নতুন মজুরি বোর্ড গঠন করে ১৬ হাজার টাকা মোট মজুরি ঘোষণার দাবি
আশুলিয়ায় গ্রেফতার, হয়রানি, ছাটাই, শ্রমিক সংগঠনের কার্যালয় বন্ধ করে শ্রমিক নির্যাতনের বিরুদ্ধে এবং নতুন মজুরি বোর্ড গঠন করে ১৬ হাজার টাকা মোট মজুরি ঘোষণার দাবিতে ১৭ ফেব্রুয়ারি সকাল ১১ টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে গার্মেন্টস শ্রমিক অধিকার আন্দোলনের উদ্যোগে নির্যাতন বিরোধী শ্রমিক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। গার্মেন্টস শ্রমিক অধিকার আন্দোলনের সমন্বয়ক আ ক ম জহিরুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত শ্রমিক সমাবেশে বক্তব্য রাখেন শ্রমিকনেতা মোশরেফা মিশু, তাসলিমা আক্তার লিমা, এ এম ফায়েজ হোসেন, মো. ইয়াসিন মিঞা, শবনম হাফিজ, সাইফুল ইসলাম, শামসুল আলম এবং মীর মোফাজ্জল হোসেন মোস্তাক।
সমাবেশে শ্রমিক নেতৃবৃন্দ সরকারের উদ্দেশ্যে বলেন, আশুলিয়া শ্রমিক সংগঠনের কার্যালয় বন্ধ কেন? গ্রেফতারকৃত শ্রমিক নেতাদের মুক্তি দেওয়া হচ্ছে না কেন? আন্দোলনকারী শ্রমিক নেতাদের এখনও পলাতক জীবন যাপন করতে হচ্ছে। শ্রমিক নেতাদের বাসায় গিয়ে মালিকের মাস্তান এবং গোয়েন্দাবাহিনীর সদস্যরা নানা ভাবে হুমকি ও গ্রেফতারের ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। সরকার মালিক শ্রেণীর পক্ষ নিয়ে সম্পূর্ণ ফ্যাসিস্ট কায়দায় শিল্পাঞ্চল এবং শ্রমিক এলাকায় অঘোষিত জরুরী অবস্থা জারি রেখেছে যাতে শ্রমিক সংগঠনগুলো কোন রকম সভা সমাবেশসহ গার্মেন্টস শ্রমিকদের দাবি দাওয়া নিয়ে কোন শব্দ করতে না পারে। সমাবেশে শ্রমিক নেতৃবৃন্দ সরকারকে হুশিয়ার করে বলেন এই অবস্থা বেশি দিন জারি থাকলে শ্রমিকরা নির্যাতন মোকাবেলা এবং তাদের অধিকার আদায়ে আরো দূর্বার আন্দোলন গড়ে তুলবে। তাই নতুন মজুরি বোর্ড গঠন করে ১৬ হাজার টাকা মোট মজুরি ঘোষণা করার জন্য সরকারের প্রতি জোর দাবি জানান। সমাবেশে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন গার্মেন্টস ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের কার্যকরি সভাপতি সাদেকুর রহমান শামীম, গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্ট এর সভাপতি আহসান হাবিব বুলবুল এবং জাকির হোসেন।
উল্লেখ্য, গার্মেন্টস শ্রমিকরা তাদের মজুরী বৃদ্ধি, বার্ষিক ছুটির টাকা পরিশোধ, সার্ভিস বেনিফিট এবং গ্রাচুইটিসহ অন্যান্য দাবিতে ধারাবাহিকভাবে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় আন্দোলন করছিল। মালিক পক্ষ তাদের দাবির প্রতি কর্ণপাত না করে শ্রমিকদের নানাভাবে ভয়ভীতি দেখিয়ে হেনস্তা করছিল। সেই প্রেক্ষিতে লক্ষ লক্ষ শ্রমিক তাদের দাবি আদায়ের লক্ষ্যে ধর্মঘটের ডাক দেয় এবং শান্তিপূর্ণ উপায়ে ধর্মঘট পালন করে। সরকার তখন মালিক শ্রেণির পক্ষ নিয়ে সম্পূর্ণ ফ্যাসিস্ট কায়দায় গোয়েন্দাবাহিনী ও পুলিশ বাহিনী দিয়ে হামলা, নির্যাতন ও গ্রেফতার করে শ্রমিক আন্দোলন দমন করে।