Saturday, November 23, 2024
Homeসংবাদ ও প্রেস বিজ্ঞপ্তিপার্টি ও সংগঠন সংবাদ‘বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন ২০১৭’ এর বিশেষ বিধান ১৯ বাতিলের দাবিতে গণস্বাক্ষরসহ স্মারকলিপি...

‘বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন ২০১৭’ এর বিশেষ বিধান ১৯ বাতিলের দাবিতে গণস্বাক্ষরসহ স্মারকলিপি পেশ

NariMuktiKendro_210517

বাংলাদেশ নারীমুক্তি কেন্দ্র কেন্দ্রীয় কমিটি  ২১ মে ২০১৭ সকাল সাড়ে ১১টায় জাতীয় প্রেসক্লাব চত্বরে “বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন ২০১৭” এর বিশেষ ধারা ১৯ বাতিলের দাবিতে সমাবেশ ও গণস্বাক্ষরসহ প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি পেশ করেছে। কেন্দ্রীয় কমিটি আয়োজিত এই সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন নারীমুক্তি কেন্দ্রের কেন্দ্রীয় সভাপতি সীমা দত্ত। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সাংগঠনিক সম্পাদক মনিদীপা ভট্টাচার্য, ঢাকা নগর শাখার দপ্তর সম্পাদক ইভা মজুমদার, সদস্য সুষ্মিতা রায় সুপ্তি। সমাবেশ শেষে সভাপতি সীমা দত্তের নেতৃত্বে ৪ সদস্যের এক প্রতিনিধি দল প্রধানমন্ত্রীর কার্যালযে স্মারকলিপি প্রদান করেন।

সমাবেশের প্রধান বক্তা কেন্দ্রীয় সভাপতি সীমা দত্ত বলেন, সরকার জনগণের মতকে উপেক্ষা করে সম্পূর্ণ স্বৈরাচারী কায়দায় নারী-পুরুষ উভয়ের জন্য বিয়ের বয়সের ক্ষেত্রে বিশেষ বিধান প্রযোজ্য রেখে ‘বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন ২০১৭’ শীর্ষক বিলটি সংসদে পাশ করেছে। যে দেশে আইন অনুযায়ি ১৮ বছরের নিচে সকল মানব সন্তানকে শিশু বিবেচনা করা হয়, সে দেশে ১৮ বছরের নিচে বিয়ের বিধান রাখা মানেই শিশু বিবাহকে বৈধতা দেয়ার সামিল বলে আমরা মনে করি।

সমাবেশ কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মনিদীপা ভট্টাচার্য বলেন, সমাজের বিশেষ বাস্তবতা মোকাবিলা করতে না পেরে সরকার  কুসংস্কারাচ্ছন্ন চিন্তাভাবনা ও নারীর অধস্তন অবস্থা বহাল রাখার লক্ষে ভোটের রাজনীতিকে সামনে রেখে  মৌলবাদী দল ও গোষ্ঠীকে নিজেদের কাছে রাখার জন্যই এই আইন প্রণয়ন করেছে। সরকার একদিকে উন্নয়ন, ডিজিটালাইজেশনের শ্লোগান দিচ্ছে, আর অন্যদিকে নারীদের পশ্চাৎপদ সামাজিক অবস্থানকে পরিবর্তনের উদ্যোগ না নিয়ে আরো পশ্চাতে ঠেলে দিচ্ছে।

সমাবেশে ঢাকা নগর শাখার দপ্তর সম্পাদক ইভা মজুমদার বলেন, ধর্ষণের ফলশ্রুতিতে জন্মলাভকারী সন্তানের ভবিষ্যৎ  কি হবে সেই দুঃচিন্তা থেকেই নাকি সরকার এই আইন করেছে। কি অদ্ভুত এক যুক্তি! কিন্তু নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ (সংশোধিত ২০০৩) এর  ধারা ১৩ তে ধর্ষণের ফলশ্রুতিতে জন্মলাভকারী শিশু সংক্রান্ত বিষয়ে  স্পষ্ট বিধান রয়েছে যা নিম্নরূপ-
১) অন্য  কোন আইনে ভিন্নতর যা কিছুই থাকুক না  কেন, ধর্ষণের কারণে কোন সন্তান জন্মলাভ করিলে-
(ক) উক্ত সন্তানকে তাহার মাতা কিংবা তাহার মাতৃকুলীয় আত্মীয় স্বজনের তত্ত্বাবধানে রাখা যাইবে;
(খ) উক্ত সন্তান তাহার পিতা বা মাতা, কিংবা উভয়ের পরিচয় পরিচিত হইবার অধিকারি হইবে;
(গ) উক্ত সন্তানের ভরণপোষণের ব্যয় রাষ্ট্র বহণ করিবে;
(ঘ) উক্ত সন্তানের ভরণপোষণের ব্যয় তাহার বয়স একুশ বছর পূর্তি না হওয়া পর্যন্ত  প্রদেয় হইবে, তবে একুশ বছরের অধিক বয়স্ক কন্যা সন্তানের  ক্ষেত্রে তাহার বিবাহ না হওয়া পর্যন্ত এবং পঙ্গু সন্তানের ক্ষেত্রে তিনি স্বীয় ভরণপোষণের  যোগ্যতা অর্জন না করা পর্যন্ত প্রদেয় হইবে ;
এই আইনে সুস্পষ্ট বিধান থাকা সত্ত্বেও সরকারের উল্লেখিত আইনের প্রণয়নের যৌক্তিকতা আমাদের কাছে স্পষ্ট নয়। সরকার ধর্ষণের ফলশ্রুতিতে জন্মলাভকারি সন্তানের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত হলেও যারা ধর্ষক তাদের গ্রেফতার বা বিচার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিয়ে চিন্তিত নয়, বরং তাদের আশ্রয়-প্রশয়-মদদ দিতেই ব্যস্ত। ধর্ষক-নির্যাতকদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা সরকারের দায়িত্ব।

তাই বাংলাদেশে নারীমুক্তি কেন্দ্র সমস্ত বিবেকবান ও শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষকে এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে আহবান করছে। কারণ এটি কেবল নারীর অধিকার রক্ষার প্রশ্ন নয়, মানুষের গণতান্ত্রিক চেতনাকে রক্ষার প্রশ্নও বটে।

RELATED ARTICLES

আরও

Recent Comments