গণতান্ত্রিক বাম মোর্চার নেতৃবৃন্দ দেশের বিভিন্ন অঞ্চল সরেজমিনে পরিদর্শন শেষে ১৫ জানুয়ারি ২০১৪ ঢাকায় এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সারা দেশে গত কয়েক মাস ধরেই অসংখ্য হানাহানি ও সংঘাতের ঘটনা ঘটেছে। এই রাজনৈতিক সংঘাতই কোন কোন স্থানে রূপ নিয়েছে চরম সাম্প্রদায়িক হামলার। বিশেষ করে গত ৫ জানুয়ারি নির্বাচনের দিন দেশের বেশ কয়েকটি স্থানে হিন্দু জনগোষ্ঠীর ওপর উপর্যুপরি হামলা, অগ্নিসংযোগ, লুটপাট এবং নিপীড়নের ঘটনা ঘটে। এই হামলাগুলোর একটি বড় বৈশিষ্ট্য ছিল প্রায় প্রত্যেকটি স্থানেই প্রশাসন তাৎক্ষনিক প্রতিকারে ব্যর্থ হয়েছে। গণতান্ত্রিক বাম মোর্চার অন্তর্ভূক্ত প্রতিটি রাজনৈতিক দলই সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী সংগ্রামে বরাবরই সোচ্চার ছিল। এবারের সাম্প্রদায়িক হামলাগুলোর চরিত্র উদঘাটন, প্রশাসনের ভূমিকা পর্যালোচনা এবং হামলার সাথে যুক্ত থাকা ব্যক্তিদের রাজনৈতিক চরিত্র উন্মোচন ও করণীয় নির্ধারণের জন্য গণতান্ত্রিক বাম মোর্চার সমন্বয়ক ও ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগের সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য অধ্যাপক আবদুস সাত্তার এর নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল যশোরের অভয়নগর চাপাতলা এবং দিনাজপুরের সদর উপজেলার করনাই অঞ্চল পরিদর্শন করেন। পরিদর্শক দলে আরও অন্তর্ভূক্ত ছিলেন বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ এর কেন্দ্রীয় কনভেনশন প্রস্তুতি কমিটির সদস্য শুভ্রাংশু চক্রবর্তী, গণসংহতি আন্দোলনের কেন্দ্রীয় পরিচালনা পরিষদের সদস্য ফিরোজ আহমেদ, ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মোশারফ হোসেন নান্নু, অধ্যক্ষ আফসার আলী, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ এর কেন্দ্রীয় সদস্য সন্তোষ গুপ্ত প্রমুখ। এছাড়া যশোর ও দিনাজপুরের স্থানীয় নেতৃবৃন্দ এই সফরে কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলকে সহযোগিতা প্রদান করেন।
গত ১১ জানুয়ারি নেতৃবৃন্দ অভয়নগরের মালোপাড়ায় যান। নেতৃবৃন্দ দেখতে পান জেলেপল্লী আগুনে পোড়া, লুটপাটের শিকার হওয়া এক বিধ্বস্ত আতঙ্কিত জনপদ। নির্বাচনের দিন সেখানে হামলা একবার না, তিন তিন দফায় ঘটে। প্রথম দু’বার তারা প্রতিহত করেছিলেন দুর্বৃত্তচক্রকে। একইসাথে বারংবার আবেদন জানিয়েছেন প্রশাসনের কাছে, তাদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করার জন্য। কর্ণপাত করা হয়নি। এলাকাবাসী বরং অভিযোগ করেছেন ফায়ারব্রিগেড আর নিরাপত্তা বাহিনীর একাধিক গাড়ি তাদের গ্রামের কাছাকাছি এসেও থেমে গিয়েছে, ফিরে গিয়েছে। বৈদ্যুতিক আলোর উৎসটির মালিক সাম্প্রদায়িক শত্রুতার বশেই সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছিলেন রাতের বেলা শেষবারের হামলার সময়, এমন অভিযোগ করেছেন এলাকাবাসী। ফলে প্রতিবার শত্রু আরও বেশি শক্তি সঞ্চয় করে ফিরে আসায় অন্ধকার সেই রাতে তারা তৃতীয় বারের মত মোকাবেলার ঝুঁকি নেননি। ধারালো দা দিয়ে কেটে ফালা ফালা করা হয়েছে চাপাতলার টিনের চাল ও বেড়া। দরোজা ভেঙে তছনছ করা হয়েছে আসবাব, সিন্দুক ভেঙে লুট করা হয়েছে টাকা পয়সা আর অলঙ্কার। বিশেষ ক্ষোভ ছিল মাছ ধরার জালগুলোর ওপর, ৭০টি পরিবারের জাল বিনষ্ট করা হয়েছে। ছাই বানিয়ে দেয়া হয়েছে শিক্ষাথীদের বইপত্র। অশীতিপর বৃদ্ধ মৃত্যুঞ্জয় সরকারও তাদের শারীরিক নিপীড়ন থেকে রেহাই পাননি।
জামায়াত-শিবির ও বিএনপির ক্যাডাররা যে এই হামলায় প্রধান ভূমিকা রেখেছে, সেটা নিয়ে এলাকাবাসীর কোন সংশয় নেই। কিন্তু শত শত মানুষ আকাশ থেকে এই হামলা চালাতে পারে না, তাদের সংগঠিত হতে হয়েছে, দলবদ্ধভাবে চাপাতলার মালোপাড়ায় আসতে হয়েছে। তাদের হাতে ছিল দা, বোমা আর রেললাইনের পাথর ভর্তি সিমেন্টের ব্যাগ– এগুলো তারা ছুড়ে মেরে আহত করেছে নদীপথে পলায়নপর মানুষজনকে। ভৈরব নদ পাড়ি দিয়ে গ্রামবাসী জীবন রক্ষা করেন। বিশ দিনের শিশুসহ এক মা নৌকা থেকে পড়ে যান তাদের আক্রমণের মুখে। সৌভাগ্যক্রমে তারা দু’জনেই উদ্ধার পেয়েছেন।
কিন্তু প্রশাসন কেন নীরব ছিল? কেন তারা আক্রান্ত মানুষজনকে সাহায্য করতে যায়নি? ভোটকেন্দ্র রক্ষা করছিলেন তারা! গণতন্ত্র রক্ষা করছিলেন তারা! প্রশ্ন করলে এমন উত্তরই মেলে। সাম্প্রদায়িক হামলাকে পুঁজি করে রাজনীতির ফায়দা হাসিল করা চলছে ষোল আনা, কিন্তু আক্রান্ত মানুষগুলোকে রক্ষা করতে তৎপরতা দেখাবার একটা মাত্র নিদর্শনও নেই। এলাকাবাসী কারও নাম প্রকাশে আগ্রহী না, যদিও অনেকেই তাদের ‘মুখচেনা’। এই আতঙ্কের কারণ সহজেই অনুমেয়। জামাত হোক, বিএনপি হোক, আওয়ামী লীগেরই কেউ হোক, মালোপাড়ার মানুষেরা তাদের হিংস্র প্রতিবেশীকে চটাতে চান না। ফলে প্রতিবারই আরও কিছু মানুষ ভিটেমাটি ছাড়া হন, কেউ কেউ হয়তো গঞ্জনাময় এই মাতৃভূমির মায়াই ত্যাগ করেন।
গত ১৩ জানুয়ারি বাম ফ্রন্ট নেতৃবৃন্দ দিনাজপুরের সদর উপজেলার করনাই, তেলিপাড়া ও মধ্যপাড়ায় সাম্প্রদায়িক হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত বসতিগুলোতে যান। নির্বাচনের দিন সেখানে দিনব্যাপী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এরই পাশাপাশি এখানে চলে পরিকল্পিত সাম্প্রদায়িক হামলা। শুরুতে কয়েকবার গ্রামবাসী হামলা প্রতিরোধ করলেও নির্বাচন বিরোধী স্থানীয় জামায়াত-শিবির ও বিএনপির কর্মীরা মুসলমানদের ওপর হামলা, জখম ও দোকনাপাটে অগ্নিসংযোগের গুজব রটিয়ে বিপুল সংখ্যক সাধারণ মানুষকে মোবাইলে ডেকে আনে এবং ওই তিনটি হিন্দু অধুষ্যিত গ্রামে হামলা চালায়। হামলাকারীরা বিপুল পরিমাণ সম্পত্তির ক্ষয়ক্ষতি সাধন, যানবাহন পোড়ানো, দোকানপাটে অগ্নিসংযোগ ও মানুষজনকে আহত করে। লুটপাট করা হয় বেপরোয়াভাবে। এই একতরফা হামলা থেকে বৃদ্ধা নারী, শিশুসহ উপস্থিত কেউই রেহাই পাননি। এখানেও আক্রান্ত মানুষেরা বারংবার প্রশাসনের সহায়তা চেয়ে পাননি। তারা ভোটকেন্দ্র ১টার মধ্যে বন্ধ করে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যান।
এই সাম্প্রদায়িক হামলার পর স্থানীয় রাজনীতিতে আরেকটি নিপীড়নমূলক ঘটনার কথা উল্লেখ করে নেতৃবৃন্দ বলেন, দিনভর হামলার সময়ে প্রশাসন কোন সহায়তা না করলেও রাতের বেলা স্থানীয় প্রশাসন নিকটবর্তী মহাদেবপুর গ্রামের মুসলমান অধ্যুষিত পাড়ায় হামলা চালায়, এলাকাবাসী অভিযোগ করেন দিনাজপুর শহরের যুব লীগ ও ছাত্র লীগের কর্মীরা তাদের সাথে যোগ দিয়েছিল। তারা ঘরবাড়িতে ভাংচুর করে, হাড়ি-পাতিল চুলা ভেঙে ফেলে, লেপতোষকে পানি ঢেলে দেয়, নারীদের সাথে অশালীন আচরণ করে। সুনির্দিষ্ট অপরাধী ও সাম্প্রদায়িক হামলার উস্কানিদাতা ও মদদদাতাদের গ্রেফতার করার বদলে এই রকম নির্বিচার হামলা, ভীতিপ্রদর্শন সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ ও বিভাজনকে আরও গভীরতরই করেছে। উল্লেখ্য যে, দুই পাড়ার মানুষজনই হিন্দু-মুসলমানের মাঝে এর পূর্বেকার আন্তরিক বন্ধুত্বের সম্পর্কের কথা উল্লেখ করেছেন। নেতৃবৃন্দ ওখানেও উপস্থিত নারীদের সাথে কথা বলেন এবং তাদের প্রতি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ফিরিয়ে আনার আহ্বান জানান। সাম্প্রদায়িক বিভাজন যে কারও জন্যই মঙ্গলকর হবে না, সেই উপলদ্ধি তাদের মাঝেও কিছুটা হলেও আছে। এখানেও তাই প্রয়োজন গণগ্রেফতার ও নিপীড়নের বদলে সুনির্দিষ্ট উস্কানিদাতাদের গ্রেফতার ও শাস্তির ব্যবস্থা করা, একই সাথে স্থানীয় ভিত্তিতে সম্প্রীতির উদ্যোগ গ্রহণ। কিন্তু প্রশাসনের ভূমিকায় সমালোচনা করে নেতৃবৃন্দ বলেন তারা আতঙ্ক ছড়িয়ে সাম্প্রদায়িক বিভাজনকে স্থায়ী চেহারা দেয়ার নীতিই গ্রহণ করেছেন। বিএনপি-জামায়াত অধ্যুষিত এলাকায় রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তারের জন্য এটা করা হলেও এর ফলে শেষ পর্যন্ত হিন্দু জনগোষ্ঠীই বিদ্বেষের শিকার হবেন।
সংবাদ সম্মেলনে নেতৃবৃন্দ বলেন, বাধ্য না করা হলে রাষ্ট্র ও সরকার সংখ্যালঘুর স্বার্থরক্ষায় যে কোন উদ্যোগ নেবে না, তা পরিস্কার। ক্রমে হিন্দু জনগোষ্ঠীর ভূসম্পত্তি অর্পিতসম্পত্তি আইনের গ্যাড়াকলে বেহাত হয়ে গিয়েছে। সরকারি চাকরি-বাকরিতে তাদের সংখ্যার প্রতিনিধিত্ব ঘটছে না। বাংলাদেশ থেকে বিপুল পরিমাণ হিন্দু নাগরিক দেশান্তরী হয়েছেন। বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক ভিত্তিতে পরিচালিত একতরফা হামলাগুলো প্রতিরোধে সরকার বা প্রশাসনের তেমন কোনও ব্যবস্থা না নেয়া থেকেও এর রাজনৈতিক দিকটি স্পষ্ট হয়। জনগণের গণতান্ত্রিক আন্দোলন দমন করতে অসংখ্যবার পুলিশ-বিজিবি গুলিবর্ষণ করেছে। কিন্তু সাম্প্রদায়িক হানাহানি বন্ধে আজ পর্যন্ত আইনের হাতকে উত্তোলিত হতে দেখা যায়নি। রাষ্ট্রে নিরাপত্তা আর নাশকতা দমনের নামে নতুন নতুন গণবিরোধী ফ্যাসিস্ট আইন বাস্তবায়িত হয়, অনেক নতুন বাহিনী গড়ে তোলা হয়, কিন্তু সাম্প্রদায়িক আক্রমণ বন্ধে তা কোথাও কোন কাজে আসেনি।
সর্বশেষ নির্বাচনোত্তর সাম্প্রদায়িক হামলার সরকারী দল সমর্থকেরা তাদের পুরো আলোচনার কেন্দ্রে রাখছেন হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর বিএনপি-জামায়াতের হামলা, যদিও যশোরের অভয়নগরের ‘বিজয়ী’ সরকার দলীয় সংসদ সদস্য প্রকাশ্যে অভিযোগ করেছেন ওই হামলায় আওয়ামী লীগেরই পূর্বতন সংসদ সদস্য ও হুইপ ইন্ধন জুগিয়েছেন। রামুতে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের ওপর হামলায় একই দৃশ্য সবাই দেখেছে, সবাই দেখেছে সাঁথিয়াতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিমন্ত্রীর পাশে হামলাকারীদের ভীড়। জামায়াত শিবির হামলার প্রধান অভিযুক্ত হলেও আমাদের ভুলে গেলে চলবে না এই হামলা ঠেকাবার দায়িত্ব কার ছিল, সেই প্রশ্নটি। কেন থানা থেকে অদূরেই শত শত ঘরবাড়ি ভেঙে ফেলা সম্ভব হয়? টিভিতে তা প্রায় লাইভ দেখানো হয় অথচ পুলিশ খবর পায় না! নির্বাচন কমিশন শপথ নিয়েছিলো ভোটারদের রক্ষার এবং আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখার; স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব ছিল নাগরিকদের রক্ষা করা। সেটা করতে তারা সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ হয়েছে, এটা আড়াল করার কোন উপায় নেই।
সাম্প্রদায়িক সংস্কৃতির একটা আবহ সমাজে প্রবলভাবে কায়েম আছে বলেই সরকার হোক, বিরোধী দল হোক, ভূমিদস্যু হোক, প্রশাসন হোক-সকলেই ধর্মীয় পরিচয়কে এত সহজে ব্যবহার করার সুযোগটি নিতে পারে। মানুষকে সাম্প্রদায়িকতার কলুষ থেকে মুক্ত করার চেষ্টাটা জরুরি।
নেতৃবৃন্দ বলেন, ক্ষমতার স্বার্থে উচ্চস্তর থেকে ঘটানো হামলা হোক আর স্থানীয় পর্যায়ের সাম্প্রদায়িক দুরভিসন্ধি হোক, কোনও ক্ষেত্রেই জনগণের দুর্বলতর অংশকে রক্ষায় রাষ্ট্রের কোনও ভূমিকা দৃশ্যমান হয় না। আমাদের সমাজে অসাম্প্রদায়িক ব্যক্তি ও সংগঠনসমূহকে ঐক্যবদ্ধ করা, মাঠের লড়াইয়ে নামাই রাষ্ট্রকে সাম্প্রদায়িকতা মুক্ত হতে বাধ্য করার পথ। এই লক্ষে দেশের সকল বাম, প্রগতিশীল, গণতান্ত্রিক ও অসাম্প্রদায়িক শক্তিকে সাম্প্রদায়িকতা প্রতিরোধে ঐক্যবদ্ধ হবার আহ্বান জানান নেতৃবৃন্দ। আক্রান্ত সকল জনপদে সাম্প্রদায়িকতা প্রতিহত করতে গণপ্রতিরোধ কমিটি গড়ে তোলার আহবান জানিয়ে সংবাদ সম্মেলনে নিম্নোক্ত দাবিসমূহ পেশ করা হয়ঃ
১. অবিলম্বে ইতিপূর্বে সংঘটিত সকল সাম্প্রদায়িক হামলার তদন্ত ও বিচার করে আক্রমণের সাথে যুক্ত এবং মদদদাতাদের চিহ্নিত করে গ্রেফতার ও বিচার করতে হবে।
২. সাম্প্রদায়িক হামলাকে সাধারণ ফৌজদারি অপরাধ হিসেবে গণ্য করা চলবে না। সাম্প্রদায়িক উদ্দেশ্য প্রণোদিত যে কোন হামলা, উস্কানি, বক্তব্যকে চিহ্নিত করার জন্য পৃথক আইন প্রণয়ন করতে হবে। সাম্প্রদায়িক হামলার বিচারের জন্য পৃথক ট্রাইব্যুনাল গঠন করতে হবে।
৩. সাম্প্রদায়িক আইন, বিধি এবং ঘটনাসমূহকে পর্যালোচনা করে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য একটি সাংবিধানিক সংস্থা গঠন করতে হবে। শ্রেণিকক্ষ থেকে শুরু করে নিয়োগ পর্যন সর্বত্র সাম্প্রদায়িক বৈষম্য ও বিভাজনের সংস্কৃতিকে চিহ্নিত ও সুনির্দিষ্ট করে সেগুলো নিরসনের উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।
৪. সাম্প্রদয়িক সহিংসতা মোকাবেলাকে অগ্রাধিকারমূলক দায়িত্ব হিসেবে গণ্য করতে হবে। সাম্প্রদায়িক যে কোন হামলাকে আগাম অনুমান ও যথাসম্ভব দ্রত মোকাবেলা করতে ব্যর্থতার ক্ষেত্রে দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের জবাবদিহিতার আওতায় আনার এবং শুধু প্রশাসনিক শাস্তি নয়, প্রয়োজনে কর্তব্যে অবহেলার দায়ে আদালতে হাজির করার বব্যস্থা করতে হবে।
৫. জামায়াত-শিবিরসহ মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশের অস্তিত্বের বিরোধিতাকারী ও যুদ্ধাপরাধের সাথে যুক্ত দলগুলোর রাজনীতি করার অধিকার নিষিদ্ধ করতে হবে। ১৯৭১ সালে মানবতাবিরোধী অপরাধ ও যুদ্ধাপরাধের সাথে যুক্ত সকলের দ্রত বিচার সম্পন্ন কর।
৬. সংবিধান থেকে সকল সাম্প্রদায়িক ও অগণতান্ত্রিক অনুচ্ছেদসমূহ বাতিল করতে হবে। অর্পিত সম্পত্তি আইনের জটিলতা দূর করে প্রকৃত মালিকদের তা বুঝিয়ে দেয়ার বন্দোবস্ত করতে হবে।