পিইসি পরীক্ষা বাতিল ও প্রশ্নপত্র ফাঁস বন্ধ করার দাবিতে ১৩ মে ২০১৮ সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট কেন্দ্রীয় কমিটির উদ্যোগে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে প্রায় লক্ষাধিক গণস্বাক্ষরসহ মিছিল সহযোগে স্মারকলিপি পেশ করা হয়েছে। এর আগে সকাল সাড়ে এগারটায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি নাঈমা খালেদ মনিকা। উপস্থিত ছিলেন ও বক্তব্য রাখেন নারায়ণগঞ্জ বেইলি স্কুলের অধ্যক্ষ মঞ্জুরুল হক, অভিভাবক মাহমুদুল হক আরিফ, সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক স্নেহাদ্রি চক্রবর্তী রিন্টু, সাংগঠনিক সম্পাদক মাসুদ রানা, দপ্তর সম্পাদক রাশেদ শাহরিয়ার, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য জয়দ্বীপ ভট্টাচার্য।
সমাবেশ থেকে বক্তারা বলেন, ২০০৯ সালে পিইসি পরীক্ষা চালু হওয়ার পর থেকে দেশের শিক্ষক-শিক্ষাবিদ সমস্ত মহল থেকেই এ পরীক্ষা বাতিলের দাবি উঠেছিলো। ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে অভিভাবকরা আন্দোলনে নেমেছেন। তার-ই প্রেক্ষিতে ২০১৬ সালে পিইসি পরীক্ষা বাতিলের ঘোষণা দিয়েও তা বাতিল করা হয় নি। পরীক্ষা শিক্ষা পদ্ধতির মূল্যায়ন। এজন্য স্কুল ফাইনাল পরীক্ষা চালু আছে। তাহলে ৫ম শ্রেণীতে পাবলিক পরীক্ষার প্রয়োজনীতা কী? এ পরীক্ষা চালুর ফলে অল্প বয়সী শিক্ষার্থীদের অসম প্রতিযোগিতায় অবতীর্ণ হতে হয়েছে। যে কোন উপায়ে ভালো ফলাফল করাই একমাত্র লক্ষ্যে পরিণত হয়েছে। ফলাফল নির্ভর শিক্ষা হওয়ায় প্রাইমারি স্তরেও প্রশ্নপত্র ফাঁস হচ্ছে। আবার প্রত্যাশিত ফলাফল না পাওয়ায় মানসিক চাপ সইতে না পেরে কয়েকজন শিশু আত্মহত্যা করেছে।
বক্তারা আরো বলেন, বিভিন্ন পাবলিক পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে শিক্ষাবাণিজ্যের ব্যাপক বিস্তার ঘটেছে। সংবাদমাধ্যমে এসেছে, হাজার হাজার কোচিং সেন্টার গড়ে উঠেছে যাদের বছরে মুনাফা প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকা, বাজারে চলছে গাইড বইয়ের রমরমা ব্যবসা। সৃজনশীলতার নামে মুখস্ত নির্ভরতা বেড়েছে। এছাড়াও আমাদের দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার ধরন, ছাত্র-শিক্ষক অনুপাত, অপর্যাপ্ত অবকাঠামো, অপ্রতুল আয়োজন, প্রশিক্ষণের দুর্বলতা বিবেচনায় না নিয়ে একের পর এক নতুন নতুন নিয়ম শিক্ষার্থীদের উপর চাপিয়ে দেয়া হচ্ছে। এই অবস্থায় শুধু পাবলিক পরীক্ষার নামে পিইসি সার্টিফিকেট ছাড়া আর কিছুই দিতে পারেনি। আমাদের সংগঠন গত ফেব্রুয়ারি থেকে পিইসি পরীক্ষা বাতিলসহ প্রশ্নপত্র ফাঁস বন্ধের দাবিতে সারা দেশে স্বাক্ষর সংগ্রহ কর্মসূচি পালন করেছে। সারা দেশে লক্ষাধিক স্বাক্ষর সংগ্রহ হয়েছে। এথেকেই এটা প্রমাণিত হয় দেশের মানুষ এই পরীক্ষা চায় না। আমরা চাই, জনগণের আকাক্সক্ষা অনুসারে অবিলম্বে পিইসি পরীক্ষা বাতিল করা হোক।