Wednesday, December 25, 2024
Homeসাম্যবাদসাম্যবাদ - নভেম্বর ২০১৪বর্ধমানে বিস্ফোরণ কাণ্ড - কেন্দ্র ও রাজ্য দুই সরকারই দায়ী : এস...

বর্ধমানে বিস্ফোরণ কাণ্ড – কেন্দ্র ও রাজ্য দুই সরকারই দায়ী : এস ইউ সি আই (সি)

[বর্ধমান জেলার খাগড়াগড়ে ২ অক্টোবর ২০১৪ বোমা বিস্ফোরণ ও সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপকে কেন্দ্র করে দু’দেশেই নানা আলোচনা হচ্ছে। সংবাদ মাধ্যমেও নানা তথ্য আসছে। সৃষ্ট এ পরিস্থিতি সম্পর্কে ভারতের এস ইউ সি আই (সি) দলের সাধারণ সম্পাদক কমরেড প্রভাস ঘোষ গত ২২ অক্টোবর কলকাতা প্রেসক্লাবে যে বক্তব্য রাখেন তা সাম্যবাদের পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হল।]

220px-Provashghoshবর্ধমান জেলার খাগড়াগড়ে বিস্ফোরণের ঘটনায় আমরা সবাই উদ্বিগ্ন। আমরা সকলেই বলতে চাই অপরাধীদের খুঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হোক। এ কথাও মনে করি যেখানে জনগণের নিরাপত্তার প্রশ্ন যুক্ত সেখানে কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের বোঝাপড়ার ভিত্তিতে যৌথ ভূমিকা নেওয়া দরকার ছিল। কিন্তু এখানে দু’পক্ষের মধ্যে একটা ঠাণ্ডা লড়াই চলছে। একে অপরকে দায়ী করে যাচ্ছে। আর একটা প্রশ্নও ওঠে, বাংলাদেশ থেকে অপরাধীরা যদি এসেই থাকে, জনগণের কোটি কোটি টাকা ব্যয় করে সীমান্তে রক্ষী বাহিনী আছে, কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের গোয়েন্দাবাহিনী আছে, তারা কী করছিল? ঘটনার আগেই গোয়েন্দারা তা ধরতে পারল না কেন? তা হলে দুই সরকারই যে দায়িত্ব পালন করেনি এ কথা কি তারা অস্বীকার করতে পারে?
আমরা আরও বলতে চাই, গোটা বিষয়টা নিয়ে অপরাধী খোঁজার থেকেও সাম্প্রদায়িক মানসিকতা সৃষ্টির ষড়যন্ত্র চলছে। সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ যে ধর্মের লোকই করুক, সেটা অপরাধ। তার জন্য এ ধারণার সৃষ্টি করা চলে না যে, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের একটা বিরাট অংশ এর সাথে যুক্ত। বাবরি মসজিদ যারা ধ্বংস করেছিল, গুজরাটে যারা দাঙ্গা বাধিয়েছিল, তারা উগ্র হিন্দুত্ববাদী দাঙ্গাবাজ, তার মানে কি হিন্দুদের বিরাট অংশ এতে জড়িত ছিল? একইভাবে ট্রেনে-মন্দিরে-মসজিদে নানা বিস্ফোরণের ঘটনায় গুজরাটের অসীমানন্দ, রাজস্থানের প্রজ্ঞাভারতী পরিচালিত হিন্দু সন্ত্রাসবাদী সংগঠনের নাম তদন্তে প্রকাশ পেয়েছে, তার মানে কি অধিকাংশ হিন্দু সন্ত্রাসবাদী?
কোনও মাদ্রাসাকে সন্ত্রাসবাদীরা যদি ব্যবহার করে থাকে, তার মানে কি নির্বিচারে সব মাদ্রাসা সন্ত্রাসবাদীদের ঘাঁটি? একজন স্বঘোষিত ‘গডম্যান’ আশারাম বাপু, আশ্রমে ব্যাভিচারের অপরাধে অভিযুক্ত হয়ে জেলে গেছে, তার মানে কি সব আশ্রমেই ব্যাভিচার চলছে? এ ভাবে বিচার ঠিক নয়। এমন একটা জিগির তোলা হচ্ছে যেন সীমান্ত পার হয়ে গোটা বাংলাদেশের মুসলিমরা এপারে চলে আসছেন এখানেও মুসলিম রাজত্ব কায়েম করবে বলে। এ কথা কী ভোলা যায় যে, বাংলাদেশের মুসলিম জনগণই মাত্র কয়েক দশক আগে মুসলিম রাষ্ট্র পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বুকের রক্ত ঢেলে হাজারে হাজারে প্রাণ দিয়ে লড়াই করে স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করেছিল। আজও সেখানে ইসলামিক মৌলবাদী জামাতের বিরুদ্ধে প্রাণ দিয়ে লড়াই করেছে তারাই। আজ তারাই নাকি আসছে দলে দলে এ দেশে জামাতকে শক্তিশালী করার জন্য! এ সব আজগুবি কথাও ছড়ানো হচ্ছে। সব দেশেরই নাগরিকদের অন্যদেশের নাগরিক হওয়ার আন্তর্জাতিক আইন আছে। সরকারের দায়িত্ব খোঁজ নিয়ে দেখা, কাকে নাগরিকত্ব দেওয়া যায়, আর কাকে যায় না। অন্যদিকে দারিদ্র্যের জ্বালায় গরিব মানুষরা, বৈধভাবে হোক অবৈধভাবে হোক, পার্শ্ববর্তী দেশে বা অন্য দেশে যান। ল্যাটিন আমেরিকা থেকে দলে দলে মানুষ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ঢোকে, আমাদের দেশ থেকেও বিদেশে, মধ্যপ্রাচ্যে যায়, তেমনি ভারতেও বাংলাদেশ ও নেপাল থেকে আসে, অনেকে দিনে কাজ করে ফিরে যায়। এদের সকলকেই নির্বিচারে সন্ত্রাসবাদী বলা চলে কী? এদের ওয়ার্ক পারমিট দেওয়া উচিত।
এ কথা ঠিক যে, ধর্মীয় মৌলবাদ এক বিপজ্জনক শক্তি হিসাবে সমগ্র বিশ্বে দেখা দিয়েছে। ইতিহাসে এক সময় সামন্ততন্ত্রকে উচ্ছেদ করে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে বুর্জোয়াশ্রেণিই ধর্মীয় চিন্তা ও ধর্মীয় মৌলবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছিল। পরবর্তীকালে প্রতিক্রিয়াশীল স্তরে পৌঁছে সেই বুর্জোয়ারাই সমাজতান্ত্রিক বিপ্লব রোখার জন্য ধর্মীয় মৌলবাদকে পুনরুজ্জীবিত করেছে। যদিও শক্তিশালী সমাজতান্ত্রিক বিশ্ব ব্যবস্থা, দেশে দেশে পুঁজিবাদ ও সাম্রাজ্যবাদবিরোধী সংগ্রামের ফলে ধর্মীয় মৌলবাদ প্রভাব বিস্তার করতে পারেনি। এর অনুপস্থিতির ফলেই বর্তমানে সাম্রাজ্যবাদীরা সব ধর্মীয় মৌলবাদ বিশেষত ইসলামিক মৌলবাদকে ইন্ধন দিয়ে বিপজ্জনক অবস্থায় নিয়ে এসেছে। বিন লাদেন, আল কায়দা, তালিবান, আই এস এস, জামাত ইত্যাদিরা মার্কিন সাম্রাজ্যবাদেরই সৃষ্টি। এখন আবার এরাই ফ্রাঙ্কেনস্টাইনের দানব হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমি মার্কসবাদী, নিরীশ্বরবাদী, কিন্তু সকল ধর্ম প্রচারকদেরই শ্রদ্ধা করি, কারণ তাঁরা তাঁদের যুগে প্রগতি ও ন্যায়ের জন্যই লড়েছিলেন। তাই আমি মনে করি, আজ ইসলাম ধর্মের নামে একদল সন্ত্রাসবাদী যা করে বেড়াচ্ছে, ইরাকে, সিরিয়ায়, আফগানিস্তানে ও অন্যান্য দেশে যেসব ধ্বংসকাণ্ড করে যাচ্ছে, সিয়া-সুন্নি লড়াই চালাচ্ছে, যৌন-নিপীড়নে মেয়েদের ‘দাসে’র মতো ব্যবহার করছে – এ সব দেখলে যদি বেঁচে থাকতেন হজরত মুহাম্মদ জেহাদ ঘোষণা করতেন। যেমন বিবেকানন্দ বেঁচে থাকলে এ দেশে হিন্দু ধর্মের নামে বিজেপি-আর এস এস যা করে বেড়াচ্ছে তার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতেন। আমরা প্রশ্ন তুলেছিলাম — চৈতন্য, রামকৃষ্ণ, বিবেকানন্দ কি হিন্দু ছিলেন না? কই তাঁরা তো বাবরি মসজিদ ভেঙে রাম মন্দির গড়ার আহ্বান জানাননি। তাঁরা কি কাপুরুষ ছিলেন বলে করেননি? রামকৃষ্ণ তো মসজিদেও নামাজ পড়েছিলেন। আমি বিবেকানন্দের বই পড়ে শোনাতে পারি, যেখানে তিনি বলছেন, ‘আমার কাছে সব ধর্মই সমান’, সব ধর্মকেই সমান মর্যাদা দিই; বলছেন — আমি কৃষ্ণকে যেমন সম্মান করি তেমনি হজরত মুহম্মদকেও করি। আরও বলছেন — আমার একটি সন্তান থাকলে আমি এক পঙক্তি মন্ত্র ছাড়া আর কিছু শেখাতাম না। তারপর বড় হয়ে সে বৌদ্ধ হতে পারে, সম্পূর্ণ স্বাধীন ও নির্বিরোধে আমার স্ত্রী খ্রিস্টান ও আমি মুসলমান হতে পারি। আর এস এস নেতারা বলুন, এই বিবেকানন্দ কি হিন্দু ছিলেন না?
পশ্চিমবঙ্গের একটা ঐতিহ্য ছিল – এটাই ছিল ভারতীয় নবজাগরণ, স্বদেশি আন্দোলনে বিপ্লববাদ এবং বিশ্ব সাম্যবাদী আন্দোলনের প্রভাবিত বামপন্থার কেন্দ্রস্থল। সাম্প্রদায়িক শক্তি এখানে তেমন ভাবে মাথা চাড়া দিতে পারেনি। রামমোহন সংস্কৃতি শিক্ষার পরিবর্তে পাশ্চাত্যের শিক্ষা এবং বেদান্তের পরিবর্তে বিজ্ঞান শিক্ষায় জোর দিয়েছিলেন, বিদ্যাসাগর তো বলেই ছিলেন – বেদান্ত, সাংখ্য ভ্রান্ত দর্শন, প্রাকৃতিক দর্শন ও বিজ্ঞান শিক্ষা চাই। সেই ঐতিহ্যকে দু’পায়ে মাড়িয়ে আর এস এস বৈদিক যুগের দিকে নিয়ে যেতে চাইছে, সবই নাকি বেদে ছিল। এর পর বলবে, পার্লামেন্টারি গণতন্ত্র, থিওরি অব রিলেটিভিটি, কোয়ান্টাম মেকানিক্সের তত্ত্বও বেদে ছিল। এখানে রবীন্দ্রনাথ-শরৎচন্দ্র-নজরুলরা রাজনীতির সাথে ধর্মকে যুক্ত করার বিরোধী ছিলেন। সুভাষচন্দ্র এমনও বলেছিলেন, আমি পড়ে শোনাচ্ছি, ‘সন্ন্যাসি ও সন্ন্যাসিনীদের ত্রিশূল হাতে হিন্দু মহাসভা ভোট ভিক্ষায় পাঠিয়েছেন। ত্রিশূল আর গেরুয়া বসন দেখলে হিন্দু মাত্রেই শির নত করে। ধর্মের সুযোগ নিয়ে, ধর্মকে কলুষিত করে হিন্দু মহাসভা রাজনীতির ক্ষেত্রে দেখা দিয়েছে। এই বিশ্বাসঘাতকদের আপনারা রাষ্ট্রীয় জীবন থেকে সরিয়ে দিন। তাদের কথা কেউ শুনবেন না। আমরা চাই দেশের স্বাধীনতাপ্রেমী নরনারী একপ্রাণ হয়ে দেশের সেবা করুক। হিন্দুরা ভারতে সংখ্যাগরিষ্ঠ বলিয়া ‘হিন্দু রাজে’র ধ্বনি শোনা যায়। এগুলি সর্বৈব অলস চিন্তা। হিন্দু ও মুসলমানের স্বার্থ পৃথক – ইহার চেয়ে মিথ্যা বাক্য আর কিছু হইতে পারে না। বন্যা-দুর্ভিক্ষ-মড়ক ইত্যাদি বিপর্যয় তো কাউকে রেহাই দেয় না।’ এই সব মানুষদের চিন্তার প্রভাবে একদিন শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জীর মতো মানুষ এই বাংলায় জায়গা করে উঠতে পারেননি। একদিকে সিপিএম পশ্চিমবঙ্গে বামপন্থার মর্যাদা নষ্ট করেছে, গণআন্দোলনের ঐতিহ্যকে বিনষ্ট করেছে, এবং সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে কোনও আদর্শগত সংগ্রামও করেনি, যার ফলে ওদের দলেরই একদল হিন্দু এখন বিজেপিতে, আর একদল মুসলিম তৃণমূলে যোগ দিচ্ছে। অন্যদিকে তৃণমূলের অপশাসনও মানুষকে হতাশ ও ক্রুদ্ধ করছে। এসবের সুযোগ নিয়ে বুর্জোয়া মিডিয়ার মদতে বিজেপি মাথা চাড়া দিচ্ছে।
বিজেপি ও কংগ্রেস উভয় বুর্জোয়া দলই গণআন্দোলন ও শ্রেণিসংগ্রামের ঐক্যকে ভাঙার জন্য এবং ভোট ব্যাঙ্ক তৈরির জন্য সাম্প্রদায়িকতাকে ব্যবহার করছে। এই যেমন খগড়াগড়ের ঘটনাকে এমন করে দেখানো হচ্ছে যেন দেশে এখন এটাই প্রধান বা মুখ্য সমস্যা! অথচ কীরকম ‘আচ্ছে দিন’ মোদি সাহেব আনছেন, সেটা তো আপনারা দেখতেই পাচ্ছেন। এক ধাক্কায় রেলে যাত্রীভাড়া ১৪.২ শতাংশ, পণ্যমাশুল ৬.৫ শতাংশ বাড়িয়ে দিল। এমনিতেই সরকারি নিয়ন্ত্রণ সত্ত্বেও ওষুধের দাম মানুষের সাধ্যের বাইরে, এবার নিয়ন্ত্রণ তুলে দিয়ে আরও লাগামছাড়া দাম বাড়াবার সুযোগ করে দিল, ডিজেলের দামও নিয়ন্ত্রণমুক্ত করে ইচ্ছামতো বাড়াবার সুযোগ করে দিল ব্যবসায়ীদের। যার ফলে পরিবহন ভাড়া বাড়বে, মূল্যবৃদ্ধি ঘটবে, কৃষিতে জলসেচের খরচ বাড়বে। প্রাকৃতিক গ্যাসের দাম ৩৩ শতাংশ বাড়াল। ফলে সারের দাম বাড়বে, পাইপে সরবরাহকৃত গ্যাসের (সিএনজি) দাম বাড়বে। ভারতবর্ষে মাত্র ২০০টি জেলায় ১০০ দিনের কাজ রাখবে, অন্য কোথাও থাকবে না, এই কাজেও মজুরি কমাবে। জমি অধিগ্রহণের ক্ষেত্রে ৭০ শতাংশের পরিবর্তে ৫০ শতাংশ কৃষকের মত নেবে, ‘সেজ’ গঠন করবে। শ্রম আইন সংস্কার করে মালিকদের ইচ্ছামতো কারখানা বন্ধ, ছাঁটাই, মজুরি কমানো, কাজের সময় বাড়ানোর সুযোগ করে দিচ্ছে এবং শ্রমিকদের নিরাপত্তার দায়িত্ব থেকে মালিককে অব্যাহতি দিচ্ছে। ব্যাপক হারে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলি বিলগ্নিকরণ ও সরকারি শিল্প ও খনিগুলি বেসরকারিকরণ করছে। ইতিমধ্যে প্রতিরক্ষায় ও বিমায় ৪৯ শতাংশ বিদেশি পুঁজি বিনিয়োগের সুযোগ দিয়েছে। এইভাবেই একের পর এক পুঁজিপতিদের জন্য ‘আচ্ছে দিনে’র বন্দোবস্ত করেছে বিজেপি সরকার।
অন্য দিকে, একটি তথ্য বলছে, একচেটিয়া পুঁজি বা করপোরেট সেক্টরকে এ পর্যন্ত ৩৬ লক্ষ ৫০ হাজার কোটি টাকা ট্যাক্স মকুব করে দিয়েছে মোদি সরকার যেখানে ভারত সরকারের বৈদেশিক ঋণ ২৬ লক্ষ ৭৬ হাজার ৬০০ কোটি টাকা এবং দেশীয় ঋণ ৪৬ লক্ষ ২৫ হাজার ৩৭ কোটি টাকা, যেখানে বাজেটে ৭৫ শতাংশ আর্থিক ঘাটতি। এই সব টাকা পাবলিকের ঘাড় ভেঙেই তোলা হবে মূল্যবৃদ্ধি ও ট্যাক্স বৃদ্ধির মাধ্যমে। জনজীবনের ওপর একের পর এক এইসব আর্থিক আক্রমণে জর্জরিত যাতে মাথা না তোলে তার জন্যই হিন্দুত্বের জিগির ও সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপকে ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে বাড়িয়ে ওদের দেখানো দরকার। এটা বুঝতে হবে।
সংখ্যালঘুদের মধ্যেও যেসব বিপথগামী যুবক আত্মরক্ষার দোহাই দিয়ে সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপে যুক্ত হচ্ছে, উগ্র মৌলবাদে উস্কানি দিচ্ছে তারা সংখ্যালঘুদেরই ক্ষতি করছে। সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জনগণকেও এই ধর্মীয় মৌলবাদ এবং সন্ত্রাসবাদীদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করতে হবে। কোনও ধর্ম প্রবর্তকই অন্য ধর্মের প্রতি ঘৃণা ও বিদ্বেষ প্রচার করেন নি। সৎ ও ধার্মিক মানুষ ধর্মীয় হানাহানি সমর্থন করতে পারেন না। ধর্মবিশ্বাস এবং ধর্মীয় মৌলবাদ এক নয়।
কেন্দ্রীয় সরকার ও রাজ্য সরকারগুলির জনস্বার্থ বিরোধী পুঁজিবাদী নীতির বিরুদ্ধে সকল ধর্মের মানুষের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তোলা এবং তার সাথে সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে আদর্শগত সংগ্রামকে যুক্ত করার পথেই একমাত্র এই সমস্যার সমাধান সম্ভব বলে আমরা মনে করি।
[গণদাবী, ৩১ অক্টোবর ২০১৪]

RELATED ARTICLES

আরও

Recent Comments