বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (মার্কসবাদী)’র কেন্দ্রীয় কার্য পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক কমরেড মুবিনুল হায়দার চৌধুরী ৯ এপ্রিল ২০১৭ সংবাদমাধ্যমে দেয়া এক বিবৃতিতে প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরে স্বাক্ষরিত চুক্তি ও সমঝোতা প্রসঙ্গে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেছেন, “নিরাপত্তা সহযোগিতা, অস্ত্র ক্রয়, লাইন অব ক্রেডিট ঋণ, পারমাণবিক প্রকল্প বাস্তবায়ন, ডিজেল ও বিদ্যুৎ আমদানি, কানেকটিভিটি বৃদ্ধি, মহাকাশ সহযোগিতা, সাইবার নিরাপত্তাসহ প্রায় সব সমঝোতার মাধ্যমে বাংলাদেশের ওপর ভারতের সামরিক, বাণিজ্যিক ও ভূ-রাজনৈতিক আধিপত্য বাড়বে। পক্ষান্তরে তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যা, অববাহিকাভিত্তিক নদী ব্যবস্থাপনা, গঙ্গা ব্যারেজসহ বাংলাদেশের জনগণের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে আশ্বাস ছাড়া কিছুই পাওয়া যায়নি। অনির্বাচিত আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় টিকে থাকতে ভারতের শাসকগোষ্ঠীর সমর্থন নিশ্চিত করতে নতজানু নীতি অনুসরণ করে চলেছে। সংকীর্ণ গোষ্ঠীস্বার্থে ভারতের শাসকগোষ্ঠীর সাথে বাংলাদেশের শাসকদের বন্ধুত্বে জনগণের কোন স্বার্থ নেই — তা আরেকবার প্রমাণিত হল।”
কমরেড মুবিনুল হায়দার চৌধুরী বিবৃতিতে আরো বলেন, “২২টি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারকের মধ্যে ৪টিই প্রতিরক্ষা ও সামরিক সহযোগিতা সংক্রান্ত। জনমত উপেক্ষা করে ও কোন তথ্য প্রকাশ না করে এসব সমঝোতা স্বাক্ষরিত হয়েছে। ৫০ কোটি ডলার ঋণ নিয়ে অস্ত্র ক্রয়, ভারতীয় কোম্পানিকে কাজ দেয়া ও তাদের পণ্য-সরঞ্জাম কেনার শর্তে ৪০০ কোটি ডলার ঋণ কার স্বার্থে জনগণ জানতে চায়। সুন্দরবন বিনাশী রামপাল কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ থেকে সরে আসার গণদাবি উপেক্ষা করে এবার ভারত রুপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের মত বাংলাদেশের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ প্রকল্পে যুক্ত হচ্ছে।
ফলে বহুল আলোচিত প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরে তিস্তা পানির ন্যায্য হিস্যা, সীমান্ত হত্যা বন্ধ ও রামপাল প্রকল্প বাতিল সহ বাংলাদেশের জনগণের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে চুক্তি ও সমঝোতা না করে, ক্ষমতায় টিকে থাকা ও ক্ষমতায় যাওয়ার রাস্তা পাকাপোক্ত করতে ভারতের শাসকগোষ্ঠির স্বার্থে প্রতিরক্ষা ও সামরিক সহযোগীতা চুক্তি করে বাংলাদেশকে ভারতের সামরিক পরিকল্পনার অংশ করা হলো। তাই তিনি সকল স্তরের জনগণকে শাসকগোষ্ঠীর এ ধরনের হীন চক্রান্তের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান।