বাংলাদেশ নারী মুক্তি কেন্দ্র ও সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট এর উদ্যোগে ১৫ জুন,২০১৫, সোমবার বেলা ১১ টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি পেশের পূর্বে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশ নারী মুক্তি কেন্দ্রের সভাপতি সীমা দত্তের সভাপতিত্বে ও সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক শরীফুল চৌধুরীর পরিচালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক আকমল হোসেন, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (মার্কসবাদী) কেন্দ্রীয় কার্য পরিচালনা কমিটির সদস্য ফখরুদ্দিন কবির আতিক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আফরোজা বুলবুল, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক স্নেহার্দ্রি চক্রবর্তী রিন্টু, বাংলাদেশ নারী মুক্তি কেন্দ্রের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মণিদীপা ভট্রাচার্য।
সমাবেশে অধ্যাপক আকমল হোসেন বলেন, দীঘৃমেয়াদী ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন চালিয়ে যেতে হবে। প্রচলিত অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ব্যবস্থায় নারীকে ভোগ্যপণ্য করে তুলেছে। এর বিরুদ্ধে রাজনৈতিক আন্দোলনের পাশাপাশি সাংস্কৃতিক আন্দোলন গড়ে তোলার আহবান জানান।
বাসদ (মার্কসবাদী) কেন্দ্রীয় কার্য পরিচালনা কমিটির সদস্য ফখরুদ্দিন কবির আতিক বলেন, বিচারহীনতার সংস্কৃতি একটার পর একটা অপরাধের প্রেক্ষাপট তৈরি করছে। এজন্য সরকার ও প্রশাসনই দায়ী। এর বিরুদ্ধে জনগণকে সচেতন করা, সংগঠিত করা, অন্যায়কে প্রতিহত করে পাড়া-মহল্লায় গণ প্রতিরোধ কমিটি গড়ে তোলার আহবান জানান।
বক্তারা বলেন, ‘একটি অগণতান্ত্রিক পরিবেশে দিনের পর দিন অন্যায় ঘটনাগুলো যেভাবে বিনা বিচারে ঘটে চলছে, নারী নির্যাতনকারীরাও সরকার ও প্রশাসনের সেই অন্যায় প্রক্রিয়ার কারণে পার পেয়ে যাচ্ছে। যারা সুনির্দিষ্টভাবে দোষী হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে তাদের অবিলম্বে বিচারের আওতায় আনা ছাড়া এই সমস্যার সমাধান হবে না। বিচার করতে পারছে না সরকার কিন্তু মৌলবাদী শক্তিগুলোর মতোই মেয়েদের বাইরে থাকা নিয়ে, পোশাক নিয়ে তারা প্রশ্ন তুলছে। যেন মেয়েদের চলাফেরাই এই সমস্যার কারণ। এটি বাস্তবে অন্যায়কারীদের রক্ষা করারই আরেকটি কৌশল।’
নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, ‘সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় নাটক-সিনেমা-বিজ্ঞাপনে নারীদের প্রতিনিয়ত অশ্লীলভাবে উপস্থাপন করা হচ্ছে। ছেলে-মেয়েরাও তাদের শিক্ষার পাশাপাশি কোনো বিনোদনের সুযোগ না পেয়ে পর্নোগ্রাফি-মাদকে বিনোদনের পথ খুঁজছে। এই ধরনের সামাজিক আয়োজন প্রতিদিন নারী নির্যাতকের জন্ম দিচ্ছে। এর বিরুদ্ধে গণতান্ত্রিক সাংস্কৃতিক আন্দোলন গড়ে তোলাটাই আজ সময়ের দাবি। সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট ও বাংলাদেশ নারীমুক্তি কেন্দ্র এই লড়াই করছে। সকলকে এই লড়াইয়ে এগিয়ে আসার আহ্বান জানাই।’
সমাবেশ শেষে স্মারকলিপি পেশের জন্য মিছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রদক্ষিণের পর শাহবাগে পুলিশী বাধার মুখে সেখানেই সমাবেশ শেষ করে। সেখানে পুলিশের সাথে ধাক্কা ধাক্কি হয়। এরপর ৪ সদস্যের প্রতিনিধি দল স্মারকলিপি দিতে যান।