গণতান্ত্রিক বাম মোর্চার ভারপ্রাপ্ত সমন্বয়ক মানস নন্দী, সাইফুল হক, জোনায়েদ সাকি, মোশারফ হোসেন নান্নু, মোশরেফা মিশু, সিদ্দিকুর রহমান, হামিদুল হক ও ইয়াছিন মিঞা আগামী অর্থবছরের ঘোষিত বাজেটকে ধনিক তোষণের বাজেট আখ্যা দিয়ে বলেন, অতীতের ধারাবাহিকতায় এ বাজেটেও সাধারণ জনগণের স্বার্থ রক্ষা হবে না। এবারের বাজেটেও জনপ্রশাসন ও প্রতিরক্ষা খাতে সর্বোচ্চ বরাদ্দ রাখা হয়েছে। এ ধরনের অনুৎপাদনশীল প্রশাসনিক ব্যয়ের বিপুল বৃদ্ধি শ্বেতহস্তী পোষার শামিল। এবারেও উপেক্ষিত হয়েছে শিক্ষা-স্বাস্থ্য সহ জনসেবামূলক জনস্বার্থ সংশ্লিষ্ট খাত। যে কৃষক বাজেটের রাজস্ব আয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে সে কৃষকের ফসলের ন্যায্য মূল্য পাওয়া, কৃষি উপকরণের মূল্যবৃদ্ধি রোধের ব্যবস্থা করাসহ খোদ কৃষকের কাছে বরাদ্দ পৌছে দেওয়ার জন্য কৃষি বাজেটে পর্যাপ্ত বরাদ্দ নেই।
নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, অনির্বাচিত সরকারের নৈতিক অধিকার ও দায়বদ্ধতা না থাকায় জনজীবনের জলন্ত সমস্যা সমাধানের কোনো পদক্ষেপ এ বাজেটে নেই। বরং ভ্যাটের আওতা ও হার বৃদ্ধি, মালিকদের পণ্যের দাম নির্ধারণের অবাধ সুযোগ সৃষ্টির ফলে মূল্যবৃদ্ধি ও জীবনযাত্রার ব্যয় বাড়বে। অথচ মালিকদের জন্য কর প্রত্যাহরের সুপারিশ করা হয়েছে। কালো টাকা সাদা করার সুযোগ রাখা হয়েছে। বিদেশে অর্থ পাচার রোধ, পাচারকারীদের শাস্তির ব্যবস্থা নেই, ঋণখেলাপীদের টাকা উদ্ধারের সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ নেই অথচ অভ্যন্তরীণ ঋণের মাধ্যমে বাজেটের ঘাটতি পূরণ জনগণের উপর নতুন করের বোঝা চাপানো যা লুটপাটকারীদের ছাড় দেয়ার সামিল। জনজীবনের সংকট সমাধানের কার্যকরী উদ্যোগ না থাকলেও তথাকথিত ‘এক অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়ে চলেছে বাংলাদেশ’ এর বুলিকে প্রতিষ্ঠিত করতে মেগা প্রকল্প- সেতু, ফ্লাইওভার নির্মাণ, বিদ্যুৎ উৎপাদনের নামে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ, পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পে ব্যাপক দুর্নীতি ও জীবন-জীবিকা ধ্বংসের আশঙ্কাই শাসক শ্রেণীর তথাকথিত উন্নয়নের রোডম্যাপ। নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য বৃহৎ-স্থায়ী শিল্পের ভিত্তি গড়ে না তুলে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের নামে দেশী বিদেশী লুটপাটকে স্থায়ী করা হচ্ছে।
ফলে এ বাজেট বাংলাদেশের বড়লোকদের স্বার্থ রক্ষাকারী বাজেট। এ বাজেট জনজীবনের সংকটকে আরো তীব্রতর করবে। গণতান্ত্রিক বাম মোর্চার নেতৃবৃন্দ এই ধনী-গরিব বৈষম্যের বাজেটকে প্রত্যাখান করে গণআন্দোলন গড়ে তোলার জন্য সর্বস্তরের জনগণের প্রতি আহ্বান জানান।