ফুলবাড়ীতে নতুন করে এশিয়া এনার্জির অপতৎপরতার প্রতিবাদে ও ফুলবাড়ী চুক্তির পূর্ণ বাস্তবায়নের দাবিতে আয়োজিত সামবেশে তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির নেতৃবৃন্দ বলেছেন, ২০০৬ এ ফুলবাড়ীর জনগণের রক্তে লেখা ৬ দফা চুক্তি বাস্তবায়িত না হওয়ায় বহুজাতিক কোম্পানি এশিয়া এনার্জি ও দেশের লুটেরা গোষ্ঠী তাদের ষড়যন্ত্র অব্যাহত রাখার এবং এশিয়া এনার্জির নির্বাহী গ্যালি লাই ফুলবাড়ীতে দালাল তৈরি করার ও ফুলবাড়ীতে যাওয়ার দুঃসাহস দেখাতে পেরেছে।
নেতৃবৃন্দ ‘ফুলবাড়ী চুক্তি’ অনুযায়ী এশিয়া এনার্জির তৎপরতা বন্ধ ও এদের দেশ থেকে বহিস্কারের দাবি জানিয়ে বলেন, এশিয়া এনার্জি মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে লন্ডনের শেয়ার বাজারে কার্যক্রম চালাচ্ছে। এদের অপতৎপরতা অব্যাহত রাখতে ফুলবাড়ীসহ দেশে নতুন নতুন দালাল তৈরির চেষ্টা করছে।
নেতৃবৃন্দ বলেন, গতকাল ২৬ নভেম্বর ফুলবাড়ীর লড়াকু মানুষ বিক্ষোভে ফুঁসে উঠে আরেকবার প্রমাণ করলেন, তরিকুল-সালেহিন-আমিন-এর রক্তে রঞ্জিত ফুলবাড়ীতে ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়ে জাতীয় সম্পদ ধ্বংস ও লুটেরাদের মুনাফার পাহাড় গড়তে দেওয়া হবে না।
২৭ নভেম্বর বিকেল ৪.৩০ মিনিটে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে জাতীয় কমিটি আয়োজিত সমাবেশে নেতৃবৃন্দ এসব কথা বলেন। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন জাতীয় কমিটির আহ্বায়ক প্রকৌশলী শেখ মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ ও রুহিন হোসেন প্রিন্স। জাতীয় কমিটির সদস্য-সচিব অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, বজলুর রশীদ ফিরোজ, সাইফুল হক, অ্যাড. আব্দুস সালাম, মোশরেফা মিশু, মোশাররফ হোসেন নান্নু, জাহাঙ্গীর আলম ফজলু, ফকরুদ্দিন কবির আতিক, শামসুজ্জোহা প্রমুখ সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন।
সমাবেশে নেতৃবৃন্দ ফুলবাড়ীর জনগণের প্রতিরোধ আন্দোলনের প্রতি সমর্থন জানিয়ে সারাদেশে ফুলবাড়ীর সমর্থনে সংহতি সমাবেশের আহ্বান জানান।
সমাবেশে দেশের গ্যাস-বিদ্যুৎ সমস্যা সমাধানে জাতীয় কমিটির ৭ দফা বাস্তবায়নের দাবি জানিয়ে বলা হয়, এই সরকার মুখে গ্যাস-বিদ্যুৎ ব্যবস্থার উন্নয়নের কথা বললেও এসব ক্ষেত্রে দেশী বিদেশী লুটেরাদের স্বার্থ রক্ষা করে চলেছে। নেতৃবৃন্দ জ্বালানী মন্ত্রণালয়ের সমালোচনা করে বলেন, এই মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রম দেখলে মনে হয়, এরা বিদেশি কোম্পানিসমূহের স্বার্থ রক্ষায় ব্যস্ত।
নেতৃবৃন্দ দেশের বাস্তব অবস্থা বিবেচনায় উন্মুক্ত পদ্ধতিতে কয়লা উত্তোলন নিষিদ্ধ এবং মানুষ-জমি-পানি-প্রাকৃতিক অবস্থা বিবেচনায় নিয়ে দেশের কয়লা সম্পদ এর সর্র্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করতে জনস্বার্থে নীতিমালা প্রণয় ও জাতীয় সংসদে জ্বালানী সম্পদ রপ্তানী নিষিদ্ধকরণ আইন পাশ করার দাবি জানান।
সমাবেশে থেকে ফুলবাড়ীর জনগণ ঘোষিত ২৭ ডিসেম্বর ফুলবাড়ীতে মহাসমাবেশসহ অন্যান্য কর্মসূচির প্রতি সমর্থন জানানো হয়। সমাবেশ থেকে ফুলবাড়ীর আন্দোলনের সমর্থনে আগামী ৩ ডিসেম্বর সারাদেশে বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।
সভা শেষে বিক্ষোভ মিছিল প্রেসক্লাব-তোপখানা-পল্টন হয়ে প্রেসক্লাবে এসে শেষ হয়।