কৃষক ও ক্ষেতমজুর সংগ্রাম পরিষদের ৩ মাসব্যাপী কর্মসূচি ঘোষণা

দেশের প্রগতিশীল ৯টি কৃষক ও ক্ষেতমজুর সংগঠনের উদ্যোগে গঠিত কৃষক ও ক্ষেতমজুর সংগ্রাম পরিষদের এক সংবাদ সম্মেলন ৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ পুরাতন পল্টনের মুক্তি ভবনস্থ প্রগতি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়। কৃষক-ক্ষেতমজুর-ভূমিহীন চাষীসহ গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর জীবনের নানা সমস্যা সংকট নিরসনের দাবিতে আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণার জন্য এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগ্রাম পরিষদের সমন্বয়ক অধ্যাপক আব্দুস সাত্তার। সংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন সাইফুল হক, শুভ্রাংশু চক্রবর্ত্তী, এস.এম.এ সবুর, বজলুর রশীদ ফিরোজ, সাজ্জাদ জহির চন্দন ও আনোয়ার হোসেন রেজা। উপস্থিত ছিলেন মো. শাহ আলম, আলমগীর হোসেন দুলাল, নিখিল দাস, জাহিদ হোসেন খান, নিমাই গাংগুলী, জুলফিকার আলী, অর্ণব সরকার, মানবেন্দ্র দেব, লাকী আক্তার, শাহাদাৎ হোসেন খোকন, আসাদুল্লা টিটো, আনোয়ারুল ইসলাম প্রমুখ নেতৃবৃন্দ।
সংবাদ সম্মেলন থেকে নিন্মোক্ত ৮ দফা দাবি নামা উত্থাপন করা হয় এবং আগামী ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ থেকে ১১ মার্চ ২০১৯ পর্যন্ত দাবি পক্ষ ও আগামী ১০ এপ্রিল ২০১৯ ঢাকায় কৃষক ক্ষেতমজুর সমাবেশের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।
১. ধান, আলুসহ কৃষি ফসলের লাভজনক দাম নিশ্চিত কর; প্রতি ইউনিয়নে ক্রয় কেন্দ্র চালু করে উৎপাদক কৃষকের কাছ থেকে সরকার নির্ধারিত দামে ফসল ক্রয় কর। সরকারি উদ্যোগে পর্যাপ্ত কোল্ড স্টোরেজ নির্মাণ কর। জাতীয় বাজেটে কৃষি খাতে বরাদ্দ বাড়াও।
২. ক্ষেতমজুরদের সারা বছরের কাজ দাও; স্বল্পমূল্যে গ্রামীণ রেশনিং ও ১২০ দিনের কর্মসৃজন প্রকল্প চালু কর। দুস্থভাতা, কাবিখা, কাবিটা, ভিজিএফ, ভিজিডি, টেস্টরিলিফ, বয়স্কভাতাসহ সকল গ্রামীণ প্রকল্পের দুর্নীতি, অনিয়ম, লুটপাট, স্বজনপ্রীতি ও দলীয়করণ বন্ধ কর।
৩. খাস জমি উদ্ধার করে প্রকৃত ভ‚মিহীনদের নামে সমবায়ের ভিত্তিতে বরাদ্দ দাও। বেকার যুবকদের সরকারি উদ্যোগে প্রশিক্ষণ দাও, কর্মসংস্থান কর।
৪. ভূমি অফিস, তহসিল অফিস, সেটেলমেন্ট অফিস, পল্লী বিদ্যুৎ ও ব্যাংক ঋণের দুর্নীতি-অনিয়ম বন্ধ কর। পুলিশী হয়রানী, জুলুম, নিপীড়ন, মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তার বন্ধ কর।
৫. ১ লাখ ৬৮ হাজার কৃষকের নামে দায়েরকৃত সার্টিফিকেট মামলা ও ১২ হাজার কৃষকের নামে জারীকৃত গ্রেপ্তারি পরোয়ানা প্রত্যাহার কর। ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত কৃষিঋণ সুদাসলে মওকুফ কর। শস্য বীমা চালু কর। এনজিও ও মহাজনী ঋণের হয়রানী বন্ধ কর।
৬. কৃষি জমি অকৃষি খাতে যাওয়া রোধ কর। কৃষি জমি সুরক্ষা আইন প্রণয়ন কর। আখচাষিদের রক্ষা কর, বকেয়া পাওনা পরিশোধ কর। নদী-খাল খনন কর, দখল-দূষণ বন্ধ কর, নদীভাঙ্গন রোধে ব্যবস্থা নাও। হাওর সমস্যার স্থায়ী সমাধানে কার্যকর উদ্যোগ নাও, হাওরের নদী-খাল খনন কর।
৭. দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জলাবদ্ধতা দূর কর; লবণাক্ততা রোধে ব্যবস্থা নাও। তিস্তাসহ সকল অভিন্ন নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা আদায় কর; বাংলাদেশকে মরুকরণের হাত থেকে রক্ষা কর।
৮. নজির বিহীন ভোট ডাকাতির নির্বাচন বাতিল করে নির্বাচনকালীন নির্দলীয় তদারকি সরকারের অধিনে দ্রুত নির্বাচন দাও; কৃষক-ক্ষেতমজুরসহ দেশের জনগণের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা কর।
দাবি পক্ষে সারাদেশে জেলা-উপজেলায় হাটসভা, পথসভা, পদযাত্রা, মিছিল, লিফলেট বিলিসহ গণসংযোগ কর্মসূচি পালন করে শেষ দিন ১১ মার্চ প্রত্যেক জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের সামনে অবস্থান বিক্ষোভ কর্মসূচি পালিত হবে।