Friday, April 19, 2024
Homeসংবাদ ও প্রেস বিজ্ঞপ্তিকমরেড মেজবাহ উদ্দিনের অকাল মৃত্যুতে শোক প্রকাশ

কমরেড মেজবাহ উদ্দিনের অকাল মৃত্যুতে শোক প্রকাশ

বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (মার্কসবাদী)-র সাধারণ সম্পাদক কমরেড মুবিনুল হায়দার চৌধুরী এক বিবৃতিতে বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (মার্কসবাদী) চট্টগ্রাম জেলা বর্ধিত ফোরামের সদস্য ও চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি ফোরামের সদস্য কমরেড মেজবাহ উদ্দিনের অকাল মৃত্যুতে গভীর বেদনা ও শোক প্রকাশ করেছেন। কমরেড মেজবাহ উদ্দিন আজ বাংলাদেশ সময় দুপুর ১২.৪০ মিনিটে ‘ক্যালকাটা হার্ট ক্লিনিক এন্ড হসপিটাল’-এর ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটে হার্ট ফেইলিয়রে মারা যান। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৩৭ বছর।

কমরেড মেজবাহ উদ্দিন গতকাল কলকাতায় অবস্থানকালে গুরুতর হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ক্যালকাটা হার্ট ক্লিনিক এন্ড হসপিটালে ভর্তি হন। হার্ট ক্লিনিক থেকে দেয়া মেডিকেল রিপোর্ট অনুসারে আনুমানিক সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে বুকে চাপ ও ব্যথা, শ্বাসকষ্ট এবং প্রচন্ড ঘাম নিয়ে তিনি হার্ট ক্লিনিকে ভর্তি হন। ভর্তি হওয়ার অল্প কিছুক্ষণের মধ্যেই তাঁকে নন ইনভেসিভ ভেন্টিলেটরি সাপোর্ট দিতে হয়। কয়েক দফা ইসিজি মনিটরিং, ইকোকার্ডিওগ্রাম ও কার্ডিয়াক মার্কারগুলো গুরুতর মায়োকার্ডিয়াল ইনজুরির প্রমাণ দিচ্ছিল। এর কিছুক্ষণের মধ্যে তাঁর অবস্থা আরও খারাপ হয়, তখন তাঁকে ইনভেসিভ ভেন্টিলেশনে নেয়া হয়। কলকাতা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের কার্ডিওলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. জয়ন্ত সাহা, কলকাতা এ্যাপোলো হাসপাতালের কার্ডিওলজি বিভাগের সিনিয়র কনসালটেন্ট ডা. দেবাশীষ ঘোষ ও ফর্টিস হসপিটালের কার্ডিওলজি বিভাগের প্রধান ডা. শুভানন রায়ের সাথে এ ব্যাপারে পরামর্শ করা হয়। তাদের পরামর্শ অনুসারে রাতে ফর্টিস হাসপাতালে এনজিওগ্রাম করা হয়। এনজিওগ্রামে কোন আর্টারিয়াল ব্লক পাওয়া যায়নি, ডা. শুভানন রায় একে এক বিরল ধরনের কার্ডিওমায়োপ্যাথি বলে প্রাথমিকভাবে সনাক্ত করেন। ডা. শুভানন রায় এও বলেন যে, হার্ট ক্লিনিকের ক্রিটিক্যাল কেয়ার এই রুগীর চিকিৎসার জন্য যথেষ্ট উপযুক্ত, তাই তাঁর পরামর্শ অনুসারে রাত তিনটার দিকে ক্রিটিক্যাল কেয়ার এ্যাম্বুলেন্স দিয়ে ফর্টিস হাসপাতাল থেকে কমরেড মেজবাহ্কে হার্ট ক্লিনিকে নিয়ে আসা হয়। এই পুরোটা সময় জুড়ে ক্রিটিক্যাল কেয়ার কনসালটেন্ট ডাঃ বিপ্লব চন্দ্র তাঁর সাথে ছিলেন। সকালের দিকে তাঁর ব্লাড মার্কারগুলো কিছুটা ভাল ফলাফল দেখায়। কিন্তু সকাল ৯টার দিকে হঠাৎ একটি কার্ডিয়াক এরেস্ট হয়। এরপর ডা. বিপ্লব চন্দ্র ও ডা. দেবাশীষ ঘোষসহ পুরো ক্রিটিক্যাল কেয়ার টিম ৩ ঘন্টা ধরে চেষ্টা করেও তাঁর হার্টকে সচল করতে পারেননি।

বিবৃতিতে কমরেড মুবিনুল হায়দার চৌধুরী বলেন,“কমরেড মেজবাহ উদ্দিন ১৯৯৭ সালে সরকারি সিটি কলেজে পড়ার সময় অল্পবয়সেই সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের সাথে যুক্ত হওয়ার মাধ্যমে পার্টির রাজনীতির সংস্পর্শে আসেন। তিনি সংগঠনের চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সহ-সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। পরবর্তীতে ছাত্র ফ্রন্ট চট্টগ্রাম জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। পড়াশোনা শেষে সার্বক্ষণিক পার্টি কর্মী হিসেবে মার্কসবাদ-লেনিনবাদ-শিবদাস ঘোষের চিন্তাধারা জীবনসংগ্রামে গ্রহণ করে বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করেন।

কমরেড মেজবাহ ন্যায়সঙ্গত সকল গণআন্দোলনে, সাংস্কৃতিক অঙ্গনে ও পার্টি গড়ে তোলার সংগ্রামে সক্রিয় ও একনিষ্ঠ একজন কর্মী ছিলেন। সমাজের প্রতি দায়িত্ববোধ ও নিপীড়িত মানুষের প্রতি ভালবাসা থেকে অল্প বয়সে তিনি শোষণমুক্তির সংগ্রামে যুক্ত হন। তিনি ছিলেন সহৃদয়, নম্রভাষী ও প্রাণবন্ত স্বভাবের — একারণে তিনি সকলের প্রিয় ছিলেন। তাঁর মতো সম্ভাবনাময় সংগঠকের অকাল মৃত্যু এদেশের শোষণমুক্তির আন্দোলনকে কিছুটা হলেও ক্ষতিগ্রস্ত করলো।”

RELATED ARTICLES

আরও

Recent Comments