বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (মার্কসবাদী)-এর সাধারণ সম্পাদক কমরেড মুবিনুল হায়দার চৌধুরী ১৬ এপ্রিল ২০১৫ এক বিবৃতিতে গত ১৪ এপ্রিল পহেলা বৈশাখের দিন সন্ধ্যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় টিএসসি সংলগ্ন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের গেটে ভীড়ের সুযোগে একদল সংঘবদ্ধ উচ্ছৃঙ্খল যুবক কর্তৃক পরিকল্পিতভাবে নারী লাঞ্ছনার ঘটনায় জড়িতদের অবিলম্বে চিহ্নিত করে গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন। তিনি একইসাথে ঘটনাস্থলের আশেপাশে কর্তব্যরত পুলিশের নিষ্ক্রিয়তা এবং অভিযুক্ত একজনকে পুলিশে সোপর্দ করার পরও তাকে ছেড়ে দেয়ার ব্যাখ্যা দাবি করেন। বিবৃতিতে তিনি নারী লাঞ্ছনা প্রতিরোধ করতে গিয়ে আহত লিটন নন্দীসহ ছাত্র ইউনিয়ন কর্মীদের অভিনন্দন জানান এবং তাদের দৃষ্টান্ত অনুসরণ করে এই ঘৃণ্য অপরাধীদের প্রতিরোধে এগিয়ে আসার জন্য জনসাধারণের প্রতি আবেদন জানান।
কমরেড মুবিনুল হায়দার চৌধুরী বিবৃতিতে বলেন, “সরকার ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের অব্যবস্থাপনা ও দায়িত্বজ্ঞানহীনতা এই ধরণের ঘটনার ক্ষেত্র প্রস্তুত করে দিয়েছে। পহেলা বৈশাখে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় লক্ষ মানুষের ঢল নামে এবং অতীতেও এই ধরণের ঘটনা ঘটেছে তা জানা সত্ত্বেও প্রশাসন কোন ব্যবস্থা নেয়নি। উপরন্তু উৎসব উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে কনসার্ট, ব্যান্ড শো, বিভিন্ন কোম্পানির পণ্য বিক্রি, বিজ্ঞাপনী প্রচার ইত্যাদির অনুমোদন দিয়ে পরিবেশকে কলুষিত করা হয়েছে। এই পরিবেশে গত কয়েক বছরে ক্যাম্পাসে বিভিন্ন জাতীয় দিবসে চিহ্নিত সরকারদলীয় ক্যাডারদের হাতে নারী লাঞ্ছনার বেশ কিছু ঘটনা ঘটলেও সরকার, পুলিশ বা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অপরাধীদের গ্রেপ্তার করেনি। বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় কর্তব্যরত পুলিশ কোন ঘটনায় তাৎক্ষণিক সক্রিয় হতে চায় না, কারণ তারা জানে প্রধানত সরকারী ছাত্র সংগঠনের কর্মীরাই এসব অপকর্মের সাথে যুক্ত। এভাবে ক্যাম্পাস এলাকাকে সন্ত্রাসী ও অপরাধীদের অভয়ারণ্যে পরিণত করা হয়েছে। এর ফলেই প্রকাশ্যে হাজার হাজার মানুষের সামনে এধরণের বর্বরোচিত নারী নির্যাতনের ঘটনা ঘটতে পারলো।”
কমরেড মুবিনুল হায়দার চৌধুরী আরো বলেন, “ইন্টারনেট ও মোবাইলের মাধ্যমে পর্ণোগ্রাফির অবাধ বিস্তার এবং বিনোদনের নামে সিনেমা-পত্রিকা-বিজ্ঞাপনে অশ্লীলতা-অপসংস্কৃতি ও ভোগবাদের প্রচার চলছে। এর প্রভাবে নারীকে ভোগ্যপণ্য হিসেবে দেখার মানসিকতা গড়ে উঠছে বিরাটসংখ্যক যুবকদের মধ্যে।এ সবকিছুতে পৃষ্ঠপেষকতা যোগাচ্ছে নীতিহীন বুর্জোয়া রাজনীতি। এই অবক্ষয়ের বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলা এবং সমাজে আদর্শবাদ চর্চা ও মানুষ হিসেবে নারীর মর্যাদা প্রতিষ্ঠায় শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষকে এগিয়ে আসতে হবে।”