বাংলাদেশ নারীমুক্তি কেন্দ্র কেন্দ্রীয় কমিটির উদ্যোগে ২৭ মার্চ ২০১৬ বিকাল ৪টায় কুমিল্লা সেনানিবাসে সোহাগী জাহান তনু’র ধর্ষণকারী-হত্যাকারীদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি এবং পরিবারসহ জনগনের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবীতে বিক্ষোভ-সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ নারীমুক্তি কেন্দ্রের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি সুলতানা আক্তার রুবি এবং সভা পরিচালনা করেন কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মনিদীপা ভট্টাচার্য। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক মর্জিনা খাতুন, দপ্তর সম্পাদক তাছলিমা নাজনিন সুরভী।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, গত ২০ মার্চ রাত সাড়ে সাতটায় টিউশন শেষে বাসা ফেরার পথে সোহাগী জাহান তনুকে নরপশুরা ধর্ষণের পর নৃশংসভাবে হত্যা করে। তার লাশ ময়নামতি সেনানিবাসের অলিপুর এলাকায় পাওয়ার হাউজ পানির ট্যাংকির কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। সুরক্ষিত এই সেনানিবাস এলাকায় কিভাবে তনু লাশ হল? কিন্তু এই নৃশংস বর্বরতার ৬দিন অতিবাহিত হলেও এখনো অপরাধীকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ ও গোয়েন্দারা। অথচ তনুর বাবা-ভাই ও চাচাতো বোনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ক্যান্টনমেন্ট ও ডিবি কার্যালয়ে উপস্থিত করা হয়েছে। ধিক্কার জানাই এই প্রশাসনকে, এই রাষ্ট্রকে।
সারাদেশে যে ভয়াবহ নারী নির্যাতন, ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনা ঘটছে তার তথ্য দেখলেই যে কোন বিবেকবান মানুষ শিউরে উঠবে।
কোন্ দেশে আমরা বাস করছি যে দেশে বছরে ৪ হাজার ৪৩৬ জন নারী ধর্ষণসহ বিভিন্নভাবে নির্যাতনের শিকার হয়। কিন্তু রাষ্ট্র এই ধর্ষণকারী-নির্যাতনকারীদেরকে বিচারের আওতায় আনেনি। বরং বর্ষবরণে নারী লাঞ্ছনার ঘটনার বিচার নিয়ে প্রহসন চলছে। রাষ্ট্রের মন্ত্রীরা তাদের বক্তব্যের মাধ্যমে লাঞ্ছনাকারীদের মদদ দিয়েছে, পৃষ্ঠপোষকতা দান করছে। ফলে এই দায়িত্বহীন বক্তব্য শহর থেকে গ্রাম পর্যন্ত দুষ্কৃতকারীদেরকেই অপরাধ সংঘটনে উৎসাহী করছে। বিচারহীনতার এই সংস্কৃতি নারীসমাজ সহ সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা কেড়ে নিয়েছে। তাই তনু হত্যাকারিদের অবিলম্বে গ্রেফতার-বিচার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। আর এর মধ্য দিয়ে দেশে যে বিচারহীনতার সংস্কৃতি চলছে সেই সংস্কৃতির অবসান ঘটবে। তাই উচ্চকন্ঠে আওয়াজ তুলুন- “তনু হত্যার সাথে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই, জনগনের জান-মালের নিরাপত্তা চাই।” তনুর মতো আর কোন মেয়ের জীবনে যেন এই পরিণতি না আসে তার জন্য গনতন্ত্রমনা সকল স্তরের জনগনকে ঐক্যবদ্ধভাবে সামাজিক-সাংস্কৃতিক আন্দোলন গড়ে তোলার আহবান জানাই।