Saturday, December 21, 2024
Homeছাত্র ফ্রন্টপাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় পরিষদের বৈঠকে ছাত্ররাজনীতি বন্ধের সুপারিশের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ

পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় পরিষদের বৈঠকে ছাত্ররাজনীতি বন্ধের সুপারিশের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ

সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি সাইফুজ্জামান সাকন ও সাধারণ সম্পাদক স্নেহাদ্রি চক্রবর্তী রিন্টু আজ ৭ এপ্রিল সংবাদমাধ্যমে দেয়া এক যুক্ত বিবৃতিতে গতকাল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় পরিষদের বৈঠকে ছাত্ররাজনীতি বন্ধের সুপারিশের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন।

বিবৃতিতে তারা বলেন, সম্প্রতি বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের অন্তর্দ্বন্দ্ব ও নীতিহীন কোন্দলের জের ধরে দুইজন ছাত্রলীগ কর্মী খুন হয় যার দায় কোনোভাবেই ছাত্রসমাজের এবং ছাত্ররাজনীতির ঘাড়ে চাপানো যায় না। ছাত্রলীগ-ছাত্রদল-ছাত্রশিবিরের সন্ত্রাসের দায়ভার ছাত্ররাজনীতির ঘাড়ে চাপানো উচিতও নয়। গণতন্ত্রের বুলি আউড়ে এ ধরনের সিদ্ধান্ত নিলে তা হবে গণতন্ত্রকে হত্যারই শামিল।

বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, অতীতেও বুর্জোয়া ছাত্রসংগঠনের অপকর্মের দায় ছাত্রসমাজের এবং ছাত্ররাজনীতির কাঁধে চাপিয়ে ছাত্রসমাজের রাজনীতি করার গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ করা এবং ছাত্ররাজনীতি বন্ধের বহু ধরনের চক্রান্ত হয়েছে। কিন্তু এটা আজ স্পষ্ট যে ক্ষমতাকেন্দ্রিক বুর্জোয়া দলগুলোর ছাত্রসংগঠনগুলি ছাত্রস্বার্থের, জনস্বার্থের প্রতিনিধিত্ব করে না। বরং ছাত্রদের গণতান্ত্রিক অধিকার হরণে সরকার ও প্রশাসনকে সহযোগিতা করে। এ সংগঠনগুলো ছাত্রদের আন্দোলন দমনে সরকার ও প্রশাসনের লাঠিয়াল বাহিনীতে পরিণত হয়েছে। ড়্গমতাসীন দলের ছত্রছায়ায় ছাত্রলীগ-ছাত্রশিবির-ছাত্রদল বিভিন্ন ক্যাম্পাসে দখলদারিত্ব কায়েম করেছে। নিজেদের আধিপত্য প্রতিষ্ঠায় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়েছে। টেন্ডার ভাগাভাগি, ভর্তি বাণিজ্য, সিট বাণিজ্য, নিয়োগ বাণিজ্য এমনকি ছিনতাই-মাদক ব্যবসা-অপহরণের মতো কর্মকাণ্ডে যুক্ত হয়েছে। এসব করতে গিয়ে এমনকি নিজেদের মধ্যে সংঘাত-সংঘর্ষেও লিপ্ত হয়েছে। এদের হাতে শিক্ষকরা লাঞ্ছিত হয়েছে, এমনকি খুন পর্যন্ত হয়েছে। এসব সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডকে ছাত্ররাজনীতি হিসাবে চিহ্নিত করা এবং এসবের দায়ভার ছাত্রসমাজের কাঁধে চাপানোর অপচেষ্টা সেই পাকিস্তান আমল থেকেই চলছে। স্বাধীন দেশেও স্বৈরশাসকরা এ অপচেষ্টা অব্যাহতভাবে চালিয়েছে। যদিও যে কোনো কাণ্ডজ্ঞানসম্পন্ন যুক্তি-যুদ্ধিসম্পন্ন মানুষই জানেন, এসব সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সাথে ছাত্ররাজনীতির কোনো ন্যূনতম সম্পর্ক নেই।

বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, ছাত্ররাজনীতি বন্ধের সুপারিশ জানিয়ে পরোক্ষে উপাচার্যবৃন্দ সরকারের পক্ষেই অবস্থান ঘোষণা করলেন। অথচ বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের এবং ছাত্রছাত্রীদের অভিভাবক হিসাবে উপাচার্য মহোদয়দের দায়িত্ব ছিল ক্যাম্পাসগুলোতে গণতান্ত্রিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে প্রকৃষ দোষীদের বিচারে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেয়া, সরকারকে সে জন্য চাপ প্রয়োগ করা। কিন্তু তাঁরা সে যৌক্তিক পথ অনুসরণ না করে শাসকদের ইচ্ছা ও অভিলাষ অনুযায়ী কথা বলছেন। শুধু তাই নয়, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কর্তৃক বিভিন্ন ক্যাম্পাসে এসব সন্ত্রাসীদের আশ্রয়-প্রশ্রয় প্রদান ও লালন-পালনের বহু প্রমাণ দেশবাসীর সামনে আছে। আমরা অত্যন্ত স্পষ্টভাবে মনে করি, ক্যাম্পাসগুলোতে গণতান্ত্রিক ও শিক্ষার নিরাপদ পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে ছাত্রস্বার্থের, জনস্বার্থের পক্ষের সুষ্ঠু রাজনীতি চর্চার কোনও বিকল্প নেই। বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে ক্যাম্পাসগুলো থেকে দখলদারিত্ব উচ্ছেদে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও সরকারের কার্যকর ভূমিকা নেয়ার জোর দাবি জানান।

RELATED ARTICLES

আরও

Recent Comments