পঞ্চগড়ে হিন্দু ধর্মগুরুকে নৃশংসভাবে হত্যাসহ সারাদেশে অব্যাহত সাম্প্রদায়িক অসহিষ্ণুতা, নারী নিগ্রহ, অব্যাহত শিশু হত্যার প্রতিবাদে বাসদ (মার্কসবাদী), ফেনী জেলা শাখা ২৪ ফেব্রুয়ারী ২০১৬ বিকেলে শহরের সড়ক সমূহে পদযাত্রা করে।
পদযাত্রা শেষে শহীদ মিনারের সমাবেশে পার্টির জেলা আহবায়ক জসীম উদ্দীন দেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিবেশ নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি দেশে সাম্প্রদায়িক অসহিষ্ণুতার প্রকৃত কার্যকারণ দেশবাসীর কাছে তুলে না ধরে কেবলমাত্র মৌলবাদ, সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে প্রচার প্রচারণা এবং সরকারের দমননীতিকে সত্যিকারের প্রতিকার যোগ্য পদক্ষেপ নয় বলে অভিমত প্রকাশ করেন। তিনি আরও বলেন, “রাষ্ট্রের নীতিনির্ধারণী ব্যক্তিরাই সাম্প্রদায়িক শিক্ষার প্রচার প্রচারণাকে প্রশ্রয় দিয়ে থাকেন মানুষকে বিভক্ত করা, জ্ঞান বিমুখ এবং দুর্বল করে রাখার জন্য। তারা বিদ্যাসাগর, শরৎচন্দ্র, দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশ, রবীন্দ্রনাথ, নজরুল, বেগম রোকেয়ার মানবতাবাদী শিক্ষা – সংগ্রাম প্রচার করেন না। অথচ আমাদের দেশের প্রগতিশীল পরিচয়ে থাকা শিক্ষিত ব্যক্তি ও রাজনীতিকরা শাসকগোষ্ঠির আনুকূল্যে থেকে সেক্যুলার বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেন, যা অত্যন্ত বেদনাদায়ক। তারা মনীষীদের জীবন সংগ্রাম থেকে শিক্ষার ভিত্তিতে সাংস্কৃতিক সংগ্রাম গড়ে না তুলে, আপোষহীনভাবে লাগাতার সংগ্রামের পথে না গিয়ে, জনগণের স্বত:স্ফূর্তভাবে গড়ে ওঠা গৌরবময় আবেগকে যথার্থভাবে পরিচালিত না করে বিপথগামী করেন। তারুণ্যকে গভীর হতাশায় নিমজ্জিত করেন। সত্যিকারের সেক্যুলার দৃষ্টিভঙ্গিতে গণ-আন্দোলন গড়ে ওঠার পথ রচনা না করার কারণে বিক্ষুদ্ধ তরুণ মন বিপদজ্জনকভাবে অন্ধকারের শক্তিসমূহকে উম্মোচনের প্রচেষ্টা করে। অতঃপর শোচনীয়ভাবে হতাশার পরিবেশ তৈরী হয়। একদিকে লুটেরা পুঁজিপতি শ্রেণীর চক্রান্ত, অন্যদিকে যথার্থভাবে গণআন্দোলন গড়ে তোলার পথনির্দেশনা না থাকার কারণে দেশের সৎ, সাহসী যুব সমাজ সঠিক পথ পাচ্ছে না।” এমতাবস্থায় তিনি সত্যানুসন্ধানী প্রগতিশীল মানুষদেরকে এই সকল অন্যায় নীরবে মেনে না নিয়ে সরকারের ফ্যাসিবাদী প্রবণতা ও সাম্প্রদায়িকতা তোষণনীতির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ গণ-আন্দোলন গড়ে তোলা ও মনুষ্যত্ব রক্ষার সংগ্রামে এগিয়ে আসার আহবান জানান।