“কুৎসা, চাপ ও হুমকি প্রদান করে প্রধান বিচারপতিকেই যেভাবে পদত্যাগে বাধ্য করানো হয়েছে তা বিচার বিভাগের অবশিষ্ট স্বাধীনতাকে ধ্বংস করবে, দেশে ফ্যাসিবাদের বিপদ বাড়িয়ে দেবে। বিচারবিভাগের অবশিষ্ট স্বাধীনতা খর্ব করে বিচার বিভাগ নিয়ন্ত্রণে সরকার ও সরকারি দলের সাম্প্রতিক তৎপরতা ‘খুবই বিপজ্জনক অশনিসংকেত’ এবং সরকারের এই অশুভ তৎপরতা গুরুত্বপূর্ণ সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হিসাবে বিচার বিভাগকে নির্বাহী বিভাগ তথা সরকারের অনুগত প্রতিষ্ঠান হিসাবে নিয়ে যাবারই এক স্বৈরতান্ত্রিক উদ্যোগ। সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায়কে কেন্দ্র করে প্রধান বিচারপতিকে প্রথমে ছুটিতে যেতে ও তারপর তাকে যেভাবে পদত্যাগে বাধ্য করা হল তা সরকারের চরম অসহিষ্ণু ও অগণতান্ত্রিক চরিত্রেরই বহিঃপ্রকাশ।”
গত ১৩ নভেম্বর সকালে গণতান্ত্রিক বাম মোর্চা ও সিপিবি-বাসদের কেন্দ্রীয় সভায় নেতৃবৃন্দ এসব কথা বলেন। নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায় পূর্ণ আকারে প্রকাশের আগে থেকেই সরকার ও সরকারি দলের নীতিনির্ধারকেরা শালীনতার সকল সীমা লংঘন করে যেভাবে প্রধান বিচারপতি সম্পর্কে কুৎসা, চরিত্রহনন, কথিত মামলার প্রস্তুতি, চাপ ও হুমকি প্রদান করে এসেছেন তাতে দেশবাসীর কাছে এখন স্পষ্ট হয়েছে যে প্রধান বিচাররপতিকে পদত্যাগে বাধ্য করানো হয়েছে। সরকারের এই তৎপরতা একদিকে বিচার বিভাগের স্বাধীনতায় কুঠারাঘাত আর অন্যদিকে বিচারবিভাগের প্রতি মানুষের শেষ আস্থাটুকুকেও ধ্বংস করবে। বিচারবিভাগসহ সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানসমূহকে প্রকারান্তরে নির্বাহী বিভাগের অধীনস্ত করবার এসব পদক্ষেপ দেশে ফ্যাসিবাদী শাসন ও তার বিপদ কেবল আরো বাড়িয়ে দেবে। সভায় নেতৃবৃন্দ সরকারের এসব অগণতান্ত্রিক তৎপরতার বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে দেশবাসীর প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানান।
সিপিবি’র সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিমের সভাপতিত্বে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এই সভায় বক্তব্য রাখেন বাসদ (মার্কসবাদী)-র কেন্দ্রীয় কার্যপরিচালনা কমিটির সদস্য শুভ্রাংশু চক্রবর্তী, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, বাসদের সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি, ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক মোশারফ হোসেন নান্নু, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু।