বর্ষবরণ উৎসবে নারী লাঞ্ছনার প্রতিবাদে ও দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ প্রক্টরের অপসারণের দাবিতে ২১ এপ্রিল মঙ্গলবার সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভমিছিল ও সমাবেশ করেছে। মিছিলটি মধুর ক্যান্টিন থেকে শুরু হয়ে কলাভবন ও বাণিজ্য অনুষদ প্রদক্ষিণ করে। এসময় বাণিজ্য অনুষদ, লাইব্রেরি চত্বর শ্যাডোতে সমাবেশঅনুষ্ঠিত হয়। সংগঠনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক স্নেহাদ্রি চক্রবর্ত্তী রিন্টুর পরিচালনায় ও কেন্দ্রীয় সভাপতি সাইফুজ্জামান সাকনের সভাপতিত্বে এসব সমাবেশে বক্তব্য রাখেনকেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক শরীফুল চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক ইভা মজুমদার, সহ-সভাপতি সুস্মিতা রায় সুপ্তি, স্কুল বিষয়ক সম্পাদক ফাহিমা কানিজলাভা।
সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে সাইফুজ্জামান সাকন বলেন, ‘ঘটনার সাতদিন পার হলেও এখনও পর্যন্ত দোষীদের গ্রেফতার করা হয়নি। বরং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দায়িত্বেঅবহেলার দায় স্বীকার না করে দায়িত্বহীন বক্তব্য দিচ্ছেন। পুলিশ ঘটনার কোনো প্রমাণ না পেলেও সাংবাদিকদের কাছে সেই ঘটনার ভিডিও আছে। অভিযোগ উঠেছে প্রত্যক্ষদর্শীকয়েকজন যাদের কাছে এই ঘটনার ছবি আছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য তাদের ছবি প্রকাশে বাধা দিচ্ছেন। ঘটনা ধামাচাপা দিতে চায় যে প্রশাসন তারা কেমনঅভিভাবক? এই একই স্থানে অভিজিৎ রায় খুন হয়েছেন, বন্যা আহমেদ আহত হয়েছেন। দেড় মাস পার হতে চলল, এখনও একজন খুনিকে প্রশাসন গ্রেফতার করতে পারেনি। এনিয়েও আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রশাসনের কোনো বিকার নেই। এমন নির্বিকার ও দায়িত্বহীন মনোভাব নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ দায়িত্বে থাকার কোনো নৈতিক যোগ্যতাইএদের নেই।’
তিনি আরও বলেন, ‘একটা সমাজে নারীর অবস্থান দেখেই বোঝা যায় সে সমাজ কতটা গণতান্ত্রিক। যে সমাজে মানুষ হিসেবে নারীর মর্যাদা নেই, সে সমাজ, সে রাষ্ট্র গণতান্ত্রিকহতে পারে না। মুখে গণতন্ত্রের ফেনা তুলছে যে সরকার তারাও ঘরে-বাইরে-কর্মস্থলে-শিক্ষাঙ্গনে নারীর নিরাপত্তা দিতে পারছে না। নারীকে মানুষ হিসেবে দেখবার দৃষ্টিভঙ্গিওসমাজে গড়ে তুলতে পারছে না। বরং সিনেমা-নাটক-বিজ্ঞাপনে নারীকে এমনভাবে উপস্থাপন করছে যাতে এই সমাজে একজন যুবক-তরুণ নারীকে ভোগ্য পণ্য হিসেবেই দেখতেঅভ্যস্থ হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষায়, সাংস্কৃতিক চর্চায়ও আজ এই বিষয়গুলো ঢুকে পড়েছে। সেখানেও অপসংস্কৃতির প্রচার-প্রসার চলছে। বিভিন্ন জাতীয় উৎসবে কর্পোরেটপ্রতিষ্ঠানগুলো নানা রকম কনসার্টের আয়োজন করে। তাদের পরিবেশনা মানুষের রুচির বিকাশ তো দূরের কথা, প্রবৃত্তিকে উসকে দেয়। এমন পরিবেশেই এই লাঞ্ছনাকারীদেরজন্ম দেয়।’ তাই তিনি একদিকে দোষীদের বিচার, ব্যর্থ প্রক্টরের পদত্যাগ দাবিতে চলমান আন্দোলনে বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্ত শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণের আহ্বান জানিয়ে মানুষহিসেবে নারীর মর্যাদা প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।