মহান মে দিবস উদযাপন
শ্রম শোষণের নিগঢ় থেকে শ্রমিকশ্রেণীকে মুক্ত করার প্রত্যয় নিয়ে মহান মে দিবস পালন করল বাংলাদেশ শ্রমিক কর্মচারী ফেডারেশন। ১ মে সকাল ১০টায় মিরপুর, সূত্রাপুর, লালবাগ প্রভৃতি এলাকার বিভিন্ন পেশার শ্রমিকরা এসে সংগঠনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সমবেত হয়। এরপর কর্মসংস্থান, ন্যায্য মজুরি, ৮ ঘণ্টা শ্রমসময়, নিয়োগপত্র প্রদান, কর্মপরিবেশ প্রভৃতি দাবি সম্বলিত প্ল্যাকার্ড, ফেস্টুন ও লাল পতাকা নিয়ে একটি সুসজ্জিত মিছিল প্রেসক্লাব, হাইকোর্ট মোড়. পল্টন, মুক্তাঙ্গন, জিরো পয়েন্ট, বায়তুল মোকাররম ঘুরে তোপখানা রোডের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এসে সমাবেশে মিলিত হয়। এখানে বাংলাদেশ শ্রমিক কর্মচারী ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি জহিরুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশ বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (মার্কসবাদী) কেন্দ্রীয় কার্য পরিচালনা কমিটির সদস্য কমরেড মানস নন্দী ও সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতা ডা. মুজিবুল হক আরজু। সমাবেশ পরিচালনা করেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতা ফখরুদ্দিন কবির আতিক।
সমাবেশে নেতৃবৃন্দ মে দিবসের সংগ্রামী ইতিহাস তুলে ধরে বলেন, মে দিবসের সংগ্রামী চেতনাকে মালিকশ্রেণী নানা কায়দায় উৎসবের ডামাডোলের নিচে চাপা দিতে চাইছে। আজ দেশের বেশিরভাগ কর্মক্ষম মানুষের কাজ নেই। কিন্তু রাষ্ট্রের কাছে কাজ দাবি করার চেতনাও আমাদের নেই, এটাকে ভোঁতা করে দেয়া হয়েছে। যে শ্রমিকরা কাজ করে তাদের মজুরির কোনো ঠিক ঠিকানা নেই। তাদের এমন মজুরি দেয়া হয় যা দিয়ে জীবনধারণ করা যায় না। ফলে তারা বাধ্য হয়ে শ্রমিকরা নিজেরাই ওভারটাইমের দাবি করে।
নেতৃবৃন্দ বলেন, শ্রমিকদের নিরাপদে কাজ করার পরিবেশ নেই। রানা প্লাজা, তাজরিন প্রভৃতি শ্রমিক গণহত্যার বিচার আজও হয়নি। শ্রমিকরা ক্ষতিপূরণ পায়নি। প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণতহবিলে যে ১২৮ কোটি টাকা জমা হয়েছিল, তার পর্যন্ত হিসাব নেই। এবং দেশের মানুষ দেখেছেন, ওই ত্রাণতহবিলের টাকা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী কি হাস্যকর ব্যাখ্যা দিয়েছেন।
নেতৃবৃন্দ বলেন, মে দিবসের ইতিহাসের সাথে দুটি বিষয় গভীরভাবে সম্পৃক্ত। একটি হল, শ্রমিক আন্দোলনের রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গির গুরুত্ব – রাজনৈতিক ট্রেড ইউনিয়নের গুরুত্ব। অপরটি হল, শ্রমিক আন্দোলনের চূড়ান্ত লক্ষ্য একটি শোষণমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠা। মে দিবসের ইতিহাস তুলে ধরে আমাদের দেশের শ্রমিকশ্রেণীর সামনে এ লক্ষ্য বার বার তুলে ধরতে হবে।