Saturday, November 23, 2024
Homeসংবাদ ও প্রেস বিজ্ঞপ্তিআসামে নাগরিকপঞ্জী ভবিষ্যতে বাংলাদেশের উপর চাপ সৃষ্টির হাতিয়ার হবে

আসামে নাগরিকপঞ্জী ভবিষ্যতে বাংলাদেশের উপর চাপ সৃষ্টির হাতিয়ার হবে

বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (মার্কসবাদী)’র সাধারণ সম্পাদক কমরেড মুবিনুল হায়দার চৌধুরী এক বিবৃতিতে বলেন, আসামের চূড়ান্ত জাতীয় নাগরিকপঞ্জি প্রকাশিত হয়েছে। ১৯ লাখ লোক এই নাগরিকপঞ্জি থেকে বাদ পড়েছেন। আসামের রাজনীতিতে বিজেপি, কংগ্রেস, আসু সকলেই ‘বঙাল খেদাও’ নামে প্রতিক্রিয়াশীল আন্দোলন করেছে। এরই ফলাফল এই এনআরসি। ভারতের সকল গণতান্ত্রিক মনোভাবাপন্ন মানুষকে আমরা এর বিরুদ্ধে লড়াই গড়ে তোলার আহবান জানাচ্ছি।

এনআরসি থেকে বাদ পড়া লোকেরা ‘ফরেনার্স ট্রাইব্যুনালে’ আপিল করতে পারবেন। সেখানে ব্যর্থ হলে হাইকোর্ট, পরে সুপ্রীম কোর্টেও যেতে পারবেন। ট্রাইব্যুনালে আপিল করতে ৪০ হাজার রুপি খরচ হবে, ফলে বোঝাই যায় গরীব মানুষদের নাগরিকত্ব প্রমাণ করার কোন উপায় থাকবে না। আমরা মনে করি নাগরিকপঞ্জিতে বাদ পড়া এই বিরাট সংখ্যক লোকেদের বাংলাদেশী আখ্যা দিয়ে বাংলাদেশের উপর চাপ সৃষ্টি করার চেষ্টা করবে ভারত সরকার। এতে লক্ষ লক্ষ অসহায় মানুষ উদ্বাস্তু হবে, রাস্তায় মারা পড়বে, কারাগারে বন্দী হবে, সর্বোপরি এই অঞ্চলে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা আরও বাড়বে। এমনিতেই বিজেপি শাসনক্ষমতা ব্যবহার করে ভারতে দীর্ঘদিন ধরে যে সাম্প্রদায়িক বিভেদ সৃষ্টি করে চলেছে তার প্রতিক্রিয়ায় আমাদের দেশে সাম্প্রদায়িক শক্তির প্রভাব বেড়েছে। আসামের নাগরিকপঞ্জির চূড়ান্ত সমাধানের পর তা আরও বাড়বে।

আমাদের দেশের সরকার চোখ বন্ধ করে ভারত সরকারের সকল কাজের সমর্থন করছেন। আমরা এই সরকারের কাছে বিপ্লবী কোন ভূমিকা প্রত্যাশা করি না। কিন্তু একটি স্বাধীন, সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে সীমান্তে ঘটে চলা এ ধরনের বড় ঘটনাগুলোর ক্ষেত্রে যে সংবেদশীলতা ও প্রতিক্রিয়া থাকা দরকার আমরা তাদের মধ্যে তা দেখতে পাচ্ছি না। বরং তাদের পোষ্য বুদ্ধিজীবীরা জনগণকে ক্রমাগত আশ্বস্ত করছেন যে এনআরসি ভারতের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার, আমাদের চিন্তা করার কিছু নেই। ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী কিছুদিন আগে আমাদের দেশে এসেও একথা বলেছেন। আমরা তার কথায় বিশ্বাস করার কোন কারণই দেখছি না। উপরন্তু বিজেপি’র আইন সেলের সদস্য ও দলের নেতা বিবেক রেড্ডি বলেছেন, এনআরসি ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয় বলে বাংলাদেশ সরকারকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী যে আশ্বাস দিয়েছেন, সেটাই শেষ কথা বলে মনে করার কোন কারণ নেই। ভবিষ্যতে অনেক কিছু হওয়ার সম্ভাবনা আছে।

বাংলাদেশ রোহিঙ্গা সমস্যার কোন সমাধান আজও করতে পারেনি। ভারত সরকার এ প্রশ্নে আমাদের পাশে দাঁড়ায়নি, বরং ভারত মিয়ানমারের প্রতিরক্ষামন্ত্রীকে তাদের দেশে আমন্ত্রণ করে লাল গালিচা সংবর্ধনা দিয়েছে। চূড়ান্তভাবে এনআরসি থেকে বাদ পড়া লোকেদের তারা কী করবে সেকথা আজও ভারত বলেনি। ফলে বাংলাদেশ সরকার এখন থেকেই সতর্ক না হলে এবং একে আন্তর্জাতিক ইস্যুতে পরিণত না করলে এর ফলাফল দেশের জনগণকে ভোগ করতে হবে। এছাড়াও একটি দেশ তার সীমান্ত এলাকার কাছে অপর দেশের ভেতর লক্ষ লক্ষ মানুষের উপর এই ধরনের প্রহসনে নীরব থাকতে পারে না। ভারত সরকারের বক্তব্যেও আশ্বস্ত হতে পারে না, কারণ সাম্রাজ্যবাদী ভারত কখনই আমাদের বন্ধু নয়।

RELATED ARTICLES

আরও

Recent Comments