বাসদ (মার্কসবাদী) সাধারণ সম্পাদক কমরেড মুবিনুল হায়দার চৌধুরী এক বিবৃতিতে ভারতের ধর্মীয় বিভেদমূলক নতুন নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকারীদের হটাতে দিল্লীতে হিন্দুত্ববাদী বিজেপি-র উস্কানিতে যে সাম্প্রদায়িক আক্রমণ গত ৩দিন ধরে পরিচালিত হচ্ছে – তার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। তিনি দিল্লীর মুসলিম সম্প্রদায়ের ওপর এই হামলা-অগ্নিসংযোগ অবিলম্বে বন্ধ করার কার্যকর উদ্যোগ নিতে বিজেপি সরকারের ওপর চাপ প্রয়োগে বাংলাদেশ সরকার ও জাতিসংঘকে তৎপর হওয়ার দাবি জানান। তিনি একইসাথে ধর্ম-বর্ণ-জাতিগত বিদ্বেষের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ-ভারতের শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষের মিলিত প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানান।
বিবৃতিতে কমরেড মুবিনুল হায়দার চৌধুরী বলেন, “ভারতের ধর্মীয় ফ্যাসিবাদী বিজেপি সরকার পুঁজিপতিশ্রেণীর শোষণে জনজীবনের দুর্দশা থেকে দৃষ্টি ফেরাতে উগ্র ধর্মীয় ও জাতিগত বিদ্বেষের জিগির তুলছে। ধর্মের ভিত্তিতে বিভক্ত করে শোষিত জনগণের ঐক্যকে বাধাগ্রস্ত করতে এবং ভোটের রাজনীতিতে সাম্প্রদায়িকতাকে কাজে লাগাতে বিজেপি বৈষম্যমূলক নাগরিকত্ব আইন ও জাতীয় নাগরিকপঞ্জী ইত্যাদি সামনে এনেছে। কিন্তু এই কৌশল বুমেরাং হয়ে দাঁড়ায় যখন সারা ভারতে ধর্ম-জাতি নির্বিশেষে অসংখ্য মানুষ এর বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামে। এই অসাম্প্রদায়িক ও শান্তিপূর্ণ গণজাগরণকে বিপথগামী ও ধ্বংস করতে ‘গুজরাটের গণহত্যাকারী’ নরেন্দ্র মোদীর দল আজ সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা বাধাতে চাইছে। বিজেপি সরকারের এই অশুভ পদক্ষেপ সারা দক্ষিণ এশিয়ায় সাম্প্রদায়িকতার বিপদকে বাড়িয়ে তুলছে। অথচ, হিন্দুত্ববাদী এই নরেন্দ্র মোদীকেই শেখ হাসিনার সরকার সাদরে আমন্ত্রণ জানিয়েছে ‘মুজিববষের্’র সূচনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে। ক্ষমতার মসনদ পাকাপোক্ত করতে এই অনির্বাচিত আওয়ামী লীগ সরকার ভারতের প্রতি নতজানু নীতি অনুসরণ করে চলেছে, যার কারণে সাম্প্রদায়িক হামলায় প্রশ্রয়দানকারী বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদটুকুও জানাতে পারছে না।”
বিবৃতিতে তিনি বাংলাদেশে ধর্ম-বর্ণ-জাতি নির্বিশেষে জনগণকে ঐক্যবদ্ধভাবে সাম্প্রদায়িকতা-মৌলবাদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে এবং দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষায় সতর্ক থাকার আবেদন জানান।