৯ ডিসেম্বর ’১৫ নারী জাগৃতি আন্দোলনের পথিকৃত বেগম রোকেয়ার ১৩৫তম জন্ম ও ৮৩তম মৃত্যুবার্ষিকী স্মরণে বাংলাদেশ নারীমুক্তি কেন্দ্রের উদ্যোগে সকাল ৮টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রোকেয়া হলে রোকেয়ার ভাস্কর্যে পুষ্পস্তবক অর্পণ, বিকাল ৩.৩০টায় প্রেসক্লাব প্রাঙ্গণ থেকে র্যালী এবং পরে ২২/১ তোপখানা রোডস্থ সংগঠনের কার্যালয়ে রোকেয়ার জীবন সংগ্রাম ও কর্ম বিষয়ে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সংগঠনের ঢাকা নগর শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক তসলিমা আক্তারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (মার্কসবাদী) এর কার্য পরিচালনা কমিটির সদস্য কমরেড মানস নন্দী, বাংলাদেশ নারীমুক্তি কেন্দ্রের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি সীমা দত্ত, সাংগঠনিক সম্পাদক মনিদীপা ভট্টাচার্য, সদস্য নাঈমা খালেদ মনিকা।
আলোচনা সভায় বক্তারা রোকেয়ার জীবন ও সংগ্রাম নিয়ে আলোচনা করেন। তাঁরা বলেন, সেই যুগেও বেগম রোকেয়া নারীদের দুঃখ-বেদনা, অসহায়ত্ব ও সমস্যাকে যে দৃষ্টিভঙ্গিতে বিচার করেছেন এবং তাঁর লেখনীর মাধ্যমে নারীসমাজকে সচেতন করতে চেয়েছেন তা এই একবিংশ শতাব্দিতেও প্রাসঙ্গিকতা হারায়নি। তিনি নারীদের শারীরিক ও মানসিক শিক্ষা উভয়বিধ শিক্ষার প্রয়োজনীয়তার কথা বলেছেন। নারী পুরুষ সমানাধিকারের কথা বলেছেন। আজ সমাজের দিকে তাকালে আমরা বেগম রোকেয়ার লেডি কেরানি, লেডি ডাক্তার, লেডি ইঞ্জিনিয়ার হয়তো দেখতে পাই, শিক্ষাঙ্গনে নারীরা মুখরিত হয়ে আছেন দেখতে পাই, কর্মক্ষেত্রে নারীরা তাদের মেধা ও যোগ্যতার স্বাক্ষর রাখছেন দেখতে পাই, রাজনীতিতে নারীদের অবস্থান দেখতে পাই কিন্তু মানুষ হিসাবে নারীকে দেখতে পাই কোথায়? আজও নারী শুধু নারী বলে নির্যাতন ও বৈষম্যের শিকার হচ্ছে। আজ থেকে ১০০ বছরেরও বেশি আগে রোকেয়া মেয়েদের বিয়ের বয়স বাড়ানোর কথা বলেছেন আর এখন আমরা মেয়েদের যাতে ১৬ বছর বয়সে বিয়ে দেওয়া যায় তার আয়োজন সম্পন্ন হতে দেখছি। নির্বাচনে সংরক্ষিত নারী আসনে নারীদের অবমাননাকর প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হচ্ছে। একদিকে সরকার কোটি টাকা খরচ করে রোকেয়া দিবস পালন করছে আর অন্য দিকে নারীর মর্যাদা ধুলায় লুটিয়ে দিচ্ছে। আজকের দিনে রোকেয়ার চেতনা ধারণ করতে হলে নারীদের রোকেয়ার মত সংগঠক হয়ে মাঠে নামতে হবে। নারী পুরুষ নির্বিশেষে সকলের অংশগ্রহণের মাধ্যমে একটি সুস্থ্য স্বাভাবিক সমাজ গড়ার সাংস্কৃতিক আন্দোলন গড়ে তোলার জন্য বাংলাদেশ নারীমুক্তি কেন্দ্র কাজ করছে। বেগম রোকেয়ার জীবন সংগ্রাম এই আন্দোলনের শক্তি। বাংলাদেশ নারীমুক্তি কেন্দ্র এই আন্দোলনে সকলের অংশগ্রহণ আশা করে।