বাংলাদেশ শ্রমিক কর্মচারী ফেডারেশন চট্টগ্রাম জেলা শাখা ন্যূনতম মজুরি মজুরি ১৬ হাজার টাকাসহ বিভিন্ন দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশের আয়োজন করে। ৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ সংগঠনের চট্টগ্রাম জেলার আহবায়ক অপু দাশ গুপ্তর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবশে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের চট্টগ্রাম জেলার সদস্য শফিউদ্দীন কবির আবিদ, নিজাম উদ্দীন ও জাহেদুন্নবী কনক। সমাবেশ পরিচালনা করেন জেলা সদস্য সচিব রফিকুল হাসান।
সমাবশে নেতৃবৃন্দ বলেন, “সরকার দাবি করছে বাংলাদেশে ‘অপ্রতিরোধ্য গতিতে উন্নয়ন’ হচ্ছে, অচিরেই ‘মধ্য আয়ের দেশ’-এ উন্নীত হতে যাচ্ছে। কিন্তু দেশের সম্পদ বৃদ্ধিতে প্রধান অবদান যাদের, সেই শ্রমিক-কৃষক-সাধারণ মানুষের জীবনে তার কোন প্রভাব নেই। শ্রমিকদের ওপর চলছে তীব্র শোষণ। কোনমতে খেয়ে-পরে বেঁচে থাকাটায় কঠিন। সম্প্রতি সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য নতুন পে-স্কেল ঘোষিত হয়েছে, বেতন বাড়ানো হয়েছে রাষ্ট্রপতি-প্রধানমন্ত্রী-মন্ত্রী-এমপিদের। সঙ্গত কারণেই প্রশ্ন আসে, শ্রমিকদের জন্য নতুন মজুরি কাঠামো ঘোষিত হবে না কেন? নতুন পে স্কেলে সর্বনিম্ম বেতন হবে কমপক্ষে ১৭,৩৬২ টাকা। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে সম্প্রতি সব শ্রমিক সংগঠনের ডাকে জাতীয় ধর্মঘটে ন্যূনতম মজুরি দাবি করা হয়েছে ১৫,০০০ রুপি যা বাংলাদেশি টাকায় ১৮০০০ টাকা। বিশ্বব্যাংকের মাপকাঠিতে দারিদ্রসীমার ওপরে উঠতে মাথাপিছু দৈনিক অন্তত ২ ডলার আয় দরকার। অর্থাৎ ৪ সদস্যের ১টি পরিবারের মাসে অন্তত ১৯,২০০ টাকা আয় থাকলে তাকে দারদ্র্যসীমার ওপরে বলা যায়। এই সবকিছু বিবেচনায় আমরা সর্বনিম্ম মোট মজুরি ১৬ হাজার টাকা দাবি তুলেছি।”
নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, “সংশোধিত শ্রম আইন ২০১৩-এ নতুন সংশোধনীর মাধ্যমে মালিক পক্ষকে বিভিন্ন সুবিধা দেয়া হয়েছে এবং বিভিন্ন দায়-দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়াা হয়েছে। এ বিধানের অপব্যবহার করে মালিক যে কাউকে যে কোন সময় বহিষ্কার করতে পারবে। নতুন সংশোধিত শ্রম আইন শ্রমিক স্বার্থের পরিপন্থী ও অগণতান্ত্রিক। মালিকদের লক্ষ্য মুনাফা, শ্রমিকদের জীবন তাদের কাছে মূল্যহীন। আর সরকার মালিকদের ব্যবসার উন্নতির জন্য মনোযোগী; শ্রমিকদের কর্মপরিবেশ ও জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে তাদের যেন কোন দায়িত্ব নেই। এই অবস্থায় সংগঠিত হয়ে আন্দোলন গড়ে তোলা ছাড়া শ্রমিকরা তাদের অধিকার আদায় করতে পারবে না। পাশাপাশি, যতদিন রাষ্ট্র মালিকশ্রেণীর হাতে থাকবে শ্রমিকশ্রেণীর দুর্দশা কাটবে না। তাই অর্থনৈতিক দাবি-দাওয়া আদায়ের সংগ্রামের পাশাপাশি সমাজ পরিবর্তনের লক্ষ্যে রাজনীতি সচেতন বিপ্লবী ধারার শ্রমিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।”