Wednesday, November 20, 2024
Homeসংবাদ ও প্রেস বিজ্ঞপ্তিপার্টি ও সংগঠন সংবাদতিস্তা থেকে ভারতের একতরফা পানি প্রত্যাহার এবং মহাজোট সরকারের নতজানু নীতি রুখে...

তিস্তা থেকে ভারতের একতরফা পানি প্রত্যাহার এবং মহাজোট সরকারের নতজানু নীতি রুখে দাঁড়ান

বিদ্যুতের জনস্বার্থ-বিরোধী বর্ধিত মূল্য প্রত্যাহার কর

SPB_04.04.14

তিস্তা থেকে ভারতের একতরফা পানি প্রত্যাহার এবং মহাজোট সরকারের নতজানু নীতির প্রতিবাদে এবং বিদ্যুতের বর্ধিত মূল্য প্রত্যাহারের দাবিতে আজ ৪ এপ্রিল বিকাল সাড়ে ৪টায় বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল – বাসদ কেন্দ্রীয় কনভেনশন প্রস্তুতি কমিটির উদ্যোগে ঢাকায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে। জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সমাবেশ শেষে বিক্ষোভ মিছিল গুলিস্তান, পল্টন, বায়তুল মোকাররম এলাকা প্রদক্ষিণ করে।
জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাসদ কনভেনশন প্রস্তুতি কমিটির সদস্য কমরেড উজ্জ্বল রায়, সাইফুজ্জামান সাকন ও কল্যাণ দত্ত। সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেন, তিস্তা থেকে ভারত গজলডোবা ব্যারেজের সব গেট বন্ধ করে দিয়ে একতরফা পানি প্রত্যাহার করছে। পানির অভাবে ওই নদীর পাড়ের ১২টি উপজেলার প্রায় ৮০ হাজার হেক্টর জমির বোরো আবাদ চরম বিপর্যয়ের মুখে। এর ফলে ওই বিস্তীর্ণ এলাকায় কৃষকসহ কৃষির সাথে যুক্ত বিশাল জনগোষ্ঠীর মধ্যে হাহাকার শুরু হয়েছে।
নেতৃবৃন্দ বলেন, ভাতের পানি আগ্রাসনের ফলে উত্তরাঞ্চলের কৃষিখাতে মারাত্মক বিপর্যয় নেমে এসেছে। বাংলাদেশ পানির ন্যায্য হিস্যা দূরে থাক, আগে যে পানিটুকু পাওয়া যেত তাও এখন ভারত বন্ধ করে দিয়েছে। ফলে আমাদের দেশের বৃহৎ সেচ প্রকল্প ‘তিস্তা সেচ প্রকল্প’ অকার্যকর হয়ে পড়েছে। শুধু তাই নয়, তিস্তায় পানি না থাকায় এ অঞ্চলের ধরলা, ঘাঘট, যমুনেশ্বরী, আখিরা, দুধকুমার, বুড়ি তিস্তাসহ প্রায় ৩৩টি ছোট বড় নদ-নদী ভরাট হয়ে গেছে। রংপুর অঞ্চল ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নেমে গেছে মাত্রাতিরিক্তভাবে। মরণফাঁদ ফারাক্কার পর তিস্তায় ভারতের পানি আগ্রাসনে গোটা উত্তরাঞ্চল মরুভূমিতে পরিণত হতে চলেছে।
SPB_04.04.14 2বর্তমান মহাজোট সরকারসহ বিগত সরকারগুলোর নতজানু নীতির কঠোর সমালোচনা করে নেতৃবৃন্দ বলেন, এরা কেউ বলে, ভারত তাদের বন্ধু, আর কেউ ভারতের বিরুদ্ধে যুদ্ধ-যুদ্ধ ভাব দেখায়। অথচ ভারতের কাছ থেকে অভিন্ন নদীগুলোর পানির ন্যায্য হিস্যা আদায়, সীমান্ত সমস্যা সধাধান, বাণিজ্য ঘাটতি সমাধান – কোনো ক্ষেত্রেই কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি। যে কারণে তিস্তার পানি বণ্টনের সমস্যাও দীর্ঘদিন ধরে কোনো সমাধান হয়নি। ১৯৮৩ সালের জুলাই মাসে ভারত-বাংলাদেশ মন্ত্রীপর্যায়ের বৈঠকের সিদ্ধান্ত মোতাবেক তিস্তার পানির ৩৬ শতাংশ বাংলাদেশ, ৩৯ শতাংশ ভারত, বাকি ২৫ শতাংশ সংরক্ষিত থাকার কথা  থাকলেও তা ভারতের কারণে বাস্তবায়িত হয়নি। ২০১১ সালের ৬ সেপ্টেম্বর ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহের বাংলাদেশ সফরের সময় তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তির বিষয়ে পশ্চিমবাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের বিরোধিতাকে অজুহাত হিসাবে দাঁড় করিয়ে ভারত সরকার চুক্তি করতে অপারগতা প্রকাশ করে। সমাবেশ থেকে তিস্তাসহ সকল অভিন্ন নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা আদায়, টিপাইবাঁধ ও আন্তঃনদী সংযোগ প্রকল্প বাতিল এবং এ লক্ষ্যে বাংলাদেশ সরকারকে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানানো হয়।
সমাবেশ থেকে তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যা আদায়ের দাবিতে আগামী ৮-১০ এপ্রিল গণতান্ত্রিক বাম মোর্চার ডাকে ঢাকা-তিস্তা ব্যারেজ রোডমার্চ সফল করার জন্য দেশপ্রেমিক বাম-গণতান্ত্রিক শক্তির প্রতি আহ্বান জানানো হয়।
নেতৃবৃন্দ বলেন, ভারত একটি সাম্রাজ্যবাদী দেশ। সেদেশের সাধারণ মানুষ এবং শাসক সম্পূর্ণ আলাদা, ঠিক যেমন আমাদের দেশে শাসকগোষ্ঠী এবং জনগণ সম্পূর্ণ আলাদা। ভারতের শাসকগোষ্ঠী পানির ওপর আগ্রাসন চালিয়ে আমাদের দেশের সাধারণ মানুষের কৃষি-বাসস্থান-পরিবেশের ওপর যে আঘাত করছে তাতে আমাদের শাসকদের কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই। তারা ব্যস্ত ভারতের শাসকদের কাছ থেকে কি কি সুবিধা নেয়া যায়, সে চেষ্টায়। বোরো মওসুরেম আগে আগে বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হল। এ নিয়ে আওয়ামী-মহাজোট রেন্টাল-কুইকরেন্টালের লুটপাটের সুবিধা করে দেয়ার জন্য সাত বার বিদ্যুতের দাম বাড়ালো। অথচ দেশের বিভিন্ন স্থানে কৃষকরা বিদ্যুতের অভাবে সেচ দিতে পারছে না, এসব খবর পত্রিকায় আসছে। সমাবেশ থেকে অবিলম্বে বিদ্যুতের বর্ধিত মূল্য প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়।

RELATED ARTICLES

আরও

Recent Comments