Tuesday, December 24, 2024
Homeসংবাদ ও প্রেস বিজ্ঞপ্তিপার্টি ও সংগঠন সংবাদতোবা কারখানা চালু ও বকেয়া বেতন পরিশোধের দাবীতে সমাবেশ ও স্মারকলিপি পেশ

তোবা কারখানা চালু ও বকেয়া বেতন পরিশোধের দাবীতে সমাবেশ ও স্মারকলিপি পেশ

ঈদের আগেই পাওনা পরিশোধে মন্ত্রীর আশ্বাস

10676378_681552128618510_2935134993905900099_nতোবা গ্রুপের শ্রমিকদের দাবী আদায়ে তোবা গ্রুপ শ্রমিক সংগ্রাম কমিটি ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৪ বেলা ১১.৩০টায় শ্রম প্রতিমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি পেশ করেছে।

সংগ্রাম কমিটির আহ্বায়ক মোশরেফা মিশুর নেতৃত্বে শ্রমিক নেতা জহিরুল ইসলাম, শামীম ইমাম, জলি তালুকদার, আহসান হাবিব বুলবুল, ইয়াসিন মিয়া, সুমন মল্লিক, মোফাজ্জল হোসেন মোস্তাক, শহীদুল ইসলাম সবুজ, সাইফুল ইসলাম, তৌহিদুল ইসলাম, দীপক রায়, তোবার শ্রমিক রেহানা, নাসির, সবুরা, হেলেনা, মনিরসহ ২১ জনের একটি প্রতিনিধিদল স্মারকলিপি নিয়ে শ্রম প্রতিমন্ত্রীর দপ্তরে যান। এর আগে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করে মিছিলসহ শ্রম মন্ত্রণালয়ের দিকে যাত্রা করে। প্রেসক্লাব ও সচিবালয়ের মাঝখানে পুলিশ বাধা দিলে নেতৃব্নৃদ স্মারকলিপি নিয়ে সচিবালয়ে যান। বাইরে সমাবেশ চলতে থাকে।

মন্ত্রীর সাথে প্রায় দেড় ঘন্টা আলোচনায় শ্রমিক নেতৃবৃন্দ তোবাসহ সারাদেশের শ্রমিকরা যেন ঈদ-উল-আযহার পূর্বেই বেতন-বোনাস পান সে ব্যাপারে উদ্যোগ নেয়ার জন্য শ্রম প্রতিমন্ত্রীর মাধ্যমে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। মন্ত্রী ঈদের আগেই শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধের আশ্বাস দেন।

স্মারকলিপিতে গার্মেন্টস শ্রমিকদের বর্তমান অবস্থা বিশেষ করে তোবা গ্রুপের ৫টি কারখানার ১৬০০ শ্রমিক কর্মচারীর সর্বশেষ পরিস্থিতি ও তাদের পাওনাদি মালিক পক্ষ কর্তৃক পরিশোধের বিষয়ে শ্রমিকদের বক্তব্য মন্ত্রীর কাছে পেশ করা হয়।

তোবা  গ্রুপের ৫টি কারখানার (তোবা ফ্যাশন লিঃ, তোবা টেক্সটাইল লিঃ তাইফ ডিজাইন লিঃ, মিতা ডিজাইন লিঃ বুগশান গার্মেন্টস লিঃ) ১৬০০ শ্রমিক মে, জুন, জুলাই’র বেতন ১ মাসের ওভারটাইম ও ঈদ বোনাসের দাবীতে গত ২৮ জুলাই ঈদুল ফিতরের আগের দিন সন্ধ্যা ৭টা থেকে আমরণ অনশন শুরু করতে বাধ্য হয়েছিল। রাজপথের সকল কর্মসূচী ব্যর্থ হওয়ার পর ২৮ জুলাই ঈদের আগের দিন তোবা কর্তৃপক্ষ ও বিজিএমইএকে জানিয়ে দাবী আদায় না হলে “আমরণ অনশন” করতে বাধ্য হয়েছিল শ্রমিক কর্মচারীরা। সকল বাম প্রগতিশীল রাজনৈতিক দল, ছাত্র সংগঠন, শ্রমিক সংগঠন, নারী সংগঠন, গবেষক, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকগণও এই অনশনে উপস্থিত হয়ে সংহতি প্রকাশ করেন।

শ্রমিকরা ২ মাসের বেতন আনতে বিজিএমইএ অফিসে না যাওয়ায় ৬ ও ৭ জুলাই পুলিশ না খাওয়া অসুস্থ্য মানুষগুলোর উপর হামলা চালায়, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, সংবাদকর্মী এবং বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক, গবেষকরাও পুলিশের হামলা থেকে রেহাই পাননি। ৭ জুলাই অনশনরত শ্রমিক ও নেতাদের উপর হামলা চালায় পুলিশ এবং তাদের কয়েক জনকে গ্রেফতারও করে।

গত মাসে তোবা গ্রুপের খুনি মালিক দেলোয়ার হোসেন ৫ কারখানা অবৈধ ভাবে বন্ধ করে দিয়ে ১৬০০ শ্রমিক কর্মচারীদের রুটি রুজির বিষয়টিকে হুমকির মধ্যে ফেলে দিয়েছেন। সরকার পক্ষও এই বন্ধকে অবৈধ বলে উল্লেখ করেছেন। সে ক্ষেত্রে আইন অনুযায়ী তোবা গ্রুপের ৫টি কারখানা খোলা আছে বলে বিবেচনা করতে হয় এবং বেআইনীভাবে তোবা গ্রুপ কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের কারখানায় প্রবেশাধিকার হরন করেছেন বলে বিবেচিত হবে। সে ক্ষেত্রে শ্রমিক কর্মচারীরা ঈদুল ফিতরের বোনাস, আগস্ট-সেপ্টেম্বরের বেতন এবং আসন্ন ঈদুল আয্হা ও পূজার বোনাস প্রাপ্য।

কারখানার মালিক দেলোয়ার হোসেন সম্প্রতি মন্ত্রনালয়ে ২ কোটি ৬ লক্ষ ৯৮ হাজার টাকার হিসাব জমা দিয়েছেন ৫টি কারখানার শ্রমিক কর্মচারীদের পাওনাদি বাবদ বলে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে।  এ বিষয়ে নেতৃবৃন্দ বিশ্ময় প্রকাশ করে স্মারকলিপিতে বলেন, কোন ভিত্তিতে তিনি এই হিসাব জমা দিয়েছেন তা আমাদের বোধগম্য নয়, গ্রহণযোগ্যও নয়। শ্রমিক নেতৃবৃন্দ দাবী করেন, তোবা গ্রুপের মালিক দেলোয়ার হোসেন তাজরীনের শ্রমিক হত্যার অপরাধে অভিযুক্ত। দেশের অধিকাংশ মানুষ তাকে শ্রমিক হত্যার অপরাধে খুনি হিসেবেই চেনেন। এমতাবস্থায় অবিলম্বে তার জামিন আদেশ বাতিল করা হোক এবং শ্রমিক হত্যাকারী হিসেবে তার সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা হোক। নেতৃবৃন্দ ক্ষোভ প্রকাশ করে আরো বলেন, খুনি দেলোয়ার হোসেনকে মুক্ত করার জন্য বিজিএমইএ তোবা গ্রুপের ৫ কারখানার শ্রমিকবৃন্দকে তুরুপের তাস হিসেবে ব্যবহার করেছিল ২৮ জুলাই’র পূর্ব পর্যন্ত। এধরনের ঘটনা কোন বিবেকবান মানুষের কাম্য নয়। তাই ৫ কারখানা নিয়ে খুনি দেলোয়ার হোসেনের স্বেচ্ছাচারী ও বেআইনী তৎপরতাকে প্রশ্রয় না দিয়ে সরকার উক্ত ৫টি কারখানা অধিগ্রহণ করে রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণে নিয়ে, অবিলম্বে খুলে দেয়ার কার্যকর পদক্ষেপ নেবার দাবী স্মারকলিপিতে জানানো হয়েছে।

RELATED ARTICLES

আরও

Recent Comments