বাংলাদেশ নারী মুক্তি কেন্দ্র চট্টগ্রাম জেলার পক্ষ থেকে ৯ ডিসেম্বর ২০১৫ বিকাল ৩ টায় র্যালি ও নগরীর স্টুডিও থিয়েটারে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা সভাপতি পপি চাকমা। বক্তব্য রাখেন, বিশিষ্ট লেখিকা ও অধ্যাপিকা ফেরদৌস আরা আলীম, জেলা কমিটির সাধারন সম্পাদক আসমা আক্তার, তাজনাহার রিপন। আলোচনা সভা পরিচালনা করেন জেলা কমিটির সদস্য জুলেখা আক্তার।
আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, বেগম রোকেয়ার ১৩৫ তম দিবসেও আমরা দেখি সমাজে নারী পুরুষের বৈষম্য দূর হয় নি। বরং এ বৈষম্য দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই বৈষম্যমূলক দৃষ্টিভঙ্গি রাষ্ট্র অত্যন্ত সুকৌশলে লালন করছে। বক্তারা বলেন, দেশ পরিচালনার জন্য জন প্রতিনিধি নির্বাচন করা হয়। সাম্প্রতিক সময়ে নির্বাচনে নারী প্রতিনিধিদের জন্য যেসব নির্বাচনী প্রতীক নির্ধারন করা হচ্ছে তা নারী সমাজের জন্য অবমাননাকর ও রাষ্ট্রের বৈষম্যমূলক দৃষ্টিভঙ্গিকে চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়। নির্বাচনের প্রতীকে নারী পুরুষ ভেদাভেদ থাকার কথা নয়। অথচ আমরা দেখি নারীদের জন্য চুড়ি, ভ্যানিটি ব্যাগ, পুতুল, চুলা ইত্যাদি প্রতীক নির্ধারন করা হচ্ছে। বক্তারা এ আলোচনা সভার মাধ্যমে এ নির্বাচন কমিশন ও রাষ্ট্রের এ নীতির প্রতি তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দা প্রকাশ করেন।
বক্তারা আরো বলেন, বেগম রোকেয়া নারী পুরুষ বৈষম্যহীন সমাজ নির্মানের স্বপ্ন নিয়ে কাজ করেছেন। তিনি সেই সময় পিছিয়ে থাকা নারীদের সমাজকে আলোর পথে নিয়ে আসার জন্য নারী শিক্ষার উপর জোর দিয়েছেন। রোকেয়ার সমাজ ছিল কুসংস্কারাছন্ন, পশ্চাৎপদ সমাজ। বেগম রোকেয়া সাহসিকতার সাথে সেই সময় সেই সমাজের বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন। লড়াইয়ের পথ দেথিয়েছেন। রোকেয়ার ১৩৫ তম দিবসে আমাদের সংগঠন বাংলাদেশ নারী মুক্তি কেন্দ্র নারীর প্রকৃত মুক্তির জন্য লড়াই করছি।
বক্তারা বলেন, আজকের সময়ে মেয়েদের শিক্ষায় এগিয়ে আসার জন্য বেগম রোকেয়ার অবদান অনস্বীকার্য। মেয়েরা শিক্ষায় এগিয়ে আসলেও নারী সমাজের প্রকৃত মুুক্তি আসে নি। বর্তমান পুুঁজিবাদী সা¤্রাজ্যবাদী ব্যবস্থায় নারীরা পণ্যে পরিণত হয়েছে। নারীরা শ্রমের সমানাধিকার অর্জন করে নি। নারী সমাজ সবক্ষেত্রে ঘরে বাইরে সামাজিক নির্যাতনের স্বীকার। নাটক, সিনেমা, বিজ্ঞাপনে নারীকে অশ্লীলভাবে উপস্থাপন করা হয়। সাম্প্রতিক সময়ে নারী নির্যাতন ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। বর্ষবরণের ঘটনা থেকে শুরু করে কোন নারী নির্যাতনের ঘটনারই বিচার হচ্ছে না।
বক্তারা বলেন, একটা শোষনহীন, বৈষম্যহীন, কুসংস্কারমুক্ত সুস্থ সংস্কৃতির জন্য নারী মুুুক্তি কেন্দ্র লড়াই করছে। বেগম রোকেয়ার লড়াইয়ের প্রেরণাকে ধারণ করে নারীমুক্তি কেন্দ্র সমাজের সর্বস্তরে নারী পুরুষদের নিয়ে নারী মুক্তির আন্দোলন গড়ে তোলার প্রত্যয় ব্যক্ত করছে।