ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া ডিগ্রি কলেজকে জাতীয়করণের দাবিতে চলমান আন্দোলনে পুলিশের লাঠিপেঠা ও গুলিতে শিক্ষক ও স্থানীয় এক ব্যক্তি হত্যার প্রতিবাদে এবং জড়িত পুলিশ সদস্যের অবিলম্বে গ্রেফতার ও বিচারের দাবিতে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট সিলেট নগর শাখার এক বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। মিছিলটি জিন্দাবাজারস্থ সংগঠন কার্যালয় থেকে শুরু করে গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে সিটি পয়েন্টে সমাবেশে মিলিত হয়।
সংগঠন সাধারণ সম্পাদক রুবাইয়াত আহমেদের সভাপতিত্বে এবং সদস্য মিজানুর রহমানের পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন বাসদ (মার্কসবাদী) সিলেট জেলার সদস্য মোখলেছুর রহমান, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট শাবিপ্রবি শাখার আহ্বায়ক অপু কুমার দাশ, মদন মোহন কলেজ শাখার সাধারণ সম্পাদক রুবেল মিয়া, এম সি কলেজ শাখার সংগঠক সাদিয়া নোশিন তাসনিম, সিলেট জজ কোর্টের আইনজীবী এ্যাডভোকেট উজ্জল রায়, সিলেট সিটি স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষক ফজলে রহমান চৌধুরী ।
বক্তারা সমাবেশে বলেন, ছাত্র ও শিক্ষকদের ন্যায্য আন্দোলনে পুলিশকে লেলিয়ে দেয়া সরকারের ফ্যাসিবাদী রূপেরই বহি:প্রকাশ। সরকারের নির্বাচনী ম্যানিফেস্টোতে অনার্স পর্যন্ত বিনা বেতনে শিক্ষাদানের কথা থাকলেও শিক্ষাকে বেসরকারীকরণের প্রধান ধারাই বহাল রেখেছে। সরকারের মন্ত্রী-এমপিদের নজিরবিহীন দুর্নীতি আর প্রশাসনকে দলীয় স্বার্থে ব্যবহারের কারণেই আজ গণতান্ত্রিক আন্দোলনে পুলিস গুলি করে মানুষ হত্যা করছে। পুলিশি হামলায় আন্দোলনরত একজন শিক্ষক নিহত, সাধারণ মানুষসহ অসংখ্য আহত হওয়ার পরও পুলিশ বাদী হয়ে অজ্ঞাত ৩০০/৪০০ জনকে আসামি করে আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে মামলা করেছে।
নেতৃবৃন্দ এ ন্যাক্কারজনক ফ্যাসিস্ট আক্রমনের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার জন্য ছাত্র সমাজ সহ দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। বাস্তব ঘটনা হলো, সরকার ২৩টি কলেজকে জাতীয়করণের জন্য তালিকাভুক্ত করে। এর মধ্যে সব দিক দিয়ে এগিয়ে থাকা ফুলবাড়িয়া কলেজকে বাদ দিয়ে এমপিওবিহীন বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব মহিলা কলেজকে (ইন্টারমিডিয়েট কলেজ) জাতীয়করণের জন্য তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। ফুলবাড়িয়া কলেজের ছাত্র-শিক্ষক ও এলাকার মানুষ বলছেন, সব দিক দিয়েই ফুলবাড়িয়া কলেজটি এগিয়ে থাকলেও তুলনামূলকভাবে সব দিক দিয়ে পিছিয়ে থাকা কলেজকে জাতীয়করণের জন্য তালিকাভুক্ত করায় তাঁরা ক্ষুব্ধ। এ নিয়ে তাঁরা প্রায় দেড় মাস ধরে আন্দোলন করছেন। ১৯৭২ সালে প্রতিষ্ঠিত ফুলবাড়িয়া কলেজের শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৫ হাজার ৩০০ এবং এখানে সাতটি বিষয়ে অনার্স পড়ানো হয়। অন্যদিকে বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব মহিলা কলেজে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৩০০। ১৯৯৯ সালে কলেজটি সাংসদ মোসলেম উদ্দিনের নামে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। ২০০৯ সালে কলেজটির নাম পাল্টে রাখা হয় বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব মহিলা কলেজ। ক্ষমতাসীন দলের স্থানীয় সাংসদের কারণেই ফুলবাড়িয়া কলেজটি জাতীয়করণ হয়নি । এই অভিযোগে আন্দোলনকারীরা দেড় মাস আন্দোলন চলছে। নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে এ বর্বরোচিত হামলার নির্দেশদাতাদের চিহ্নিত করা এবং হামলাকারী পুলিশ সদস্যদের অপসারণ ও বিচারের আওতায় আনার দাবি জানান।