Saturday, November 23, 2024
Homeসংবাদ ও প্রেস বিজ্ঞপ্তিপার্টি ও সংগঠন সংবাদগ্যাস বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির অযৌক্তিক ও গণবিরোধী পরিকল্পনা রুখে দাঁড়ান - বাসদ (মার্কসবাদী)

গ্যাস বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির অযৌক্তিক ও গণবিরোধী পরিকল্পনা রুখে দাঁড়ান – বাসদ (মার্কসবাদী)

Exif_JPEG_420

গ্যাস বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির অযৌক্তিক ও গণবিরোধী পরিকল্পনা বাতিলের দাবিতে বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (মার্কসবাদী) চট্টগ্রাম জেলা শাখা ৯ মে ২০১৬ বিকালে নগরীতে সমাবেশ ও পুরাতন রেল ষ্ট্রেশন হতে আন্দরকিল্লা মোড় পর্যন্ত পদযাত্রা করেছে। উল্লেখ্য গ্যাস বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির প্রস্তাব বাতিলের দাবিতে বাসদ (মার্কসবাদী) কেন্দ্রীয় কমিটি ১০ – ২৫ মে দেশব্যাপী প্রচারপক্ষ পালনের ঘোষণা করেছে। প্রচারপক্ষে চট্টগ্রাম নগরীর বিভিন্ন থানায় থানায় সমাবেশ, মিছিল, পদযাত্রা, প্রচারপত্র বিলি এবং ২২ মে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসককে স্মারকলিপি প্রদান করা হবে। আজ বিকাল ৪ টায় নগরীর পুরাতন ষ্টেশনে প্রচারপক্ষ উপলক্ষে উক্ত সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। বাসদ (মার্কসবাদী) চট্টগ্রাম জেলা শাখার সদস্য সচিব অপু দাশগুপ্তের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, জেলা কমিটির সদস্য শফিউদ্দিন কবির আবিদ, ইন্দ্রানী ভট্টাচার্য সোমা, রফিকুল হাসান, আসমা আক্তার প্রমুখ।

সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেন, “সরকার আরও এক দফা বিদ্যুৎ ও গ্যাস-এর দাম বাড়াতে যাচ্ছে। আবাসিক খাতে গ্যাসের মূল্য সিঙ্গল বার্নারে ৬০০ টাকা ১১০০ টাকা ও ডাবল বার্নারে ৬৫০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১২০০ টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে। বিদ্যুৎকেন্দ্রে গ্যাসের মূল্য ৬৩% ও সিএনজি চালিত গ্যাসের দাম ৮৩% বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। বিদ্যুতের দাম গ্রাহক পর্যায়ে ইউনিট প্রতি গড়ে ৮% বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। এই মূল্যবৃদ্ধির ফলে জিনিসপত্রের দাম আরেক দফা বাড়বে, বাড়ি ভাড়া-গাড়ি ভাড়া, কৃষিকাজে ও শিল্পে উৎপাদন খরচ বাড়বে। সীমিত আয়ের মানুষের সংসার খরচ চালানো আরো কঠিন হবে। এবারের মূল্যবৃদ্ধিই শেষ নয়। ইতিমধ্যে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী ঘোষণা করেছেন, ‘আগামীতে গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম আরো বাড়ানো হবে’। জনপ্রতিনিধিত্বহীন এই সরকার জনগণের দুর্দশার প্রতি বিন্দুমাত্র পরোয়া করে না – এই স্বৈরতান্ত্রিক ঘোষণা তার প্রমাণ। এখনই প্রতিরোধ করতে না পারলে সামনে আরো বেশি মূল্যবৃদ্ধির ফাঁস আমাদের গলায় চেপে বসবে।”

নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, “বাংলাদেশে এখনো ৬৫-৭০ শতাংশ বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয় দেশে উৎপাদিত গ্যাস দিয়ে। আর ৩০-৩৫ শতাংশ বিদ্যুৎ উৎপাদন হয় বিদেশ থেকে আমদানিকৃত তরল জ্বালানি তেলে। বিশ্ববাজারে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম ব্যারেল প্রতি ১২০ ডলার থেকে কমে ৩০-৪০ ডলারে নেমেছে। তেলভিত্তিক কেন্দ্রগুলোতে বিদ্যুৎ উৎপাদনের খরচও কমেছে। গতবছর প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের উৎপাদন খরচ ছিল ৬.২৭ টাকা। এখন ১১টি বিদ্যুৎকেন্দ্রের মালিকরা কম দামে তেল আমদানী করায় উৎপাদন ব্যয় কমে হয়েছে ৫.৮০ টাকা। তাছাড়া গ্যাসভিত্তিক বিবিয়ানা, আশুগঞ্জ বিদ্যুৎকেন্দ্র চালু হওয়ায় জাতীয় গ্রীডে কম দামে বিদ্যুৎ যুক্ত হয়েছে। এসব কারণে চলতি বছর বিদ্যুতের গড় উৎপাদন ব্যয় আরও কমবে। অথচ বিদ্যুতের দাম কমানোর বদলে উল্টো বাড়ানো হচ্ছে।”

নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, “ সরকার রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান বাপেক্স-পেট্রোবাংলার পরিবর্তে বিদেশি কোম্পানির মাধ্যমে গ্যাস উত্তোলন করছে এবং তাদের কাছ থেকে বহুগুণ বেশি দামে গ্যাস কিনছে। অন্যদিকে, বিদ্যুতের উৎপাদন দ্রুত বাড়ানোর নামে স্থাপিত তেলভিত্তিক প্রাইভেট রেন্টাল-কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো থেকে বেশি দামে বিদ্যুৎ কিনছে। এভাবে জনগণের অর্থ দিয়ে দেশি-বিদেশি লুটপাটকারীদের পকেট ভরা হচ্ছে। আর এই লুটপাটের ফলে সৃষ্ট ঘাটতি পোষাতে গ্যাস-বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হচ্ছে।”

নেতৃবৃন্দ গ্যাস ও বিদ্যুতের এই অন্যায় ও স্বেচ্ছাচারী মূল্যবৃদ্ধির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারে সরকারকে বাধ্য করতে তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলার জন্য জনসাধারণের প্রতি আহ্বান জানান।

সমাবেশ শেষে পুরাতন রেল ষ্ট্রেশন হতে আন্দরকিল্লা মোড় পর্যন্ত প্রচারপত্র বিলি ও পদযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়।

RELATED ARTICLES

আরও

Recent Comments