বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (মার্কসবাদী) সিলেট জেলা শাখার উদ্যোগে গ্যাসের মুল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল-সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। ২৪ ফেব্রুয়ারি বিকাল ৫টায় সিলেট কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার থেকে মিছিলটি শুরু হয়ে নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিন করে সিটি পয়েন্টে সমাবেমে মিলিত হয়। বাসদ (মার্কসবাদী) সিলেট জেলার আহবায়ক কমরেড উজ্জ্বল রায়ের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন পার্টি জেলার সদস্য সুশান্ত সিনহা সুমন, বাংলাদেশ শ্রমিক কর্মচারী ফেডারেশন সিলেট জেলার সাধারণ সম্পাদক মোখলেছুর রহমান প্রমুখ।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, জনমত উপেক্ষা করে স্বেচ্ছাচারী কায়দায় গ্যাসের দাম একধাক্কায় ২২.৭% বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নিয়েছে আওয়ামী লীগ সরকার, আবাসিক খাতে মূল্যবৃদ্ধির পরিমাণ ৫০%-এর বেশি। সরকারী তথ্যেই দেখা যায়, সবগুলো গ্যাস সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানই প্রতিবছর লাভ করছে, কোনটিই লোকসানি নেই। পেট্রোবাংলার অধিভুক্ত কো¤পানিগুলো থেকে সরকার প্রায় ৬০০০ কোটি টাকা কর-লভ্যাংশ-রয়্যালটি বাবদ পেয়েছে গত ২০১৫-১৬ অর্থবছরে। এরপরও পেট্রোবাংলার নীট মুনাফা ১২৬৯ কোটি টাকার বেশি। ফলে এই অবস্থায় গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির সিদ্ধান্ত অযৌক্তিক। অন্যদিকে, গ্যাসের দামের ৮১% অর্থই যায় সরকারের কোষাগারে, যার মধ্যে আছে স¤পূরক শুল্ক ৪০%-ভ্যাট ১৫%-অগ্রিম আয়কর-সম্পদ মূল্য-ডিভিডেন্ড-গ্যাস উন্নয়ন তহবিল ইত্যাদি। এ বিপুল পরিমাণ কর-শুল্ক কিছুটা কমালেই স্বল্পমূল্যে গ্যাস দেয়া সম্ভব।
নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বর মাসেই গ্যাসের দাম ২৬.২৯% বাড়ানো হয়েছে। সরকার চায় বাসা-বাড়িতে পাইপলাইনে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দিতে। এজন্য একদিকে গ্যাসের দাম বাড়িয়ে এলপিজি সিলিন্ডারের সমান করা হচ্ছে, অন্যদিকে গ্যাসের চাপ কমিয়ে দিয়ে মানুষকে ভোগান্তিতে ফেলা হচ্ছে। সরকার উন্নয়নের নামে হাজার হাজার কোটি টাকার দুর্নীতির পাহাড় গড়ছে, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকে অর্থ লোপাট হচ্ছে, এইসব লুণ্ঠন আর অপচয়ের তহবিল জোগাতেই গ্যাসের মূল্য দফায় দফায় বৃদ্ধি করা হচ্ছে। এতে জনজীবনের দুর্ভোগ আরো বাড়বে, বাড়বে সার-শিল্প পণ্যের দাম-নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য-গণপরিবহণের ভাড়া ইত্যাদি।
নেতৃবৃন্দ গ্যাসের বর্ধিত মূল্য অবিলম্বে প্রত্যাহারের দাবি জানান এবং সরকারের এই অনৈতিক সিদ্ধান্তের বিরোদ্ধে তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলার আহবান জানান।