২৩ নভেম্বর বিকালে সেগুনবাগিচায় বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সিপিবি-বাসদ ও গণতান্ত্রিক বাম মোর্চার এক জরুরী সভায় খুচরা পর্যায়ে প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম ৩৫ পয়সা বৃদ্ধির প্রতিবাদ এবং অবিলম্বে বর্ধিত দাম প্রত্যাহারের দাবিতে আগামী ৩০ নভেম্বর বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত সারাদেশে হরতাল আহ্বান করা হয়েছে।
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় উপস্থিত ছিলেন সিপিবি সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, বাসদ সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান, বাসদ (মার্কসবাদী)’র কেন্দ্রীয় নেতা শুভ্রাংশু চক্রবর্তী, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক মোশাররফ হোসেন নান্নু, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের আহ্বায়ক হামিদুল হক, সিপিবি’র সাধারণ সম্পাদক মো. শাহ আলম, ইউনাইডে কমিউনিস্ট লীগের সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য আব্দুস সাত্তার, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির পলিটব্যুরোর সদস্য বহ্নিশিখা জামালী, সিপিবি’র প্রেসিডিয়াম সদস্য আবদুল্লাহ ক্বাফী রতন, বাসদ (মার্কসবাদী)’র কেন্দ্রীয় নেতা মানসদ নন্দী, ফখরুদ্দিন কবির আতিক, গণসংহতি আন্দোলনের সমন্বয়ক মনির উদ্দিন পাপ্পু।
নেতৃবৃন্দ বলেন, গণশুনানীকে উপেক্ষা করে মালিক-আমলাদের স্বার্থরক্ষায় বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির এক তরফা ঘোষণা অগণতান্ত্রিক এবং গণবিরোধী। নেতৃবৃন্দ বলেন, অবিলম্বে বিদ্যুতের বর্ধিত দাম প্রত্যাহার করতে হবে।
নেতৃবৃন্দ বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির এই গণবিরোধী ঘোষণা প্রত্যাহারে সরকারকে বাধ্য করার জন্য আগামী ৩০ নভেম্বরের হরতালে স্বতঃস্ফুর্ত অংশগ্রহণের জন্য জনগণের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানান।
বিদ্যুতের দাম পুনরায় বাড়ানোর সিদ্ধান্ত অযৌক্তিক ও গণবিরোধী ৩০ নভেম্বর অর্ধদিবস হরতাল পালনের মাধ্যমে প্রতিবাদ জানান
— বাসদ (মার্কসবাদী)
বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল(মার্কসবাদী) সাধারণ সম্পাদক কমরেড মুবিনুল হায়দার চৌধুরী আজ ২৩ নভেম্বর এক বিবৃতিতে সরকারের নির্দেশনায় বিইআরসি কর্তৃক পুনরায় বিদ্যুতের দাম ৫.৩% বাড়ানোর ঘোষণায় তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন এবং এই অযৌক্তিক ও গণবিরোধী সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে গণতান্ত্রিক বাম মোর্চা-সিপিবি-বাসদ আহুত আগামী ৩০ নভেম্বর সারা দেশে আধা বেলা হরতালের প্রতি সমর্থন ঘোষণা করেছেন।
বিবৃতিতে কমরেড মুবিনুল হায়দার চৌধুরী বলেন, “আওয়ামী লীগ সরকার এপর্যন্ত ৮বার বিদ্যুতের দাম বাড়িয়ে জনজীবনে দুর্ভোগ নাময়ে এনেছে। এ বছরের মার্চ মাসেই গ্যাসের দাম ৫০% বাড়ানো হয়েছে। এমন এক সময়ে এ ঘোষণা দেওয়া হল যখন চালসহ দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির চাপে মানুষ দিশেহারা। বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর এই গণবিরোধী সিদ্ধান্তের ফলে শিল্প ও কৃষি পণ্যের দাম আরেক দফা বাড়বে, জীবনযাত্রার ব্যয় আরো বৃদ্ধি পাবে।”
তিনি আরো বলেন, “এই মূল্যবৃদ্ধির কোন প্রয়োজন ছিল না। বিশ্ববাজারের সাথে সঙ্গতি রেখে জ্বালানি তেলের দাম কমালে বিদ্যুতের উৎপাদন খরচ কমানো সম্ভব ছিল। সরকার স্বল্প উৎপাদন খরচের গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো কম চালিয়ে বেসরকারি খাতের উচ্চ মূল্যের রেন্টাল ও কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বেশি বিদ্যুৎ কিনছে। এমনকি, সরকারি খাতের গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুতকেন্দ্র বন্ধ রেখে বেসরকারি খাতের গ্যাসভিত্তিক কেন্দ্র থেকে বেশি দামে বিদ্যুৎ কেনা হচ্ছে। বিইআরসিতে গণশুনানির সময়ে পিডিবিও স্বীকার করেছিল যে, ব্যয় সাশ্রয় করে বিদ্যুতের দাম ইউনিট প্রতি ৫৫ পয়সা কমানো সম্ভব। ফলে এই সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণ অযৌক্তিক।”
কমরেড মুবিনুল হায়দার চৌধুরী আরো বলেন, দফায় দফায় মূল্যবৃদ্ধির বিরুদ্ধে তীব্র গণআন্দোলন ছাড়া স্বৈরতান্ত্রিক মহাজোট সরকারের কাছ থেকে জনগণের দাবি আদায় করা সম্ভব নয়। এই লক্ষ্যে গণতান্ত্রিক বাম মোর্চা ও সিপিবি-বাসদ আগামী ৩০ নভেম্বর সারাদেশে অর্ধদিবস হরতালের ঘোষণা দিয়েছে। জনস্বার্থে এই হরতাল সফল করার জন্য তিনি দেশবাসীর প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানান।