খাদিজা আক্তার নার্গিসের উপর এম.সি কলেজ ক্যাম্পাসে বর্বরোচিত হামলার প্রতিবাদে ৭ অক্টোবর’১৬ বিকাল ৪ টায় নগরীর আন্দরকিল্লা মোড়ে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট চট্টগ্রাম নগর শাখার বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশের পূর্বে একটি বিক্ষোভ মিছিল চেরাগী পাহাড় থেকে শুরু হয়ে শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিন করে আন্দরকিল্লা মোড়ে সমাবেশে মিলিত হয়। সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট চট্টগ্রাম নগর শাখার সভাপতি তাজনাহার রিপনের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক আরিফ মঈনুদ্দিনের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট চট্টগ্রাম নগর শাখার সহসভাপতি মুক্তা ভট্টাচার্য্য, সাংগঠনিক সম্পাদক দীপা মজুমদার।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, “তনু, আফসানা, রিশা, নিতুর বিচার চেয়ে যখন সারাদেশের মানুষ আন্দোলন করছে ঠিক সেই সময়ে আবারও এক নির্মম ও নৃশংস ঘটনার জন্ম দিয়েছে ছাত্রলীগ নেতা বদরুল আলম। সারাদেশে আওয়ামীলীগ-ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দের বাধাহীন তান্ডব দেশের মানুষ আগেও দেখেছে। মায়ের পেটে শিশু সুমাইয়ার গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনা মানুষের মনে ত্রাস সৃষ্টি করেছে। কিন্তু তাদের এহন আচরণে সরকার বরাবরই নিশ্চুপ থেকেছে। ফলে সমাজবিরোধীরা সমাজে তাদের ভিত শক্ত করেছে। নারীরা আজ কোথাও নিরাপদ নয়, কর্মস্থলে, বাসে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এমনকি নিজ পরিবারেও নারী নির্যাতিত। হত্যা, ধর্ষণ, খুন, নির্যাতন এগুলো পত্র-পত্রিকার নিত্য- নৈমত্তিক খবর। অথচ সরকার এ ব্যাপারে নির্বাক। গত ৩ অক্টোবর এম.সি কলেজে স্নাতক ২য় বর্ষের পরীক্ষা দিতে এসে শাবিপ্রবি ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক বদরুল আলম কর্তৃক বর্বরোচিত হামলার শিকার হন খাদিজা আক্তার নার্গিস। হামলায় গুরুতর আহত খাদিজা বর্তমানে ঢাকার স্কয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধিন আছেন, চিকিৎসকরা আশংকা করছেন খাদিজার বাঁচার সম্ভাবনা মাত্র ৫ ভাগ। এম.সি কলেজের মত ঐতিহ্যবাহী কলেজে প্রকাশ্যে এই হামলা সবাইকে আতঙ্কিত করেছে। বাস্তবে দেশে আজ এক শ্বাসরুদ্ধকর পরিবেশ চলছে। তন,ু রিমি, সিমি, নিতু, মিতু, আফসানাসহ একের পর এক নারী নির্যাতন এবং হত্যার ঘটনা ঘটলেও কোন একটি ঘটনারই বিচার হয় নি, শুধু তাই নয় সরকার এবং প্রশাসন বিভিন্নভাবে এই ঘটনার সাথে জড়িতদের আড়াল করার চেষ্টা করছে। একদিকে যেমন অপরাধীরা ক্ষমতাসীনদের ছত্রছায়ায় শাস্তির আওতার বাইরে থাকছে, আরেক দিকে চলছে আত্মকেন্দ্রীক ভোগবাদী সংস্কৃতির ব্যাপক প্রচার, যার ফলে নারীরা সর্বত্র নিপিড়নের শিকারে পরিণত হচ্ছেন। নারীর প্রতি এই সহিংস মনোভাব বাস্তবে সমাজ মানসিকতারই একরকম বহিঃপ্রকাশ। তাই সবাইকে এর বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।।
নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে বদরুল আলমসহ অতীতের সকল নারী শিশু নির্যাতনকারীদের বিচার করে সকল মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানান। তাঁরা দেশের সকল গণতান্ত্রিক সংস্কৃতিবান মানুষকে সকল প্রকার অন্যায়ের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিরোধ আন্দোলন গড়ে তোলারও আহ্বান জানান।