আরো স্বচ্ছতা আনার জন্য ‘সম্মিলিত কৃষক সমাজ’’ এর প্রস্তাবিত, প্রতিটি ইউনিয়নে কৃষক প্রতিনিধি ও কৃষি কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে ধান ক্রয়ের কমিটি করার প্রস্তাবেও তিনি সম্মতি জ্ঞাপন করেন। সম্মিলিত কৃষক সমাজ প্রতিটি ইউনিয়ন থেকে দুজন করে কৃষক প্রতিনিধি নির্বাচন করে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে জমা দেয়। তিনিও আশ্বস্ত করেন সকল কৃষক প্রতিনিধি ও কৃষি কর্মকর্তাদের নিয়ে কমিটি গঠন করে ইউনিয়ন ভিত্তিক ক্রয়কেন্দ্র খুলে ধান সংগ্রহ করবেন।

অথচ হঠাৎ করেই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ১৯ জুলাই, শুক্রবার উপজেলা বসেই ধান ক্রয়ের সিদ্ধান্ত নেন এবং পরের দুদিন অর্থাৎ শনি ও রবিবারের মধ্যে নতুন করে কৃষি কার্ডে স্বাক্ষর করার ঘোষণা দেন। এ প্রেক্ষিতে বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে কৃষক অপেক্ষা অধিক সংখ্যক ফড়িয়া ব্যাবসায়ীরা তার এলাকা থেকে কার্ড সংগ্রহ করে ইউএনও-এর কাছ থেকে স্বাক্ষর নিয়ে যান। এই কার্ডধারী কৃষকদের বেশীরভাগেরই ঘরে ধান নেই। আবার কার্ড থাকলেও তারা প্রকৃত কৃষক নয়। এ অবস্থায় স্বল্প টাকায় ঐ সমস্ত কার্ড সংগ্রহ করে তারা খাদ্যগুদামে দায়িত্বরত কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করে ধান দেয়া শুরু করে, বিপাকে পরে প্রকৃত কৃষক।

এ পরিস্থিতিতে সম্মিলিত কৃষক সমাজ এর পক্ষ থেকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অফিসে গিয়ে জানেন, তিনি দীর্ঘ ছুটিতে গেছেন। এদিকে কৃষকরা ইউএনও অফিসে এসে কৃষকেরা ক্ষুব্ধ। কারণ, কৃষি পরিবার না হয়েও একই পরিবারের চার জনের কার্ডে স্বাক্ষর হয়েছে, একবার ধান বিক্রি করে দ্বিতীয় দফায় আবার বিক্রি করার সুযোগ পায় অথচ কৃষকের ধান পড়ে আছে।

এমতাবস্থায় ২২ জুলাই সকাল ১২টার দিকে সম্মিলিত কৃষক সমাজ দাবি আদায়ে রাস্তা অবরোধের কর্মস‚চি ঘোষণা করে। সম্মিলিত ভাবে কৃষকেরা এসময় ইউএনও কার্যালয়ের সামনের খুলনা সাতক্ষীরার প্রধান সড়কে অবস্থান গ্রহণ করে। অধিকার বঞ্চিত এ কৃষকদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে হঠাৎ পুলিশ বাধা প্রদান করেন। কৃষকদের সাথে তাদের বাকবিতন্ডা হয়। এক পর্যায়ে এ কর্মসূচিকে পÐ করতে সম্মিলিত কৃষক সমাজের নেতা রুহুল আমিনকে গ্রেপ্তার করার চেষ্টা করে। এ আন্দোলনের চাপে রুহুল আমিকে ছেড়ে দিতে বাধ্য হলেও পুলিশ হামলা করে অবস্থানের উপর হামলার ঘোষণা দেয়। এক পর্যায়ে দায়িত্ব প্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আসার ঘোষনা দিলে কৃষকেরা রাস্তা ছেড়ে ইউ এন ও কার্যালয়ের সামনে এসে অবস্থান গ্রহণ করেন।

এর কিছুক্ষণ পর উপজেলা চেয়ারম্যান গাজী এজাজ আহমেদ এসে কৃষকদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে সকল কৃষকের ধান কেনার ঘোষণা দেন।

অবশেষে ধান ক্রয়ে অনিয়ম, দুর্নীতি, অব্যাবস্থাপনা দূর করতে ও কৃষকদের হয়রানি থেকে বাচাতে সম্মিলিত কৃষক সমাজের পক্ষ থেকে দুই দফা দাবি সম্মিলিত স্বারক লিপি প্রদান করা হয়েছে।

দাবি সমূহ-

১. প্রতিটি ইউনিয়নে ক্রয় কেন্দ্র খুলে সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে ধান সংগ্রহ করতে হবে।

২. লেবার কস্ট ৫০০ টাকা থেকে কমিয়ে একশো টাকা করতে হবে।

সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট সংবাদ

জগন্নাথ হল সম্মেলন

প্রথম বর্ষ থেকেই মেধা ও প্রয়োজনের ভিত্তিতে প্রশাসনিক উদ্যোগে হলে বৈধ সিটের ব্যবস্থা করার, গণরুম-গেস্টরুম প্রথা উচ্ছেদ করে ছাত্র নির্যাতন বন্ধের এবং ক্যান্টিনগুলোতে খাবারের মান বাড়ানো ও দাম কমানোর দাবিতে আজ ৩ আগস্ট ২০১৯ শনিবার সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট জগন্নাথ হল শাখার ৩য় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। অপু রায়কে সভাপতি ও সন্দীপ কুমার বর্মণকে সাধারণ সম্পাদক করে ১৮ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়।

ঢাকা নগর সম্মেলন

১১ জুলাই কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ঢাকা নগর শাখার ৩য় সম্মেলন অুষ্ঠিত হয়। উদ্বোধন করেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি মাসুদ রানা। আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক আনু মোহাম্মদ, সংগঠনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক রাশেদ শাহরিয়ার। রাফিকুজ্জামান ফরিদকে সভাপতি ও অরূপ দাস শ্যামকে সাধারণ সম্পাদক করে ১৫ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়।

রংপুর জেলা সম্মেলন

১৭ জুলাই পাবলিক লাইব্রেরি মাঠে ৪র্থ সম্মেলনের উদ্বোধন ঘোষণা করেন কেন্দ্রীয় সভাপতি মাসুদ রানা। আলোচক ছিলেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. তুহিন ওয়াদুদ, বাসদ (মার্কসবাদী) রংপুর জেলা সমন্বয়ক কমরেড আনোয়ার হোসেন বাবলু। আবু রায়হান বকসীকে সভাপতি ও নিরঞ্জন রায়কে সাধারণ সম্পাদক করে দশ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়।

শ্রমিক কর্মচারী ফেডারেশনের ৬ষ্ঠ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী

বিভিন্ন জেলায় জেলায় কর্মসূচি পালিত

নানা সেক্টরের শ্রমজীবী মানুষ অংশগ্রহণে বাংলাদেশ শ্রমিক কর্মচারী ফেডারেশন ঢাকা, গাজীপুর, সিলেট, রংপুর ও যশোরে কর্মসূচি পালিত হয়। ৬ষ্ঠ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর দাবি

১. ১৬ হাজার টাকা ন্যূনতম জাতীয় মজুরি ঘোষণা কর

২. অবাধ ট্রেড ইউনিয়ন অধিকার ও গণতান্ত্রিক শ্রম আইনের দাবি

৩. পুনর্বাসন না করে রিক্সা ও হকার উচ্ছেদ করা চলবে না

৪. বন্ধ সকল কলকারখানা খুলে দাও

৫. ঈদের আগে বেতন বোনাস প্রদান কর।

১২ জুলাই গাজীপুরের জেলা সদরের জয়দেবপুর মুক্তমঞ্চে শ্রমিক সমাবেশে সংগঠনের সভাপতি আ ক ম জহিরুল ইসলাম, শ্রমিক নেতা মাসুদ রেজা, এড ফরিদা ইয়াসমিন নাইস ও মনিরুল ইসলাম বক্তব্য রাখেন। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন মশিউর রহমান খোকন।

সাম্যবাদ আগষ্ট ২০১৯

RELATED ARTICLES

আরও

Recent Comments