বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (মার্কসবাদী)-র সাধারণ সম্পাদক কমরেড মুবিনুল হায়দার চৌধুরী কুমিল্লায় ট্রাকচাপায় ১৩ জন শ্রমিকের প্রাণ কেড়ে নেওয়ার প্রতিবাদ জানিয়ে এক বিবৃতিতে বলেন, “কুমিল্লায় যেভাবে ট্রাকচাপায় ১৩ জন শ্রমিকের প্রাণ কেড়ে নেওয়া হয়েছে, আমরা কিছুতেই এটাকে নিছক দুর্ঘটনা বলে চালিয়ে দিতে পারি না। চূড়ান্ত বিচারে এটা একটি হত্যাকান্ড। কত অব্যবস্থাপনার মধ্যে এই দেশ পরিচালিত হচ্ছে-তা আমাদের বুঝতে দেরি হয় না, যখন শ্রমিকের জীবন রক্ষার ন্যূনতম নিশ্চয়তা এই বিদ্যমান ব্যবস্থা দিতে পারে না। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে ইটের ভাটার শ্রমিকের থাকার জায়গা যেমন গ্রহণযোগ্য নয়, একই সাথে তাদের জীবনযাপনের ক্ষেত্রে মালিকদের যে দায়িত্বহীনতা এবং এক্ষেত্রে সরকারের নজরদারির অভাব-সবকিছুই ১৩ জন শ্রমিককে ট্রাকচাপায় মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিয়েছে। ভোট-ডাকাতির মাধ্যমে গায়ের জোরে ক্ষমতায় আসা আওয়ামী লীগ সরকার মুনাফালোভী মালিকদের পক্ষে কাজ করতে গিয়ে জনগণের জীবনের নিরাপত্তা নিয়ে মোটেই ভাবিত নয়। একের পর এক সড়কে যেমন প্রতিদিন অসংখ্য প্রাণ ঝরে যাচ্ছে, তেমনি কুমিল্লার শ্রমিকদের মতো শিকার হতে হচ্ছে গণহত্যার। আমরা অবিলম্বে এই হত্যাকান্ডের পেছনে দায়ী ইটের ভাটার মালিক, ট্রাকচালক এবং স্থানীয় সরকারের দায়িত্বহীন কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে শাস্তির দাবি করছি।”
কমরেড মুবিনুল হায়দার চৌধুরী বিবৃতিতে আরও বলেন, “দেশে যে পুঁজিবাদী ব্যবস্থা চলমান-তাকে রক্ষা করার জন্যই বর্তমান সরকার সমস্ত কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছে। শ্রমিকের মজুরি, জীবনের নিরাপত্তা-কোনো কিছুই তাদের ভাবনায় আসছে না। মালিক-ব্যবসায়ীদের স্বার্থেই তারা দেশ পরিচালনা করছে। ফলে সড়কে অবৈধ গাড়ি চলাচলে নিয়ন্ত্রণ নেই, ইটের ভাটাসহ কোনো কারখানাতেই শ্রমিকের নিরাপদ কর্ম-পরেবেশ নেই, তাদের বাঁচার মতো ন্যূনতম মজুরির নিশ্চয়তা নেই। এই রকম পরিবেশে সমস্ত অব্যবস্থাপনার মধ্যে মালিকের মুনাফার বলি হতে হচ্ছে শ্রমিকদেরকে। ফলে এই মালিকী ব্যবস্থা উচ্ছেদের লক্ষ্যে সর্বাত্মক আন্দোলন জরুরি হয়ে পড়েছে। আমি দেশের সমস্ত সচেতন ব্যক্তিবর্গ এবং সাধারণ জনগণকে এর বিরুদ্ধে আন্দোলনে এগিয়ে আসার আহ্বান জানাই। এই পুঁজিবাদী ব্যবস্থার উচ্ছেদ ছাড়া শ্রমিকদের জীবনের কোনো নিরাপত্তা পাওয়া সম্ভব নয়।”