আন্তর্জাতিক নারী দিবসের ডাক
নারীর প্রতি সকল প্রকার সহিংসতা ও নির্যাতন বন্ধ কর
বাংলাদেশ নারীমুক্তি কেন্দ্র, কেন্দ্রীয় কমিটির উদ্যোগে ৮মার্চ ২০১৮ ‘আন্তর্জাতিক নারী দিবস’ উপলক্ষে ‘নারীর প্রতি সকল প্রকার সহিংসতা ও নির্যাতন বন্ধ এবং পাহাড়-সমতলে সংগঠিত সকল নারী ধর্ষণের বিচারের দাবিকে সামনে রেখে বিকাল সাড়ে ৪টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে র্যালি ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সংগঠনের সভাপতি সীমা দত্তের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় কমিটির সহ সভাপতি এডভোকেট সুতলানা আক্তার রুবী, অর্থ সম্পাদক তসলিমা আক্তার, ঢাকা নগরের সদস্য ইভা মজুমদার ও তিথি চক্রবর্তী।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, ‘১৯১০ সালে জার্মান সমাজতান্ত্রিক নেত্রী ক্লারা জেটকিনের প্রস্তাবনার মধ্য দিয়ে ঐতিহাসিক ৮ মার্চের সূচনা হয়। পরবর্তীতে সমাজতান্ত্রিক দেশগুলি এই দিবসকে পালন করতে থাকে। ১৯৭৫ সাল থেকে সারা বিশ্বে এই দিবসটি পালিত হচ্ছে। এ বছর ১০৮তম আন্তর্জাতিক নারী দিবসের প্রাক্কালে আমরা দেখছি – বহুসংগ্রামে অর্জিত এই দিনটি কর্পোরেট গোষ্ঠীগুলোর মিথ্যা প্রচারে বন্দী। বিভিন্ন প্রচার মাধ্যমে তারা পণ্যের গুনাগুণের সাথে প্রচার করছে নারীর ক্ষমতায়নের কথা। এভাবে তারা নারীর প্রকৃত অবস্থাকে আড়াল করতে যায়। কিন্তু চারিদিকে তাকালেই দেশের অর্ধেক জনগোষ্ঠীর পরিস্থিতি বোঝা যায়। কয়েকদিন আগেই রাঙামাটিতে সেনাসদস্যদের দ্বারা ধর্ষনের ঘটনা ঘটেছে। এরকম ধর্ষণ-গণধর্ষণ এমনকি জীবনহানির মতো ঘটনাপাহাড়ে এবং সমতলে প্রতিদিনই ঘটছে। ক্যান্টনমেন্ট থেকে আবাসস্থল, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে কর্মস্থল কোথাও নারী নিরাপদ নেই। গতকালও ৭ মার্চ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ উপলক্ষে আগত আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের দ্বারা বেশ কয়েকটি নারী নিগ্রহের ঘটনা ঘটেছে। এগুলোর মধ্যে যেগুলোর সাথে সরকারি দলের নেতা-কর্মীদের সংশ্লিষ্টতা থাকছে তার কোনোটিরও বিচার হচ্ছে না।সাম্প্রদায়িক শক্তি এবং ধর্মীয় কূপম-ূকতার কারণেও নারী নিপীড়নের ঘটনা সারাদেশেই ঘটছে। এমন নিরাপত্তাহীন পরিস্থিতি এবং জনগণের মধ্যে সচেতনতার অভাবে বাল্যবিবাহও ক্রমাগত বাড়ছে। তাছাড়া অর্থনৈতিক বৈষম্য, রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে প্রতিনিয়ত ক্ষতবিক্ষত করছে নারীর অধিকার।
এই সবকিছুর জন্য দায়ী বিদ্যমান পুঁজিবাদী ব্যবস্থা। এই ব্যবস্থার ধারক বাহক আওয়ামী লীগ-বিএনপি-জামাত-জাতীয় পার্টি। এরাই সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষের মধ্যে ভোগবাদ-অশ্লীলতা-নিপীড়নের মানসিকতাকে ছড়িয়ে দিচ্ছে পর্নোগ্রাফি, মাদকের অবাধ বিস্তারের মধ্য দিয়ে।’
সমাবেশে বক্তারা বলেন, পুঁজিবাদী সমাজ কখনই নারীকে মুক্তি দিতে পারে না। সমাজতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থাই পারে নারীর মর্যাদা, নারী অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে। নেতৃবৃন্দ সেই সংগ্রামে সকলকে সংগঠিত হওয়ার আহ্বান জানান।