কোন বিরোধী শক্তিকে দাঁড়াতেই দিচ্ছে না সরকার
বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (মার্কসবাদী)’র সাধারণ সম্পাদক কমরেড মুবিনুল হায়দার চৌধুরী এক বিবৃতিতে বলেন, “আওয়ামী লীগ ছাড়া আর কেউই স্বাভাবিক নির্বাচনী প্রচারণা চালাতে পারছে না। বিভিন্ন জায়গায় বিরোধীদের উপর হামলা করা হচ্ছে। গতকাল ফেনীর বিসিক এলাকায় নির্বাচনী প্রচারণা চলাকালে বাম গণতান্ত্রিক জোট সমর্থিত ফেনী-২ আসনের বাসদ (মার্কসবাদী)’র প্রার্থী কমরেড জসিমউদ্দিন ও তাঁর সাথে প্রচারণায় থাকা নেতা-কর্মীদের উপর আওয়ামী লীগের ক্যাডাররা হামলা করেছে। জেলা প্রশাসনের কাছে এ-ব্যাপারে জানানো হলেও তারা কোনো পদক্ষেপ নেননি। শুধু আমাদের উপরই নয়, সরকার তার দলীয় সন্ত্রাসীদের লেলিয়ে দিয়ে নেত্রকোনা, চাঁদপুর, খুলনাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় বাম গণতান্ত্রিক জোটের নেতা-কর্মীদের উপর হামলা চালাচ্ছে। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থীদের উপর ব্যাপক হারে হামলা হয়েছে ও হচ্ছে; তাদের নেতা-কর্মীদের উপর একের পর এক মিথ্যা মামলা দিয়ে বাস্তবে নির্বাচনের মাঠ থেকে সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। সরকার বলছে, তাদের নাকি বিপুল জনসমর্থন আছে। কিন্তু যা করে যাচ্ছে, তা থেকে বোঝা যায় আসলে ব্যাপক জনভীতি তাদের মধ্যে কাজ করছে।
গত ১২ দিনে (১১-২২ ডিসেম্বর) ১১৭টি আসনে সংঘাতের ঘটনা ঘটেছে, অর্ধশতাধিক মানুষ আহত হয়েছে, অনেক আসনে বিরোধীদের প্রচারণায় নামতে পর্যন্ত দেওয়া হয়নি। নির্বাচন কমিশন নির্বাচনের দিন মোটর সাইকেলের কোনো পাশকার্ড দেবে না বলে জানিয়েছে, অর্থাৎ সাংবাদিকরা ঐদিন বিভিন্ন কেন্দ্র্রে অবাধ চলাফেরা করতে পারবে না। বিদেশি পর্যবেক্ষকদের ভিসা দিতে দেরি করে তাদের নির্বাচনের দিনে কেন্দ্রে উপস্থিত থাকাকেই আটকে দেওয়া হয়েছে।
গতকাল নবাবগঞ্জে সাংবাদিকদের উপর যে হামলা ও তাদেরকে অন্যায়ভাবে অবরুদ্ধ রাখার যে ঘটনা আওয়ামী লীগ ঘটিয়েছে-তা অত্যন্ত ন্যাক্কারজনক। নির্বাচনের পূর্বে সাংবাদিকদের উপর এমন হামলার ঘটনা জনগণের আতঙ্ককে আরও বাড়িয়ে তুলছে যে, আদৌ তারা নির্বাচন কেন্দ্রে গিয়ে সুষ্ঠুভাবে নিজের পছন্দ মতো ভোট দিতে পারবে কিনা।”
কমরেড মুবিনুল হায়দার চৌধুরী আরও বলেন, “এটা কোনো সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ নয়, বরং সরকার নিজের ক্ষমতাকে ধরে রাখার জন্য নির্বাচনে সবার অংশগ্রহণের সুযোগ না রেখে কীভাবে নিজের গায়ের জোরে আবার একতরফাভাবে ক্ষমতায় আসা যায়-সেই ষড়যন্ত্র করছে। ফলে এই অবস্থা চলতে থাকলে আদৌ নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে না। তাই প্রয়োজনে আমাদের নির্বাচন নিয়ে পুনর্বিবেচনার কথাও ভাবতে হতে পারে।
দেশের বুদ্ধিজীবীদের কাছে বলব, গণতন্ত্রের প্রথম কথা যে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, এরকম চললে দেশে তার ছিটেফোঁটা পর্যন্ত থাকবে না। ফলে তাঁদেরকেও এ-ব্যাপারে প্রতিবাদে এগিয়ে আসার আহ্বান জানাচ্ছি।”
নির্বাচনী প্রচারণায় বিরোধীদের নেতা-কর্মী ও সাংবাদিকদের উপর হামলার প্রতিবাদ শুধু নয়, দেশের নির্বাচনকে ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে সরকার যে অন্যায়-জবরদস্তিমূলক পথে নিয়ন্ত্রণ করতে যাচ্ছে-তার বিরুদ্ধে কমরেড মুবিনুল হায়দার চৌধুরী জনগণ ও দেশের সচেতন নাগরিকদের প্রতি তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন।